ইসলাম
কুরআনে বর্ণিত ফল ও উদ্ভিদগুলো দেখতে যেমন
লেখক
জাগোনিউজ২৪.কমএ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কুরআনুল কারিম এক জীবন্ত বিশ্বকোষ। এতে
রয়েছে জ্ঞান-বিজ্ঞান সমাহার। অতিত ইতিহাস-ঐতিহ্য, বিধি-বিধান থেকে শুরু করে
বাদ যায়নি উদ্ভিদ, ফল, তরু-লতা ও গাছ-গাছালির বিবরণ। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘মানুষ
তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করুক। আমিই প্রচুর বারি বর্ষণ করি। পরে আমি ভূমি
প্রকৃষ্টরূপে বিদীর্ণ করি এবং আমি তাতে উৎপন্ন করি শস্য, আঙুর, শাক-সবজি,
জাইতুন, খেজুর, বহু বৃক্ষবিশিষ্ট বাগান, ফল ও গবাদি খাদ্য। এটা তোমাদের ও
তোমাদের জীবজন্তুর ভোগের জন্য।’ (সুরা আবাসা : আয়াত ২৪-৩২)
প্রাকৃতিক বৈচিত্রের নয়নাভিরাম সাদৃশ্য ও কুদরতের কথা মানুষের সামনে তুলে ধরতে আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে বলেন-
‘যিনি
তোমাদের জন্য তা (পানি) দিয়ে শস্য, জাইতুন, খেজুরগাছ, আঙুর ও সব ধরনের ফল
ফলান। অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ (সুরা নাহল :
আয়াত ১১)
এছাড়াও কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন উদ্ভিদের নাম ও শ্রেণি উল্লেখ করেছেন। কয়েকটি সুরার নামকরণও করা হয়েছে উদ্ভিদের নামে। আবার কোনো কিছুর প্রমাণস্বরূপ কিংবা সাধারণ বর্ণনা হিসেবে এসেছে উদ্ভিদের নাম। যার কিছু তুলে ধরা হলো-
>> মান্না
এক প্রকার খাদ্য, যা আল্লাহ তা‘আলা
বনি ইসরাইলের জন্য আসমান থেকে অবতীর্ণ করতেন। তা ছিল দুধের চেয়েও সাদা এবং
মধুর চেয়েও মিষ্টি। এটি দিয়ে মানুষের রুটির অভাব মিটতো। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ‘الْكَمْأَةُ مِنَ الْمَنِّ ‘কামআহ
হ’ল মান্ন-এর অন্তর্ভুক্ত’। (তিরমিজি, মিশকাত)
আধুনিক গবেষণায় বলা হয় যে, মান্ন একপ্রকার আঠা জাতীয় উপাদেয় খাদ্য। যা শুকিয়ে পিষে রুটি তৈরী করে তৃপ্তির সাথে আহার করা যায়। দক্ষিণ ইউরোপের সিসিলিতে, আরব উপদ্বীপের ইরাকে ও ইরানে, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতবর্ষে মান্না জাতীয় খাদ্য উৎপন্ন হয়।’ (ডঃ ইকতেদার হোসেন ফারুকী, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে কুরআনে বর্ণিত উদ্ভিদ ই,ফা,বা, ২০০৮, পৃঃ ১৩-২০)
>> খেজুর গাছ (আন-নাখিল/আর রাতাব)
খেজুর গাছ
থেকে যে খেজুর উৎপন্ন হয় তা অনেক শক্তিশালী খাদ্য। যা মানুষের জন্য অনেক
উপকারি। খেজুর বান্দার জন্য মহান আল্লাহ তাআলার এক মহা নেয়ামত।
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে উল্লেখ করেন, ‘এবং শস্যক্ষেত ও দুর্বল ও ঘন গোছাবিশিষ্ট খেজুর বাগানে।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ১৪৮)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তুমি খেজুর গাছের কাণ্ড ধরে নাড়া দাও। তোমার ওপর তা ফেলবে পাকা তাজা খেজুর।’ (সুরা মরিয়াম : আয়াত ২৫)।
>> জলপাই (আজ-জায়তুন)
মহা ঔষুধিগুণে ভরপুর
জলপাই। জলপাই অনেক ধরনের হয়ে থাকে। এ থেকে তৈরি হয় অনেক উন্নতমানের তেল।
যার কদর রয়েছে বিশ্বব্যাপী। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে এ জয়তুন তথা
জলপাইয়ের শপথ করে বলেছেন, ‘ডুমুর ও জলপাই (বা তার গাছের) এর শপথ।’ (সুরা
ত্বীন : আয়াত ১)
আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে বলেন, ‘যিনি তোমাদের জন্য তা (পানি) দিয়ে শস্য, জাইতুন, খেজুরগাছ, আঙুর ও সব ধরনের ফল ফলান। অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ (সুরা নাহল : আয়াত ১১)
>> আঙুর ফল (আল-ইনাব)
লতাজাতীয় উদ্ভিদ থেকে
উৎপন্ন ফল হলো আঙুর। অনেক সুমিষ্ট ও উপকারি ফল এটি। একই থোকায় ৬ থেকে ৩০০টি
পর্যন্ত উৎপন্ন হয়। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা এ ফলের কথা তুলে ধরেছেন।
বিজ্ঞানে প্রমাণিত যে, অনেক জটিল ও কঠিন রোগের প্রতিষেধক রয়েছে লতা জাতীয় উদ্ভিদ থেকে উৎপন্ন ফল আঙুরে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং আঙুর ও শাক-সবজি।’ (সুরা আবাসা : আয়াত ২৮)
>> আনার (আর-রুম্মান)
ডালিম নামে পরিচিত ফলই কুরআনের ভাষায় রুম্মান। গুল্ম জাতীয় গাছ থেকে উৎপন্ন হয় এ ফল। এটাকে অনেকে আনার হিসেবেই জানে।
এ ফলটির কথাও কুরআনে এসেছে- ‘সেখানে রয়েছে ফলমূল; খেজুর ও আনার।’ (সুরা আর-রাহমান : আয়াত ৬৮)
>> ডুমুর (আত-ত্বীন)
বিশ্বব্যাপী বহু
প্রজাতির ডুমুর রয়েছে। এক ধরনের মিষ্টি জাতীয় পাতলা আবরণযুক্ত নরম ফল
ডুমুর। গাছ, লতা, গুল্ম জাতীয় ভিন্ন ভিন্ন গাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ডুমুর
উৎপন্ন হয়। কুরআনুল কারিম এ নামে একটি সুরাও নাজিল হয়েছে।
আর তাহলো সুরা ত্বীন। ত্বীন শব্দের অর্থেই হলো ডুমুর। আল্লাহ বলেন, ‘ডুমুর ও জলপাই (বা তার গাছের) এর শপথ।’ (সুরা ত্বীন : আয়াত ১)
>> শস্য (আজ-জারউ)
নানান ধরনের বীজচারা বা শস্যের কথা কুরআনে তুলে ধরেছেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘এবং যিনি সৃষ্টি করেছেন খেজুর গাছ ও বিভিন্ন স্বাদের খাদ্যশস্য।’ (সুরা আনআম : আয়াত ১৪১)
>> ঝাউ গাছ (আল-আছলু)
চিরসবুজ নয়নাভিরাম
দৃষ্টিনন্দন পাতা বিশিষ্ট উদ্ভিদ ঝাউ গাছ। এর কোনোটি গাছ বিশিষ্টি আবার
কোনোটি লতাগুল্ম বিশিষ্ট। এটির কথাও আল্লাহ তাআলা কুরআনে তুলে ধরেছেন-
‘আমি তাদের বাগান দুইটিকে এমন দুই বাগানে পরিবর্তন করলাম, যেখানে রইল কিছু বিস্বাদ ফল, ঝাউ গাছ ও কুল গাছ।’ (সুরা সাবা : আয়াত ১৬)
>> ডালা বিশিষ্ট (মেসওয়াক) গাছ (আস-সাজারু)
মেসওয়াক করার জন্যও আল্লাহ তাআলা গাছ সৃষ্টি করেছেন। এ গাছকে কেউ কেউ জয়তুন গাছ আবার ইংরেজিতে টুথব্রাশ ট্রি বলে থাকে।
ডালবিশিষ্ট এ গাছকে কুরআনের ভাষায় (আস-সাজারু) বলা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘লতাপাতা ও বৃক্ষরাজি তাকে সিজদা করে।’ (সুরা আর-রহমান : আয়াত ৬)
>> মেহেদি গাছ
মেসওয়াক করার জন্যও আল্লাহ তাআলা গাছ সৃষ্টি করেছেন। এ গাছকে কেউ কেউ জয়তুন গাছ আবার ইংরেজিতে টুথব্রাশ ট্রি বলে থাকে।
>> আদা (আজ-জানজাবিলু)
এক ধরনের মূল্যবান সুগন্ধি হলো আদা বা আজ-জানজাবিলু। মানুষ এটিকে মসল্লা ও ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। পরকালে এ আদা হবে মানুষের শুরা পানের উপকরণ।
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন, ‘তারা সেখানে এমন শূরা পান করবে, যাতে মেশানো থাকবে ‘জানজাবিল’।’ (সুরা দাহর : আয়াত ১৭)
>> মটর-কলাই বা মসুর (আল-ফুমু)
মসুর, মটরকলাই
সম্পর্কে কুরআনুল কারিমের উল্লেখ করা হয়েছে। যা মানুষ খাদ্যশস্য হিসেবে
গ্রহণ করে থাকে। মানুষের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ
উপাদান।
আল্লাহ তাআরা বলেন, ‘তারা বলল, তুমি তোমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো। যেন তিনি আমাদের জন্য ভূমিজাত খাদ্যদ্রব্য— তরকারি, শসা, গম, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপন্ন করেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৬১)
>> পেঁয়াজ-রসুন (আল-বাসালু)
পেঁয়াজ-রসুন মসল্লা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে রয়েছে অনেক উপকারিতা।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা বলল, তুমি তোমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো। যেন তিনি আমাদের জন্য ভূমিজাত খাদ্যদ্রব্য— তরকারি, শসা, গম, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপন্ন করেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৬১)
>> লাউ বা কদু (আল-ইয়াকতিন)
লাউ মানুষের জন্য
অনেক উপকারি তরকারি হিসেবে পরিচতি। অনেকে লাউবা কদু তরকারিকে সুন্নাত মনে
করে খায়। লাউ বা কদু সম্পর্কে কুরআনে রয়েছে বর্ণনা।
আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘আমি তার ওপর একটি লাউ গাছ উদ্গত করলাম।’ (সুরা সাফফাত : আয়াত ৪৬)
>> শস্যদানা (শরিষা) বা বীজ (আল-হাব্বু)
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র শস্যদানার কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলোর উল্লেখ করে একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-
– ‘নিশ্চয় আল্লাহ বীজ ও আঁটিকে অঙ্কুরিত করেন।’ (সুরা আনআম- আয়াত ৯৫)
–
শীষ বা মুকুল (আস-সানাবিলু) ‘যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাদের দৃষ্টান্ত
হলো বীজের মতো, যা থেকে সাতটি শিষ বের হয় এবং প্রত্যেক শিষে থাকে ১০০ বীজ।’
(সুরা বাকারা : আয়াত ২৬১)
– উদ্ভিদ (আন-নাবাতু) ‘যেন আমি তা (পানি) দিয়ে উৎপন্ন করি শস্যদানা ও উদ্ভিদ।’ (সুরা নাবা : আয়াত ১৫)
>> পুদিনা সুগন্ধি গুল্ম (আর-রায়হানু)
সুগন্ধ গুল্ম বিশিষ্ট পাতা পুদিনা মানুষের জন্য অনেক উপকারি। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘আরও আছে খোসাবিশিষ্ট শস্য ও সুগন্ধি ফুল।’ (সুরা আর-রহমান : আয়াত ১২)
>> কাঁটাযুক্ত গাছ বা ক্যাকটাস
কাঁটাযুক্ত ‘আল খামতু’ বা ‘আরাক’ নামক বিশেষ লতা গাছ। এ বিষয়ে কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আমি তাদের বাগান দুইটিকে এমন দুই বাগানে পরিবর্তন করলাম, যেখানে রইল কিছু বিস্বাদ ফল, ঝাউ গাছ ও কুল গাছ।’ (সুরা সাবা : আয়াত ১৬)
>> তেঁতো ও বিস্বাদ খাবার (আজ-জাক্কুম)
তেঁতো ও বিস্বাদ খাবার (আজ-জাক্কুম) ফল। যা জাহান্নামিদের জন্য হবে। এসব ফল হবে তেঁতো, বিস্বাদ ও কাঁটাযুক্ত।
আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘আপ্যায়নের (জাহান্নামিদের) জন্য এটাই না উত্তম কাঁটাযুক্ত গাছ?’ (সুরা সাফফাত : আয়াত ৬২)
>> ডাল-পাতা বিশিষ্ট গাছ (আন-নাজমু ওয়াশ শাজারু)
এমন গাছ যার রয়েছে বড় ডালা ও ঘণ পাতা। বিশাল বৃক্ষরাজি। এসব ডাল, পাতা ও বিশাল বৃক্ষরাজি মহান আল্লাহকে সিজদা করে।
আল্লাহ তাআলা কুরআনে উল্লেখ করেছেন- ‘লতাপাতা ও বৃক্ষরাজি তাকে সিজদা করে।’ (সুরা আর-রাহমান : আয়াত ৬)
>> শসা (আল-কিসসাউ)
আল্লাহ বলেন, ‘তারা বলল, তুমি তোমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করো। যেন তিনি আমাদের জন্য ভূমিজাত খাদ্যদ্রব্য তরকারি, শসা, গম, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপন্ন করেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৬১)
এছাড়াও কুরআনুল কারিমের ফুল, পাতা, ফল, লতা-গুল্ম, বৃক্ষ, উদ্ভিদ বুঝাতে অনেক শব্দের উল্লেখ রয়েছে। আর তাহলো-
–
আল কিনওয়ানু এবং আত-তালউ। উভয় শব্দ দ্বারা খেজুর গাছের শীর্ষ কাঁদি বা শিষ
বুঝিয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘এবং খেজুর গাছ, যার শীর্ষদেশ কাঁদির
ভারে নুয়ে থাকে।’ (সুরা আনআম : আয়াত ৯৯)
– আস-সিদরু বা কুল বা বরই গাছ। কুরআনে এসেছে, ‘কাঁটাবিহীন বরই গাছ তলায়।’ (সুরা ওয়াকিয়া : আয়াত ২৮)
– আল-আব্বু : গৃহপালিত ও বন্যপশু যে ফল খায়, পশুখাদ্য। আল্লাহ বলেন, ‘তাতে উৎপন্ন করেছি ফলমূল ও ঘাস।’ (সুরা আবাসা : আয়াত ৩১)
– আল-কাদবু (শাকসবজি) ‘আমি তাতে উৎপন্ন করি শস্য, আঙুর, শাকসবজি…।’ (সুরা আবাসা : আয়াত ২৪-৩২)
– আল-কাফুরু (কর্পূর ) ‘নিশ্চয় সৎ মানুষ জান্নাতে এমন পাত্রে পান করবে, যাতে মেশানো থাকবে কর্পূর।’ (সুরা দাহর : আয়াত ৫)
এসবই সৃষ্টিজগতের জন্য মহান প্রভুর একান্ত দান ও মহা অনুগ্রহ। মুমিন বান্দার উচিত আল্লাহ তাআলা কর্তৃক দানকৃত এসব নেয়ামতের জন্য শুকরিয়া আদায় করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার অগণিত অসংখ্য নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
-
বিস্বাদ ফল, ঝাউ গাছ ও কুল গাছ
-
শসা (আল-কিসসাউ)
-
ডাল-পাতা বিশিষ্ট গাছ (আন-নাজমু ওয়াশ শাজারু)
-
তেঁতো ও বিস্বাদ খাবার (আজ-জাক্কুম)
-
কাঁটাযুক্ত গাছ বা ক্যাকটাস
-
পুদিনা সুগন্ধি গুল্ম (আর-রায়হানু)
-
শস্যদানা (শরিষা) বা বীজ (আল-হাব্বু)
-
লাউ বা কদু (আল-ইয়াকতিন)
-
পেঁয়াজ-রসুন (আল-বাসালু)
-
মটর-কলাই বা মসুর (আল-ফুমু)
-
আদা (আজ-জানজাবিলু)
-
ডালা বিশিষ্ট (মেসওয়াক) গাছ (আস-সাজারু)
-
মেহেদি গাছ
-
ঝাউ গাছ (আল-আছলু)
-
শস্য (আজ-জারউ)
-
ডুমুর (আত-ত্বীন)
-
আনার (আর-রুম্মান)
-
আঙুর ফল (আল-ইনাব)
-
জলপাই (আজ-জায়তুন)
-
খেজুর গাছ (আন-নাখিল/আর রাতাব)
-
মান্না
-
কুরআনে বর্ণিত ফল ও উদ্ভিদগুলো দেখতে যেমন
আপনার জন্য নির্বাচিত সংবাদ
-
বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য
-
কমলা চাষে সার ব্যবস্থাপনা, সেচ, আগাছা ব্যবস্থাপনা ও ফসল তোলা- দা এগ্রো নিউজ
-
আমের চারা তৈরি, চারা রোপণ,সার ব্যবস্থাপনা, সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা,রোগ ব্যবস্থাপনা, পোকা দমন ব্যবস্থাপনা – দা এগ্রো নিউজ
-
লিচুর চারা তৈরি, চারা রোপণ, সার ব্যবস্থাপনা,অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা ও পোকা মাকড় ব্যবস্থাপনা – দা এগ্রো নিউজ
-
তাল উৎপত্তিস্থান, পুষ্টিমান, ওষুধিগুণ, উৎপাদন পদ্ধতি, বীজতলা তৈরী ও চারা উৎপাদন – দা এগ্রো নিউজ
-
লটকনের ওষুধিগুণ, চাষ পদ্ধতি, চারা রোপণ, পরিচর্যা ও সার প্রয়োগ- দা এগ্রো নিউজ
-
পরিবারের সদস্যদের জন্য ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতেই ছাদে বা বারান্দায় ফল,সবজি চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন মানুষ
-
লেবু জাত পরিচিতি ও চাষ পদ্ধতি
-
স্ট্রবেরি চাষ পদ্ধতি
-
আনারস চাষ পদ্ধতি
দেশের আকাশে ১৪৪৩ হিজরি সালের পবিত্র রবিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা গিয়েছে। ফলে রবিবার থেকে পবিত্র রবিউস সানি মাস গণনা করা হবে।
সেই হিসেবে দেশে আগামী ১১ রবিউস সানি ১৪৪৩ হিজরি (১৭ নভেম্বর, বুধবার) পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম পালিত হবে।
শনিবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান।
সভায় সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে পবিত্র রবিউস সানি মাসের চাঁদ দেখার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় চাঁদ দেখা কমিটি।
নামাজে থাকাকালীন কারও মনে সংশয় জাগে কত রাকাত হলো, রাকাত ভুলে ছুটে যায়নি তো? কিংবা নামাজের পরেও সন্দেহ জাগতে পারে রাকাত পূর্ণ হয়েছে নাকি হয়নি। নামাজের রাকাতসংখ্যায় সন্দেহ হলে কী করবেন- সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত নির্দেশনা:
নামাজ পড়ার সময়ে রাকাতসংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে এবং এই সন্দেহ প্রথমবারের মতো হলে ওই নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। নামাজ পুনরায় পড়া আবশ্যক। (ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৮)
নামাজের সালাম ফেরানোর পর যদি রাকাতসংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয়, তবে তার নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। (ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৮)
কারও যদি নামাজের পর দৃঢ়বিশ্বাস হয় যে কিছু রাকাত পড়া হয়নি এবং যদি নামাজ পরিপন্থী কোনো কাজ না হয়ে থাকে, তাহলে ছুটে যাওয়া রাকাত পড়ে নেবে। যদি নামাজ পরিপন্থী কোনো কাজ হয়ে যায়, তাহলে ওই নামাজ পুনরায় পড়বে। (ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৪)
যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, তবে যেদিকে তার মন বেশি যায়, সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তবে কমটির ওপর আমল করবে এবং প্রতি রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে এবং শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৮৮)
তিন রাকাত পড়া হয়েছে নাকি চার রাকাত- সে ব্যাপারে সন্দেহ হলে তিন রাকাত মনে করে চতুর্থ রাকাত পড়বে। এরপর শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১৬৭৭)
প্রিয় নবির ঘর সুমহান আদর্শের কেন্দ্রবিন্দু। এ ঘর থেকে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তম আদর্শ, পরিপূর্ণ আদব, অতুলনীয় শিষ্টাচার ও স্বাধীন সমাজ ব্যবস্থা। নবিজীর যুগে এমন সমাজ ব্যবস্থা প্রবতির্তত হয়েছিল যে, পরিবারের সবাই সমভাবে কাজ করতেন। পুরুষরা স্ত্রীদের কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতেন। আর একটি সময় হলেই সবাই একত্রিত হতেন। তা ছিল নামাজের আজান। আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুহূর্তের মধ্যে সবাই কাজ রেখে নামাজ পড়তে মসজিদে একত্রিত হতেন।
স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিবারিক কাজে সময় দিতেন। স্ত্রীদের কাজে সহযোগিতা করতেন। নামাজের আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ ছেড়ে দিতেন। হাদিসে পাকের একাধিক বর্ণনা থেকে প্রমাণিত যে-
১. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে কী কী কাজ করতেন? তিনি উত্তর দেন-
كان بشرًا من البشر: يفلي ثوبه ويحلب شاته، ويخدم نفسه
‘তিনি একজন মানুষ ছিলেন, তিনি তাঁর কাপড় সেলাই করতেন, ছাগলের দুধ দহন করতেন এবং নিজের কাজ নিজেই করতেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)
তিনি কি শুধু সাধারণ মানুষের মতো মানুষ ছিলেন? না তিনি ছিলেন চারিত্রিক মাদুর্য ও বিনয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কোনো গুণেই কেউ তার সমকক্ষ ছিল না। তিনি যেমন বিনয়ী ছিলেন, তেমনি ছিলেন অহংকারমুক্ত মানুষ।
প্রিয় নবি কেমন মানুষ ছিলেন? তিনি কোনো দিন কাউকে কষ্ট দেননি। তিনি ছিলেন প্রতিটি কাজে অংশগ্রহণকারী সেরা মানুষ। অন্যকে সেরা সাহায্যকারী ও শ্রেষ্ঠ মানুষ। ইবাদত-বন্দেগি ও আল্লাহর হুকুম পালনে তিনি ছিলেন অনুকরণীয় আদর্শ। তাঁর প্রতি নাজিল হয়েছে এ আয়াত-
لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰهِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰهَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَکَرَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا
‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য রাসুলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ২১)
আজান শোনার পর প্রিয় নবির সুন্নাত
কোরআনের ঘোষণার পরও তিনি আল্লাহর ইবাদাত ও তার অনুসরণ থেকে কখনো বিরত হতেন না। বরং মসজিদে আজান হওয়ার ধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তাতে সাড়া দিয়ে সব কাজ রেখে মসজিদে ছুটে যেতেন। হাদিসের বর্ণনায় এসেছে-
হজরত আসওয়াদ বিন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাড়ীতে কি কি ধরনের কাজ করতেন? উত্তরে তিনি বললেন-
كان يكون في مهن أهله، فإذا سمع بالأذان خرج
‘তিনি তার পরিবারের সব কাজে নিয়োজিত থাকতেন, তবে আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন।’ (বুখারি)
ফরজ নামাজ মসজিদে পড়ার গুরুত্ব
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে, তিনি বাড়িতে ফরজ নামাজ পড়েছেন। তবে তিনি মৃত্যুর আগ মুহূর্তে যখন প্রচণ্ড রোগাক্রান্ত; শোয়া থেকে উঠতে পারছিলেন না; যখন মসজিদে যেতে অপরাগ ছিলেন তখন বাড়িতে নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু তিনি দরজা দিয়ে মসজিদে নামাজ পড়ার দৃশ্য অস্রুসিক্ত নয়নে অবলোকন করতেন।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের প্রতি খুবই দয়াশীল ছিলেন। কিন্তু নামাজের জামাতের অংশগ্রহণের ব্যাপারে তাঁর মতো এতো কঠোর দ্বিতীয় আর কেউ ছিল না। তিনি জামাতে অনুপস্থিত ব্যক্তিদের ব্যাপারে এভাবে কঠোর শাস্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে-
لقد هممت أن آمر بالصلاة فتقام ثم آمر رجلاً أن يصلي بالناس ثم أنطلق معي برجال معهم حزم من حطب إلى قوم لا يشهدون الصلاة فأحرق عليهم بيوتهم
‘আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি কাউকে নামাজের ইমামতি করার আদেশ দেই আর আমি কাঠসহ কিছু লোককে সঙ্গে নিয়ে ঐ সব লোকদের বাড়িতে যাই; যারা জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার জন্য উপস্থিত হয়নি। এরপর তারাসহ তাদের বাড়ি-ঘরকে জালিয়ে দেই।’ (বুখারি ও মুসলিম)
মসজিদে না গেলে নামাজ কবুল হবে না!
মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়ার প্রতি ছিল নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিশেষ গুরুত্ব। শরিয়তের ওজর ছাড়া আজান শোনার পর মসজিদে না গেলে নামাজ কবুল হবে মর্মেও প্রিয় নবি ঘোষণা করেছেন-
من سمع النداء فلم يجب فلا صلاة له إلا من عذر، والعذر خوف أو مرض
‘শরিয়তের ওজর ব্যতিত যে ব্যক্তি আজান শোনার পর জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করলো না, তার নামাজ কবুল হবে না।’ (তিরমিজি) আর ওজর বলতে: শত্রুর ভয় অথবা রোগকে বুঝানো হয়েছে।
প্রিয় নবির যুগের সে দৃশ্য আজ কোথায়? কোথায় সেই নামাজি? মসজিদে আজান হয় ঠিকই কিন্তু মসজিদের কাতারপূর্ণ হয় না। অথচ বর্তমান সময়ে মসজিদে নামাজ পড়তে না যাওয়ার পেছনে নেই কোনো শরিয়তের ওজর। না কোনো শত্রুর ভয় কিংবা বিপদের ভয়।
মুমিন মুসলমান মাত্রই উচিত, আজান হলে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সোনালী যুগের মতো কাজ রেখে মসজিদে উপস্থিত হওয়া। একত্রে নামাজ আদায় করা। প্রিয় নবির প্রিয় সুন্নাতকে জাগ্রত করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
মানসিক চাপ, বিষন্নতা ও জীবনের নানা কষ্ট থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর সাহায্যের বিকল্প নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনের ঝুঁকির মুহূর্তে আল্লাহর নির্দেশে মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার সময় চরম বিপদের মুহূর্তে প্রশান্তি স্বরূপ এ আয়াতটি নাজিল হয়। যা সত্যিই প্রশান্তির। এ আয়াতটি পড়লে এমনিতেই কঠিন বিপদে মিলে প্রশান্তি ও নিরাপত্তা। তাহলো-
رَّبِّ اَدۡخِلۡنِیۡ مُدۡخَلَ صِدۡقٍ وَّ اَخۡرِجۡنِیۡ مُخۡرَجَ صِدۡقٍ وَّ اجۡعَلۡ لِّیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ سُلۡطٰنًا نَّصِیۡرًا
উচ্চারণ : রাব্বি আদ্খিলনি মুদ্খালা সিদ্ক্বিও ওয়া আখরিঝ্নি মুখরাঝা সিদ্ক্বিও ওয়াঝ্আললি মিল্লাদুংকা সুলত্বানান নাছিরা।’
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! তুমি আমাকে কল্যাণসহ প্রবেশ করাও এবং কল্যাণসহ বের কর। আর তোমার কাছ থেকে আমাকে দান কর সাহায্যকারী শক্তি।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৮০)
উল্লেখ্য, এ আয়াতটি প্রিয় নবির হিজরতের সময় নাজিল হয়েছিল। যখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা থেকে বের হওয়ার এবং মদিনাতে প্রবেশ করার সময় উপস্থিত হয়েছিল।
কেউ কেউ বলেন, এ প্রার্থনামূলক আয়াতের মর্মার্থ হলো- সত্যের উপর আমার মৃত্যু দিও এবং সত্যের উপর আমাকে কেয়ামতের দিন উত্থিত করো।
আবার কেউ কেউ বলেন, সত্যতার সঙ্গে আমাকে কবরে প্রবিষ্ট করো এবং কেয়ামতের দিন সত্যতার সঙ্গে আমাকে কবর থেকে বের করো ইত্যাদি।
ইমাম শাওকানি বলেন, এ আয়াতটি যেহেতু দোয়া; বিধায় এর ব্যাপকতায় উল্লিখিত সব কথাই এসে যায়।
কেউ কেউ বলেন, যারা বিভিন্ন কষ্ট ভোগ করেন, তারাও এ দোয়াটি প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজের পর পড়তে পারেন। আশা করা যায়, এতে তার উল্লেখিত রোগ ও সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।
আবার কেউ কেউ বলেছেন, যদি কারো ডায়বেটিস রোগ হয়; তবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম ও শৃঙ্ক্ষলাবদ্ধ জীবনের পাশাপাশি এ দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা। এ রোগ থেকে মুক্ত থাকতে এটিকে কোরআনি আমল মনে করা হয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিভিন্ন রোগ মুক্তিতে কোরআনের এ আয়াতের আমলটি বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার ও পরকালের সব বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
শিরকমুক্ত ঈমান এবং নেক আমল ছাড়া কেয়ামতের দিন মুক্তির বিকল্প নেই। কেয়ামতের ময়দানে সব মানুষ আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকবে। এমনকি নবি-রাসুলগণও আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকবেন। কারণ কেউ জানেন না আল্লাহ তাআলা সে দিন কার সঙ্গে কীরূপ ব্যবহার করবেন।
হাদিসের বর্ণনায় যদিও কেয়ামতের দিনের ভয়বাহতার বর্ণনা দিয়েছেন প্রিয়নবি। তিনি সেদিন সেজদায় থাকবেন। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তাকে সেজদা থেকে উঠতে বলবেন। তিনি সেজদা থেকে মাথা উঠিয়ে বিচার কাজ শুরু করার জন্য সুপারিশ করবেন। তারপরই শুরু হবে পরকালের বিচারকার্য।
সেদিন যার আমলনামা ভালো হবে সে সফল হবে। শুধু মানুষ নয়, সেদিন নবি-রাসুলরা কতটা ভয়াবহ সময় কাটাবেন তা হাদিসের একটি বর্ণনা থেকেই সুস্পষ্ট-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাজিল হয়-
وَأَنذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ
(হে রাসুল!) আপনি আপনার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক করুন।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ২১৪)
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন-
> হে কুরাইশ দল! (তোমরা আল্লাহর একত্ববাদ ও ইবাদতের ধারায়) নিজেদের আত্মাকে প্রস্তুত কর। আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো কাজে আসতে পারব না।
> হে বনি আবদে মানাফ! আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো উপকার করতে পারব না।
> হে আব্দুল মুত্তালিবের পুত্র আব্বাস! আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোনো উপকার করতে পারব না।
> হে রাসুলের ফুফু সাফিয়্যাহ! আমি আল্লাহর কাছে আপনার কোনো কাজে আসব না।
> হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যা ফাতেমা! তুমি আমার সম্পদ থেকে যা ইচ্ছা চেয়ে নাও। আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোনো কাজে আসব না।’ (বুখারি)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের করণীয়-
এ সতর্কবার্তা ঘোষণার পরপরই মহান আল্লাহ তাআলা পরবর্তী আয়াতে প্রিয়নবিকে অনুসরণ ও অনুকরণ করার যে ঘোষণাগুলো দিয়েছেন, সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। আর তাহলো-
‘আর মুমিনদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করে, তাদের প্রতি তোমার বাহুকে অবনত কর। তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বল, তোমরা যা কর, নিশ্চয় আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। আর তুমি মহাপরাক্রমশালী পরম দয়ালু (আল্লাহর) উপর তাওয়াক্কুল কর। যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি (নামাজে) দণ্ডায়মান হও এবং সেজদাকারীদের মধ্যে তোমার ওঠা-বসা। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা মহাজ্ঞানী।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ২১৫-২২০)
আল্লাহর একত্ববাদ ও ইবাদতে যদি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিজ বংশধর, চাচা, ফুফু ও কন্যার ব্যাপারে এমন ঘোষণা দেন তবে অন্যান্য মুসলমান কিভাবে আল্লাহর নাফরমানি করে প্রিয়নবির শাফায়াত লাভের আশা করতে পারে!
কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা থেকে এ কথা প্রমাণিত যে, শিরক মুক্ত ঈমান ও নেক আমল ছাড়া কোনো আদম সন্তানই পরকালে মুক্তি পাবে না। যারাই প্রিয় নবির অনুসরণ ও অনুকরণ করবে তাদের মুক্তি হবে নিরাপদ ও সহজ।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শিরকমুক্ত ঈমান ও নেক আমলে নিজেদের জীবন সাজানো। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালনা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শিরকমুক্ত ঈমান লাভ ও তার ইবাদত-বন্দেগিতে নিজেদের নিয়োজিত করার তাওফিক দান করুন। হাশরের ময়দানে হাদিসে ঘোষিত সব ধরনের শাফায়াত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন