যক্ষ্মা প্রতিরোধের টিকা বিসিজির প্রভাব আছে করোনার ওপর। নতুন গবেষণা বলছে, বিসিজি টিকা পাওয়া ব্যক্তিদের করোনাজনিত অসুস্থতা কম থাকে। মারাত্মক ক্লান্তিও তাদের মধ্যে কম দেখা যায়।
বিসিজি টিকা নিয়ে এই গবেষণা হয়েছে নেদারল্যান্ডসে। তবে বিসিজি টিকার কারণে করোনার সংক্রমণ কম হয় কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গবেষকেরা বলছেন, এ নিয়ে বড় আকারের গবেষণা হওয়া দরকার।
নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, গ্রিস ও জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ২৪ জন বিশেষজ্ঞ এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। ৫ আগস্ট তাঁদের গবেষণা প্রবন্ধটি চিকিৎসাবিজ্ঞান সাময়িকী সেল রিপোর্টস মেডিসিন প্রকাশ করেছে।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর একসময় তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনার সংক্রমণকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। বিশ্বের ২০৮টি দেশে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লেও সব দেশ ও অঞ্চলে তা সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। কোথাও সংক্রমণের হার বেশি, কোথাও মৃত্যুহার বেশি দেখা গেছে।
মহামারির শুরু থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা সংক্রমণের ধরন ও কারণ বোঝার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বেশ কয়েকটি ধারণা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আলোচনা হতে দেখা যায়। এসব নিয়ে বিজ্ঞান সাময়িকীতে লেখা প্রকাশ পেতে থাকে। গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে বা বিসিজি টিকা পাওয়া জনগোষ্ঠীতে করোনার প্রকোপ কম দেখা যাচ্ছে—এসব ধারণা একসময় বেশ গুরুত্ব পেতে থাকে।
এপ্রিল মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, করোনার ওপর বিসিজি টিকার প্রভাব নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য একাধিক গবেষণা চলছে।
বিসিজি (ব্যাসিলি কালমেটি-গুরেন) টিকা সহজাত রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে বৃদ্ধি করে এবং শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের আশঙ্কা কমিয়ে দেয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শৈশবকালীন যক্ষ্মা প্রতিরোধে এই টিকা দেওয়া হয়। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ১৯৭৯ সালে শিশুদের বিসিজি টিকা দেওয়া শুরু হয়। বর্তমানে ৯৯ শতাংশ শিশু এই টিকা পায়।
নেদারল্যান্ডসে গবেষণায় ৪৩০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এঁদের মধ্যে ২৬৬ জন ছিলেন বিসিজি টিকা নেওয়া। ১৬৪ জন বিসিজি টিকা পাননি। তবে টিকা পাওয়া ও না-পাওয়া সবাই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। গবেষকেরা ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই দফায় এঁদের ওপর জরিপ পরিচালনা করেন।
গবেষকেরা দেখেছেন, বিসিজি দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে করোনাজনিত অসুস্থতা তুলনামূলকভাবে কম। টিকা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা ও ক্লান্তিতে ভোগার হার কম দেখা গেছে। তবে সর্দি বা নাক দিয়ে পানি পড়ার প্রবণতা দুই দলেই প্রায় সমান দেখা গেছে।
গবেষকেরা বলছেন, করোনা মহামারিকালে বিসিজি টিকা নিরাপদ। এই টিকা কোনো মারাত্মক প্রদাহের কারণ হয়ে দেখা দেয় না। এই টিকা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে করোনাজনিত অসুস্থতা ও মারাত্মক ক্লান্তি কম দেখা গেছে। তবে এই টিকা দেওয়ার কারণে করোনা সংক্রমণ কমে কি না, তা নিয়ে বড় ধরনের গবেষণা হওয়া দরকার।
বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের হার নিয়ে গ্রহণযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় না। দেশে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার ১ দশমিক ৩২। এই হার ইউরোপ বা আমেরিকার হারের চেয়ে কম। এমনকি ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে কম। প্রতিবেশী এই দুই দেশে মৃত্যুহার যথাক্রমে ২ ও ২ দশমিক ১। ওই দুই দেশে টিকাদানের হার বাংলাদেশের চেয়ে কম।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিসিজি টিকা নিয়ে একটি গবেষণার সুযোগ আমাদের দেশেও আছে। এ রকম গবেষণা হলে আমরাও দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্পষ্ট ধারণা পাব।’
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন