আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফুল

এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ
এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

রুদ্রাক্ষের মালা হাজার বছর ধরে হিন্দু সম্প্রদায়, বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং বাউলদের ব্যবহার করতে দেখা যায়। কিন্তু এর উৎপত্তি বা ক্রমবিকাশ সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানি না। আসুন জেনে নেই রুদ্রাক্ষের আদি-অন্ত। বিস্তারিত জানাচ্ছেন মঞ্জুর মোর্শেদ রুমন-

রুদ্রাক্ষ শব্দটি সংস্কৃত ভাষার। যার অর্থ রুদ্রের চোখ বা শিবের চোখ। পৌরাণিক কাহিনি মতে, দুর্বিনীত অসুর ত্রিপুরকে বধ করতে গিয়ে শিব দীর্ঘকাল অপলক নেত্রে যুদ্ধ করেন। যে কারণে তার অবসাদগ্রস্ত চোখ থেকে মাটিতে গড়িয়ে পড়ে এক ফোঁটা অশ্রু। সেই অশ্রুকণা থেকেই জন্ম হয় রুদ্রাক্ষের।

এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ
এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

রুদ্রাক্ষ ফুল Elaeocarpaceae পরিবারের সদস্য। এর বৈজ্ঞানিক নাম Elaeocarpus ganitrus। রুদ্রাক্ষ গাছ দেখতে কিছুটা বকুল গাছের মতো। পরিপক্ক গাছের শেকড়ে ঝাউ-শিমুল-বুদ্ধনারিকেল গাছের মতো অধিমূল দেখা যায়। গাছের ফল দেখতে গাঢ় নীল রঙের। যে কারণে এর ইংরেজি নাম বলয়ে marble তরী বা বলয়ে berry beads।

রুদ্রাক্ষের ক্ষেত্রে মুখ সংখ্যা অতি গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষই দেখতে পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি। তবে ১ থেকে শুরু করে ৩৮ মুখী পর্যন্ত রুদ্রাক্ষের সন্ধানও পাওয়া যায়। সহজলভ্য নয় বলে ১৪ থেকে ২১ মুখী রুদ্রাক্ষের মূল্যও বেশি।

এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ
এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

যাবতীয় নানামুখী রুদ্রাক্ষের মধ্যে সবচেয়ে দুর্লভ বোধ হয় সুশ্রী এবং গোলাকার একমুখী রুদ্রাক্ষ। যা আজকাল অতিশয় দুর্লভ। শোনা যায়, ভারতের টাটা কোম্পানি ৭০ লাখ টাকা মূল্যের একটি একমুখী রুদ্রাক্ষ বংশ পরম্পরায় রক্ষা করে আসছে।

  • এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

    এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

  • এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

    এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

  • এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

    এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

  • এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ
  • এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ
  • এক ফোঁটা অশ্রু থেকে জন্ম হয় রুদ্রাক্ষ

আঙিনা কৃষি

চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!

চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!
চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!

আপনার ছাদকে করে তুলুন রঙিন আর মনোমুগ্ধকর! চন্দ্রমল্লিকা, যা তার মিষ্টি গন্ধ ও উজ্জ্বল রঙের জন্য পরিচিত, আপনার ছাদকে সেজে তুলতে পারে এক নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর বাগানে। সঠিক যত্ন আর পরিকল্পনার মাধ্যমে চন্দ্রমল্লিকার গাছগুলো আপনার ছাদকে রূপ দেবে এক সবুজ-সুন্দর স্বর্গে। এখনই শুরু করুন চন্দ্রমল্লিকার যত্ন আর সাজানোর যাত্রা!

🌿 চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে ছাদ সাজানোর অসাধারণ উপায় 🌼

চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!
চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!

🌸 কেন চন্দ্রমল্লিকা বেছে নেবেন?

🌼 উজ্জ্বল রঙ: হলুদ, সাদা, লাল, গোলাপি—বিভিন্ন রঙের চন্দ্রমল্লিকা আপনার ছাদকে রঙিন করে তুলবে।

🌼 সহজ যত্ন: এই গাছটি সহজে বাড়ে এবং কম যত্নেই ভালো ফলন দেয়।

🌼 বায়ু বিশুদ্ধকরণ: চন্দ্রমল্লিকা আপনার ছাদে পরিবেশের তাজা বাতাস নিশ্চিত করে।

🌼 ঔষধি গুণ: কিছু চন্দ্রমল্লিকা প্রজাতি আরামদায়ক ঘ্রাণ ছাড়াও ঔষধি গুণসম্পন্ন।

চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!
চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!

🌸 চন্দ্রমল্লিকার চাষের ধাপ

🌼 সঠিক পাত্র নির্বাচন করুনঃ মাটি ধরার জন্য মাটি বা সিরামিকের পাত্র ব্যবহার করুন। পাত্রে পানি নিঃসরণের জন্য ছিদ্র থাকা প্রয়োজন।

🌼 মাটির প্রস্তুতিঃ দো-আঁশ মাটির সঙ্গে পচা গোবর বা জৈব সার মিশিয়ে নিন। মাটি যাতে জলাধার রাখে এবং বাতাস চলাচল করতে পারে তা নিশ্চিত করুন।

🌼 চারা বা বীজ লাগানোঃ ভালো মানের চারা বা বীজ কিনুন। পাত্রে বা বেডে পর্যাপ্ত দূরত্ব রেখে গাছ লাগান।

🌼 সঠিক সেচ প্রদানঃ চন্দ্রমল্লিকা অতিরিক্ত পানি পছন্দ করে না। মাটি শুকনো লাগলে হালকা পানি দিন।

🌼 সার প্রয়োগঃ মাসে একবার তরল জৈব সার প্রয়োগ করুন। গাছ ফুল দেওয়ার সময় বাড়তি পটাশ ও ফসফেট প্রয়োগে ভালো ফল পাবেন।

🌼 সূর্যালোকের যত্নঃ গাছকে দিনে অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা সরাসরি সূর্যের আলোতে রাখুন।

🌼 সময়মতো ছাঁটাই করুনঃ শুকিয়ে যাওয়া পাতা এবং ডাল ছেঁটে দিন। নতুন ডালপালা বাড়াতে প্রতি দুই মাসে গাছ ছাঁটাই করুন।

চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!
চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!

🌸ছাদ সাজানোর কৌশল

🌼 রঙিন গাছের প্যাটার্ন তৈরি করুন: চন্দ্রমল্লিকার বিভিন্ন রঙের ফুল দিয়ে ছাদের এক কোণে সুন্দর প্যাটার্ন তৈরি করুন।

🌼 উচ্চতা ভেদে সাজান: পাত্রের উচ্চতা অনুযায়ী চন্দ্রমল্লিকার গাছগুলো সাজান।

🌼 বসার জায়গার চারপাশে রাখুন: ছাদে একটি বসার জায়গা তৈরি করে তার চারপাশে চন্দ্রমল্লিকা রাখুন।

🌼 আলো ব্যবহার করুন: সন্ধ্যায় ছাদের সৌন্দর্য বাড়াতে LED লাইট ব্যবহার করুন।

🌸চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে ছাদ সাজানো শুধু সৌন্দর্য বাড়ায় না, এটি আপনার মানসিক শান্তি ও স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। একটু যত্ন আর পরিকল্পনা করলেই আপনার ছাদ হবে এক সবুজ আর রঙিন আশ্রয়স্থল। এখনই শুরু করুন চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে আপনার ছাদ সাজানোর যাত্রা! 🌼

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফুল

চন্দ্রমল্লিকার ফুলের চাষ ও তার রোগ দমনের উপায়

চন্দ্রমল্লিকার ফুলের চাষ ও তার রোগ দমনের উপায়
চন্দ্রমল্লিকার ফুলের চাষ ও তার রোগ দমনের উপায়

চন্দ্রমল্লিকা একটি খুবই জনপ্রিয় ফুল। এই ফুলের বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হয়। বিভিন্ন রংয়ের এই ফুলগুলোর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমূল্য রয়েছে প্রথম সারিতে। অক্টোবরে কুঁড়ি আসে এবং নভেম্বরে ফুল ফোটে৷ গাছে ফুল তাজা থাকে ২০ থেকে ২৫ দিন৷  জনপ্রিয়তার দিক থেকে গোলাপের পরই এর স্থান। এটি বিভিন্ন বর্ণ ও রঙের হয়ে থাকে। এর মধ্যে তামাটে, সোনালি, হলুদ, বেগুনি, লাল, খয়েরি এবং “গ্রিন গডেস” নামের সবুজ চন্দ্রমল্লিকা অত্যন্ত জনপ্রিয়। চন্দ্রমল্লিকা ফুলের বাজারে চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

চাষ পদ্ধতি 

জলবায়ু ও মাটিঃ চন্দ্রমল্লিকা তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা আবহাওয়া এবং রৌদ্রজ্জল জায়গা পছন্দ করে। বাংলাদেশে শীতকালই এই ফুল চাষের উত্তম সময়। জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ সুনিস্কাশিত দো আঁশ ও বেলে মাটি চন্দ্রমল্লিকা চাষের জন্য উপযোগী। মাটির পিএইচ ৬.০-৭.০ হওয়া বাঞ্জনীয়।

চারা তৈরিঃ

বীজ, সাকার ও শাখা কলম থেকে চন্দ্রমল্লিকার চারা তৈরি করা যায়। বীজ থেকে চারা করলে তা থেকে ভাল ফুল পাওয়া যায় না এবং ফুল পেতে অনেক দিন লেগে যায়। অন্য দিকে ডাল কেটে শাখা কলম করলে বা সাকার থেকে চারা করলে এ সমস্যা থাকে না। এদেশে শাখা কলম করেই সাধারনত চারা তৈরি করা হয়। জুলাই মাসের  মাঝামাঝি সময় থেকে শাখা কলম করা শুরু হয়। এক বছর বয়সী সতেজ সবল ডাল থেকে ৮-১০ সেমি লম্বা ডাল তেরছাভাবে কেটে বেডে বা বালতিতে বসিয়ে দিলে তাতে শিকড় গজায়। ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে যখন ফুল দেওয়া শেষ হয়ে যায় তখন গাছগুলোকে মাটির উপর থেকে ১৫-২০ সেমি রেখে কেটে দেয়া হয়। কিছু দিন পর ওসব কাটা জায়গার গোড়া থেকে কিছু সাকার বের হয়। এসব সাকার ৫-৭ সেমি লম্বা হলে মা গাছ থেকে ওদের আলাদা করে ছায়াময় বীজতলায় বা টবে লাগানো হয়। মে- জুলাই মাসে চারাকে বৃষ্টি ও  কড়া রোদ থেকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

চারা রোপনঃ

শেষবারের মত নিদিষ্ট স্থানে কিংবা টবে রোপনের পূর্বে চারাগুলোকে স্বতন্ত্র জমিতে কিংবা টবে পাল্টিয়ে নিয়ে তাদের ফুল উৎপাদনের উপযুক্ততা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। জমি কিংবা টবে চারা রোপনের উপযুক্ত সময় অক্টেবর- নভেম্বর। জাতভেদে ৩০ x ২৫ অন্তর চন্দ্রমল্লিকা রোপন করতে হবে।

পটে বা টবে সার প্রয়োগ:

পটে জন্মানোর জন্য ২ ভাগ মাটি, ২ ভাগ গোবর সার, ১ ভাগ পাতা পচা সার ও ১ ভাগ হাড়ের গুঁড়ার সাথে ৩ গ্রাম টিএসপি, ৩ গ্রাম মিউরেট অব পটাশ এর মিশ্রণ ব্যবহার করা উত্তম। ৮ গ্রাম ইউরিয়া সারের অর্ধেক সাকার/কাটিং রোপণের ২৫-৩০ দিন পর গাছের দৈহিক বৃদ্ধির সময় এবং বাকি অর্ধেক ফুলের কুড়ি আসার সময় উপরি প্রয়োগ  করা উচিত।

কুঁড়ি অপসারণ:

অনাকাঙ্ক্ষিত অপরিপক্ক ফুলের কুঁড়ি অপসারণ করাকে কুঁড়ি অপসারণ বলা হয়। চারা গাছে তাড়াতাড়ি ফুল আসলে তা সঙ্গে সঙ্গে অপসারণ করতে হয়। বড় আকারের ফুল পেতে হলে  ডিসবাডিং করা উচিৎ অর্থাৎ মাঝের কুঁড়িটি রেখে পাশের দুটি কুঁড়ি কেটে ফেলতে হয়। আর মধ্যম আকারের ফুল পেতে চাইলে মাঝের কুড়িটি অপসারন করা উচিত।

রোগবালাই ও দমন ব্যবস্থা:

জাবপোকা: এ পোকা খুব ছোট আকৃতির, নরম ও কালো-সবুজ বর্ণের। শীতকালে এর প্রকোপ খুব বেড়ে যায়। এ পোকা গাছের পাতা, ডগা এবং ফুল থেকে রস চুষে খেয়ে গাছের ক্ষতি করে। আক্রান্ত নতুন কুঁড়ি ও পাতা কুঁকড়ে যায়।

দমন ব্যবস্থাঃ

  • এ পোকা দমনে প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত পাতা বা ফুল ছিঁড়ে ফেলে পোকাসহ ধ্বংস করা উচিত।
  • সাবান গুঁড়া ৫ গ্রাম/লিটার হারে পনিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করেও এ পোকা দমন করা যেতে পারে।

আক্রমণ বেশি হলে ডাইমেথয়েট জাতীয় কীটনাশক (পারফেকথিয়ন/সানগর/ রগর / টাফগর ৪০ ইসি) ২.০ মিলি./লিটার  অথবা ইমিটাক্লোপ্রিড জাতীয় (টিডো/ ইমিটাফ) ২ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

ফুল সংগ্রহঃ

চন্দ্রমল্লিকা ফুল কুঁড়ি অবস্থায় তুললে ফোঁটে না। বাইরের পাপড়ি গুলো সম্পূর্ণ খুলে গিয়েছে এবং মাঝের পাপড়ি গুলো ফুটতে শুরু করেছে এমন অবস্থায় খুব সকালে অথবা বিকেলে ধারালো ছুরি দিয়ে দীর্ঘ বোঁটাসহ কেটে ফুল তোলা উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফুল

গাঁদা ফুল চাষ

গাঁদা ফুল চাষ
গাঁদা ফুল চাষ

শীতে গাঁদা ফুলের চাষ

শীতকালের ফুলের মধ্যে গাঁদা অন্যতম। বিবাহ, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, গৃহসজ্জা, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও শহীদ দিবসসহ সব অনুষ্ঠানেই গাঁদা ফুলের বিকল্প নেই। কেটে যাওয়া ত্বকের রক্ত পড়া বন্ধ করতে, কাটা ঘা শুকাতে ও জীবাণুনাশক হিসাবে গাঁদা পাতার রস খুব উপকারী।

জাতঃ

চাইনিজ , রাজগাঁদা, আফ্রিকান ও ফরাসি জাতের গাঁদা আমাদের দেশে বেশি চাষ হয়। রঙ ভেদে গাঁদার জাত হচ্ছে হলুদ, লাল, কমলা, গাঢ় খয়েরি, লাল হলুদের মিশ্রণ ইত্যাদি। আফ্রিকান জাতের গাছ সোজা ও লম্বা, ৩০-১০০ সেমি লম্বা হয়। ফুল কমলা, হলুদ ও গাঢ় খয়েরি রঙের ছিটা দাগযুক্ত হয়। ফরাসি গাঁদার গাছ খাট ও ঝোপালো, ১৫-৩০ সেমি লম্বা হয়। ফুল আকারে ছোট,  প্রচুর ধরে ও রঙ লাল। কমলা সুন্দরীর গাছ খুব শক্ত। ফুল গাঢ় কমলা। শাখা প্রশাখা বেশি হওয়ায় ফুল বেশি ধরে। ফুলের আকার ৪.৫ থেকে ৫ সেমি। অনেক দিন পর্যন্ত ফুল ধরে। প্রতি গাছে ৫৫-৬০ টি ফুল পাওয়া যায়। রোগ সহনশীল।

গাঁদা ফুল চাষ
গাঁদা ফুল চাষ

চারা তৈরিঃ

শাখা কলম ও বীজের মাধ্যমে গাঁদা ফুলের চারা তৈরি করা যায়। নভেম্বরে বীজতলায় বীজ বপন করে চারা উৎপাদন করতে হয়। সারা বছর চাষ করা গেলেও শীতকালে ফলন ভাল হয়। শাখা দিয়ে কলম করার জন্য গাঁদা গাছের শাখা ৮-১০ সেমি লম্বা করে কাটতে হবে। বীজতলায় শাখা ডালের টুকরাগুলো দু একটি পর্বসহ রোপন করতে হবে। উপযুক্ত সময় হচ্ছে মার্চ মাস। নিয়মিত সেচ দিয়ে বীজতলা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ২০-২৫ দিনের মধ্যে পাতা গজায়।

জমি নির্বাচন ও তৈরিঃ

উঁচু, সুনিষ্কাশিত দো আঁশ ও উর্বর মাটি গাঁদা চাষের উপযোগী। চার পাঁচবার চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করতে হবে। টবে বা পাত্রে চাষ করলে তিন ভাগ দো আঁশ এঁটেল বা দো আঁশ মাটির সাথে একভাগ গোবর মিশিয়ে সার মাটির মিশ্রন তৈরি করতে হবে। এই সার মাটি টবে বা পাত্রে বা পলিব্যাগে ভরতে হবে।

সার প্রয়োগঃ

প্রতি শতক জমিতে পঁচা গোবর, ৪০ কেজি ইউরিয়া ২ কেজি, টিএসপি ৩ কেজি এবং এমওপি ২ কেজি সার প্রয়োজন । এ সারগুলো মাটির সাথে মিশাতে হবে।

গাঁদা ফুল চাষ
গাঁদা ফুল চাষ

চারা রোপনঃ

বীজ থেকে অথবা শাখা থেকে তৈরি একমাস বয়সের চারা রোপন করতে হয়। ডিসেম্বর মাসে চারা রোপন করতে হয় । সারি থেকে সারির দূরত্ব ৪০-৫০ সেমি এবং চারা থেকে চারার দূরত ৩০-৪০ সেমি হওয়া উচিত। চারা উৎপাদন না করে সরাসরি বীজ থেকেও গাঁদা চাষ করা যায়। এক্ষেত্রে প্রতি শতকে ৫-৬ গ্রাম বীজ জমিতে বপন করতে হবে।

গাঁদা ফুল চাষ
গাঁদা ফুল চাষ

পরিচর্যাঃ

মাটি শুকনোর আগেই সেচ দিতে হয়। গাছের গোড়াই পানি জমলে  নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। আগাছা জন্মালেই নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। গাঁদা ফুলে রোগ বালাই তেমন হয়না। তবে জাব পোকা আক্রমণ করলে ২ মিলি ম্যালাথিয়ন ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। গাছ বড় হলে খুটির সাথে বেধে দিলে গাছ  সোজা থাকে। এতে ফুলের গুনগত মান ভাল হয়। গাছে ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য ফুল আসার একমাস আগে গাছের ডগা ভেঙে দিতে হবে। একটি শাখায় ঘন হয়ে অনেকগুলো ফুল বা কুঁড়ি ধরলে উপরের একটি বা দুইটি রেখে বাকিগুলো ভেঙ্গে দিতে হবে যাতে ফুল বড় হয়। চারা রোপনের ১৫ দিন পর প্রতি শতাংশে ৫০ গ্রাম ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করা যেতে পারে। চারা মারা গেলে সেখানে চারা রোপন করা উচিত। চারা ঘন হলেও পাতলা করতে হবে।

গাঁদা ফুল চাষ
গাঁদা ফুল চাষ

ফুল সংগ্রহ ও ফলনঃ

ফুল কাঁচি বা ব্লেড দিয়ে বোটাসহ কেটে সংগ্রহ করতে হবে। খুব ভোরে ফুল তুলতে হয়। চারা রোপনের ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায়। গড়ে একটি গাছে জাত ভেদে ১৫-৪০ টি ফুল ধরে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফুল

জারবেরা চাষ

জারবেরা চাষ
জারবেরা চাষ

পরিচিতিঃ

জারবেরা এ্যাসটারেসী পরিবারভুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক ফুল । জার্র্মান পরিবেশবিদ ট্রগোট জার্বার এর নামানুসারে এ ফুলটির নামকরন করা হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক ফুল বানিজ্যে কাট ফ্লাওয়ার (Cut flower) হিসেবে উল্লেখযোগ্য ১০টি ফুলের মধ্যে অন্যতম কাট ফ্লাওয়ারের জন্য ও বেশী দিন ফুলদানীতে সতেজ রাখতে জারবেরার জুড়ি নেই।

জাত

জারবেরা গণের আওতায় ৪০টির মত প্রজাতি আছে।এ গুলির মধ্যে জারবেরা জ্যামেসোনি প্রজাতিটি চাষাবাদ হচেছ সংকরায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে Gerbera jamesonii এর অনেক জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট  জারবেরা  ফুলের বারি জারবেরা-১ ও বারি জারবেরা-২ দুইটি জাত উদ্ভাবন করেছে। 

জলবায়ু

জলবায়ু জারবেরা কষ্টসহিষ্ণু গাছ এবং সব ধরনের জলবায়ুতে কমবেশী জন্মায়।গ্রীষ্মমন্ডলীয় (Temperate)  অঞ্চলে উন্মুক্ত স্থানে পলিসেডে এবং নাতিশীতোষ্ণ (Tropical) অঞ্চলে এ ফুলটিকে গ্রীনহাউজে চাষাবাদ করার পরামর্শ দেয়া হয়।

জারবেরা চাষ
জারবেরা চাষ

নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ (Protective condition)

বাংলাদেশে জারবেরা শীতকালীন সময়ে খোলা মাঠে বা উন্মুক্ত স্থানে চাষ করা হয়। গ্রীষ্মকালীন সময়ে পলিসেডে চাষ করা হয়। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চাষাবাদ করলে যদিও খরচের প্রধান্য অধিক পড়ে তথাপিও ফুলের গুনগতমান ও ফলন বৃদ্ধি এবং রোগপোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে জারবেরা চাষ করা জরুরী প্রয়োজন ।উজ্জ্বল সূর্যালোক জারবেরা গাছের বৃদ্ধি ও গুনগতমান সম্পন্ন ফুল উৎপাদনে সহায়ক। কিন্তু গ্রীষ্মকালে উন্নত ফুল উৎপাদনের জন্য হালকা ছায়া (৩০%) প্রদান করতে হয়। জারবেরা চাষে অনুকূল দিবাকালীন তাপমাত্রা ১৬-২০০ সেন্টিগ্রেড এবং রাত্রিকালীন তাপমাত্রা ১০ – ১২০ সেন্টিগ্রেড । উচচ তাপমাত্রায়  গাছে ফুল আসে ঠিকই,  কিন্তু ফুল ততটা গুনগত মান সম্পন্ন হয় না

মাটিঃ

সুনিষ্কাশিত, উর্বর দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি  জারবেরা চাষের জন্য উত্তম। মাটির পি এইচ মান ৫.৫-৭.০ এর মধ্যে থাকা উচিত । জারবেরার জমিতে প্রচুর জৈব সার থাকা দরকার এজন্য পরিমিত পরিমানে গোবর সার, পাতাপচা সার, Cocodust ইত্যাদি প্রয়োগ করতে হবে ।

জারবেরা চাষ
জারবেরা চাষ

বংশবৃদ্ধিঃ

(ক) বীজের মাধ্যমে (By seed)

বীজের মাধ্যমে জারবেরার বংশবৃদ্ধি করা যায়। এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত গাছে মাতৃগাছের সকল গুনাবলী বজায় থাকে না, তবে পদ্ধতিটি সহজ। এ পদ্ধতির সুবিধা হলো  বীজের মাধ্যমে রোগ-পোকা আক্রমনের সম্ভাবনা কম থাকে ।

(খ) ডিভিশন (Division of clumps)

মাতৃগাছের ক্লাম্প বিভক্ত করে বংশবৃদ্ধি করা যায়। এজন্য মাঠের সুপ্রতিষ্ঠিত ও পরিপূর্ণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত গাছগুলিকে ছোট ছোট ভাগে ধারালো ছুরি দিয়ে ভাগ করা হয়।

উক্ত সাকার (Sucker) গুলির পাতা ও শিকড় হালকা প্রুনিং (Pruning) করে পরবর্তীতে নতুন বেডে (Bed) লাগানো হয়।

(গ) মাইক্রোপ্রোপাগেশন (Micropropagation)  

বানিজ্যিক ভাবে চাষাবাদের ক্ষেত্রে উপরের পদ্ধতি দুটি খুব উপযোগী নয়। অল্প সময়ে প্রচুর সংখ্যায় রোগমুক্ত জারবেরার চারা পাওয়ার জন্য টিসুকালচার পদ্ধতিটি উত্তম। এ জন্য প্রথমে সঠিক জাত নির্বাচন করতে হবে। পরে ঐ গাছের কান্ডের বর্ধিত অগ্রাংশ (growing shoot tips), ফুল কুড়ি (Flower bud), পাতা (Leaf) ইত্যাদিকে এক্সপ্লান্ট (Explants) হিসাবে নিয়ে বার বার সাব-কালচার (Sub-culture) করে অসংখ্য চারা উৎপাদন করা সম্ভব।

জারবেরা
জারবেরা

চাষাবাদ (Cultivation)

(ক) জমি তৈরী (Land preparation)

জমিতে পরিমানমত জৈব সার দিতে হবে। তারপর ৪০-৪৫ সেঃ মিঃ গভীর করে আড়াআড়ি ও লম্বা ভাবে পরপর কয়েকটি চাষ দিয়ে জমিটি ঝুরঝুরা (fine tilth) করে তৈরী করতে হবে। ফলে সকল জৈব সার মাটির সাথে সুন্দরভাবে মিশে যাবে

(খ) বেড তৈরী (Bed preparation)

 জারবেরার জন্য বেডের উচ্চতা ২০ সেঃ মিঃ এবং প্রশস্ততা ১.০-১.২ মিঃ হলে ভাল হয়। জমিতে যেন পানি জমে না থাকে সেজন্য দুই বেডের মধ্যবর্তী ৫০ সেঃ মিঃ পানি নিষ্কাশন নালা থাকতে হবে। সাধারনতঃ একবার লাগিয়ে পর্যায়ক্রমে ২ বৎসর ফুল আহরন করা হয় বলে জমি ও বেড তৈরীর সময়   সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হয়।

(গ) চারা লাগানো (Planting)

বেড (Bed) তৈরী হলে জাত ও এর বৃদ্ধির ধরন বুঝে সাকারগুলি (Sucker) সারি থেকে সারি ৫০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছ ৪০ সেমি দূরত্ব রেখে রোপন করতে হবে। চারাগুলি এমনভাবে মাটিতে স্থাপন করতে হবে যেন চারার ক্রাউন (Crown or Central growing point) মাটির (Surface level) উপরে থাকে । ক্রাউন মাটির নীচে গেলে গোড়া পচা (Foot rot) রোগ সংক্রমনের সমূহ সম্ভাবনা থেকে যায়।

(ঘ) লাগানোর সময় (Planting time)

জারবেরা সারা বৎসর লাগানো যায় তবে উন্নত ফুল ও বেশী উৎপাদন পেতে সাধারনতঃ অক্টোবর-নভেম্বর  মাসে চারা লাগানো উচিত।

(ঙ) পানি দেয়া (Irrigation)

জারবেরার শিকড় গভীরে প্রবেশ করে বিধায় বার বার হালকা স্প্রিংকলার (Sprinkler) সেচের পরিবর্তে প্লাবন সেচ (Flood Irrigation) দেয়া উত্তম। পানি সেচের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয়। কারণ জারবেরা ক্ষেতে জলাবদ্ধতা মাটিবাহিত রোগ সংক্রমণ ত¦রানি¦ত করে। আবার মাটিতে পানির অভাব হলে গাছ ঢলে (Wilting) পড়ে, সেক্ষেত্রে ফুলের পুষ্পদন্ড ছোট হয়ে যায়। বায়ু চলাচলের সুবিধার জন্য প্রতিবার সেচ দেয়ার পর মাটিতে জো  আসলে নিড়ানী দিয়ে উপরের শক্ত আস্তরণ (Hard crust)  ভেঙ্গে দিতে হবে।

(চ) সারপ্রয়োগ (Fertilization)

জারবেরা দ্রুত বর্ধনশীল একটি ফুল ফসল।

গাছের বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ ও গাছ থেকে সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে পরিমিত পরিমান সার প্রয়োগ করতে হবে। চারা লাগানোর পর নতুন শিকড় গজানো শুরু হলে সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে।

প্রতি হেক্টরে ১০ টন পঁচা গোবর/কম্পোস্ট, ২ টন কোকোডাষ্ট, ৩৫০ কেজি ইউরিয়া, ২৫০ কেজি টিএসপি ও ৩০০ কেজি মিউরেট অব পটাশ, ১৬৫ কেজি জিপসাম, ১২ কেজি বোরিক এসিড ও জিংক অক্সাইড সার প্রয়োগ করতে হবে। সাকার রোপণের ১০-১৫ দিন পূর্বে পঁচা গোবর/কম্পোস্ট এবং ইউরিয়া বাদে অন্যান্য সার ৭-১০ দিন পূর্বে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সাকার রোপণের ২৫ দিন পর ইউরিয়া সারের অর্ধেক প্রয়োগ করতে হবে এবং বাকি অর্ধেক সার সাকার রোপণের ৪৫ দিন পর গাছের গোড়ার চারপাশে একটু দূর দিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। উপরি প্রয়োগের পর সেচ দিতে  হবে।

জারবেরা চাষ
জারবেরা চাষ

রোগ ও পোকা মাকড় ব্যবস্থাপনাঃ

মুল পচা রোগঃ

মাটি বাহিত এক প্রকার ছত্রাকের আক্রমণে এরোগ হয়। এরোগে আক্রান্ত হলে  গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়এবং অবশেষে সম্পূর্ণ গাছটি শুকিয়ে যায়। মাটি জীবাণুমুক্ত করে চারা লাগালে এরোগ কম হয়।

গোড়া পঁচা রোগঃ

এটি মাটি বাহিত রোগ। এ রোগের ফলে গাছের কেন্দ্রীয় অংশ প্রথমে কালো রং ধারণ করে ও পরে পচে যায়। পরবর্তীতে পাতা ও ফুল মারা যায়।

প্রতিকারঃ

১. রিডোমিল অথবা ডায়থেন এম-৪৫ ছত্রাকনাশক ০.২% হারে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

২. টপসিন ০.০৫% হারে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করেও এরোগ দমন করা যায়।

পাউডারি মিলডিউঃ

দুই ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে এরোগ হয়। এরোগে আক্রান্ত গাছেরর উপরে  সাদা পাউডারের আস্তরণ দেয়া হয়েছে বলে মনে হয়।

প্রতিকারঃ

১। বেনোমিল ৫০ডব্লিউপি  ০.০১% হারে সেপ্র করলে ভাল ফল পাওয়া  যায়।

জারবেরা
জারবেরা

পোকামাকড়ঃ

মাকড়ঃ

শুস্ক ও উষ্ণ আবহাওয়ায় মাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়। এর আক্রমণে পাতা ও ফুলকুঁড়ির বৃদ্ধি চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। ফুলের অস্বাভাবিক আকার ও আকৃতির কারণে বাজার মুল্য থাকেনা।

প্রতিকারঃ 

১. আক্রমনের প্রথম দিকে আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

২. যে কোন মাকড় নাশক যেমন ভারটিম্যাক বা ওমাইট ৫৭ইসি ১.৫ মিঃলিঃ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে

 হবে।

সাদা মাছি পোকা ঃ

সাদা মাছি গাছের বিভিন্ন অংশের রস চুষে মারাত্মক ক্ষতি করে। এ পোকা ভাইরাস রোগ ছড়ায়।

দমনঃ

১. আঁঠালো হলুদ রংয়ের ফাঁদ ব্যবহার করা ।

২.  ৫০ গ্রাম আধা ভাঙা নিমবীজ ১ লিটার পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে উক্ত পানি ছেকে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার পাতার নীচের দিকে স্প্রে করা।

৩.  চারা রোপনের ১০-১৫ দিন পর থেকে এসাটাপ ৭৫ (এসপি) ও কুমুলাস ডিএফ এক সঙ্গে ২ গ্রাম করে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

জারবেরা
জারবেরা

ফুল তোলা (Harvesting)

পূর্ন বিকশিত জারবেরা ফুলের বাহিরের দু’সারি ডিস্ক ফ্লোরেট (Disc floret) পুষ্প দন্ডের সাথে সমকৌনিক অবস্থানে আসলে ফুল তোলা হয়। কর্তনের সময় পুষ্পদন্ড যথাসম্ভব লম্বা রেখে ফুল সংগ্রহ করা হয়। ধারালো চাকু দ্বারা তেরছা ভাবে খুব সকালে বা বিকালে ফুল তোলা উত্তম। ফুল কাটার পর পুষ্পদন্ড এক ইঞ্চি  পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। পানির সাথে অল্প চিনি এবং কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে দিলে ফুল সতেজ থাকে।

ফলন (Yield)

জাত ভেদে ফলন কম বেশি হয়। তবে প্রতি গাছে ২০-২৫ টি ফুল বছরে সংগ্রহ করা যায়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফুল

রজনীগন্ধা চাষ

রজনীগন্ধা চাষ
রজনীগন্ধা চাষ

পরিচিতি ও ব্যবহারঃ

রজনীগন্ধা Amaryllidaceae পরিবারের সদস্য। এর ইংরেজী নাম Tuberose এবং বৈজ্ঞানিক নাম Polianthes tuberosa. এ ফুলের আদি বাসস্থান মেক্সিকো। ফুলদানীতে এ ফুল ৭-১০ দিন সজীব থাকে এবং প্রতি রাতেই সুগন্ধ ছড়িয়ে ঘরের পরিবেশকে বিমোহিত করে।বাংলাদেশে এ ফুলের উত্তরোত্তর চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে এর যথেষ্ট চাষাবাদ হচ্ছে।

সুগন্ধি ফুল হিসেবে রজনীগন্ধা খুবই জনপ্রিয়। এ ফুল সন্ধ্যারাতে ফোঁটে এবং সুগন্ধ ছড়ায় বলে এর রজনীগন্ধা নামকরন হয়েছে। চাহিদার দিক দিয়ে এবং বানিজ্যিক দৃষ্টিকোন থেকে এ ফুলের জুড়ি নেই।  কাটফ্লাওয়ার হিসেবে ফুলদানীর জন্য এটি অনন্য। এ ছাড়া মালা, পুষ্পস্তবক, বেনী ও মুকুট তৈরীতে এ ফুল ব্যবহৃত হয়। এ ফুলের নির্যাস থেকে সুগন্ধী দ্রব্য প্রস্তুত করা হয়।

জাত/শ্রেণীঃ

ফুলের  আকার ও পাঁপড়ির উপর ভিত্তি করে ৩ শ্রেণীর রজনীগন্ধা পাওয়া যায়।

ক) সিংগেল : এ ধরনের জাতের ফুলে পাঁপড়ি একটি সারিতে থাকে। ফুল সম্পূর্ন সাদা রং এর হয় এবং ফুল গুলি খুবই সুগন্ধযুক্ত হয়।  

খ) সেমি-ডাবল: এ ধরনের জাতের ফুলে পাঁপড়ি দুই/তিন সারিতে সাজানো থাকে ।

গ) ডাবল : এ ধরনের জাতের ফুলে তিন-এর অধিক পাপঁড়ির সারি থাকে । পাঁপড়ির কিনারায় হালকা লাল রং এর আভা থাকে এবং ফুল গুলি কম সুগন্ধযুক্ত হয়।

বাংলাদেশে সিংগেল ও ডাবল শ্রেণীর রজনীগন্ধা পাওয়া যায়। তবে এখন পর্যন্ত কোন জাত উদ্ভাবিত হয়নি।

রজনীগন্ধা
রজনীগন্ধা

বংশবিস্তারঃ রজনীগন্ধা বীজ ও কন্দ উভয় মাধ্যমেই বংশবিস্তার করে থাকে। তবে আমাদের দেশে সাধারণত কন্দ দ্বারাই রজনীগন্ধার চাষ হয়ে থাকে। প্রতিটি গাছের গোড়ায় পেঁয়াজের মত যে বাল্ব পাওয়া যায় তাকে কন্দ বা বাল্ব বলে। পুরাতন গাছের গোড়ায় ঝাড় আকারে অনেক বাল্ব থাকে। মাঝের  বাল্বটি বড় হয়। সাধারনত: মাঝারী থেকে বড় আকারের বাল্ব বংশবিস্তারের জন্য ব্যবহার করা হয়। বড় ধরনের বাল্ব থেকে স্বাস্থ্যবান গাছ হয় ও গাছে তাড়াতাড়ি ফুল আসে কিন্তু ছোট বাল্ব থেকে দূর্বল প্রকৃতির গাছ হয় ও দেরীতে ফুল আসে। কন্দ থেকে উৎপন্ন গাছে মা-গাছের সব বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন থাকে এবং স্বল্প সময়ে গাছে ফুল আসে। শীতকালে কন্দগুলি সাধারণত মাটির নিচে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। শীতের শেষে কন্দগুলি লাগানোর জন্য উপযোগী হয়।

জলবায়ু ও মাটিঃ

রজনীগন্ধা উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া পছন্দ করে এজন্য আমাদের দেশে গ্রীষ্ম কালে এ ফুলের চাষ করা হয়। এ ফুলের সফল চাষের জন্য গড় তাপমাত্রা ২০-৩০০ সেন্টিগ্রেড ও আর্দ্র আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়। সুনিস্কাশিত, জৈবপদার্থ সমৃদ্ধ দোআঁশ মাটি রজনীগন্ধা চাষের জন্য উত্তম।

জমি তৈরী ও সার প্রয়োগঃ

জমি ৪-৫ বার চাষ দিয়ে ভালভাবে তৈরী করতে হয়। শেষ বার চাষের সময় হেক্টর প্রতি উর্বরতা ভেদে ৫-১০ টন গোবর, ২৫০ কেজি ফসফেট ও ২০০ কেজি  এম পি সার মাটির সাথে ভাল ভাবে মিশিয়ে দেয়া উচিত। বাল্ব রোপনের ৩ সপ্তাহ পর যখন নতুন গাছের বৃদ্ধি শুরু হয় তখন হেক্টর প্রতি ৩০০ কেজি ইউরিয়া সার এর অর্ধেকটা প্রথম উপরি প্রয়োগ এবং বাকী অর্ধেক পুষ্পদন্ড বের হওয়ার সময় উপরি প্রয়োগ করা উচিত। ভালো মানের ফুলের জন্য হেক্টর প্রতি ১২ কেজি বরিক এসিড এবং ৮ কেজি জিন্ক সালফেট প্রয়োগ করা যেতে পারে।

রজনীগন্ধা
রজনীগন্ধা

বাল্ব রোপনঃ

বাঁছাইকৃত বাল্বগুলি মার্চ-এপ্রিল মাসে জমিতে লাগানো উচিত। লাগানোর সময় পুরানো শিকড়গুলি কেটে দিতে হয়। সাধারনভাবে ভাল ফুল পাওয়ার জন্য লাইন থেকে  লাইনের দূরত্ব ৩০ সে: মি: এবং প্রতি লাইনে বাল্ব থেকে বাল্বের দূরত্ব ২০ সে: মি: নির্ধারণ করা যেতে পারে। কন্দগুলি এমনভাবে লাগাতে হবে যাতে এর অগ্রভাগ ঠিক মাটির নিচে সমতলে অবস্থান করে।প্রতিটি বাল্ব (১.৫ – ৩.০ সে মি.) সোজা করে ৭-১০ সে:মি: মাটির গভীরে লাগানো উচিত। মাটিতে রসের অভাব থাকলে কন্দ লাগানোর পূর্বে সেচ প্রদান করা উচিত। এছাড়া কন্দ রোপণের পর মাটিতে কন্দ বসার জন্য হালকা সেচ দেওয়া ভাল।

অন্তর্বর্তী পরিচর্যাঃ

রজনীগন্ধার ক্ষেত আগাছা মুক্ত রাখা উচিত। শুকনো মৌসুমে প্রয়োজন মত সেচ দিতে হবে এবং বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি সুনিস্কাশনের জন্য নিস্কাশন নালা তৈরি করতে হবে। গাছের গোড়া  থেকে শুকনো বা মরা পাতা সরিয়ে ফেলা উচিত। শীতকালে গাছের উপরের অংশ সম্পূর্ন ভাবে কেটে দেয়া ভাল।এফিড, থ্রিপস পোকা দমনের জন্য ২মিলি লিটার ম্যালাথিয়ন প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করা ভাল।

রোগের নামঃ বোট্রাইটিস পাতায় দাগ ও ব্লাইট

রোগের কারণঃ Botrytis sp.

রোগের লক্ষণঃ

এই রোগটি  বর্ষা ঋতুতে দেখা যায়। প্রথমে আক্রান্ত ফুলে গাড় বাদামী রং এর দাগ পড়ে এবং পড়ে সমস্ত পুষ্পমঞ্জুরী শুকিয়ে যায়। পাতায় এবং কান্ডেও এই রোগের প্রকোপ দেখা যায়।

রজনীগন্ধা
রজনীগন্ধা

প্রতিকারঃ

এই রোগ দমনে রোভরাল (ম্যানকোজেব) .২% হারে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

ফুল কাটা ও প্রক্রিয়াজাতকরণঃ

রজনীগন্ধার একই ক্ষেত থেকে পরপর ৩ বছর ফুল উৎপাদন করা যায়। রজনীগন্ধা লম্বা ডাটার মাথায় মঞ্জরী আকারে হয়। রজনীগন্ধার পুষ্পদন্ডের প্রথম ফুল ফুটলেই ডাঁটিসহ ফুল কাটতে হয়। ভোরের ঠান্ডা আবহাওয়ায় অথবা পড়ন্ত বিকেলে ফুল কাটতে হয়। ধারালো ছুরি বা সিকেচার দিয়ে মাটি থেকে ৪-৬ সেমি উপরে ফুলের ডাঁটি কাটতে হয় যাতে গোড়ার বাড়ন্ত কুঁড়ির ক্ষতি না হয়। প্রস্বেদনের কারণে জলীয় ক্ষতি (Transpiration loss) এড়ানোর জন্য যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি অপ্রয়োজনীয় পাতা অপসারণ করে সুবিধামত বান্ডিল তৈরি করে প্রথমে বালতিতে চিনি সহ পানিতে ২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে পরে ছিদ্র যুক্ত পলিথিনে জড়িয়ে দূরবর্তী বাজারে প্রেরণ করা যেতে পারে। এ প্রক্রিয়ায় ফূলের জীবনকাল (Vase life) দীর্ঘায়িত হয়।

বাল্ব বা কন্দ উত্তোলন ও সংরক্ষণঃ

ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে গাছের বৃদিধ বন্ধ হয়ে গেলে কন্দগুলি মাটি থেকে তুলে এনে পরিস্কার করে ছায়াযুক্ত শুষ্ক মেঝেতে ছড়িয়ে রাখতে হয়। প্রয়োজনমত পরিপক্ক কন্দ বাছাই করে পরবর্তীতে বংশবিস্তারের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। রজনীগন্ধার কন্দ বেশ কষ্টসহিষ্ণু এবং সাধারণ অবস্থায় এর কন্দ সহজেই সংরক্ষণ করা যায়।

রজনীগন্ধা
রজনীগন্ধা

রেটুন ফসলঃ

রজনীগন্ধার পূর্ববর্তী বছরের ফসল মাঠে রেখে দিয়ে উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে মৌসুমে পুনরায় ফুল উৎপাদন সম্ভব। এ প্রক্রিয়ায় ফুলের পুষ্পদন্ডের সংখ্যা বেশি পাওয়া গেলেও সবদিক দিয়ে ফুলের মান নিম্নতর হয় বিধায় বাজার মূল্য কমে যায়। তবে দ্বিগুণ সার ও যথেষ্ট সেচের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়ায় উপযুক্ত  অন্তর্বর্তী পরিচর্যার মাধ্যমে অমৌসুমে ফুল উৎপাদন করে যথেষ্ট লাভবান হওয়া যায়।

রজনীগন্ধা
রজনীগন্ধা

টবে চাষঃ

বড় টবে রজনীগন্ধার চাষ করা যায়। উপযুক্ত টব মিশ্রণ দিয়ে পাশাপাশি কয়েকটি কন্দ লাগিয়ে নিয়মিত সেচ ও মাঝে মাঝে সামান্য  খৈল ও গোবর পচানো মিশ্রণ দিলে উন্নত মানের ফুল পাওয়া যায়।

রজনীগন্ধা চাষ
রজনীগন্ধা চাষ

ফলনঃ

রজনীগন্ধার চাষ অত্যন্ত লাভজনক। বিশেষতঃ বিদেশে এর রপ্তানি বাজার বেশ সম্ভাবনাময়। দেখা গেছে যে, প্রতি হেক্টরে প্রায় ১ লক্ষ কন্দ লাগিয়ে ৩.৫ লক্ষ ফুলের ডাঁটি পাওয়া যায়। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে প্রতি ডাঁটির খুচরা মূল্য ২-৪ টাকা। তবে ঋতু বিশেষে এর মূল্য বেশ পরিবর্তনশীল। তথাপি এ ফসল উত্তরোত্তর একটি লাভজনক ফসল হিসেবে আমাদের দেশে স্থান করে নিয়েছে। এ কারণে এর চাষ ও বাজার ব্যবস্থার উন্নয়নের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com