আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ইসলাম

এরতুগ্রুল: ভারতের মুসলিম তরুণরা যে কারণে মজেছেন তুরস্কের টেলি-সিরিয়ালে

এরতুগ্রুল সিরিজের একটি প্রোমো
এরতুগ্রুল সিরিজের একটি প্রোমো

কাশ্মীরের সোপোর, পুলওয়ামা বা বারামুলা-তে এর আগে কস্মিনকালেও ‘এরতুগ্রুল’ নামে কেউ ছিল না। অথচ গত দু-তিন বছরে ভ্যালিতে যে শিশুরা জন্মেছে, সেই নবজাতকদের অনেকেরই নাম রাখা হয়েছে এরতুগ্রুল।

শীতের মরশুমে তো কাশ্মীরে দেখা যাচ্ছে এরতুগ্রুল স্টাইলে’র টুপিও। গাঢ় ওয়াইন-রঙা এই ধরনের মাথা ও কান-ঢাকা ফার বা পশমী টুপি তুরস্কে খুব জনপ্রিয় হলেও কাশ্মীরে তা কিন্তু কখনওই পরার কোন চল ছিল না।

আর এই সব পরিবর্তনের পেছনেই আছে একটি অসম্ভব জনপ্রিয় তুর্কী টেলি-ড্রামা, যার নাম ‘ডিরিলিস: এরতুগ্রুল’।

ডিরিলিস শব্দের অর্থ রেজারেকশন বা পুনর্জন্ম, আর তুরস্কের অটোমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠার আগের ইতিহাস নিয়ে তৈরি এই টানটান নাটকে কাশ্মীর এখন একেবারে মন্ত্রমুগ্ধ – বিশেষ করে সেখানকার তরুণ প্রজন্ম।

ত্রয়োদশ শতকে ওঘুজ তুর্কীদের নেতা এবং সে দেশের কিংবদন্তী নায়ক এরতুগ্রুলের জীবন নিয়েই বাঁধা হয়েছে এর গল্প। এই এরতুগ্রুল ছিলেন অটোমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ওসমানের পিতা।

কাশ্মীরে ইদানীং নবজাতকদের নাম রাখা হচ্ছে এরতুগ্রুলের নামে
কাশ্মীরে ইদানীং নবজাতকদের নাম রাখা হচ্ছে এরতুগ্রুলের নামে

মুসলিম বিশ্বের নানা দেশে দারুণ জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর এই এপিক তুর্কী ড্রামাটি এখন কাশ্মীর-সহ ভারতের মুসলমানদের মধ্যেও ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

পাঁচটি সিজনে পরিব্যাপ্ত ৪৪৮টি এপিসোড বা পর্বের এই বিশাল উপাখ্যান অনেকে মাত্র এক-দেড় মাসের মধ্যেও পুরোটা দেখে ফেলেছেন।

ভারতে এরতুগ্রুলের প্রভাব নিয়ে গবেষণা

এরতুগ্রুল কীভাবে ভারতে এতটা জনপ্রিয়তা পেল, তা নিয়ে বিশদে সমীক্ষা করেছেন হায়দ্রাবাদের মৌলানা আজাদ জাতীয় উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন অধ্যাপক – সমাজতত্ত্ব বিভাগের শাহীদ মিও এবং ইতিহাস বিভাগের ইকরামুল হক।

অধ্যাপক শাহীদ মিও বিবিসিকে বলছিলেন, “কাশ্মীরে ইন্টারনেটের কী হাল সবাই জানেন। আমি যখন কাশ্মীরি ছাত্রদের আজকাল অনলাইনে ক্লাস নিই, ব্যান্ডউইথের সমস্যায় তারা আমাকে ঠিকমতো শুনতেই পান না।”

“অথচ সেই একই ছাত্ররা আমাকে বলেন, এরতুগ্রুলের একটা এপিসোডও ছাড়া যাবে না। দুর্বল নেট নিয়েই, বাফারিং সহ্য করেই তারা হুমড়ি খেয়ে পড়েন মোবাইল ফোনে এই তুর্কী নাটক দেখার জন্য!”

অধ্যাপক ড. শাহীদ মিও
অধ্যাপক ড. শাহীদ মিও

বস্তুত ২০১৭ সালের অক্টোবরে নেটফ্লিক্স তুরস্কের এই ঐতিহাসিক ড্রামাটি অনলাইনে ‘স্ট্রিম’ করতে শুরু করার পরই ভারতে তা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তুমুল সাড়া ফেলে।

অধ্যাপক ইকরামুল হকের কথায়, “আজকের ভারতবর্ষে মুসলিমরা যে আত্মপরিচয়ের সঙ্কট বা আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগছেন, সেই শূন্যতার জায়গা থেকেই হয়তো তারা ভিনদেশি এই ঐতিহাসিক উপাখ্যানের সঙ্গে নিজেদের অনেকটা ‘রিলেট’ করতে পারছেন – আর সে কারণেই এরতুগ্রুল এদেশেও এতটা জনপ্রিয় হয়েছে।”

কিন্তু ভারত ও তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্ক যখন অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন তুরস্কেরই একটি টেলি-ড্রামা ভারতীয় মুসলিমদের মধ্যে এতটা সাড়া ফেলার আর কি কোন রহস্য রয়েছে?

গবেষণা রিপোর্টটির অন্যতম লেখক ড. হক বিবিসিকে বলেন, “একটা ফ্যাক্টর তো এটার টানটান গল্প, নাটকীয়তায় ভরা প্লট, দারুণ অভিনয় আর দুর্ধর্ষ স্পেশাল এফেক্টস। এরতুগ্রুল একবার দেখতে বসলে সেটা ছেড়ে ওঠাই মুশকিল।”

“ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণে ভারতীয় মুসলিমরাও হয়তো এই তুর্কী গল্পটা ভালবেসে ফেলছেন, একাত্ম বোধ করছেন।”

ভারতে সম্প্রদায়ের মানুষদের পিটিয়ে মারার ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে মুসলিমদের প্রতিবাদ
ভারতে সম্প্রদায়ের মানুষদের পিটিয়ে মারার ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে মুসলিমদের প্রতিবাদ

“কিন্তু তার মানে এই নয় যে তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতি এর মাধ্যমে তাদের কোনও মুগ্ধতা তৈরি হচ্ছে। আসলে এটা শেষ পর্যন্ত ড্রামা-ই, কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা কূটনীতির সঙ্গে এর তেমন সম্পর্ক আছে বলে মনে করি না।”

ইসলামী দুনিয়া এরতুগ্রুলকে কী চোখে দেখছে?

মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশই মনে করে, এই টেলি-নাটকের মধ্যে দিয়ে তুরস্ক কিন্তু কূটনীতিতে তাদের ‘সফট পাওয়ার’ প্রয়োগ করতে চাইছে।

এরতুগ্রুল ঠিক কী ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক বার্তা দিচ্ছে, তা নিয়ে বিতর্কের জেরে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরে এই সিরিজগুলো এরই মধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মিশরের সর্বোচ্চ ফতোয়া কাউন্সিল এক বিবৃতিতে এমনও বলেছে যে এই টেলি-ড্রামার মাধ্যমে তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যে তাদের নিজস্ব ‘প্রভাব বলয়’ তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

তবে পাশাপাশি তুরস্কের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ পাকিস্তানে কিন্তু এরতুগ্রুল অসম্ভব জনপ্রিয় হয়েছে।

পাকিস্তানে লাহোরের রাস্তায় এরতুগ্রুল গাজীর মূর্তি
পাকিস্তানে লাহোরের রাস্তায় এরতুগ্রুল গাজীর মূর্তি

পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত পিটিভি এই সিরিয়ালটির প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে মিলে এরতুগ্রুলের জন্য আলাদা একটি ইউটিউব চ্যানেলও চালু করেছে, যেখানে উর্দু ডাবিংয়ে এই নাটকটির সব এপিসোড দেখা যায়।

ওই ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ৮৮ লক্ষেরও বেশি। গত জুন মাসে তুর্কী সংবাদ সংস্থা টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানিয়েছিল, পাকিস্তানের লাহোর শহরে এরতুগ্রুল গাজীর দুটি মূর্তিও বসানো হয়েছে।

তবে এরতুগ্রুল সিরিজ নিয়ে খোদ তুরস্কের ভেতরেও কিন্তু বিতর্ক থেমে নেই।

সে দেশে ‘ডিরিলিস: এরতুগ্রুল’-এর সমালোচকরা মনে করেন যে এই সিরিজের মাধ্যমে সুকৌশলে যে মুসলিম জাতীয়তাবাদের বার্তা দেওয়া হয়েছে, তা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে তার ক্ষমতা সংহত করতে সাহায্য করছে।

এমন কি, এই সিরিজের লেখক ও প্রযোজক মেহমেত বোজডাগ-ও প্রেসিডেন্টের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

মি. এরদোয়ান নিজেও বহুবার প্রকাশ্যে এই সিরিজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

ভারতে যেভাবে সিরিজটি জনপ্রিয়তা পেল

গত মে মাসের মাঝামাঝি এরতুগ্রুলের প্রযোজক সংস্থা টিআরটি-র একজন সিনিয়র কর্মকর্তা, রিয়াদ মিন্টি একটি খুব ইন্টারেস্টিং টুইট করেন।

গুগল ট্রেন্ডস থেকে নেওয়া একটি গ্রাফ শেয়ার করে তিনি লেখেন, “ভারতীয়রা এখন ইউটিউবে শাহরুখ খানের চেয়েও অনেক বেশি সার্চ করছে এরতুগ্রুলের ভিডিও!”

ড. শাহীদ মিও কিন্তু এই পরিসংখ্যানে এতটুকুও বিস্মিত নন।

বিবিসিকে তিনি বলছিলেন, “এই সিরিজের বহু দর্শকের সঙ্গে কথা বলে আমরা যে ধারণাটা পেয়েছি, তাহলো এই মুহুর্তে মুসলিমরা ভারতে যে এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা ও অসহায়তায় ভুগছেন, সেই সঙ্কট থেকে তাদের একটা উত্তরণের স্বপ্ন দেখাচ্ছে এই সিরিজ।”

“তা ছাড়া ভারতীয় সিনেমায় বর্বর শাসক বা নৃশংস খুনী হিসেবে মুসলিম চরিত্রগুলোকে যেভাবে স্টিরিওটাইপিং করা হয়, তা সে সুলতান আলাউদ্দিন খিলজিই হোক বা মাফিয়া করিম লালা – সেখান থেকেও এটা একটা ‘রিফ্রেশিং’ পরিবর্তন।”

“মুসলিম চরিত্রগুলোকে যে পক্ষপাতশূন্য দৃষ্টিতে এভাবেও তুলে ধরা যায়, অবচেতনে সেটা আবিষ্কার করেও তারা বোধহয় এরতুগ্রুলে আরও বেশি হুকড হয়ে পড়েছেন,” বলছিলেন শাহীদ মিও।

তার সহ-গবেষক অধ্যাপক ইকরামুল হক যোগ করেন, “ভারতের গ্রামেগঞ্জে বেশির ভাগ মুসলিম কিন্তু জানেন, তারা মুসলিম সমাজের উচ্চবর্ণের অংশ নন। তারা সৈয়দ বা শেখ বংশোদ্ভূত নন – বরং তারা নিজেদের ‘পাসমান্দাজ’ বলেই মনে করেন, উর্দুতে যার অর্থ হল পশ্চাৎপদ বা পিছিয়ে থাকা শ্রেণী।”

ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সফরে গিয়ে কাশ্মীরের মুসলিমদের প্রতি সংহতি জানান তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান
ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সফরে গিয়ে কাশ্মীরের মুসলিমদের প্রতি সংহতি জানান তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

“সেই সঙ্গে তারা এটাও জানেন তাদের পূর্বপুরুষরা আফগানিস্তান, আরব বা তুরস্ক থেকে আসেননি। তারা ভারতেরই ভূমিপুত্র, যারা কয়েকশো বছর আগে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন।”

“কিন্তু আজকের এই সময়ে ভারতীয় মুসলিমদের মধ্যে নিজেদের ধর্মীয় পরিচয়টা সোজাসুজিভাবে ঘোষণা করার ঝোঁক বাড়ছে। রানা আইয়ুব, রানা সাফভী-র মতো অ্যাক্টিভিস্ট, যারা কোনও মতেই ফ্যানাটিক বা উগ্রবাদী নন – তারাও কিন্তু ঠিক একই জিনিস করছেন।”

“একটা তুর্কী সিরিজ গোগ্রাসে গেলার মধ্যেও আমি সেই প্রবণতারই প্রতিফলন দেখছি”, বলছিলেন ইকরামুল হক।

ভারতের হিন্দুরা কীভাবে দেখছে এরতুগ্রুলকে?

হায়দ্রাবাদের দু’জন গবেষকই জানাচ্ছেন যে ভারতে হিন্দুদের মধ্যেও কিন্তু এই তুর্কী সিরিজটি কম জনপ্রিয় নয়।

শাহীদ মিও আর ইকরামুল হক দু’জনের অভিজ্ঞতাই বলছে, তাদের হিন্দু বন্ধুবান্ধব-সহকর্মী বা পরিচিতজনদের মধ্যেও অনেকেই ‘ডিরিলিস: এরতুগ্রুল’ এর মধ্যেই আদ্যোপান্ত দেখে ফেলেছেন।

অধ্যাপক ড. ইকরামুল হক
অধ্যাপক ড. ইকরামুল হক

তারা প্রায় প্রত্যেকেই বলেছেন, তুর্কী ইতিহাসের গল্পটা এখানে খুব বড় কথা নয় – এরতুগ্রুলের নাটকীয়তা, প্লট বা মেকিংয়ের জন্যই তারা এই সিরিজ মাঝপথে ছাড়তে পারেননি।

তবে এরতুগ্রুলকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভারতীয় ও পাকিস্তানিদের ধর্মীয় লড়াই-ও কিন্তু থেমে নেই।

ভারতের প্রথম সারির দৈনিক ‘দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া’ কিছুদিন আগেই রিপোর্ট করেছিল, এরতুগ্রুলকে কেন্দ্র করে প্রধানত ভারতের হিন্দুরা কীভাবে পাকিস্তানি মুসলিমদের সঙ্গে ধর্মীয় বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে।

‘অপইন্ডিয়া’ নামে ভারতের একটি হিন্দুত্ববাদী পোর্টাল সম্প্রতি লিখেছে, “পাকিস্তানিদের মতো এরতুগ্রুল দেখতে শুরু করে ভারতীয় মুসলমানেরা আসলে দেশের সঙ্গে বেইমানি করছেন!”

অপইন্ডিয়ার বক্তব্য ছিল, “এর মাধ্যমে ভারতীয় মুসলমানেরা আসলে তাদের হিন্দু ঐতিহ্যকে অস্বীকার করতে চাইছেন এবং তুর্কী বা আরব দুনিয়ার দিকে তাকিয়ে নিজেদের আইডেন্টিটি ক্রাইসিস ঘোচাতে চেষ্টা করছেন।”

এই ধরনের ঢালাও অভিযোগ সত্ত্বেও ভারতে কিন্তু এরতুগ্রুলের আকর্ষণ ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে।

মুসলিমদের মধ্যে তো বটেই, এমন কী অল্প অল্প করে হিন্দুদের মধ্যেও।

আর পাকিস্তানিরা কেউ কেউ সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে এমনও দাবি করেছেন যে নরেন্দ্র মোদী সরকার না কি ভারতে এরতুগ্রুল নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।

তবে এই বক্তব্য সত্যি নয় মোটেই। যে কোনও কারণেই না কেন হোক – ভারত কিন্তু এই তুর্কী সিরিজটিকে এ দেশে কখনওই নিষিদ্ধ করেনি।

  • অধ্যাপক ড. ইকরামুল হক

    অধ্যাপক ড. ইকরামুল হক

  • ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সফরে গিয়ে কাশ্মীরের মুসলিমদের প্রতি সংহতি জানান তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

    ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সফরে গিয়ে কাশ্মীরের মুসলিমদের প্রতি সংহতি জানান তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

  • পাকিস্তানে লাহোরের রাস্তায় এরতুগ্রুল গাজীর মূর্তি

    পাকিস্তানে লাহোরের রাস্তায় এরতুগ্রুল গাজীর মূর্তি

  • ভারতে সম্প্রদায়ের মানুষদের পিটিয়ে মারার ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে মুসলিমদের প্রতিবাদ

    ভারতে সম্প্রদায়ের মানুষদের পিটিয়ে মারার ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে মুসলিমদের প্রতিবাদ

  • অধ্যাপক ড. শাহীদ মিও

    অধ্যাপক ড. শাহীদ মিও

  • কাশ্মীরে ইদানীং নবজাতকদের নাম রাখা হচ্ছে এরতুগ্রুলের নামে

    কাশ্মীরে ইদানীং নবজাতকদের নাম রাখা হচ্ছে এরতুগ্রুলের নামে

  • এরতুগ্রুল সিরিজের একটি প্রোমো

    এরতুগ্রুল সিরিজের একটি প্রোমো

  • অধ্যাপক ড. ইকরামুল হক
  • ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সফরে গিয়ে কাশ্মীরের মুসলিমদের প্রতি সংহতি জানান তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান
  • পাকিস্তানে লাহোরের রাস্তায় এরতুগ্রুল গাজীর মূর্তি
  • ভারতে সম্প্রদায়ের মানুষদের পিটিয়ে মারার ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে মুসলিমদের প্রতিবাদ
  • অধ্যাপক ড. শাহীদ মিও
  • কাশ্মীরে ইদানীং নবজাতকদের নাম রাখা হচ্ছে এরতুগ্রুলের নামে
  • এরতুগ্রুল সিরিজের একটি প্রোমো
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

ইসলাম

পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম ১৭ নভেম্ব

দেশের আকাশে ১৪৪৩ হিজরি সালের পবিত্র রবিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা গিয়েছে। ফলে রবিবার থেকে পবিত্র রবিউস সানি মাস গণনা করা হবে।

সেই হিসেবে দেশে আগামী ১১ রবিউস সানি ১৪৪৩ হিজরি (১৭ নভেম্বর, বুধবার) পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম পালিত হবে।

শনিবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান। 

সভায় সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে পবিত্র রবিউস সানি মাসের চাঁদ দেখার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় চাঁদ দেখা কমিটি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ইসলাম

নামাজের রাকাতসংখ্যায় সন্দেহ হলে কী করবেন?

নামাজে থাকাকালীন কারও মনে সংশয় জাগে কত রাকাত হলো, রাকাত ভুলে ছুটে যায়নি তো? কিংবা নামাজের পরেও সন্দেহ জাগতে পারে রাকাত পূর্ণ হয়েছে নাকি হয়নি। নামাজের রাকাতসংখ্যায় সন্দেহ হলে কী করবেন- সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত নির্দেশনা:

নামাজ পড়ার সময়ে রাকাতসংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে এবং এই সন্দেহ প্রথমবারের মতো হলে ওই নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। নামাজ পুনরায় পড়া আবশ্যক। (ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৮)

নামাজের সালাম ফেরানোর পর যদি রাকাতসংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয়, তবে তার নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। (ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৮)

কারও যদি নামাজের পর দৃঢ়বিশ্বাস হয় যে কিছু রাকাত পড়া হয়নি এবং যদি নামাজ পরিপন্থী কোনো কাজ না হয়ে থাকে, তাহলে ছুটে যাওয়া রাকাত পড়ে নেবে। যদি নামাজ পরিপন্থী কোনো কাজ হয়ে যায়, তাহলে ওই নামাজ পুনরায় পড়বে। (ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৪)

যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, তবে যেদিকে তার মন বেশি যায়, সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তবে কমটির ওপর আমল করবে এবং প্রতি রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে এবং শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৮৮)

তিন রাকাত পড়া হয়েছে নাকি চার রাকাত- সে ব্যাপারে সন্দেহ হলে তিন রাকাত মনে করে চতুর্থ রাকাত পড়বে। এরপর শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১৬৭৭)

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ইসলাম

আজান শোনার পর প্রিয় নবি (সা.)-এর সুন্নাত কী?

প্রিয় নবির ঘর সুমহান আদর্শের কেন্দ্রবিন্দু। এ ঘর থেকে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তম আদর্শ, পরিপূর্ণ আদব, অতুলনীয় শিষ্টাচার ও স্বাধীন সমাজ ব্যবস্থা। নবিজীর যুগে এমন সমাজ ব্যবস্থা প্রবতির্তত হয়েছিল যে, পরিবারের সবাই সমভাবে কাজ করতেন। পুরুষরা স্ত্রীদের কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতেন। আর একটি সময় হলেই সবাই একত্রিত হতেন। তা ছিল নামাজের আজান। আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুহূর্তের মধ্যে সবাই কাজ রেখে নামাজ পড়তে মসজিদে একত্রিত হতেন।

স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিবারিক কাজে সময় দিতেন। স্ত্রীদের কাজে সহযোগিতা করতেন। নামাজের আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ ছেড়ে দিতেন। হাদিসে পাকের একাধিক বর্ণনা থেকে প্রমাণিত যে-

১. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে কী কী কাজ করতেন? তিনি উত্তর দেন-

كان بشرًا من البشر: يفلي ثوبه ويحلب شاته، ويخدم نفسه

‘তিনি একজন মানুষ ছিলেন, তিনি তাঁর কাপড় সেলাই করতেন, ছাগলের দুধ দহন করতেন এবং নিজের কাজ নিজেই করতেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)

তিনি কি শুধু সাধারণ মানুষের মতো মানুষ ছিলেন? না তিনি ছিলেন চারিত্রিক মাদুর্য ও বিনয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কোনো গুণেই কেউ তার সমকক্ষ ছিল না। তিনি যেমন বিনয়ী ছিলেন, তেমনি ছিলেন অহংকারমুক্ত মানুষ।

প্রিয় নবি কেমন মানুষ ছিলেন? তিনি কোনো দিন কাউকে কষ্ট দেননি। তিনি ছিলেন প্রতিটি কাজে অংশগ্রহণকারী সেরা মানুষ। অন্যকে সেরা সাহায্যকারী ও শ্রেষ্ঠ মানুষ। ইবাদত-বন্দেগি ও আল্লাহর হুকুম পালনে তিনি ছিলেন অনুকরণীয় আদর্শ। তাঁর প্রতি নাজিল হয়েছে এ আয়াত-

لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰهِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰهَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَکَرَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا

‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য রাসুলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ২১)

আজান শোনার পর প্রিয় নবির সুন্নাত

কোরআনের ঘোষণার পরও তিনি আল্লাহর ইবাদাত ও তার অনুসরণ থেকে কখনো বিরত হতেন না। বরং মসজিদে আজান হওয়ার ধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তাতে সাড়া দিয়ে সব কাজ রেখে মসজিদে ছুটে যেতেন। হাদিসের বর্ণনায় এসেছে-

হজরত আসওয়াদ বিন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাড়ীতে কি কি ধরনের কাজ করতেন? উত্তরে তিনি বললেন-

كان يكون في مهن أهله، فإذا سمع بالأذان خرج

‘তিনি তার পরিবারের সব কাজে নিয়োজিত থাকতেনতবে আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন।’ (বুখারি)

ফরজ নামাজ মসজিদে পড়ার গুরুত্ব

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে, তিনি বাড়িতে ফরজ নামাজ পড়েছেন। তবে তিনি মৃত্যুর আগ মুহূর্তে যখন প্রচণ্ড রোগাক্রান্ত; শোয়া থেকে উঠতে পারছিলেন না; যখন মসজিদে যেতে অপরাগ ছিলেন তখন বাড়িতে নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু তিনি দরজা দিয়ে মসজিদে নামাজ পড়ার দৃশ্য অস্রুসিক্ত নয়নে অবলোকন করতেন।

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের প্রতি খুবই দয়াশীল ছিলেন। কিন্তু নামাজের জামাতের অংশগ্রহণের ব্যাপারে তাঁর মতো এতো কঠোর দ্বিতীয় আর কেউ ছিল না। তিনি জামাতে অনুপস্থিত ব্যক্তিদের ব্যাপারে এভাবে কঠোর শাস্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে-

لقد هممت أن آمر بالصلاة فتقام ثم آمر رجلاً أن يصلي بالناس ثم أنطلق معي برجال معهم حزم من حطب إلى قوم لا يشهدون الصلاة فأحرق عليهم بيوتهم

‘আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি কাউকে নামাজের ইমামতি করার আদেশ দেই আর আমি কাঠসহ কিছু লোককে সঙ্গে নিয়ে ঐ সব লোকদের বাড়িতে যাই; যারা জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার জন্য উপস্থিত হয়নি। এরপর তারাসহ তাদের বাড়ি-ঘরকে জালিয়ে দেই।’ (বুখারি ও মুসলিম)

মসজিদে না গেলে নামাজ কবুল হবে না!

মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়ার প্রতি ছিল নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিশেষ গুরুত্ব। শরিয়তের ওজর ছাড়া আজান শোনার পর মসজিদে না গেলে নামাজ কবুল হবে মর্মেও প্রিয় নবি ঘোষণা করেছেন-

من سمع النداء فلم يجب فلا صلاة له إلا من عذر، والعذر خوف أو مرض

‘শরিয়তের ওজর ব্যতিত যে ব্যক্তি আজান শোনার পর জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করলো নাতার নামাজ কবুল হবে না।’ (তিরমিজি) আর ওজর বলতে: শত্রুর ভয় অথবা রোগকে বুঝানো হয়েছে।

প্রিয় নবির যুগের সে দৃশ্য আজ কোথায়? কোথায় সেই নামাজি? মসজিদে আজান হয় ঠিকই কিন্তু মসজিদের কাতারপূর্ণ হয় না। অথচ বর্তমান সময়ে মসজিদে নামাজ পড়তে না যাওয়ার পেছনে নেই কোনো শরিয়তের ওজর। না কোনো শত্রুর ভয় কিংবা বিপদের ভয়।

মুমিন মুসলমান মাত্রই উচিত, আজান হলে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সোনালী যুগের মতো কাজ রেখে মসজিদে উপস্থিত হওয়া। একত্রে নামাজ আদায় করা। প্রিয় নবির প্রিয় সুন্নাতকে জাগ্রত করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ইসলাম

হিজরতের কঠিন বিপদে যে দোয়া নাজিল হয়েছি

মানসিক চাপ, বিষন্নতা ও জীবনের নানা কষ্ট থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর সাহায্যের বিকল্প নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনের ঝুঁকির মুহূর্তে আল্লাহর নির্দেশে মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার সময় চরম বিপদের মুহূর্তে প্রশান্তি স্বরূপ এ আয়াতটি নাজিল হয়। যা সত্যিই প্রশান্তির। এ আয়াতটি পড়লে এমনিতেই কঠিন বিপদে মিলে প্রশান্তি ও নিরাপত্তা। তাহলো-

رَّبِّ اَدۡخِلۡنِیۡ مُدۡخَلَ صِدۡقٍ وَّ اَخۡرِجۡنِیۡ مُخۡرَجَ صِدۡقٍ وَّ اجۡعَلۡ لِّیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ سُلۡطٰنًا نَّصِیۡرًا

উচ্চারণ : রাব্বি আদ্খিলনি মুদ্খালা সিদ্ক্বিও ওয়া আখরিঝ্নি মুখরাঝা সিদ্ক্বিও ওয়াঝ্আললি মিল্লাদুংকা সুলত্বানান নাছিরা

অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! তুমি আমাকে কল্যাণসহ প্রবেশ করাও এবং কল্যাণসহ বের কর। আর তোমার কাছ থেকে আমাকে দান কর সাহায্যকারী শক্তি।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৮০)

উল্লেখ্য, এ আয়াতটি প্রিয় নবির হিজরতের সময় নাজিল হয়েছিল। যখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা থেকে বের হওয়ার এবং মদিনাতে প্রবেশ করার সময় উপস্থিত হয়েছিল।

কেউ কেউ বলেন, এ প্রার্থনামূলক আয়াতের মর্মার্থ হলো- সত্যের উপর আমার মৃত্যু দিও এবং সত্যের উপর আমাকে কেয়ামতের দিন উত্থিত করো।

আবার কেউ কেউ বলেন, সত্যতার সঙ্গে আমাকে কবরে প্রবিষ্ট করো এবং কেয়ামতের দিন সত্যতার সঙ্গে আমাকে কবর থেকে বের করো ইত্যাদি।

ইমাম শাওকানি বলেন, এ আয়াতটি যেহেতু দোয়া; বিধায় এর ব্যাপকতায় উল্লিখিত সব কথাই এসে যায়।

কেউ কেউ বলেন, যারা বিভিন্ন কষ্ট ভোগ করেন, তারাও এ দোয়াটি প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজের পর পড়তে পারেন। আশা করা যায়, এতে তার উল্লেখিত রোগ ও সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।

আবার কেউ কেউ বলেছেন, যদি কারো ডায়বেটিস রোগ হয়; তবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম ও শৃঙ্ক্ষলাবদ্ধ জীবনের পাশাপাশি এ দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা। এ রোগ থেকে মুক্ত থাকতে এটিকে কোরআনি আমল মনে করা হয়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিভিন্ন রোগ মুক্তিতে কোরআনের এ আয়াতের আমলটি বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার ও পরকালের সব বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ইসলাম

কেয়ামতের দিনের মুক্তিতে মুমিনের করণীয় কী?

