বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে অতিবৃষ্টিতে দেশের উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। অথচ ভরা বর্ষা মৌসুমেও উত্তরের জেলা লালমনিরহাট ও দিনাজপুরে বৃষ্টির দেখা নেই। প্রকৃতির এ খামখেয়ালিতে চিরচেনা বর্ষা মৌসুম যেন এখন শুধুই কাগজে। ফলে পানির অভাবে এ দুই জেলার কৃষকরা আমন ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। ডোবা-নালায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ দিতেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কৃষক। ফলে বর্ষা মৌসুমেও জমিতে সেচ দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। অন্যদিকে জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ না হওয়ার উদ্বিগ্ন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারাও। লালমনিরহাট খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম বলেন, গত বছর বর্ষা মৌসুমে জেলায় ৮৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাষ হয়েছিল ৮৫ হাজার ৫৭৫ হেক্টর। বৃষ্টির পানির অভাবে ১ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করতে পারেননি কৃষকরা। এ বছর জেলায় ৮৫ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত ৫১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। বৃষ্টির পানির অভাবে ডিজেলচালিত শ্যালোইঞ্জিন ও বৈদ্যুতিক মোটর দিয়ে সেচের মাধ্যমে ৩৪ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। আষাঢ় মাস শেষ হয়ে গেছে, শ্রাবণও অর্ধেক চলে গেছে। এখন যদি প্রাকৃতিক নিয়মে বৃষ্টিপাত না হয়, তাহলে এবারো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রার জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হবে না। তিনি আরো বলেন, এ বছর ৪ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। কিন্তু কৃষকরা পানির অভাবের কারণে পাট পচাতে পারছে না। লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের হরিঠাকুর এলাকার চাষী আব্দুল করিম মাস্টার বলেন, আমার তিন একর জমির মধ্যে এক একর আমন ধানের চারা রোপণ করতে পেরেছি। এখন দুই একর জমি পানির অভাবে ধানের চারা রোপণ করতে পারছি না। কিছু জমিতে ডিজেলচালিত শ্যালোইঞ্জিন দিয়ে চাষ করার চেষ্টা করছি। একই ইউনিয়নের হরিঠাকুর এলাকার শফিকুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, শাহ জালাল মন্ডলও একই কথা বলেন। লালমনিরহাট খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) শামীম আশরাফ বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যস্ততা মাথায় নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা ও কাজ বাস্তবায়ন করতে হবে। এখন পর্যন্ত ৬০ শতাংশ জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। বাকি জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করতে সেচ দিতে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে রোপা আমন আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন দিনাজপুর জেলার কৃষকরাও। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সেচের মাধ্যমে আমন আবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কৃষকরা জানান, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতে পানি নেই। অনেক জমি পানির অভাবে ফেটে যাচ্ছে। কৃষকরা আমনের চারা রোপণ করতে পারছেন না। আকাশে মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ালেও বৃষ্টি হচ্ছে না। আর মাঝে মাঝে যে বৃষ্টি হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা চুষে নিচ্ছে মাটি। দিনাজপুর সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের শিকদাহাট এলাকার কৃষক মো. নজরুল ইসলাম জানান, আমরা মাঝারি ও উঁচু ভিটা জমিতে আষাঢ়ের শেষ সপ্তাহের মধ্যেই আমন ধানের চারা রোপণ করি। বর্ষা প্রায় শেষ দিকে অথচ বৃষ্টি নেই। দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানান, আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বৃষ্টিপাত না হলে কৃষকদের বিকল্প উপায়ে সেচ দিয়ে জমিতে আমন রোপণের পরামর্শ দেয়া হবে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প দিনাজপুর জেলার সহকারী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বছরে সচরাচর এ সময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। যদি অল্প সময়ের মধ্যে বৃষ্টির দেখা না মেলে, তাহলে দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় সম্পূরক সেচ শুরু করা হবে।
প্রখর রোদে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। অন্যদিকে কয়েক মাস ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় শুকিয়ে গেছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক পানির উৎস। ফলে তরমুজ ক্ষেতে সেচ দিতে পারছেন...
আগে একটি খননযন্ত্র একটানা ১০–১২ ঘণ্টা চলত। গত বছর থেকে যন্ত্রের কাটারে পলিথিন ও প্লাস্টিক আটকে তা বিকল হয়ে যাচ্ছে। পলিথিন-প্লাস্টিক ও অপচনশীল বর্জ্য অবাধে ফেলা...
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় দীর্ঘস্থায়ী বন্যার পর জমিতে এবার কচুরিপানার বিস্তার ঘটেছে। এতে চাষিদের ফসলের আবাদ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শর্ষের আবাদ কম হতে পারে বলে চাষিদের...
সর্বশেষ মন্তব্য