বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের জন্য কর্তৃপক্ষ অ্যান্টিজেন-ভিত্তিক র্যাপিড টেস্টের অনুমতি দিয়েছে।
সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেছে যে গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার দেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস শনাক্তে দেশের সব সরকারি হাসপাতাল, সরকারি পিসিআর ল্যাব এবং সব ধরনের হেলথ ইন্সটিটিউট-এ অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু করা হবে।
তবে এই টেস্ট শুরু করতে হলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডাব্লিউএইচও বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অভ্যন্তরীণ গাইডলাইন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।
গত ৫ই জুলাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অ্যান্টিজেন-ভিত্তিক কোভিড-১৯ টেস্ট শুরু করার অনুমোদন দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে লিখিত অনুরোধ জানায়। এছাড়া কোভিড বিষয়ক জাতীয় কারিগরি নির্দেশনা কমিটিও একাধিকবার এর পক্ষে মত দেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রস্তাব অনুযায়ী, যেসব রোগীর মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ রয়েছে, তাদেরকে অ্যান্টিজেন টেস্ট করানো হবে। এতে যারা পজিটিভ হিসেবে চিহ্নিত হবেন, তাদেরকে আইসোলেশনে নেয়া হবে। আর যাদের ক্ষেত্রে ফলাফল নেগেটিভ আসবে, তাদেরকে পিসিআর টেস্টের জন্য পাঠানো হবে।
এর আগে বাংলাদেশে জনসাধারণের মধ্যে ‘শৈথিল্য’ আসার কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ বা ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ আসতে পারে, এ কথা উল্লেখ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি বলে যে এটা মোকাবেলার জন্য রোডম্যাপ তৈরি ও পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে হবে।
সেই সাথে দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ দ্রুত নির্ণয় এর জন্য আরো বেশি করে টেস্ট করার প্রয়োজনীয়তার কথাও জানায় পরামর্শক কমিটি।
অ্যান্টিজেন টেস্ট কী?
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা বা সিডিসি-এর তথ্য মতে, অ্যান্টিজেন টেস্ট মূলত শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য ভাইরাস শনাক্তের জন্য ব্যবহার করা হয়।
এই টেস্টের মাধ্যমে বিশেষ ভাইরাল অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়, যা আসলে ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
এ বিষয়ে ভাইরোলজিস্ট তাহমিনা শারমীন বলেন, অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে মূলত শনাক্ত হয় একটি ভাইরাসের প্রোটিন অংশ।
“পিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে যেমন ভাইরাসের নিউক্লিয়িক অংশ শনাক্ত করা হয়, ঠিক তেমন অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে ভাইরাসের প্রোটিন অংশ শনাক্ত করা হয়,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
অ্যান্টিজেন টেস্ট কীভাবে কাজ করে?
যখন একজন মানুষ অসুস্থ থাকবেন, তখন তার নমুনা সংগ্রহের পর অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হয়। এক্ষেত্রেও নাক বা গলা থেকে সোয়াব বা নমুনা সংগ্রহ করে দেখা হয়, সেখানে ভাইরাসের অস্তিত্ব আছে কি-না।
পিসিআর পদ্ধতিতে খুব অল্প পরিমাণ ভাইরাসও শনাক্ত করা সম্ভব। কারণ এটি ভাইরাসকে বৃদ্ধি করে বা অ্যাম্পলিফাই করে তাকে শনাক্ত করে। অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে ভাইরাসের ছোট একটা অংশ বা নিউক্লিয়িক এসিড থাকলেও সেটি শনাক্ত করা সম্ভব।
কিন্তু অ্যান্টিজেন পরীক্ষার মাধ্যমে সেটি সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
এটি ভাইরাসকে অ্যাম্পলিফাই করে না। এই টেস্টের মাধ্যমে শুধু ভাইরাসের উপস্থিতি জানা যায়।
অনেক সময় কোন রোগীর দেহে ভাইরাসের পরিমাণ কম থাকলে সেক্ষেত্রে অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে তার করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি নাও জানা যেতে পারে বলে জানান ভাইরোলজিস্ট তাহমিনা শারমীন।
তাহলে অ্যান্টিজেন টেস্টের সুবিধা কী?
অ্যান্টিজেন পরীক্ষার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি এর ফলাফল বা টেস্টের রেজাল্ট পাওয়া যায়।
ভাইরোলজিস্ট তাহমিনা শারমীন বলেন, খুব বেশি হলে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে অ্যান্টিজেন টেস্টের ফলাফল পাওয়া সম্ভব।
এছাড়া এই টেস্টে তেমন কোন ধরণের প্রযুক্তি বা যন্ত্রপাতি দরকার হয় না বলে ফিল্ডে বা মাঠ পর্যায়েই এই পরীক্ষা চালানো সম্ভব।
“র্যাপিড কিটের মতোই এই টেস্ট চালানো সম্ভব,” তিনি বলেন।
সময় কম লাগার কারণে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত এই টেস্ট কিটের অনুমোদন দিয়েছে, যাতে অল্প সময়ে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো যায়।
অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অসুবিধা কী?
সমস্যঅ হলো, অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শতভাগ নির্ভরযোগ্য নয়।
ফলাফল কতোটা নির্ভুল হবে, তা নির্ভর করে এই তিনটি বিষয়ের ওপর – কিটের মান, নমুনার মান এবং সংক্রমণের কোন পর্যায়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এ কারণে কোভিড-১৯ রোগের লক্ষণ দেখা দিলে কিংবা সংক্রমিত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে এলে তার ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করাতে হবে।
অ্যান্টিজেন ডিটেক্ট করার জন্য বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কিট নির্ভরযোগ্য।
মানহীন কিট হলে বা নমুনার মান খারাপ হলে অ্যান্টিজেন টেস্টের ফলাফল ‘ফলস নেগেটিভ’ হতে পারে। তবে এই টেস্টে ‘ফলস পজেটিভ’ আসার আশঙ্কা কম বলে বিশেষজ্ঞরা জানান।
তবে অ্যান্টিজেন টেস্টে ফল পজিটিভ আসলে বুঝে নিতে হবে যে ওই নমুনা সংক্রমিত।
ফল যদি নেগেটিভ আসে তাহলে আরেকবার আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
জ্বরের সঙ্গে আরো কোভিডের অন্য উপসর্গ দেখা গেলে নমুনা পরীক্ষা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে
দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ দ্রুত শনাক্তকরণে র্যাপিড টেস্ট কিটের অনুমোদন দেয়া হয়
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন