আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

এ বিষয়ে রাজউক কর্মকর্তা এবং গুলশান, বনানী ও বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আমিনুর রহমান সুমন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই লেকটা বড়লোকরা যেমন দখল করেছে, গরিবরাও করেছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে লেকটা উদ্ধার করা। লেকটা কিন্তু পানির চ্যানেল। মোট লেকটা হচ্ছে ২৯৮ একর। তার মধ্যে ৮২ একর জায়গা উদ্ধার করব। কড়াইল বস্তির লেকটা যেখানে আছে, সেখান থেকে উদ্ধার করব ৪৩ একর। কড়াইল বস্তি না কিন্তু, বস্তি পাশের অংশ। বস্তি ইনটেক থাকবে। শুধু ওয়াটার বডির (পানি চ্যানেলের ওপর গড়ে উঠা বস্তি) ওপর যে ঘরগুলো আছে, সেগুলো উচ্ছেদ করব। এটা আগে থেকেই একটা লেক। লেকের ওপর ওরা ঘর করে থাকছিল।’

‘কড়াইল বাস্তিতে প্রায় ৭০ হাজার পরিবার। ওখানে আমি হাত দিচ্ছি না। ওই জায়গায় আমার যাওয়ার ক্ষমতাই নেই। আমরা শুধু ওয়াটার বডির ওপর যে জায়গাটা, সেটা নিয়ে কাজ করব। আমরা ৩৬০২টি পরিবারকে পুনর্বাসন করব’— যোগ করেন এ প্রকল্প কর্মকর্তা।

৮২ একরের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘কড়াইল মৌজায় ৪৩ একর টিঅ্যান্ডটির জায়গা। কিছু জায়গা আছে মহাখালী মৌজায়, সেখানে পাবলিক ল্যান্ড (ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি) ২৫ একর। শুটিং কমপ্লেক্সের পেছন থেকে লেক বরাবর একটা রাস্তা ভারতীয় দূতাবাস পর্যন্ত চলে গেছে। ওই রাস্তায় আছে ১০ একর। আর বাড্ডা মৌজায় আছে ৩ একর।’

সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পের এ প্রস্তাবের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে পরিকল্পনা কমিশন প্রশ্ন তুলে বলেছে, ‘২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় কড়াইল বস্তি থেকে কত পরিবারকে উচ্ছেদ করা হবে, তাদের কোথায় এবং কীভাবে পুনর্বাসন করা হবে, তার পূর্ণাঙ্গ স্টাডি এবং যথাযথ পরিকল্পনাসহ ডিপিপি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। প্রস্তাবিত আরডিপিপিতে সংযোজিত এ সংক্রান্ত সার্ভে প্রতিবেদনে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট সুপারিশ নেই। আরডিপিপি পৃষ্ঠা- ৪০৫ নম্বরে শুধু তিন হাজার ৬০২টি পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য ১৭ কোটি টাকার সংস্থানের প্রস্তাব রয়েছে, যা থেকে উচ্ছেদপরবর্তী পুনর্বাসনের জন্য পরিবারপ্রতি ৪৭ হাজার টাকা করে দেয়া হবে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। কড়াইল বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন পরিকল্পনা সম্পর্কে বাস্তবায়নকারী সংস্থা সভাকে অবহিত করতে পারে।’

প্রত্যেক পরিবারকে ৪৭ হাজার টাকা ছাড়া পুনর্বাসনের আর কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়ার পরিকল্পনা নেই বলে জানান আমিনুর রহমান সুমন। তিনি বলেন, ‘খরচ বাড়ানো সম্ভব নয়।’

প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘সরকার ভূমির মূল্য দিয়ে পুনর্বাসন করে থাকে। রুলস অনুযায়ী, ভূমি অধিগ্রহণ করলে টাকা দিতে পারব। এখানে সমস্যা হচ্ছে, কড়াইল বস্তিতে যারা থাকেন তারা ঘরেরও মালিক নয়, ভূমিরও মালিক নায়। ভূমির মালিক হচ্ছে সরকারের টিঅ্যান্ডটি। তার মানে, ভূমির মূল্যটা কড়াইলবাসীদের দিতে পারছি না। আর ঘরটাও তার নয়। তারা ভাড়া থাকে। সেটাও তারা পাচ্ছে না। লিগ্যালি আমরা তাদের জমি বা ঘরের মূল্য দিতে পারি না। কিন্তু তারা তো থাকে। একটা জায়গায় তারা যে শিফটিং হবে, সেই খরচটা তো তাদের লাগবে। শিফটিং এবং দু-তিন মাস যেন তারা খেয়ে-পরে থাকতে পারে, সেজন্য প্রত্যেক পরিবারকে ৪৭ হাজার টাকা দেব। এ বিষয়ে এনজিওর মাধ্যমে আমরা প্রত্যেকটা কক্ষে গিয়ে জরিপ করেছি, তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি। তোমরা কী চাও? তোমরা এ ধরনের একটা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কেন থাকো? তাদের সঙ্গে আলাপ করে তারা যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই আমরা প্রস্তাব করেছি।’

যারা লেকের ওপর ঘর বানিয়েছে, তাদের কী হবে— জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।’ তাদের আইনের আওতায় আনবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জায়গাটা তো এখন আমাদের হাতে নেই। এর মালিক এখন টিঅ্যান্ডটি। আর অন্যের মালিকানার জায়গায় তো আমরা ইচ্ছা করলেও যেতে পারব না। যখন আমাদের কাছে ভূমি অধিগ্রহণ হয়ে আসবে, তখন আমরা সেনাবাহিনীসহ কাজ করব। তখন আমরা ওই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাব।’

প্রকল্পের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে আমিনুর রহমান সুমন বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য লেকটাকে পুনরুদ্ধার করা এবং এটিকে একটা স্থায়ী রূপ দেয়া। লেকের দুই পাশে ওয়াকওয়ে ও রাস্তা করা। যখন রাস্তা হয়ে যাবে তখন রাস্তা চলবে। তখন দুদিন পরপর এটা আমার জায়গা, এটা ওমুকের জায়গা—এসব কথা কেউ বলতে পারবে না। আরেকটা বিষয় হলো, গুদারাঘাট পর্যন্ত নৌকা দিয়ে আসা যায়। এরপর কিন্তু আর যাওয়া যায় না। প্রকল্পটির মাধ্যমে এই অঞ্চলে নতুন একটা ট্রান্সপোর্ট রুট তৈরি করব। মগবাজার থেকে বনানীর গোরস্থান পর্যন্ত নৌকা দিয়ে চলে যাওয়া যাবে। কেউ যদি মনে করেন, হেঁটে যাবেন, তাহলেও পারবেন।’

দীর্ঘদিনের প্রকল্প, এখনও বিশেষ অগ্রগতি নেই কেন— জবাবে তিনি বলেন, ‘টাকা বরাদ্দ নেই। আর শাহজাদপুরে আমরা কিছু রাস্তা করেও ফেলেছি। ওখানে অনেকের ভূমি অধিগ্রহণের টাকা এখনও দিতে পারিনি। সাবেক মেয়র আনিসুল হক প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছিলেন। তার কারণে ওখানকার লোকজন মামলা পর্যন্ত তুলে নিয়েছিলেন।’

৪৩ একর বস্তি উচ্ছেদে যেসব বিপদ

এই তিন হাজার ৬০২টি পরিবারের স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা ছাড়া উচ্ছেদ করা উচিত নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান।

শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এটা বিশ্লেষণ করে দেখা উচিত যে, এই উচ্ছেদের প্রয়োজন আছে কি-না। যদি অন্য কাউকে প্লটগুলো দেয়ার পাঁয়তারা হয়, সেটা খারাপ কিছু নিয়ে আসবে। ৪৩ একর বড় এলাকা। কড়াইল বস্তি নিয়ে রাজউক, টিঅ্যান্ডটি, আইসিটি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নানা ধরনের পরিকল্পনা আমরা দেখি। এর মূল কারণ খাস জমি। এগুলোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এ এলাকা নিয়ে মাস্টার প্ল্যান আছে। সেসব মাস্টার প্ল্যান যেন বাস্তবায়িত না হয়। অন্য কারও মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন হলে কিন্তু এটার ন্যায্যতা পাবে না।’

‘এই শহরে নিম্নবিত্তের আবাসনের জন্য কতটুকু ভূমি তারা সরবরাহ করতে পারছে? পূর্বাচলে যে নতুন শহর করেছে, সেখানে মাত্র ২ ভাগ ভূমি আছে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য। আমাদের ঢাকার জনসংখ্যা অনুযায়ী, ১০ ভাগের মতো ভূমি নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য নির্ধারণ করা উচিত’ বলেও মনে করেন আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি আরও বলেন, ‘এই যে তিন হাজার ৬০২টি পরিবার, তারা কোথায় আশ্রয় নেবে? তারা যদি যায়, তাহলে তো আরেকটা বস্তিতে যাবে। এই টাকা দিয়ে আরেকটা বস্তিতে যাওয়া ছাড়া তো উপায় নেই। এ ধরনের পর্যাপ্ত বস্তি আছে কি-না? এই বিষয়গুলো কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে উচ্ছেদ না করে কাজটা করা যায় কি-না?’

তিনি বলেন, ‘তারা যেভাবে থাকে, সেটা মানবেতর। অবৈধভাবে যারা থাকেন বা অল্প টাকা ভাড়া দিয়ে যারা থাকেন, তাদের জন্য নগরে ভূমি বাড়ানো দরকার। তাদের জন্য যদি সরকারের তরফ থেকে ভূমি দেয়া যায়, যেখানে তারা ভাড়া দিয়ে থাকবেন, ভূমিটা যদি সরকার বেসরকারি খাতকে সংযুক্ত করে বাড়িঘর বানিয়ে ভাড়া দিতে পারে, সেই আলোচনাও রাজউকের করা প্রয়োজন।’

কড়াইলে যে টাকা ভাড়া দিয়ে তারা থাকে, সেই টাকা দিয়ে অন্য কোথাও উঠবে— এর উত্তরও পাওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘শুধু সেই তিন হাজার ৬০২টি পরিবার নয়, তারা যে পরিমাণ টাকা দিয়ে থাকেন বস্তিতে, এই ক্যাটাগরির অন্য যারা আছেন, তারাও মানসম্মত বাসায় যেন এই টাকা দিয়েই থাকতে পারেন, সরকারের তরফ থেকে এমন উদ্যোগও দরকার।’

তাদের বিকল্প বাসস্থান কোথায় হতে পারে, সম্ভাব্য জায়গাগুলো চিহ্নিত করার জন্য সহযোগিতা করাও রাজউকের দায়িত্ব। শুধু টাকা দেয়াটাই দায়িত্ব নয়। সেই সহযোগিতা কীভাবে করবে, তা দেখাও রাজউকের দায়িত্ব বলে মনে করেন তিনি। তার মতে, ‘শুধু তো এই তিন হাজার ৬০২টি পরিবারই অবৈধ থাকে না, তারা কিন্তু ভাড়া দিয়ে থাকে। পুরো বিষয়টা নিয়ে এই কড়াইল বস্তিতে যারা অবৈধভাবে আয় করছেন, এটা নিয়েও আলোচনা হওয়া উচিত। এখানে সরকারের হাত দেয়া উচিত।’

‘দেশে কিছু নাই বিদায় এনও আইসা থাকতাছি’

সরেজমিন কড়াইল বস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, লেকের ওপর বাঁশ-খুঁটি দিয়ে অল্পকিছু ঘর ওঠানো। ভরাট করে বাকি ঘরগুলো তৈরি করা হয়েছে। সেসব ঘরে পৌঁছার জন্য কিছু জায়গায় পাকা রাস্তার ব্যবস্থাও রয়েছে।

লেকপাড়ের একটি দোকানের সামনে বসে গল্প করছিলেন ফোরন মিয়া। তিনি এই বস্তিতে ২২ বছর ধরে আছেন। জাগো নিউজকে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আমরা এনের নাগরিক, এনের ভোটার। এ দেশে রোহিঙ্গারা থাকতে পারলে আমরার উচ্ছেদ করার কারণ কী?’

দেশে নাই বিধায় এনও আইসা থাকতাছি। ময়লা জাগার মধ্যে থাকতাছি। আমরার তো দেশে কিছু নাই, অসহায়’— যোগ করেন ফোরন মিয়া।

প্রতিটি পরিবারকে ৪৭ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিয়ে বিদায় জানানোর বিষয়ে লেকপাড়ের এই বাসিন্দা বলেন, ’ঢাকার অন্য জায়গায় কই থাকব? অন্য জায়গায় ভাড়া দিয়া থাকার মতো অইলে আমি বস্তিত থাকতাম? নাই বিদায় বস্তিতে আইসা পইড়া রইছি। আমার কী সখ নাই, আমার পোলাপান একটু ভালো পরিবেশে থাকুক, আমার বাপ-মা, আমি ভালো পরিবেশে থাকি?’

৪৭ হাজার টাকা যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন ফোরন মিয়া। বলেন, ‘২৫০০ টাকা ভাড়া দিয়ে বস্তিতে থাকি। বিদ্যুৎ, পানিসহ তিন হাজার টাকা খরচ পড়ে। এখান থেকে সরে গেলে কমপক্ষে ঘরভাড়া হবে পাঁচ হাজার টাকা। তাছাড়া এনে যে পরিবেশ, ওই জায়গায় তো এই পরিবেশ নয়। একটু ভালো পরিবেশে থাকতে অইব। ভালো পরিবেশে চলতে অইব। এনে আমি ২০ টাকার মাছ আইন্যা খাইতে পারি, ওইসব জায়গায় তো এই পরিবেশ নাই। কমপক্ষে এক-দেড় কেজি মাছ কিনে খাইতে অইব, ৫-৬শ’ টাকা লাগব। এই হানে যে টাকা দিয়া পরিবার নিয়া চলতে পারি, মহল্লায় গেলে এই পরিবেশ পরিবর্তন করতে অইব। এহন একটা চহি আইন্যা হুইয়া থাহি, হেনতো একটা খাট কিনতে অইব। শোকেস, টিভি কিনতে অইব। মানে ওই জায়গার পরিবেশ মিলাইয়া চলতে অইব। এত টাকা কই পামু?’

ফোরন মিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় চারপাশে জড়ো হন বেশ কয়েকজন বস্তিবাসী। ফোরন মিয়া যখন কথা বলছিলেন, নীরব থেকে, মাথা নেড়ে, কখনও ‘হ’ জাতীয় ধ্বনি করে তারাও যেন একাত্মতা প্রকাশ করছিলেন।

লেক ঘেঁষে গড়ে ওঠা কড়াইল বস্তির একটি বাড়িতে থাকেন ঝরনা রানী। ১২ বছর ধরে তিনি এ বস্তিতে থাকছেন। জাগো নিউজকে বলেন, ‘সব মিলাইয়া তিন হাজার টাকা ভাড়া পইড়া যায়। আড়াই হাজার টাকা ভাড়া। এত কম টাকায় ভাড়া আর কোথাও পাওয়া যাবে না। চইলা যামু কই? থাকতে তো অইবই ঢাকা। অন্য জায়গায় থাকলে কি এই ভাড়ায় থাকতে দিব? দিব না। এর চেয়ে বেশি লাগব। আমি ভাড়াই দিতে পারতেছি না এক বছর ধইরা। দিয়া, না দিয়া থাকতেছি। আমরা গরিবরা যে এই বস্তিডাত বাঁচতাছি, অনেক উপকার আমরার অইতাছে।’

পরিবারপ্রতি ৪৭ হাজার টাকা পাওয়া নিয়েও শঙ্কা

ঝরনা রানী আরও বলেন, ‘আমাদের সাথে কথা বলা হয় নাই। আমার কাছ থেকে ফোন নম্বর নিছে না। আমি জানি না।’

যদিও প্রকল্প পরিচালক আমিনুর রহমান সুমন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই তালিকা করার পেছনে সেনাবাহিনী, স্থানীয় কমিশনাররা প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ঘরগুলোতে কে থাকেন, পরিবার প্রধানের নাম, তার ভোটার আইডি নম্বর, স্থায়ী ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, যার ভোটার আইডি নেই তার জন্মসনদ– এসব তথ্য আমরা রেখেছি। আমরা একটা বিস্তারিত তালিকা করেছি। আমাদের কথা হচ্ছে, যিনি শিফট হবেন তিনিই এই টাকা পাবেন।’

এ বিষয়ে বিআইপির সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘নেতিবাচক দিক হচ্ছে, তিন হাজার ৬০২টি পরিবারকে ৪৭ হাজার টাকা দেয়া, এটা নিশ্চিত করা একটা বড় বিষয়। বাংলাদেশে বলা সহজ যে অসহায় পরিবার পাবে, কিন্তু দেখা যাবে অবৈধভাবে যে ভাড়া আদায় করে তারা বলবে যে, আমাকে ২০ শতাংশ দেন, ৫০ শতাংশ দেন বা পুরো টাকাই নিয়ে নিতে পারে। প্রকৃতপক্ষে বসবাসকারীদের কাছে এই টাকা পৌঁছানো বড় চ্যালেঞ্জ।’

  • আরেক হাতিরঝিল বানাতে উচ্ছেদ হবে কড়াইল বস্তির ৩৬০২ পরিবার

    আরেক হাতিরঝিল বানাতে উচ্ছেদ হবে কড়াইল বস্তির ৩৬০২ পরিবার

  • আরেক হাতিরঝিল বানাতে উচ্ছেদ হবে কড়াইল বস্তির ৩৬০২ পরিবার

    আরেক হাতিরঝিল বানাতে উচ্ছেদ হবে কড়াইল বস্তির ৩৬০২ পরিবার

  • আরেক হাতিরঝিল বানাতে উচ্ছেদ হবে কড়াইল বস্তির ৩৬০২ পরিবার

    আরেক হাতিরঝিল বানাতে উচ্ছেদ হবে কড়াইল বস্তির ৩৬০২ পরিবার

  • আরেক হাতিরঝিল বানাতে উচ্ছেদ হবে কড়াইল বস্তির ৩৬০২ পরিবার
  • আরেক হাতিরঝিল বানাতে উচ্ছেদ হবে কড়াইল বস্তির ৩৬০২ পরিবার
  • আরেক হাতিরঝিল বানাতে উচ্ছেদ হবে কড়াইল বস্তির ৩৬০২ পরিবার
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

পরিবেশ

ছাদ বাগানের জন্য কয়েকটি টিপস

ছাদ বাগানীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। টবে, ড্রামে গাছ লাগানো হয়। কেউ ফল, কেউবা সবজির গাছ লাগান। কেউ সফল হন। কেউ সফল হন না। ছোট ছোট কিছু ভুল বাগানীরা করে থাকেন। সে কারণে যত্ন নিলেও ফল আসে না। এখানে ছাদ বাগানীদের জন্য কিছু টিপস দেয়া হলো, যা মানলে সফলতা পাওয়া সহজ হতে পারে।

প্রথমেই মনে রাখতে হবে, টবে বা ড্রামে গাছ লাগালে তাকে খাবার দিতে হবে। প্রকৃতিতে বিদ্যমান গাছের মতো সে খাবার সংগ্রহ করতে পারে না। রোগ-বালাই হলো কিনা সেটাও বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।

১. মাটির সাথে অবশ্যই কিছু কোকোপিট মেশাবেন। গাছের গোড়া স্যাতস্যাতে হতে দিবেন না। স্যাতস্যাতে হলে অসংখ্য রোগ হবে। মাটি ভেজা থাকবে তবে স্যাতস্যাতে না। কেকোপিট মেশালে পানি কম দিলেও হবে। কোকোপিট (নারকেলের ছোবলার গুড়া) পানি ধরে রাখে। অতি বৃষ্টি হলে গোড়ায় পানি জমতে দেয় না। হালকা হওয়ায় ছাদে ওজনের চাপ পড়ে না। এছাড়া কোকোপিটে কিছু পুষ্টি উপাদান আছে। যা গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কোকোপিটে চারা দ্রুত গজায়, বড় হয়। মাটির চেয়ে কোকোপিটে চারা ভালো হয়।

২. গাছের জন্য বিরিয়ানি হলো সরিষার খৈল-পচা পানি। মাটির হাড়িতে খৈল পচাতে হবে। কমপক্ষে ৫ দিন। ৭ দিন কিংবা বা ১৫ দিন হলে উত্তম। অল্প পানিতে পচিয়ে তার সাথে আরো পানি মিশিয়ে দিতে হবে। এটি গাছের জন্য অত্যন্ত উপকারী। একটু গন্ধ হয়, তাই অল্প একটু গুড় দিতে পারেন। ছাদে হাড়িতে পচালে বাসায় গন্ধ আসবে না। বৃষ্টির সময় খৈল-পচা পানি দেবেন না। পুকুরের নিচে থাকা পাক কাদা গাছের জন্য খুব উপকারী।

৩. আমরা জানি, মাটিতে অসংখ্য ক্ষতিকর ছত্রাক থাকে। যা গাছকে মেরে ফেলার জন্য যথেস্ট। তাই মাটি রেডি করার সময় কিছুটা বায়োডামা সলিট দিবেন। এটি উপকারী ছত্রাক। মাটিতে ক্ষতিকারক উপাদানগুলো মেরে ফেলে। আবার জৈব সারের কাজও করে। গাছের জন্য মাটি হবে ঝুরঝুরে, হালকা।

৪. যাই লাগান না কেন, ভালো জাতের বীজ কিনা নিশ্চিত হয়ে নেবেন। ভালো বীজে ভালো ফসল হবে। নতুবা যতই যত্ন নেন না কেন, সব পরিশ্রম বেলাশেষে জলে যাবে। বীজ থেকে নিজে চারা করা উত্তম। কারণ বাজার থেকে যে চারা কিনবেন সেটার জাত ভালো হবে সে নিশ্চয়তা কোথায়? ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করে নেয়া উত্তম। পদ্ধতি হলো- ছত্রাকনাশক দেয়া পানিতে কিছুটা সময় বীজ ভিজিয়ে রাখতে হবে। ম্যানসার, মেটারিল দুটি ছত্রাকনাশক।

৫. গাছ বেশি তো ফলন বেশি- এটি ভুল ধারণা। অল্প জায়গায় বেশি গাছ লাগানো যাবে না। গাছ পাতলা করে লাগাতে হবে। বেশি লাগালে গাছ প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে না। একটি ফলের ক্রেটে মাত্র দুটি গাছ। একটি টবে একটি গাছ। ক্রেট বা টবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৬. ছাদে মাচা দেয়া সমস্যা। কারণ ঘুঁটি থাকে না। এ জন্য ফলের ক্রেটের চারপাশে লাঠি বেঁধে সহজে মাচা দেয়া যায়। লতাপাতা জাতীয় গাছ লাগানোর পাত্র একটু গভীর হলে উত্তম। গাছের জন্য সবচেয়ে বেশি ভালো জৈব সার হলো পাতা-পচা সার, তারপর ভার্মি কম্পোস্ট, তারপর গোবর সার। পাতা-পচা সার সহজলভ্য নয়। দাম বেশি। কিন্তু ভার্মি কম্পোস্ট সহজলভ্য। মাটির সঙ্গে মিনিমাম ৪০% জৈব সার দেয়া উত্তম।
৭. নিম কীটনাশককে ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খুব অপছন্দ করে। এটি দিলে তারা বিরক্ত বোধ করে। গাছে বাসা বাঁধতে পারে না। প্রতি সাত দিনে একবার সব গাছের পাতায় নিম কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। মাসে একবার ইপসম সল্ট স্প্রে করে দেয়া উত্তম। একইভাবে মাসে একবার পানির সঙ্গে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড মিশিয়ে স্প্রে করা ভালো।

৮. ডাটা, পুইশাক, লালশাক, ধনেপাতা এসব লাগাতে পারেন। মাত্র ২৫ দিনে খেতে পারবেন। লালশাক লাগালে নেট দিয়ে ঘিরে দেবেন। শাকপাতা লাগালে দ্রুত আউটপুট পাবেন। যা আপনাকে প্রেরণা দেবে। পুইশাক গাছের পাতায় দাগ হলে পাতা কেটে দিন। অথবা ছত্রাকনাশক স্প্রে করেন। অথবা গাছ উঠিয়ে আবার লাগান। ইউরিয়া সার দিলে পুইশাক দ্রুত বাড়বে। শশা গাছের বৃদ্বির জন্য ডিএপি সার দিলে ভালো হবে। শশা গাছে ছাড়া ছাড়া ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হয়। খুব রোদ, গাছের গোড়ায় মালচিং করে দিয়ে উত্তম ফল মিলবে। মালচিং হলো গাছের গোড়ায় বিশেষ পলিথিন কিংবা শুকনো পাতা, খড় দিয়ে ঢেকে দেয়া।

৯. ফুল আসার পরে প্রানোফিক্স অথবা মিরাকুরান গাছের পাতায় শেষ বিকালে স্প্রে করবেন। বাসায় দুইটি গ্রুপের ছত্রাকনাশক রাখা ভালো। যেমন- ম্যানসার, মেটারিল। ১৫ দিনে একবার স্প্রে করবেন। এগরোমিন্ড গোল্ড অনুখাদ্য বা অন্য কোনো অনুখাদ্য বাসায় রাখতে হবে। মাসে কমপক্ষে একবার স্প্রে করবেন। অতিরিক্ত গরম, বৃষ্টি, খাদ্যের অভাব, গাছ রোগাক্রান্ত, আবহাওয়া দ্রুত আপডাউন করা ইত্যাদি কারণে ফুল ঝরে পড়তে পারে। আবার পরাগায়ন না হলে ঝরে পড়তে পারে। এ জন্য হাতের মাধ্যমে পরাগায়ন করতে হবে। পুরুষ ফুলের পরাগদণ্ড নারী ফুলে গর্ভে ঘষে দিতে হবে।

১০. ছাদ বাগানে গাছ মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ পানি বেশি বা কম দেয়া। যতটুকু লাগে ঠিক ততটুকু পানি দিতে হবে। কোন গাছের কি চাহিদা, রোগ একটু স্টাডি করলে সহজে সফল হতে পারবেন।

১১. গাছের পাতার নিচে খেয়াল করবেন। বেগুন গাছের পোকা মারার জন্য সেক্স ফোরেমান ফাঁদ লাগাবেন। ডগা ছিদ্র বা ফল ছিদ্র হলে সাইপারমেত্রিন গ্রুপের কীটনাশক দিতে হবে। একটি বেগুন গাছ অনেক দিন ফল দেয়। ঢেড়স গাছ বেশি রোদ পড়ে এমন জায়গায় লাগাবেন। বেগুন, ঢেড়স, লালশাক, পুইশাক, ধনেপাতা, ডাটা শাক- এসব গাছের খুব যত্ন করতে হয় না।

১২. রসুন আর লবঙ্গ বেটে সেই পানি গাছে স্প্রে করলে পোকা কম আসবে। মরিচ গাছে নেপথলিন বেঁধে দিন, পোকা কম আসবে। পাতা কোকড়ালে ভার্মিটেক কিংবা এবোম কীটনাশক দিন। কোকড়ানো পাতা ফেলে দিন। মরিচ গাছে দশ দিন পর পর ডায়মেথট গ্রুপের (যেমন টাফগর) কীটনাশক দিলে উপকার হবে। সবকিছু করছেন, তারপরও কাজ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে গাছের জায়গা বদল করেন, উঠিয়ে অন্যত্র লাগান।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

দৈনন্দিন

নিপাহ্‌ ভাইরাসঃ খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়

নিপাহ্‌ ভাইরাস খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
নিপাহ্‌ ভাইরাস খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
খেজুরের রস সংগ্রহের প্রক্রিয়া।

শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।

আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।

নিপাহ্‌ ভাইরাস আতঙ্ক

খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।

দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।

মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।

সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।

কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্‌ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

পরিবেশ

জেনে নিন এই মরসুমে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ আপনার জন্য সেরা

দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই বর্ষার (Monsoon 2021) প্রভাবে চলছে বৃষ্টিপাত। এসময় কৃষকেরা খারিফ শস্য (Kharif Crops) বপনে তৎপর হয়ে ওঠেন। এই খরিফ মরসুমে কৃষকভাইরা সাধারণত অঞ্চলভেদে ধান, অড়হর, সোয়াবিন সহ বিভিন্ন চাষে মনযোগ দিয়ে থাকেন ৷ তবে এসব ছাড়াও, ঔষধি গুন সমৃদ্ধ (Medicinal Crops) গাছ চাষে বর্ষায় যে কতটা লাভ হতে পারে সে সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না৷

বিশেষ করে বর্ষাকালেই এমন বহু ঔষধি গুন সম্পন্ন গাছ রয়েছে যাদের চাষ হতে পারে লাভজনক৷

বর্ষাকালে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ করা যেতে পারে অথবা এই চাষ কীভাবেই বা করা যাবে সে বিষয়ে সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণেই অনেকের কাছে বিষয়টি অধরা৷ চলুন এই প্রতিবেদনে এমনই কিছু গাছ নিয়ে আলোচনা করা যাক যা কৃষকদের জন্য হতে পারে লাভদায়ক৷ তবে সঠিক সময়ে, সঠিক রোপন, সেচ, কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন এগুলিতে, না হলে এর ওপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে৷

অশ্বগন্ধা –

বর্ষায় এর চাষ ভালো৷ জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করতে পারেন৷ এর বিভিন্ন জাত রয়েছে৷ উন্নত মানের গাছের চাষে কৃষকের লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে পারে৷ উল্লেখ্য, প্রতি হেক্টরে ৫ কিলোগ্রাম বীজ ব্যবস্থা করতে হবে৷ যদি কেউ ১ হেক্টর জমিতে অশ্বগন্ধার চাষ করতে চায় তাহলে তাকে প্রায় ৫০০ বর্গমিটারে নার্সারি তৈরি করতে হবে৷ প্রায় ১ সেন্টিমিটার গভীরে বীজ বপন করতে হবে৷

শতমূলী –

শীত বাদ দিয়ে বছরের যে কোনও সময়ে এই গাছের চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে এই চারা রোপন করলে সহজেই তা বেড়ে উঠতে থাকে৷ তবে বীজ বপনের আগে বীজ ১ দিন পর্যন্ত হালকা গরম জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়৷

যষ্টিমধু –

জুলাই থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করা হয়৷ আর তাই জুন থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু করে দেন কৃষকেরা৷ জলনিকাশি ব্যবস্থা উচ্চমানের হওয়া প্রয়োজন এই গাছ চাষের জন্য৷ মনে রাখতে হবে এর চাষের আগে জমিতে কমপক্ষে ১৫ টন গোবর সার দেওয়া প্রয়োজন, এরপরেই এটি চাষ করা উচিত৷

ঘৃতকুমারী –

এর ভালো উৎপাদনের জন্য জলনিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হবে৷ এই ধরনের ঔষধি গুনসম্পন্ন গাছ শীতকাল বাদ দিয়ে যে কোনও সময় চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে দূরত্ব রেখে বীজ বপন করতে হবে৷ কম সময়ের মধ্যেই ব্যবহারোপযোগী হয়ে ওঠে এগুলি৷

অগ্নিশিখা বা কলিহারি –

এটি চাষের জন্য কৃষকেরা জুন মাসেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন৷ জুলাইয়ে ভালো বৃষ্টিতে এর চাষ শুরু করা যেতে পারে৷ উল্লেখ্য, ১ হেক্টর জমির জন্য প্রায় ১০ ক্যুইন্টাল কন্দের প্রয়োজন৷ এটি চাষের আগেও জমিতে গোবর সার প্রয়োগ করে তা প্রস্তুত করে নিতে হবে৷

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

পরিবেশ

শিখে নিন টবে দারুচিনির চাষের কৌশল

পৃথিবীতে ভোজ্য মসলা যতরকম আছে তারমধ্যে দারুচিনি সবথেকে উল্লেখযোগ্য। এই প্রাচীনতম মসলা বহুদিন ধরে ওষধি হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে। এছাড়াও খাবারে স্বাদ বাড়ানো থেকে শুরু করে, পানীয় এবং তরল মশলাদার খাবারে স্বাদ বাড়ানোর জন্যও এই দারচিনির ব্যবহার হয়। এলাচ, গোলমরিচ, লবঙ্গের সাথে সাথে দারুচিনির নামও মসলা হিসেবে একই পংক্তিতে উচ্চারিত হয়। বহু কৃষক দারুচিনির চাষ করে ভীষণভাবে উপকৃত হয়েছেন। বাজারে এই দারুচিনির চাহিদা প্রচুর পরিমানে থাকায়, এই চাষে ভালো লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সৌখিন মানুষেরাও ভালোবেসে দারুচিনির চাষ বাড়িতে করে থাকেন। দারুচিনি গাছের বাকল, ফুল, কুঁড়ি, পাতা, ফল, শেকড় সবকিছুই কাজে লেগে যায়। দারুচিনি গাছ বাড়িতে চাষ করতে গেলে ঘরে ছাদে দুই জায়গাতেই চাষ করা যায়।

মনে রাখতে হবে এই চাষ করতে গেলে উপযুক্ত পরিমানে রোদ দরকার। বাংলার জলবায়ুতে মূলত শীতকালে এই চাষ করা সবথেকে ভালো। জানুয়ারি মাসে দারুচিনি গাছে ফুল ফোটা আরম্ভ করে, এবং এই গাছের ফল পাকতে আরম্ভ করে জুলাইয়ে। সেইসময়ই ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে নিয়ে এসে বাগানে বা টবে রোপন করে দেওয়া উচিত।

প্রয়োজনীয় রোদ (Sunlight)

কড়া সূর্যালোক দারুচিনি জন্য প্রয়োজনীয়, তাই এটি পর্যাপ্ত রোদ পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দারুচিনি রোপন করতে গেলে রৌদ্রোজ্জ্বল স্থান যেমন জানালার ধারে, ব্যালকনি কিংবা ছাদের খালি স্থান ব্যবহার করতে হবে।

উপযুক্ত মাটি (Soil)

দারুচিনি চাষের জন্য ভাল মানের মাটি ব্যবহার করা আবশ্যক। বাগানের মাটি ব্যবহার না করাই ভালো, কেননা এতে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। অনে সময় আমরা আশেপাশ থেকে মাটি নিয়েই টব ভরে গাছ লাগানো হয়।  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংবেদনশীল গাছগুলোতে এই উপায় কার্যকরী হয় না। নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল এমন মাটি ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উত্তম নিষ্কাশনযুক্ত বেলে দোআঁশ মাটি ব্যবহার করা সবথেকে উত্তম। জেনে রাখা ভালো দারুচিনি খরা একদমই সহ্য করতে পারে না। মাটির বিকল্প হিসেবে ১৫% ট্রাইকোকমপোস্টযুক্ত কোকোডাস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।

বাইরে চাষ করার জন্য এক মিটার (৩০ সেন্টিমিটার গভীর) পর্যন্ত গর্ত করে মাটি দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ঘরের ভিতরে বা ছাদবাগানের দারুচিনি চাষের জন্য একটি বড় পাত্র প্রয়োজন হবে।

রোপন (Planting)

দারুচিনির বীজ সংগ্রহও করা যায় অথবা নার্সারি থেকে দারুচিনির গাছ কিনেও আনা যায়।

বাইরে চাষের ক্ষেত্রে

দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ১ মিটার x ১ মিটার এবং ৩০ সেমি গভীরতায় খনন করে মাটি দিয়ে গর্তটি পূরণ করতে হবে।

ঘরের মধ্যে টবে রোপনের ক্ষেত্রে

নিচে গর্ত সহ বড় সিরামিক পাত্র (৬০ x ৫০ সেমি) ব্যবহার করতে হবে। পাত্রটি মাটি বা কোকোডাস্ট দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ৩০ সেন্টিমিটার গভীরতা এবং ৩০ সেন্টিমিটার প্রস্থের একটি গর্ত তৈরি করতে একটি বাগান ট্রোয়েল ব্যবহার করে নেওয়া ভালো। বীজ ব্যবহার করলে  ১.৫ সেন্টিমিটার গভীর গর্ত তৈরি করে নেওয়া উচিত। এবার গাছটি গর্তের মধ্যে রেখে মাটি দিয়ে চাপা দিতে হবে। বীজ ব্যবহার করলে প্রতি ১.৫ সেমি গর্তে একটি করে বীজ পুঁততে হবে এবং মাটি দিয়ে বীজটি ঢেকে দিতে হবে।

মাটি সবসময় ভেজা রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল দিতে হবে। দারুচিনি গাছ পাত্রে রোপন করার পর, টবের নিচের গর্ত থেকে জল বের না হওয়া পর্যন্ত জল দিতে হবে। টবের উপরের ৫ সেন্টিমিটার শুকিয়ে গেলেই আবার গাছটিকে জল দিতে হবে।

গাছের পরিচর্যা (Caring)

দারুচিনি গাছে নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম বছর ৫০ গ্রাম টিএসপি, ৭৫ গ্রাম এমওপি ও ৫০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। প্রতিবছর ২-৩ কেজি ট্রাইকোকম্পোস্ট ও সার প্রয়োগ শেষে একই হারে টিএসপি, এমওপি ও ইউরিয়া দিতে হবে।

দারুচিনি প্রথম ধরতে দুই থেকে তিন বছর সময় নেয় এবং তার পরে প্রতি দুই বছর পরপরই ফসল দিতে থাকে। দারুচিনি গাছ কম করে ১০-১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। তাই একে নিয়মিত করে ছোট রাখতে হবে। পাঁচ বছর বয়সী দারুচিনি গাছ থেকে নিয়মিত দারুচিনি সংগ্রহের ডাল পাওয়া সম্ভব। দারুচিনি ব্যবহার করার জন্য যে শাখাগুলি কাটা হবে সেগুলি থেকে বাকল তুলে নিতে হবে, বাকলগুলি ব্যবহার করার আগে জলে ভালোভাবে ভিজিয়ে নেওয়া উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

আঙিনা কৃষি

টবে লাগান মিষ্টি তেঁতুল গাছ

পৃথিবীতে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, হারিয়ে যাচ্ছে বহু প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র। চাষবাসের জমিরও সংকুলান ঘটছে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে। গগনচুম্বী বাড়ি ঘিরে ফেলছে সমস্ত ফাঁকা জমিন। শখ করে মানুষ খোলা জায়গায় যে গাছ লাগবে অথবা ফল-ফুলের চারা সেই উপায়ও আর নেই। গাছ লাগানোর জন্য সামান্য জায়গাও ফাঁকা থাকছে না আর। তবে আমাদের করণীয় কী? বৃক্ষরোপন কি তবে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। বেঁচে থাকার জন্য তো গাছ লাগাতে হবেই। বাড়ির একটুকরো বারান্দা অথবা ব্যালকনিতেও সুন্দর ভাবে ইচ্ছা করলে গাছ লাগানো যায়। বাড়ির ছাদেও বানানো যায় সুন্দর বাগিচা। শহরের মানুষদের জন্য ছাদ বাগানের কোনও বিকল্পও নেই। বাড়ির মধ্যেকার ব্যালকনি অথবা ছাদের একটুকরো জমিতেও, ইচ্ছা করলে টবে চাষ করা যায় বিভিন্ন ফুলের ও ফলের গাছ।

শাকসবজি, পেয়ারা, লেবু প্রভৃতি দেশীয় গাছ টবে বাড়তে দেওয়া থেকে শুরু করে বর্তমানে বহু বিদেশী গাছের চারাও মানুষ ব্যালকনি অথবা ছাদে চাষ করছেন। তার মধ্যে থাই মিষ্টি তেঁতুল টবের চাষ পদ্ধতি হিসাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। প্রথমত মিষ্টি তেঁতুলের চাষ করতে গেলে, নার্সারি থেকে এই বিশেষ তেঁতুলের সঠিক বীজ নিয়ে আনতে হবে। তবে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কলম পাওয়া একটু দুষ্কর কাজ। বুঝে সঠিক চারা নিয়ে আসা বাগান মালিকের উপরেই বর্তায়।

থাই মিষ্টি তেঁতুলের ফুল থেকে ফল ধরতে প্রায় ৭ মাস সময় লাগে। বছরে দু’বার থাই মিষ্টি তেঁতুলের গাছে ফল ধরে। প্রথমবার বর্ষাকালে এবং দ্বিতীয়বার শীতকালে। এই গাছের পরিচর্যা আলাদা করে করার কোনও দরকার পড়ে না। গাছের যত্নআত্তি নিতে হয় ঠিকই, কিন্তু তা বলে, আলাদা করে কোনও বিশেষ যত্ন নিতে হয় না।

গাছ লাগানোর পদ্ধতি (Planting):

থাই মিষ্টি তেঁতুল চাষের জন্য আদর্শ মাটি হল, দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি। এই দু’টি মৃত্তিকার মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নিন। তারপর বেছে নেওয়া মাটির দুই ভাগ অংশের সাথে গোবর, ১০০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, পটাশ, ২৫০ গ্রাম, হাড়ের গুঁড়ো এবং ৫০ গ্রাম সরিষার খোল একসঙ্গে মিশিয়ে ২০ ইঞ্চি মাপের বড় টবে জল মিশিয়ে রেখে দিতে হবে। ১০ থেকে ১২ দিন পর টবের মাটি ভালো করে খুঁচিয়ে দিয়ে আরও ৪-৫ দিন রেখে দিতে হবে। ৪ থেকে ৫ দিন বাদে মিষ্টি তেঁতুলের একটি ভালো চারা ওই টবে লাগান।

পরিচর্যা(Caring):

চারা লাগানোর প্রথম কয়েক মাস তেমন যত্নের দরকার পড়বে না। অবশ্যই গাছে এই সময়টুকু পর্যাপ্ত জলের যোগান, এবং আগাছা পরিষ্কারের কাজ করতে হবে।  ছয় মাস চারা লাগানোর সময়সীমা ফুরোলেই ১ মাস বাদে বাদে গাছে সরষের খোল মিশ্রিত পচা জল দিতে হবে। মনে রাখতে  হবে খোল দেওয়ার আগে গাছের মাটি খুঁচিয়ে নিতে হবে।

রোগ দমন (Disease management):

সাধারণত থাই মিষ্টি তেঁতুল গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা যায় না। কিন্তু বর্ষাকালে অনেক সময় তেঁতুল গাছে ছত্রাক হানা দেয়। এর ফলে তেঁতুল ফেটে যায়। এই অসুবিধার থেকে গাছকে বাঁচাতে হলে, বর্ষাকাল আসার আগেই ভালো ছত্রাকনাশক ওষুধ ১০ দিন অন্তর গাছে স্প্রে করে ছড়িয়ে দিতে হবে।

বাংলার বেজায় টক তেঁতুলের সঙ্গে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কোনও তুলনাই চলে না। অত্যন্ত মিষ্টি খেতে এই তেঁতুল থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় চাষ প্রভূত পরিমাণে হলেও, আমাদের রাজ্য এই ফলের চাষ এখনও ততটা গতি পায়নি। কিন্তু আপনি আপনার ব্যালকনি অথবা ছাদে সহজেই এই থাই তেঁতুলের গাছ লাগাতে পারেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com