করোনা আবহে একের পর এক নতুন রান্না করেছেন কেউ। কেউ বা আবার একঘেয়ে রেসিপিতে ক্লান্ত। মাঝে মাঝে যদিও বিরিয়ানি-চাইনিজ বাড়িতে বানিয়ে স্বাদ বদল হয়, তবে ভাত বা পোলাও নিমেষে চালান হয়ে পারে পেটে, এমন পদ আর পাচ্ছেন কই?
রেস্তরাঁ হোক কিংবা বাড়ি, মালাইকারি বললেই জিভে জল বাঙালির। এই মালাইকারির কায়দা যদি ডিমে মিশে যায়, মন্দ কী? ভাবছেন চিংড়ি ছাড়া মালাইকারি আবার জমবে না কি! আজই ডিমের মালাইকারির রেসিপি বানিয়ে চমকে দিন বাড়ির সকলকে। খুদে থেকে বড় সবাই চেটেপুটে খাবে জিভে জল আনা ডিমের এই পদ। কী ভাবে বানাবেন এই পদ?
উপকরণ
ডিম ৬টি
টক দই ২ টেবিল চামচ
পেঁয়াজ কুচি আধ কাপ
টোম্যাটো কুচি আধ কাপ
কাজু বাদাম ২০ গ্রাম
চারমগজ ১০ গ্রাম
রসুন বাটা ৩ টেবিল চামচ
আদা বাটা ১ টেবিল চামচ
হলুদ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ
শুকনো লঙ্কা গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ
ধনে গুঁড়ো হাফ টেবিল চামচ
গরম মশলা গুঁড়ো ১ চা চামচ
নারকেলের দুধ আধ কাপ
নুন স্বাদ অনুযায়ী
চিনি স্বাদ অনুযায়ী
ফ্রেশ ক্রিম পরিমাণ মতো
সর্ষের তেল পরিমাণ মতো
প্রণালী: প্রথমে ডিমগুলি সেদ্ধ করে নিতে হবে। একটি পাত্রে তাতে টক দই, নুন,লঙ্কা গুঁড়ো আর সামান্য সাদা তেল দিয়ে আধ ঘণ্টা মাখিয়ে রাখুন ডিম সেদ্ধগুলিকে। চাইলে দু ভাগ করে নিতে পারেন ডিম সেদ্ধগুলি। সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন ডিম সেদ্ধগুলি ভেঙে না যায়। কড়াইয়ে তেল গরম করে ডিমগুলি হালকা ভেজে তুলে রাখুন। এ বার ওই কড়াইয়ে আরও খানিকটা তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ, টোম্যাটো, কাঁচালঙ্কা, কাজুবাদাম, চারমগজ দিয়ে ভাল করে ভেজে নিন। মিশ্রণটি ঠান্ডা করে মিক্সিতে বেটে নিতে হবে।
এ বার পুনরায় কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে আদা-রসুন বাটা ও একে একে সব গুঁড়ো মশলা দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। মশলা থেকে তেল ছেড়ে এলে ভেজে বেটে রাখা মিশ্রণ যোগ করুন। আর একটু কষিয়ে নিন। এর পর নারকেলের দুধ যোগ করুন, ভাল করে মিশিয়ে ভেজে রাখা ডিম গুলি দিয়ে দিন। গ্রেভি মাখা মাখা হয়ে এলে ফ্রেশ ক্রিম আর গরম মশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিন। গরম ভাত কিংবা পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন ডিমের মালাইকারি।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন