বাঙালির পেটপুজো মানে তাতে বিরিয়ানি সহযোগে মুঘল খাবারের ছোঁয়া থাকবেই। উৎসবের মরশুমে তাই বাঙালির হেঁশেল জুড়ে মাংস আর বাহারি মুঘল রান্নার গন্ধে ভরে ওঠে। এরকমই বাহারি মুঘল রান্না দিয়ে রসনা মেটাচ্ছে কলকাতার রেস্তরাঁ ‘অওধ ১৫৯০’। এদের সব ক’টি আউটলেটেই চলছে বিরিয়ানি উৎসব।
এই রেস্তরাঁয় বিরিয়ানি নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা চলে প্রায় সারা বছর। বিশেষ কোনও উৎসব হলে লখনউ থেকে আসেন হেঁশেলের শিক্ষকরা। প্রায় ১২ রকমের বিরিয়ানি ঠাঁই পেয়েছে এ বারের উৎসবে।
তবে ‘অওধ ১৫৯০’-এর এই এক্সক্লুসিভ বিরিয়ানি যদি আপনি বাড়িতেই নিজে বানিয়ে ফেলতে পারেন, তা হলে কেমন হয়! বাড়িতে অতিথি এলে তাঁকে অনায়াসেই মুগ্ধ করতে পারবেন এই রান্নার রেসিপিতে। বিরিয়ানি রান্নার প্রবল পরিশ্রমে না গিয়ে খুব সহজেই সহজলভ্য কিছু উপাদান দিয়েই বানিয়ে ফেলুন ‘অওধ ১৫৯০’-এর কিমা বিরিয়ানি ও মাহি কোফতা বিরিয়ানি।
উপকরণ
বোনলেস মটন কিমা: ৫০০ গ্রাম
চাল: ২০০ গ্রাম
ঘি: ১ টেবিল চামচ
রিফাইন্ড অয়েল: ১/২ টেবিল চামচ
নুন: আন্দাজ মতো
শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো: ১ চা চামচ
হোয়াইট পাউডার: ১/২ চা চামচ
মৌরি পাউডার: ১ চা চামচ
কাশ্মীরী লঙ্কার গুঁড়ো: স্বাদ অনুযায়ী
গরম মশলা: ১/২ চা চামচ
বিরিয়ানি মশলা: ১ চা চামচ
কেসরের পাপড়ি: পাঁচটি
গোলাপ জল: ১ চা চামচ
কেওরার জল: ১ চামচ
মিষ্টি আতর: ১ ফোটা
দুধ: ২০ মিলিলিটার
কুচো পেঁয়াজ: ১ টা
আদা রসুন পেস্ট: ২ টেবিল চামচ
প্রণালী: প্রথমেই চাল সেদ্ধ করুন। এবার অন্য একটি তাওয়ায় রিফাইন্ড অয়েল দিন। তার মধ্যে পেঁয়াজ কুচি দিন। সঙ্গে আদা-রসুন পেস্ট দিয়ে ভাল করে মেশান. এ বার মাটন কিমা দিয়ে ভাল করে ফোটান। সমস্ত মশলা ঢেলে ভাল করে মিশতে দিন। ভাল ভাবে কষলে তার মধ্যে জল ঢালুন। এ বার তার মধ্যে সেদ্ধ ভাত ঢেলে দিলেন। এর পর কেশর দেওয়া দুধ, ঘি, বিরিয়ানি মশলা, গোলাপ জল ও কেওরার জল ঢেলে দিন। পুরোটাকে ঢাকা দিয়ে দিন। ভাল করে কষতে দিন। হালকা আঁচ রাখবেন। রান্না হলে নামিয়ে নিন। কিমা বিরিয়ানি গরম গরম পরিবেশন করুন।
মাহি কোফতা বিরিয়ানি
উপকরণ
চাল:২০০ গ্রাম
কাতলা মাছ: ১৫০ গ্রাম
সেদ্ধ আলু: ২০ গ্রাম
কুচনো পেঁয়াজ: ৩৫ গ্রাম
কাঁচা লঙ্কা কুচি: ২ টি
আদা রসুন পেস্ট: ১ চামচ
ধনে গুঁড়ো: ১ চা চামচ
মৌরি পাউডার: ১ চা চামচ
কাশ্মীরী লঙ্কার গুঁড়ো: ১ চা চামচ
মিক্সড গরম মশলা: ১/২ চা চামচ
বিরিয়ানি মশলা: ১/২ চা চামচ
কেসরের পাঁপড়ি: ৫টি
কেওরা জল: ১ চা চামচ
মিষ্টি আতর: ২ ফোটা
গোলাপ জল: ১ চা চামচ
রিফাইন্ড অয়েল: ৫০ মিলি
ঘি: ১ টেবিল চামচ
দুধ: ২০ মিলি
চিনি: ১/২ চা চামচ
মাওয়া: ১৫ গ্রাম
কর্ন ফ্লাওয়ার: ১ চা চামচ
কস্তুরী মেথি: ১ চা চামচ
প্রণালী: প্রথমে নুন দিয়ে মাছ সেদ্ধ করুন এবং কাঁটা ছাড়ান। এবারে সেদ্ধ আলু, কুচো কাঁচা লঙ্কা, ধনে পাতা কুচি, নুন গরম মশলা, আদা কুচি, কস্তুরী মেথি ও কর্ন ফ্লাওয়ার দিন। ভাল করে মিশিয়ে এ বার কোফতা বল বানান।
কোফতা বলগুলিকে ভাজুন রিফাইন্ড অয়েলে। আর একটি প্যানে রিফাইন্ড অয়েল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ কুচি দিন। যত ক্ষণ না সোনালি হচ্ছে ভাজুন। এর পরে টোমাটো, আদা রসুন পেস্ট ও সমস্ত মশলা অল্প জলের সঙ্গে ঢালুন। এর মধ্যে এ বার কোফতাগুলি ও সেদ্ধ ভাত দিয়ে দিন।। এতে কেশর দুধ ঢালুন। সঙ্গে বিরিয়ানি মশলা, কেওরা জল, গোলাপ জল, মিষ্টি আতর, ঘি দিয়ে বিরিয়ানি দমে বসান। আঁচ যেন হালকা থাকে। গরম গরম মাহি কোফতা পরিবেশন করুন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন