সারাবিশ্বে সবার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে জনপ্রিয় পানীয় কফি। কালো কফির গুণাগুণ সবাইকে মুগ্ধ করবেই। অনেকেই পেটের মেদ নিয়ে চিন্তায় থাকেন। ওজন কমাতে কালো কফির জুড়ি মেলা ভার। সুফল পেতে দিনে অন্তত দুবার কফি খেতে হবে। ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডই শরীরের ওজন কমানোর জন্য কালো কফিকে আদর্শ করে তুলেছে। ব্ল্যাক কফিতে বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস আছে, যা দ্রুত ওজন কমানোর সহায়ক। হার্টের রোগী বা ডায়াবেটিস যাদের থাকে তাদের চিনি ছাড়া কালো কফি খাওয়ারই পরামর্শ দেয়া হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যাফেইন প্রায় ৩ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত আমাদের মেটাবলিক রেট বা বিপাকের গতি বাড়ায়। ফলে অতিরিক্ত মেদ কমে অনেকটাই। এক কাপ কালো কফিতে ২০ শতাংশ ভিটামিন, ১০ শতাংশ ক্যালোরি ও খনিজ রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস কফি। কারণ এতে আছে ভিটামিন বি-টু, বি-থ্রি, বি-ফাইভ, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম।
এক কাপ কালো কফিতে ক্যালোরির পরিমাণ মাত্র ২। ডিক্যাফেইনেটেড বীজ থেকে বানানো হলে তাতে আবার একেবারেই ক্যালোরি থাকে না। এছাড়াও ব্ল্যাক কফিতে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড নামে একটি উপাদান রয়েছে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। রাতের খাবার খাওয়ার পরে এক কাপ ব্ল্যাক কফি খেলে শরীরে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড গ্লুকোজ উৎপাদনে বাধা দেয়। ফলে নতুন ফ্যাট কোষও তৈরি হয় না। পাশাপাশি কফি স্মৃতিশক্তিও বৃদ্ধি করে। অ্যালঝাইমার্স রোগ কমে অনেকটাই।
যারা টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা যদি নিয়মিত কফি পান করেন তাহলে তাদের ২৩ থেকে ৫০ শতাংশের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, সিরোসিস থেকে লিভারকে রক্ষা করে কফি। মানবদেহে কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় অনেকটাই। নর এপিনেফ্রিন এবং ডোপামিন নিঃসরণ বাড়ায়, যা নিউরনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়।
কফি সুনির্দিষ্টভাবে পান করলে পারকিনসন রোগও কমে যায় অনেকটাই। ৩২ থেকে ৬০ শতাংশ হ্রাস পায় এই ওষুধ।কার পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। নিয়ন্ত্রিত কফি পানে কমে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি।
কফি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। কফির যৌগিক উপাদান নির্দিষ্ট কিছু ধরনের ক্যান্সার যেমন- লিভার, স্তন, কোলন এবং রেক্টাল ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। কফি প্রদাহ কমায়, যা টিউমারের অন্যতম প্রধান কারণ।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে চার কাপের বেশি ব্ল্যাক কফি পান করেন তাদের বাত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। কফির শক্তিশালী অ্যান্টিওক্সিডেন্ট শরীরের ইন্সুলিন ও ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমিয়ে বাত বা গাউট রোগের ঝুঁকি কমায়। এমনকি বাত রোগ থাকলেও উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে।
ব্ল্যাক কফির সঙ্গে যদি সামান্য মধু আর লেবু যোগ করে খেতে পারেন, তাহলে যেমন স্বাদ বাড়ে তেমনই তা ওজন কমাতেও সাহায্য করে। এমনিতেই লেবু আর মধু ওজন কমানোর সহায়ক। তার সঙ্গে যদি যুক্ত হল ব্ল্যাক কফি তাহলে ওজন কমবেই।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন