কৃত্রিম খাবার খাওয়ায় বর্তমানে জনসংখ্যার একটা বড় অংশ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। খাবার থেকেই মূলত মানবদেহে রোগের উৎপত্তি হচ্ছে। কারণ প্রায় সব রকমের খাবারে প্রয়োগ করা হচ্ছে উচ্চ মাত্রার রাসায়নিক দ্রব্য। কিন্তু রোগ থেকে বাঁচতে, শরীরের সুস্থ রাখতে হলে উচ্চ মাত্রার রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে তৈরি খাবার থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে। আর তাই এ ক্ষেত্রে অর্গানিক ফুডের বিকল্প নেই।
যে সব খাবার কোনো রকম রাসায়নিক পদার্থের প্রয়োগ ছাড়াই উৎপন্ন করা হয় সেগুলোই মূলত অর্গানিক ফুড হিসেবে পরিচিত। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত হয়; পরিচর্যা কালেও দেওয়া হয় না কোনো প্রকারের রাসায়নিক দ্রব্য। তাই দিনদিন এর প্রতি মানুষের ঝোঁক বাড়ছে।
অর্গানিক ফুড শরীরকে নানাভাবে সহায়তা করে থাকে।
-যেহেতু অর্গানিক ফুডে কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য থাকে না তাই স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি সাধন করে না। মাটিতে রাসায়নিক পদার্থ না দেওয়ায় মাটির গুনাগুণ ভালো থাকে; যা মানুষ ছাড়াও অন্যান্য প্রাণীর জন্যও অনেক ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
– পশুপাখি তাড়ানোর প্রয়োজনে কোনো প্রকারের বিষাক্ত দ্রব্যাদি প্রয়োগ করা হয় না। পরিচর্যার প্রতিটি ধাপই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে সম্পন্ন হয়। এমনকি ফসল তাড়াতাড়ি বড় করার জন্য কৃত্রিম হরমোন জাতীয় দ্রব্য ব্যাবহার করা হয় না। প্রাকৃতিকভাবেই বড় হয়।
– বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস শরীরের পূর্ণ বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখে।অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে রক্ষা করে; হৃদরোগ, ক্যান্সার, চোখের সমস্যা, সময়ের আগেই বয়সের ছাপ, এমনকি মস্তিষ্কের সমস্যার মতো রোগ থেকে দূরে রাখে।
– কৃত্রিম উপায়ে যে সব ফসল উৎপাদিত হয়, তাতে অনেক বেশি সার, কীটনাশক, বিষাক্ত দ্রব্যাদি প্রয়োগ করা হয়। এমনকি বড় করার জন্য নানা ধরনের হরমোনের সাহায্য নেওয়া হয়। সে সব খাদ্য মানবদেহে প্রবেশ করে শরীরের ক্ষতি করে।
– অর্গানিক ফুডে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান ছাড়াও রয়েছে মিনারেল, শর্করা; যা খাবারকে আরও বেশি সময় নিয়ে পরিপক্ব হতে দেয়। অর্গানিক ফুডে স্বাদও থাকে প্রচুর।
– অনেকে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি খাবারের কারণে অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় ভোগেন। অর্গানিক ফুডে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং মিনারেল উপাদান বিদ্যমান যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
-অর্গানিক ফসল উৎপাদন পরিবেশের জন্য অনেক ইতিবাচক। বিষাক্ত কোনো কিছু প্রয়োগ না করায় পরিবেশের কোনো উপাদানের সঙ্গে যেমন, পানি, মাটি, বাতাসে সে সকল পদার্থ মিশতে পারে না। তাই পরিবেশ ভালো থাকে। এক কথায় বলতে গেলে, মানব স্বাস্থ্যের ওপরের হুমকিগুলোকে প্রতিহত করে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন