কামরাঙ্গা বা ক্যারাম্বোলা বা স্টারফ্রুট (Star Fruit) গ্রীষ্মমন্ডলীয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় প্রজাতির ফল। ফলটি সাধারণত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর, মাইক্রোনেশিয়া, পূর্ব এশিয়ার কিছু অংশ এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে হয়। গাছটি বিশ্বের ক্রান্তীয় অঞ্চলজুড়ে চাষ করা হয়। ভিটামিন সি যুক্ত টক-মিষ্টি স্বাদের একটি অতি পরিচিত ফল কামরাঙ্গা।এই ফলটি খেতে অনেকেই খুব পছন্দ করে। পাকা কামরাঙ্গা দিয়ে আচার, সস, জেলি, তৈরি করা হয়।
পুষ্টিগুণ (Nutrition Value) :
কামরাঙ্গা ফল একটি অত্যন্ত স্বল্প-ক্যালোরি ফল যা ফাইবার, ভিটামিন এ, বি এবং সি, জিংক, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন এবং পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ। অধিকন্তু, এতে পলিফেনলিক যৌগ যেমন কোরেসেটিন, গ্যালিক অ্যাসিড এবং এপিকেচিনের মতো উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে.
একটি মাঝারি আকারের (91-গ্রাম) কামরাঙ্গা ফলের (1) পুষ্টি উপাদান:
ফাইবার: ৩ গ্রাম
প্রোটিন: ১ গ্রাম
ভিটামিন সি: আরডিআইয়ের ৫২%
ভিটামিন বি ৫: আরডিআইয়ের ৪%
ফোলেট: আরডিআইয়ের ৩%
তামা: আরডিআইয়ের ৬%
পটাশিয়াম: আরডিআইয়ের ৩%
ম্যাগনেসিয়াম: আরডিআইয়ের ২%
কামরাঙ্গা ফলের মধ্যে এমন অন্যান্য উপাদান রয়েছে যা এটিকে আরও স্বাস্থ্যকর করে তোলে :-
এটি কোরেসেটিন, গ্যালিক অ্যাসিড এবং এপিকেচিন সহ স্বাস্থ্যকর উদ্ভিদ যৌগগুলির একটি দুর্দান্ত উৎস।
এই যৌগগুলিতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য গুণাগুণ রয়েছে।
উপকারিতা:
১. প্রদাহ বিরোধী (Anti Inflammatory) –
কামরাঙ্গা ফলে ব্যতিক্রমী পরিমাণে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ত্বকের ব্যাধিগুলি ডার্মাটাইটিসের মতো প্রতিরোধ করতে পারে। ভিটামিন সি এর উপস্থিতি শরীর থেকে টক্সিনগুলি বের করে দেয় এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
২. হার্ট বান্ধব (Heart-friendly) –
কামরাঙ্গা ফলটি সোডিয়াম এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ যা দেহে ইলেক্ট্রোলাইট হিসাবে কাজ করে যা ফলস্বরূপ রক্তচাপ বজায় রাখতে সহায়তা করে। এই খনিজগুলি শরীরে নিয়মিত হার্টবিট এবং স্বাস্থ্যকর রক্ত প্রবাহকেও নিশ্চিত করে
৩. ওজন হ্রাস করে (Promotes weight loss) –
কামরাঙ্গা ফলের মধ্যে নগণ্য পরিমানে ক্যালোরি রয়েছে; অতএব, ক্ষুধা যন্ত্রণা কমানোর জন্য এটি একটি সুন্দর নাস্তা হতে পারে। তদুপরি, ফলের মধ্যে থাকা ফাইবারের উপাদানগুলি বিপাকের গতি বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে যা আপনার ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের সম্ভাবনা কমিয়ে ফাইবার আপনাকে দীর্ঘক্ষণ সতেজ থাকতে সাহায্য করে।
৪. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে (Regulates blood pressure) –
কামরাঙ্গা ফলের ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি রক্তনালী এবং ধমনীতে স্ট্রেস উপশম করে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো হার্ট সমস্যার ঝুঁকি হ্রাস করে। প্রেসার কমিয়ে রক্ত প্রবাহকে কার্যকর করে তোলে। এতে করে দেহে তারল্যের ভারসাম্য বজায় থাকে।
বি দ্র: যাদের কিডনির রোগ রয়েছে তাদের জন্য এই কামরাঙ্গা ক্ষতিকারক (বিষাক্ত) প্রভাব ফেলতে পারে। কামরাঙ্গাতে থাকা নিউরোটক্সিন পদার্থগুলি মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করতে পারে এবং স্নায়বিক অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন