আমাদের দেশে রয়েছে নানা রকমের ভেষজ ও মশলা। রান্নার স্বাদ ও গন্ধ বাড়াতে সব বাড়িতেই ব্যবহৃত হয় এসব মশলা। খাবার সাজাতে ব্যবহৃত হয় নানা ধরনের ভেষজ। জিরা থেকে কালো মরিচ, স্টার অ্যানাইস থেকে হিং, কত রকম যে মশলা পাওয়া যায়! তবে এই সবগুলো মশালারই ঔষধি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
আপনি নিশ্চয়ই প্রদাহের জন্য হলুদ ব্যবহার করার উপকারিতা এবং মুখের দুর্গন্ধের জন্য লবঙ্গ সম্পর্কে শুনেছেন। কালোজিরা তেমনই একটি উপকারী মশলা, যা তার ওজন হ্রাস এবং চিকিৎসার সুবিধার জন্য পরিচিত।
পুষ্টি কালোজিরা বিভিন্ন ধরণের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টে ভরা থাকে যা ওষুধ প্রস্তুত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শুধু আয়ুর্বেদে নয়, কালোজিরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতেও জনপ্রিয়। কালোজিরায় ভিটামিন এ, সি, কে, আয়রন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম জাতীয় পুষ্টি থাকে। এতে ফাইটোস্টেরলস সহ ফাইটোকেমিক্যালস নামে একটি সক্রিয় যৌগ রয়েছে যা ওজন ঝরাতে সহায়তা করে।
কালোজিরা কীভাবে ওজন কমায় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সক্রিয় ফাইটোকেমিক্যাল ক্ষুধা ও মেদ নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী নির্দিষ্ট জিনের অভিব্যক্তি পরিবর্তন করে ওজন কমানোর প্রক্রিয়াটিকে গতি দেয়। এছাড়া ডায়াবেটিস ও বাত ব্যথার মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের লক্ষণ কমাতেও কলোজিরা উপকারী। টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রকাশ করেছে কালোজিরা খাওয়ার এমন তিনটি উপায়, যেভাবে খেলে ওজন কমবে দ্রুত
মধু এবং লেবু দিয়ে এক চিমটি কালোজিরা পিষে গুঁড়া তৈরি করে নিন। এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে কলোজিরা গুঁড়া দিয়ে ভালো করে মেশান। এর মধ্যে এক চামচ মধু এবং এক চামচ লেবুর রস নিন। সবকিছু সুন্দরভাবে মিশিয়ে নিন এবং এটি খালি পেটে পান করুন। এটি বাড়তি মেদ দূর করতে কার্যকরী।
লেবুর রস একটি বাটিতে ৮-১০টি কালোজিরা নিয়ে তাতে অর্ধেকটা লেবুর রস মেশান। এবার এই কলোজিরা রোদে ২-৩ দিন রাখুন। ওজন হ্রাস করতে সেখান থেকে প্রতিদিন ২-৪টি কলোজিরা খান।
কয়েকটি কলোজিরা নিন এবং এটি হালকা গরম পানি দিয়ে গিলে ফেলুন। অথবা এক গ্লাস পানিতে ৮-১০টি কালোজিরা দিয়ে সারারাত রেখে দিন। সকালে পানিটুকু ছেঁকে নিয়ে পান করুন। এভাবে নিয়মিত খেলে ওজন কমবে দ্রুতই।
সাবধানতা একদিনে খুব বেশি কালোজিরা খাবেন না। কারণ এটি হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন