আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

গ্রামের মধ্যে অবস্থিত বাড়িটি এখন যেন মৌবাড়িতে পরিণত হয়েছে। বাড়িটি এখন মৌমাছিদেরই দখলে বলা যায়! দোতলা ভবনের কার্নিশজুড়ে, দরজা-জানালার সঙ্গে, আঙিনায় কাঁঠাল গাছসহ বিভিন্ন গাছে ঝুলছে ২৭টি মৌচাক। এসব মৌচাকের লাখো মৌমাছির সঙ্গেই বসবাস করছেন বাড়ির লোকজন।

পাবনার সুজানগর উপজেলা সদর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে মানিকদির কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামে পুলিশ সুপার আব্দুল লতিফের বাড়িতে এ দৃশ্য এখন শোভা পাচ্ছে। তিনি বর্তমানে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত। গ্রামের বাড়িতে তার স্কুলশিক্ষক ভাই নজরুল ইসলাম ও মা বসবাস করেন।

শনিবার (৯ জানুয়ারি) মানিকদির কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামে গিয়ে এসপির বাড়ির চারদিক ঘিরে দেখা গেল, কেবল মৌচাক আর মৌচাক। বাড়ির লোকজনের কোনো ক্ষতি করছে না তারা। যদিও একটু সতর্ক থাকতে হয় বলে বাড়ির লোকজন জানান।

স্কুলশিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, এর আগে বাড়িটিতে প্রতি বছর দু-একটা মৌচাক বসতো। তবে এবার এত মৌচাক বসবে তা তিনি কল্পনাও করেননি।

তিনি বলেন, গ্রামের বাড়ি বলে সবার কাজকর্ম একটু বেশিই। মৌমাছিরও তো ছোটাছুটির অন্ত নেই। কাজ করতে গেলেই মৌমাছির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতেও মাছিগুলো ক্ষিপ্ত হচ্ছে না। মৌমাছিগুলো যেন তাদের পরিবারেরই সদস্য হয়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, পুরো বাড়ি ঘিরে বিপুল পরিমাণ মৌচাক দেখার জন্য প্রতিদিনই এ গ্রাম সে গ্রাম থেকে মানুষ আসছে। মৌয়ালদের তাগিদ তো রয়েছেই। কবে কাটা যাবে মৌচাক।

গ্রামীণ পাকা সড়কের পাশে বাড়িটি। এজন্য সেই পথে যাতায়াত করা লোকজনও দৃশ্যটি উপভোগ করছেন।

এ গ্রামে কখনো এক বাড়িতে একসঙ্গে এত মৌচাক লাগেনি বলে জানান প্রতিবেশী ও সাবেক ইউপি মেম্বার আবদুল মতিন। তিনি বলেন, এসপি হলেও লতিফ সাহেবের বাড়ি সাধারণ বাড়ির মতোই। মৌচাকগুলো এবার তাদের বাড়ির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বলে তিনি যোগ করেন।

মানিকদির কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের অদূরে সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের দুবলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুলশিক্ষক আব্দুল খালেক খান এক বাড়িতে এতগুলো মৌচাকের খবর পেয়ে দেখতে এসেছেন। বলেন, ‘আমি এত মৌচাক একসঙ্গে এই প্রথম দেখলাম, মুগ্ধ হয়েছি, আনন্দিত।’ তিনি জানান, বাজারের মধু ভেজালে ভরা; তাই তিনি খাঁটি মধু সংগ্রহ করবেন এখানে থেকে।

তারাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আমজাদ হোসেন মৌচাক দেখতে এসে জানান, দোতলা বাড়িটির চারদিকে মৌচাকে ঘেরা। বাড়ির চারপাশ দিয়ে মৌমাছিদের নাচন। তিনি বলেন, একজন আদর্শ মানুষ এসপি আব্দুল লতিফ তাদের এলাকার গর্ব। তার কাজকর্ম ও আচরণ সুন্দর বলেই বুঝি মৌমাছিরা দল বেঁধে তার বাড়িতে জড়ো হয়েছে।

গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুস সামাদ (৭০) জানান, এলাকায় অনেক কাঁচা-পাকা বাড়ি, গাছপালা রয়েছে, যেখানে তেমন কোনো মৌচাক নেই। অথচ এসপি লতিফ সাহেবেরে বাড়ির চারদিকে প্রচুর মৌচাক। তিনি বলেন, গ্রামে সেই আগের মতো আর মৌমাছির চাক বসে না। তাই খাঁটি মধুও পাওয়া যায় না। বহু বছর পর এত মৌচাক এক বাড়িতে দেখলাম।

পুলিশ সুপার আব্দুল লতিফ মোবাইল ফোনে জাগো নিউজকে বলেন, বাড়িতে অনেকগুলো মৌচাক বসেছে বলে তিনি খবর শুনেছেন। বিষয়টি বেশ আনন্দদায়ক বলে জানান। তিনি বলেন, ছুটি পেলে বাড়ি গিয়ে এ রোমাঞ্চকর সৌন্দর্য একটু উপভোগ করতে পারব।

সেই ছোটবেলা থেকে মধু সংগ্রহ করা আজকের বৃদ্ধ মৌয়াল নূরে আলম বলেন, সেই কিশোরকালে বড় বটগাছে এত মৌচাক চোখে পড়ত। সে সময় মৌচাক বেশি ছিল তাই মধুও বেশি পেতাম। আগে গ্রামে গ্রামে ঘুরে গৃহস্থের বাগান কিংবা বাড়ি থেকে মজুরি অথবা ভাগের বিনিময়ে যা মধু মিলত, তাতেই ৭-৮ মাস সংসার চলে যেত।

তিনি আরও বলেন, এখন সেই চাক আর নেই। থাকলেও চাকে আগের মতো মধু নেই। এখন মধু সংগ্রহ করে মাসখানেকও সংসার চলে না। এবার এসপি সাহেবের বাড়িতে এত মৌচাক দেখে তিনিও আনন্দিত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শামছুল আলম জানান, চাষিরা গতানুগতিক চাষে অভ্যস্ত হয়ে পড়ায় তিল, সরিষা, তিসির মতো মধুযুক্ত ফুলসমৃদ্ধ চাষ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। মধুর সন্ধানে মৌমাছিরাও তাই বনে বাদারে গিয়ে মৌচাক তৈরি করছে। পাশাপাশি অত্যধিক রাসায়নিক এবং কীটনাশক ব্যবহারের জন্য ফুলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে মৌমাছিও মারা পড়ছে। ফলে ক্ষেতে পরাগায়নও কমে যাচ্ছে। এতে মধুযুক্ত অনেক ফুলের গাছও কমে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, অবশ্য সরিষা চাষ প্রধান এলাকায় মৌমাছিরা এখনো ভিড় করে। যেমনটি মানিকদির কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামে এসপি আব্দুল লতিফের বাড়িতে একসঙ্গে এত মৌমাছি ভিড় করেছে।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

দৈনন্দিন

নিপাহ্‌ ভাইরাসঃ খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়

নিপাহ্‌ ভাইরাস খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
নিপাহ্‌ ভাইরাস খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
খেজুরের রস সংগ্রহের প্রক্রিয়া।

শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।

আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।

নিপাহ্‌ ভাইরাস আতঙ্ক

খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।

দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।

মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।

সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।

কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্‌ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

দৈনন্দিন

কই মাছে বাঁধাকপির ছেঁচকি – দা এগ্রো নিউজ

কই মাছে বাঁধাকপির ছেঁচকি
কই মাছে বাঁধাকপির ছেঁচকি

উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

দৈনন্দিন

ধনেপাতা ও টমেটোয় শোল মাছ – দা এগ্রো নিউজ

ধনেপাতা ও টমেটোয় শোল মাছ
ধনেপাতা ও টমেটোয় শোল মাছ

উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।

প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

দৈনন্দিন

লাউ টাকি – দা এগ্রো নিউজ

লাউ-টাকি
লাউ-টাকি

উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।

প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

দৈনন্দিন

বাঁধাকপির পাতায় চিংড়ি – দা এগ্রো নিউজ

বাঁধাকপির পাতায় চিংড়ি
বাঁধাকপির পাতায় চিংড়ি

উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com