চলতি বছর ভুট্টা আমদানি ৯ শতাংশ কমতে পারে বলে পূর্বাভাস মেক্সিকোর। দেশীয় শস্য ব্যবহার এবং জেনেটিক্যালি মডিফায়েড (জিএম) শস্য ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে ভুট্টা আমদানিতে এ প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছে দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়। খবর রয়টার্স। গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেক্সিকোর কৃষিমন্ত্রী ভিক্টর ভাইলালোবোস এক পূর্বাভাসে জানান, চলতি বছর মোট শস্য আমদানি ১৫ লাখ টন কমতে পারে। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা সান্তিয়াগো আরগুয়েলোও উপস্থিত ছিলেন। আরগুয়েলো বলেন, ধীরে ধীরে শস্য আমদানি কমিয়ে আনা আমাদের কৃষি পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ২০২৪ সালের মধ্যে মোট আমদানির ৩০ শতাংশ দেশীয় উৎস থেকে পূরণের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে উত্তর আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিটি। এ উদ্যোগের ফলে দেশটির তিন লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের কৃষক উপকৃত হবেন। মেক্সিকোর ভুট্টা আমদানির সিংহভাগ আসে তাদের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র থেকে। গত বছরের নভেম্বর নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ টন ভুট্টা আমদানি করেছে মেক্সিকো।
১৬ জুলাই নেপালে নতুন অর্থবছর শুরু হয়। চলে পরের বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত। সেই হিসাবে নেপালে এখন ২০২০-২১ অর্থবছর চলছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (১৬ জুলাই ২০২০ থেকে ১৬ জানুয়ারি ২০২১) দেশটি থেকে ছোট এলাচ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। মসলাটির রফতানি বেড়ে পৌনে ৪৮ লাখ কেজিতে পৌঁছে গেছে। নেপালের রাষ্ট্রায়ত্ত ট্রেড অ্যান্ড এক্সপোর্ট প্রমোশন সেন্টারের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর কাঠমান্ডু পোস্ট। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে নেপাল থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৪৭ লাখ ৭০ হাজার কেজি এলাচ রফতানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে দেশটি থেকে মোট ৩১ লাখ ৩০ হাজার কেজি এলাচ রফতানি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এলাচ রফতানি করে নেপাল সব মিলিয়ে ৩৮১ কোটি রুপি আয় করেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এলাচ রফতানি বাবদ নেপালের আয় ছল ২৫১ কোটি রুপি।
বাসমতি চাল উৎপাদন ও রফতানির জন্য পাকিস্তানের খ্যাতি রয়েছে। সম্প্রতি নিজস্ব জাতের বাসমতি চালের জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেটর (জিআই) ট্যাগ পেয়েছে পাকিস্তান। এর মধ্য দিয়ে দেশটি থেকে খাদ্যপণ্যটির রফতানি আরো গতি পাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। খবর এনডিটিভি। বাসমতি চালের অন্যতম রফতানি বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো। ইইউর বাজারে খাদ্যপণ্যটির রফতানিতে ভারত ও পাকিস্তানের তুমুল প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। এ পরিস্থিতিতে ইইউর বাজারে বাসমতি চালের জিআই ট্যাগ পেয়েছিল ভারত। প্রতিযোগিতায় এক ধাপ এগিয়ে যায় দিল্লি। এর জের ধরে ইইউতে বাসমতি চালের জিআই ট্যাগের জন্য আবেদন করে পাকিস্তান। আইনি প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে নিজস্ব বাসমতি চালের জিআই ট্যাগ পেয়েছে দেশটি। পাকিস্তান সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা আবদুল রাজাক দাউদ টুইটার বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জিআই ট্যাগ পাওয়ার মধ্য দিয়ে ইইউর বাজারে ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তান থেকেও বাসমতি চাল রফতানিতে আর কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকছে না।
ওটস উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় কানাডার অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। তবে পণ্যটি রফতানিকারকদের বৈশ্বিক তালিকায় শীর্ষে রয়েছে দেশটি। গত বছর কানাডা থেকে ওটস রফতানিতে নতুন রেকর্ড হয়েছে। পণ্যটির রফতানি বেড়ে গত এক যুগের সর্বোচ্চ অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর এগ্রিমানি ও বিজনেস রেকর্ডার। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী বছরে কানাডা থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ১৮ লাখ টন ওটস রফতানি হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি বেড়েছে দশমিক ৪৫ শতাংশ। ২০০৮ সালের পর কানাডা থেকে এটাই সবচেয়ে বেশি ওটস রফতানির রেকর্ড। এর আগে ২০১৯ সালে কানাডা থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ১৭ লাখ ৯২ হাজার টন ওটস রফতানি হয়েছিল বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএসডিএ, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেশি। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে ওটস রফতানি বেড়েছে আট হাজার টন। কানাডার ইতিহাসে ২০০৭ সালে সবচেয়ে বেশি ওটস রফতানির রেকর্ড হয়েছিল। ইউএসডিএর তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর দেশটি থেকে সব মিলিয়ে ২৩ লাখ ৮৪ হাজার টন ওটস রফতানি হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ২৫ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি। পরের বছর দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি কমে দাঁড়ায় ১৯ লাখ ৪৬ হাজার টনে। এর পর গত বছর কানাডা থেকে সবচেয়ে বেশি ওটস রফতানি হয়েছে।
প্রতিকূল আবহাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় আর্জেন্টিনা থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টা রফতানিতে মন্দা ভাব দেখা গেছে। এ ধারাবাহিকতায় বিদায়ী বছরে দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটি রফতানি আগের বছরের তুলনায় ৩০ লাখ টন কমে গেছে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর এগ্রিমানি ও বিজনেস রেকর্ডার। ভুট্টা উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় আর্জেন্টিনার অবস্থান পঞ্চম। তবে কৃষিপণ্যটির রফতানিকারকদের বৈশ্বিক তালিকায় দেশটি তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। ইউএসডিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে আর্জেন্টিনা থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৪০ লাখ টন ভুট্টা রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০১৯ সালে আর্জেন্টিনা থেকে মোট ৩ কোটি ৭০ লাখ টন ভুট্টা রফতানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আর্জেন্টিনা থেকে কৃষিপণ্যটি রফতানি কমেছে ৩০ লাখ টন। এর মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনার ভুট্টা রফতানিতে টানা দুই বছর ধরে মন্দা ভাব বজায় রয়েছে। ২০১৮ সালে আর্জেন্টিনার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৩ কোটি ৭২ লাখ ৪৪ হাজার টন ভুট্টা রফতানির রেকর্ড হয়েছিল। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, খরা পরিস্থিতির কারণে বিদায়ী বছরে আর্জেন্টিনায় ভুট্টা উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ কমে পাঁচ কোটি টনের নিচে নেমে এসেছে। করোনা মহামারীর পাশাপাশি এর প্রভাব পড়েছে কৃষিপণ্যটি রফতানিতে।
ভিয়েতনামের রফতানি পণ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম চাল। নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যে বিদায়ী বছরে দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানিতে মন্দা ভাব দেখা গেছে। এ ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে চলতি বছরের শুরুতেও। জানুয়ারিতে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে চাল রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯ শতাংশের বেশি কমে পৌনে তিন লাখ টনে নেমে এসেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ভিয়েতনামের জেনারেল স্ট্যাটিস্টিকস অফিস এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্স। চাল উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় ভিয়েতনামের অবস্থান পঞ্চম। তবে পণ্যটির রফতানিকারকদের বৈশ্বিক তালিকায় দেশটি তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। ভিয়েতনামের সরকারি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ২ লাখ ৮০ হাজার টন চাল রফতানি হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে ভিয়েতনাম থেকে পণ্যটির রফতানি কমেছে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ। রফতানির পরিমাণে মন্দা ভাবের পাশাপাশি চলতি বছরের প্রথম মাসে চাল রফতানি বাবদ ভিয়েতনামের আয়ও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এক-পঞ্চমাংশ কমেছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চাল রফতানি বাবদ ভিয়েতনামের আয় দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ৪ শতাংশ কম। উল্লেখ্য, নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর ধাক্কা লেগেছে ভিয়েতনামের চাল রফতানিতে। সংকটকালে অভ্যন্তরীণ খাদ্যশৃঙ্খল বজায় রাখা ও জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত বছর চাল রফতানি সাময়িক বন্ধ রেখেছিল ভিয়েতনাম। এর প্রভাব পড়েছে খাদ্যপণ্যটির সামগ্রিক রফতানিতে। ২০২০ সালে চাল রফতানির লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে দেশটি। ভিয়েতনামের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী বছরে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৬১ লাখ ৪৬ হাজার টন চাল রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কম। ২০২০ সালে ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৬৭ লাখ টন চাল রফতানির লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। সেই তুলনায় বছরজুড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টন কম চাল রফতানি করেছে ভিয়েতনাম। বিদায়ী বছরে চাল রফতানি করে ভিয়েতনামিজ রফতানিকারকদের আয় আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩০৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা মহামারীর মধ্যে চালের রফতানি মূল্য বাড়তি ছিল। এ কারণে গত বছর চাল রফতানির পরিমাণ কমলেও এ বাবদ ভিয়েতনামের আয় বেড়েছে।
সর্বশেষ মন্তব্য