শিরকমুক্ত ঈমান এবং নেক আমল ছাড়া কেয়ামতের দিন মুক্তির বিকল্প নেই। কেয়ামতের ময়দানে সব মানুষ আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকবে। এমনকি নবি-রাসুলগণও আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকবেন। কারণ কেউ জানেন না আল্লাহ তাআলা সে দিন কার সঙ্গে কীরূপ ব্যবহার করবেন।

হাদিসের বর্ণনায় যদিও কেয়ামতের দিনের ভয়বাহতার বর্ণনা দিয়েছেন প্রিয়নবি। তিনি সেদিন সেজদায় থাকবেন। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তাকে সেজদা থেকে উঠতে বলবেন। তিনি সেজদা থেকে মাথা উঠিয়ে বিচার কাজ শুরু করার জন্য সুপারিশ করবেন। তারপরই শুরু হবে পরকালের বিচারকার্য।

সেদিন যার আমলনামা ভালো হবে সে সফল হবে। শুধু মানুষ নয়, সেদিন নবি-রাসুলরা কতটা ভয়াবহ সময় কাটাবেন তা হাদিসের একটি বর্ণনা থেকেই সুস্পষ্ট-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাজিল হয়-
وَأَنذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ
(হে রাসুল!) আপনি আপনার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক করুন।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ২১৪)
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন-
> হে কুরাইশ দল! (তোমরা আল্লাহর একত্ববাদ ও ইবাদতের ধারায়) নিজেদের আত্মাকে প্রস্তুত কর। আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো কাজে আসতে পারব না।
> হে বনি আবদে মানাফ! আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো উপকার করতে পারব না।
> হে আব্দুল মুত্তালিবের পুত্র আব্বাস! আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোনো উপকার করতে পারব না।
> হে রাসুলের ফুফু সাফিয়্যাহ! আমি আল্লাহর কাছে আপনার কোনো কাজে আসব না।
> হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যা ফাতেমা! তুমি আমার সম্পদ থেকে যা ইচ্ছা চেয়ে নাও। আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোনো কাজে আসব না।’ (বুখারি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের করণীয়-
এ সতর্কবার্তা ঘোষণার পরপরই মহান আল্লাহ তাআলা পরবর্তী আয়াতে প্রিয়নবিকে অনুসরণ ও অনুকরণ করার যে ঘোষণাগুলো দিয়েছেন, সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। আর তাহলো-
‘আর মুমিনদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করে, তাদের প্রতি তোমার বাহুকে অবনত কর। তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বল, তোমরা যা কর, নিশ্চয় আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। আর তুমি মহাপরাক্রমশালী পরম দয়ালু (আল্লাহর) উপর তাওয়াক্কুল কর। যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি (নামাজে) দণ্ডায়মান হও এবং সেজদাকারীদের মধ্যে তোমার ওঠা-বসা। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা মহাজ্ঞানী।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ২১৫-২২০)

আল্লাহর একত্ববাদ ও ইবাদতে যদি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিজ বংশধর, চাচা, ফুফু ও কন্যার ব্যাপারে এমন ঘোষণা দেন তবে অন্যান্য মুসলমান কিভাবে আল্লাহর নাফরমানি করে প্রিয়নবির শাফায়াত লাভের আশা করতে পারে!

কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা থেকে এ কথা প্রমাণিত যে, শিরক মুক্ত ঈমান ও নেক আমল ছাড়া কোনো আদম সন্তানই পরকালে মুক্তি পাবে না। যারাই প্রিয় নবির অনুসরণ ও অনুকরণ করবে তাদের মুক্তি হবে নিরাপদ ও সহজ।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শিরকমুক্ত ঈমান ও নেক আমলে নিজেদের জীবন সাজানো। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালনা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শিরকমুক্ত ঈমান লাভ ও তার ইবাদত-বন্দেগিতে নিজেদের নিয়োজিত করার তাওফিক দান করুন। হাশরের ময়দানে হাদিসে ঘোষিত সব ধরনের শাফায়াত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com