আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী… কথাটা কেকের ক্ষেত্রে ভীষণ ভাবে প্রযোজ্য। কেকের আবেদন শুধু স্বাদে নয়, সাজেও। কাপকেক হোক বা বার্থডে কেক, তার সাজসজ্জা কেক তৈরির বড় অংশ। কেকের উপরে ডেকরেশন থেকে শুরু করে পরিবেশন, সবটাই গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গে রইল কিছু অন্য ধরনের কেকের রেসিপি।
জেনোয়াস কেক
উপকরণ: ডিম ৩টি, ক্যাস্টর সুগার ২ কাপ, ময়দা ২ কাপ, আনসল্টেড বাটার ৩ কিউব, দুধ কোয়ার্টার কাপ, এসেন্স ৪ ফোঁটা।
প্রণালী: ডাবল বয়লারে চিনি গলিয়ে তার মধ্যে ডিমগুলো মিশিয়ে নিন। আঁচ থেকে নামিয়ে ফেটাতে থাকুন। এ বার কাট অ্যান্ড ফোল্ড প্রক্রিয়ায় ময়দা মেশাতে হবে। অন্য একটি পাত্রে মাখন গলিয়ে তার মধ্যে দুধ মিশিয়ে রেখে দিন। এই মিশ্রণ আগের ব্যাটারে দিয়ে আবার মেশান। আভেনে ১৬৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ২৫ মিনিট বেক করুন। আভেন থেকে বার করে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। ঠান্ডা হলে বেকিং পাত্র থেকে বার করে চার-পাঁচ ঘণ্টা রেখে দিন। লেয়ারিংয়ের জন্য কেক ঘরের তাপমাত্রায় আসা দরকার। কেকে ময়শ্চার ধরে রাখতে সিরাপ দিতে পারেন। এ বার কেকের লেয়ারিংয়ের জন্য হুইপড ক্রিম ব্যবহার করুন। আনারস, স্ট্রবেরির টুকরো দিয়ে সুন্দর সাজিয়ে নিতে পারেন। এই কেক খুব নরম। তাই ভারী ক্রিম বা ডেকরেশনের আধিক্যে যেন চাপ সৃষ্টি না হয়।
ট্রাফ্ল কেক
উপকরণ: ক্যাস্টর সুগার ২ কাপ, কোকো পাউডার কোয়ার্টার কাপ, ময়দা ২ কাপ, বেকিং সোডা দেড় চা চামচ, বেকিং পাউডার ২ চা চামচ, নুন, সাদা তেল আধ কাপ, ভ্যানিলা এসেন্স ১ চা চামচ, ডিম ৩টি, বাটারমিল্ক ১ কাপ, কফি আধ কাপ।
প্রণালী: একটি পাত্রে চিনি, কোকো পাউডার, ময়দা, বেকিং সোডা, বেকিং পাউডার ও নুন মিশিয়ে নিন। অন্য একটি পাত্রে তেল, এসেন্স, ডিম, বাটারমিল্ক ভাল করে হুইস্ক করুন। এ বার দুটো মিশ্রণ মেশাতে থাকুন। প্রয়োজন মতো কফিও মিশিয়ে নিন। এ বার আভেনে ৩০ মিনিট বেক করতে হবে। কেক তৈরি হয়ে গেলে ঠান্ডা হতে দিন। গনাশ তৈরি করতে ২:১ বা ১:১ অনুপাতে গলানো চকলেট ও ক্রিম মিক্স করুন। গনাশ সেট করতে ফ্রিজে রাখুন। উপরে ঢাকা দেবেন, না হলে ক্রাস্ট তৈরি হবে। গনাশ দিয়ে লেয়ার করে সাজিয়ে নিন।
প্রণালী: মাখন ও চিনি ভাল করে মেশান। শিফনের মতো টেক্সচার তৈরি হবে। এ বার ডিম মেশান। এর মধ্যে ময়দা ও বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। স্কুপ করে মোল্ডে বসিয়ে বেক করার পালা। ১৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে ২০ মিনিট বেক করুন। জ্যাম, হুইপড ক্রিম দিয়ে সাজাতে পারেন। ফনড্যান্টের পাপড়ি, বো দিয়েও সাজানো যায়।
কেকের সাজসজ্জা
এখন বেশির ভাগ কেক সাজাতেই ব্যবহার হয় ফনড্যান্টের। ডোয়ের মতো এই চিনির মণ্ড দিয়ে সহজেই মডেল তৈরি করা যায় বলে, থিম কেক তৈরির চল শুরু হয়েছে। হাতের কারসাজিতে রঙিন ফনড্যান্টে মৎস্যকন্যা, ল্যাপটপ, কোথাও আবার খুদের প্রিয় কার্টুন ক্যারেক্টার তৈরি হচ্ছে কেকের উপরে। তবে ফনড্যান্ট ছাড়াও এমন অনেক উপকরণ আছে, যা দিয়ে কেক সুন্দর সাজানো যায়।
হুইপড ক্রিমের সাজে
• হুইপড ক্রিম সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ফনড্যান্টের বাইরে। কাপকেক বা টার্টের উপরেও পাইপিং ব্যাগে ক্রিম ভরে সুন্দর ফুল, পাতা তৈরি করতে পারেন। একান্তই ফনড্যান্ট ব্যবহার করতে হলে একদম উপরের লেয়ারে ছোট্ট কিছু বানাতে পারেন তা দিয়ে।
• আনারস দিয়েই তৈরি করে ফেলতে পারেন ফুল। তার জন্য পাতলা করে আনারসের টুকরো কেটে নিন। এ বার আভেনে রোস্ট করুন আনারসের টুকরো। আপনি কেমন রং চাইছেন, তার উপরে রোস্ট করার সময় নির্ভর করবে। সোনালি রং ধরে রাখতে চাইলে মিনিট আটেক আর একটু খয়েরি রং চাইলে মিনিট বারো রোস্ট করতে হবে। রোস্ট হয়ে গেলে তা বার করে গোল বাটির মধ্যে ঢুকিয়ে সেট করুন। তা হলে ফুলের মতো গোল থাকবে। ঠান্ডা হলে এটা দিয়েই সাজাতে পারেন কেক (পাইনঅ্যাপল গ্যাটো)।
• এডিবল ফ্লাওয়ার কিনেও সাজানো যায় কেক। এতে বেশি খাটনিও নেই, ফুলও খাওয়া যাবে। ফ্রেশ ফ্লাওয়ার দিয়ে কেক সাজাতে চাইলে ফুলের ডাঁটি কেটে ভাল করে শুকিয়ে র্যাপ করে কেকের উপরে বসাতে হবে (চকলেট ট্রাফল)।
• রাইস পেপারও (সেল) ব্যবহার করতে পারেন কেকের ডেকরেশনে। সুশি তৈরি করার জন্য যে রাইস পেপার পাওয়া যায়, তা এডিবল কালারে রাঙিয়ে নিন। তার পরে হাতের কারিকুরিতে ব্যাগ, বোকে, বাকেট তৈরি করে নিতে পারেন (পাইনঅ্যাপল কেকের উপরে পাতা তৈরি করে বসানো হয়েছে)।
ফলের কুচি, মোরব্বা দিয়েও সাজাতে পারেন। শুধু কেকের উপরে ডেকরেশন করলেই চলবে না। পরিবেশনের সময়েও সুন্দর ডয়েলি বা কাজ করা ট্রের উপরে রাখতে পারেন। এতেও কেকের আবেদন বাড়বে বইকি!
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন