বিশ্বজুড়ে মানুষ অপেক্ষায় আছে একটি সুখবরের জন্য, আর সেটি হচ্ছে কবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা আসবে। মাস যত গড়াচ্ছে মানুষের অপেক্ষার সঙ্গে অস্থিরতাও তত বাড়ছে। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনা সংক্রমণের পর থেকে অনেকেই আশা করছেন, টিকাই হবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের স্থায়ী সমাধান। অবশ্য গবেষকেরা বলছেন, টিকার ওপর বিশ্বের সব দেশের মানুষের সমান আস্থা নেই। আস্থা থাকলেই মানুষ টিকা নেয়। সেদিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে।
গবেষকেরা বলছেন, টিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, কতটা নিরাপদ ও কতটা কার্যকর—এ তিনটি বিষয় আস্থা তৈরিতে সহায়তা করে। যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন, ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেলজিয়ামের সেন্টার ফর দ্য ইভালুয়েশন অব ভ্যাকসিনেশন, ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ ইনস্টিটিউটের পাঁচজন গবেষকের একটি প্রবন্ধ ১০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যভিত্তিক জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট-এ ছাপা হয়েছে। অবশ্য করোনার টিকার কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণাটি হয়নি।
টিকা কতটা নিরাপদ ল্যানসেট-এর ওই গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, টিকার ওপর আস্থা সবচেয়ে বেশি রাখে আর্জেন্টিনা ও বাংলাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ মানুষের ধারণা, টিকা নিরাপদ। এই হার বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম স্থানে আছে ম্যারাডোনা-মেসির দেশ আর্জেন্টিনা। দেশটির প্রায় ৮৯ শতাংশ মানুষ টিকা নিরাপদ বলে মনে করে। ফ্রান্স ও জাপানের মানুষ টিকাকে সবচেয়ে কম নিরাপদ বলে মনে করে। এই দুটি দেশের ৯ শতাংশ মানুষ টিকা নিরাপদ বলে মনে করে।
বিশ্বের ১৪৯টি দেশের ২ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮১ জনের মতামত ওই গবেষণার জন্য নেওয়া হয়েছে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই মতামত নেওয়া হয়। মতামত দেওয়া ব্যক্তিদের বয়স ছিল ১৮ বছর বা তার বেশি। গবেষকেরা দাবি করছেন, টিকা কতটা নিরাপদ বা টিকার ওপর আস্থা বিষয়ে এত বড় গবেষণা এর আগে হয়নি।
টিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে টিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, এ নিয়ে কী ভাবছে মানুষ গবেষণায় সেটিও উঠে এসেছে। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, টিকাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে ইথিওপিয়ার ৯৬ শতাংশ মানুষ। দ্বিতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ টিকাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। টিকার কোনো গুরুত্ব নেই জর্জিয়ার মানুষের কাছে। দেশটির মাত্র ৩ শতাংশ মানুষ মনে করে টিকা গুরুত্বপূর্ণ।
টিকা কতটা কার্যকর ইথিওপিয়ার লোকজন টিকাকে শুধু গুরুত্বপূর্ণই মনে করে, তা নয় দেশটির নাগরিকেরা বলছেন, রোগ প্রতিরোধে টিকা যথেষ্ট কার্যকর। ইথিওপিয়ার ৮৭ শতাংশ মানুষ মনে করে টিকা রোগ প্রতিরোধ করে অর্থাৎ, টিকা কার্যকর। বাংলাদেশের ৭৫ শতাংশ মানুষেরও এ রকম ধারণা। তবে এই ধারণা সবচেয়ে কম মরক্কোর মানুষের মধ্যে। দেশটির মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ মনে করে রোগ প্রতিরোধে টিকা কার্যকর।
গবেষকেরা বলছেন, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষের মধ্যে টিকার ব্যাপারে আস্থা কমেছে। আবার ২০১৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড ও ইতালির মানুষের মধ্যে আস্থা বেড়েছে।
বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, স্বাস্থ্যের জন্য টিকার গুরুত্ব আছে, রোগ প্রতিরোধে টিকা কার্যকর এবং টিকা নিরাপদ। সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশে জন্মের পর থেকে ২ বছর বয়সী শিশুদের ১০টি রোগের টিকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মহিলাদের টিটেনাস ও ডিফথেরিয়ার টিকা দেওয়া হয়। দেশে টিকাদানের হার ৮০ শতাংশের বেশি। টিকা দেওয়ার ফলে বাংলাদেশ থেকে গুটিবসন্তের বিলোপ ঘটেছে। দেশে নিউমোনিয়া, টিটেনাস ও হামের প্রকোপ কমেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। স্বাস্থ্য খাতে ১০টি চ্যালেঞ্জের একটি টিকার ব্যাপারে এই সিদ্ধান্তহীনতা বা দ্বিধায় থাকা। গবেষকেরা বলছেন, কোনো কোনো দেশে ধর্মীয় বিশ্বাস বা বিশেষ কোনো ঘটনার কারণে টিকার ব্যাপারে আস্থা নষ্ট হয়। এই আস্থা ধরে রাখার জন্য নিয়মিত নজরদারি জরুরি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি সফল, কারণ মানুষকে টিকার ব্যাপারে সচেতন করা সম্ভব হয়েছে। টিকার প্রতি মানুষের এই আস্থা করোনার টিকা দেওয়ার সময় কাজে লাগবে।’
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন