শীতকালীন সবজি হলেও সারাবছরই পাওয়া যায় টমেটো। টক স্বাদের বলে এটি দিয়ে চাটনি, সস ইত্যাদিও তৈরি করা হয়। শুধু স্বাদ নয়, পুষ্টিমানের দিক থেকেও টমেটো অনন্য। সবচেয়ে বেশি উপকার মেলে টমেটো রান্না ছাড়াই খেলে। তবে রান্না করে খেলেও মেলে নানা উপকার। এই সবজিতে আছে ভিটামিন এ, কে, বি১, বি৩, বি৫, বি৬, বি৭ ও ভিটামিন সিসহ উপকারী সব উপাদান। এতে আরও আছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্রোমিয়াম, ফোলেট, আয়রন, ফসফরাস, কোলিন ও কপার। এসব উপাদান আমাদের শরীর ভেতর থেকে সুস্থ রাখে।
# রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগলে নিয়মিত টমেটো খাওয়া উচিত। কারণ এতে থাকা পটাশিয়াম শরীরে রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। টমেটোতে আরও আছে প্রচুর খনিজ পদার্থ। তাই নিয়মিত টমেটো খেলে ত্বক ভেতর থেকে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে দ্রুতই। ত্বক ভালো রাখতে বাহ্যিক রূপচর্চার চেয়েও ভেতর থেকে যত্ন নেয়া বেশি জরুরি।
# ওজন কমায়: বাড়তি ওজন মানে বাড়তি দুশ্চিন্তা। কারণ অতিরিক্ত ওজন আরও অনেক অসুখের কারণ হতে পারে। যারা ওজন কমাতে চাইছেন কিংবা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছেন তাদের জন্য উপকারী খাবার হতে পারে টমেটো। নিয়মিত টমেটোর রস পান করলে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। প্রতিদিন চেষ্টা করুন একগ্লাস টমেটোর রস পান করতে।
# দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়: বর্তমানে একটি পরিচিত সমস্যা হলো দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া। আপনি যদি নিয়মিত পাতে টমেটো রাখেন তবে এই সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এতে আছে বিটা-ক্যারোটিন ও লাইকোপেন যা আমাদের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে টমেটো।
# কম ক্যালরি: টমেটোতে ক্যালরির পরিমাণ বেশ কম। এতে প্রায় ৯৪ শতাংশ পানি থাকে। প্রতি একশো গ্রাম টমেটোতে ১৭ গ্রাম ক্যালরি থাকে। তাই প্রতিদিন টমেটো খেলেও বাড়তি ক্যালরি জমা হওয়ার ভয় নেই।
# মেটাবলিজম বাড়ায়: মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে টমেটো। এই সবজিতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপেন। এটি শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। লাইকোপেন মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যে কারণে নিয়মিত টমেটো খেলে শরীরের বাড়তি মেদ ঝরে দ্রুত।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন