এ মাসেই পূর্ণ হচ্ছে স্বাধীনতার ৫০ বছর। মুক্তির সুবর্ণজয়ন্তীর কালে এসে দেশের নানা সফলতা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিয়মিত আয়োজন থাকছে বণিক বার্তায়। আজকের উপস্থাপনাটি এ আয়োজনেরই অংশ— খাদ্যনিরাপত্তার অভাব সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে অনেক বড় সংকট হয়ে দেখা দিয়েছিল। খাদ্যশস্যের উৎপাদনশীলতা ছিল অনেক কম। স্বাধীনতার পর প্রথম অর্থবছরে দেশে চাল উৎপাদন হয়েছিল মোটে ৯৮ লাখ টন। ব্যক্তি খাতের অংশগ্রহণের সুযোগও ছিল একেবারেই সীমিত। ফলে সংকটের মুহূর্তে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তাত্ক্ষণিক ক্রয়ের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানেরও পথ হয়ে পড়েছিল সীমিত। দেশের খাদ্য সরবরাহ খাত হয়ে পড়েছিল অনেকটাই অনুদাননির্ভর। স্বাধীনতার পর পাঁচ দশকের মাথায় এসে পুরোপুরি ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে। দেশে এখন দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে প্রায় সোয়া ৪ কোটি টন। এর মধ্যে শুধু চালই উৎপাদন হচ্ছে ৩ কোটি ৬০ লাখ টন। শস্য উৎপাদন খাতে এ প্রাচুর্যের পথপ্রদর্শক বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ব্রি ধান ২৮ ও ২৯। দেশে চাল উৎপাদনে রীতিমতো বিপ্লব এনে দিয়েছিল ব্রি উদ্ভাবিত জাত দুটি। এখনো দেশে দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদনে এ দুই জাতের ধানই নেতৃস্থানীয় অবদান রেখে চলেছে। দেশে প্রধান খাদ্যশস্য চালের মোট উৎপাদনের প্রায় এক-চতুর্থাংশই পূরণ করছে ব্রি ধান ২৮ ও ২৯। স্বাধীনতার পর শস্য উৎপাদনে সংকটমুখর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে শুরুতেই কৃষি খাতে ধানের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবনে মনোযোগ দিয়েছিল সরকার। ১৯৭৩ সালে অনুমোদন পায় ব্রি উদ্ভাবিত জাত বিআর ৩। বিপ্লব নামে পরিচিত জাতটি বাজারে খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। এক্ষেত্রে ধানের ফলনশীলতা বৃদ্ধিই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। হেক্টরপ্রতি প্রায় সাড়ে ছয় টনের সমান ফলন দিতে সক্ষম জাত প্রথম আসে ১৯৮০ সালে। ওই সময় আমন মৌসুমে শস্য হিসেবে অবমুক্ত করা হয় বিআর ১০ ও বিআর ১১ নামের দুটি জাত। এর মধ্যে বিআর ১১ জাতটি টিকে যায়, যা মুক্তা নামে পরিচিতি পায়। তবে এসব জাত দীর্ঘদিন জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেনি। এর পরও স্বল্প সময়ের জন্য বেশকিছু ভালো জাত এলেও তেমন কোনো সফলতা আসেনি। ধানের জাত উদ্ভাবনের দিক থেকে সবচেয়ে বড় সফলতা আসে ১৯৯৪ সালে। অবমুক্ত হয় ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯। এর আগ পর্যন্ত দেশের মোট ধান উৎপাদনে প্রাধান্য ছিল আমন ধানের। কিন্তু জাত দুটি উদ্ভাবনের পর বড় পরিবর্তন আসে। উচ্চফলনশীল জাত দুটি উচ্চতায় খাটো। পোকামাকড়ের আক্রমণও প্রতিরোধ করে অন্যান্য জাতের চেয়ে বেশি। ফলে কৃষকদের মধ্যে সহজেই জনপ্রিয়তা পায় জাত দুটি। এখনো বোরো মৌসুমে ধান আবাদের জন্য এ দুটি জাতই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এ দুই জাতের ওপর ভর করেই ১৯৯৯ সালে খাদ্যে প্রথম স্বয়ম্ভরতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, মোট চালের উৎপাদনে বোরো ধানের অবদান বাড়তে থাকে মূলত নব্বইয়ের দশকেই। আর ১৯৯৯ সালে দেশে প্রথম খাদ্যে যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে তার পেছনে ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯ জাতের ধান বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন দেশের মোট ধানের অর্ধেকই জোগান দিচ্ছে বোরো মৌসুম। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরেও দেশে চালের উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৬৪ লাখ টন। সেখানে বোরো ধানের অবদান ছিল প্রায় ৫৪ শতাংশ। এ বিষয়ে ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বণিক বার্তাকে বলেন, বাংলাদেশে ধানের উৎপাদনে বড় পরিবর্তন শুরু হয় ১৯৭৩ সালে অনুমোদিত বিআর ৩ জাতের মাধ্যমে। হেক্টরপ্রতি এক থেকে চার টন পর্যন্ত ফলন দিয়েছিল জাতটি। এজন্য জাতটি বিপ্লব হিসেবে পরিচিতি পায়। এরপর বিআর ১১ জাতটি দেশে জনপ্রিয়তা পেলেও সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে জনপ্রিয় হয়েছে ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯ জাত দুটি। গত কয়েক দশকে চালের উৎপাদনে ধারাবাহিকতা থাকায় দেশের খাদ্যনিরাপত্তায় স্বস্তি এসেছে। তার পেছনে বড় অবদান রয়েছে জাত দুটির। তবে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা আরো টেকসই করতে শুধু এ দুটি জাতের ওপর নির্ভর করলে হবে না। এজন্য এখন বেশকিছু বিকল্প জাত উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণে মনোযোগ দিয়েছে ব্রি। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা চলমান রাখতে ব্রির সব ধরনের প্রচেষ্টা চলমান রাখবে। জাত দুটি উদ্ভাবনে বিভিন্নভাবে ভূমিকা রেখেছিলেন ব্রির বেশ কয়েকজন ব্রিডার ও ধান বিজ্ঞানী। সংশ্লিষ্টরা জানান, ধানের জাত উদ্ভাবনে এককভাবে কোনো বিজ্ঞানীর অবদান রাখার সুযোগ খুব কম। তবে এক্ষেত্রে উদ্ভাবনী গবেষণায় নিয়োজিতদের মধ্যে মূলত ব্রিডিং বিভাগই অগ্রগামী ভূমিকা নিয়ে থাকে। সে হিসেবে জাতটি উদ্ভাবনের কালে বিভাগের প্রধান হিসেবে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন ড. নুর মোহম্মদ মিয়া। এছাড়া ব্রিডিং বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞানী হিসেবে অবদান রাখেন ড. নাসির উদ্দীন, ড. তুলসী দাস, ড. মো. আবদুল আজিজ মিয়া ও ড. এম এ ছালাম। জাত উদ্ভাবনের জন্য তখন আমন ও বোরো মৌসুম হিসেবে প্রকল্প গ্রহণ করা হতো। ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯ জাত দুটি উদ্ভাবনের প্রকল্প প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ড. প্রণব কুমার সাহা রায়। তার অধীনে ড. তানভীর আহমেদ, ড. খাজা গুলজার হোসেন ও ড. কামরুন্নাহার কাজ করেন। জাত দুটির উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণে জনপ্রিয় করতে এদের সবারই সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছিল বলে মনে করছেন পরবর্তীকালে ব্রির ব্রিডিং বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালনকারী ড. প্রণব কুমার সাহা রায়। ব্রি সূত্রে জানা গিয়েছে, জাত দুটি উদ্ভাবন থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ে তত্কালে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সবারই উদ্যোগ ছিল। সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা রাখে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। জাতটি চূড়ান্ত অনুমোদনের পর কৃষক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে প্রদর্শনী করা হয়। এছাড়া বীজ উৎপাদনের জন্য বিএডিসিকে ব্রিডার্স সিড সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি ডিএইও জাত দুটির ব্যাপক প্রচার ও প্রসারে ভূমিকা নেয়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে জাত দুটি কৃষকের কাছে জনপ্রিয়তা পায়। সাম্প্রতিক সময়ে এ দুটি জাতের বিকল্প বেশকিছু ভালো জাত এলেও কৃষকের কাছে জনপ্রিয়তার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি। বাংলাদেশে ধান উৎপাদনের অগ্রগতিতে ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯-এর গুরুত্ব সম্পর্কে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (ইরি) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. হুমনাথ ভান্ডারির মূল্যায়ন, ১৯৯৪ সালে জাত দুটি অবমুক্ত হওয়ায় মূলত বাংলাদেশের কৃষি খাতে তা যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে আসছে। বিশেষ কিছু কারণে ‘মেগা ভ্যারাইটিতে’ রূপ নিয়েছে জাত দুটি। বর্তমানে বোরো মৌসুমে যে পরিমাণ ধান চাষ হয়, তার প্রায় ৬০ শতাংশই ব্রি ধান ২৮ বা ২৯ জাতের। আবাদের শুরুর সময়ে প্রচলিত অন্যান্য জাতের তুলনায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি ফলন দেয় জাত দুটি। গত দুই বা তিন দশকে সেচ ও চাষাবাদ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক উন্নতিকে কাজে লাগিয়ে এই দুটি জাত বাংলাদেশের ধান উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিরাট ভূমিকা রেখে চলেছে। এ বিষয়ে ব্রির সাবেক মহাপরিচালক ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) নির্বাহী পরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস বণিক বার্তাকে বলেন, দেশের খাদ্যনিরাপত্তায় সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে ব্রি। ব্রির সবচেয়ে জনপ্রিয় জাত হিসেবে কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে ব্রি ধান ২৮ ও ব্রি ধান ২৯। ফলন, স্বাদ ও রোগ প্রতিরোধী হওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরেই বিকল্প ভালো জাত না আসায় এ জাত দুটি মেগা ভ্যারাইটিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
ভোজ্যতেলের বৈশ্বিক বাজারে চাঙ্গা ভাবে যেন সুদিন ফিরেছে মালয়েশিয়ার পাম অয়েলের। দর বৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা থাকায় রফতানিতেও বেশ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে দেশটি। এ অবস্থায় চলতি বছর দেশটিতে পাম অয়েলের মাসিক গড় মজুদের পরিমাণ ১৫ লাখ টনের নিচে থাকবে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ান পাম অয়েল কাউন্সিল (এমপিওসি)। খবর রয়টার্স। ইন্দোনেশিয়ার পর বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ পাম অয়েল উৎপাদক ও রফতানিকারক দেশ মালয়েশিয়া। তবে শুষ্ক আবহাওয়া ও শ্রমিক সংকটে গত বছর দেশ দুটিতে ভোজ্যতেলটির উৎপাদনের পরিমাণ কমতির দিকে ছিল। ফলে গত বছরের শেষের দিকে মালয়েশিয়ার মজুদের পরিমাণ ১২ লাখ ৭০ হাজার টনে নেমে আসে, যা ১৩ বছরের সর্বনিম্ন। তবে চলতি বছর মালয়েশিয়ায় পাম অয়েল উৎপাদনের পরিমাণ বেশ বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছে এমপিওসি। উৎপাদনের পাশাপাশি এ বছর রফতানিতেও বড় প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে তারা। ফলে এ বছর মজুদের পরিমাণ সামান্যই বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে রাষ্ট্রীয় এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এমপিওসির উপপরিচালক ফয়সাল ইকবাল সম্প্রতি এক ওয়েবিনারে বলেন, চলতি বছরের প্রথমার্ধে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত পাম অয়েলের বাজার বেশ চাঙ্গা থাকবে। বলতে গেলে বছরব্যাপী এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। তিনি আরো বলেন, চলতি বছর মালয়েশিয়ার পরিশোধন শিল্পে গড়ে ১ কোটি ৫৫ লাখ থেকে ১ কোটি ৫৬ লাখ টনের মতো অপরিশোধিত পাম অয়েল থাকতে পারে। ফলে এবার পরিশোধন কেন্দ্রগুলোও অপরিশোধিত পাম অয়েলের ঘাটতির মুখোমুখি হতে পারে; আমদানির মাধ্যমে যা পূরণ করতে হতে পারে। এমপিওসির তথ্য বলছে, চলতি বছর মালয়েশিয়ার অপরিশোধিত পাম অয়েল উৎপাদনের পরিমাণ ১ কোটি ৯৬ লাখ টনে গিয়ে দাঁড়াতে পারে, যেখানে গত বছর উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯১ লাখ টন। অন্যদিকে শীর্ষ উৎপাদক ইন্দোনেশিয়ায় এ বছর উৎপাদন ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৫০ লাখ টন, যেখানে গত বছর ছিল ৪ কোটি ২৩ লাখ টন। সংস্থাটির প্রাক্কলন তথ্য অনুযায়ী, এ বছর মালয়েশিয়ার অপরিশোধিত পাম অয়েল রফতানির পরিমাণ ১০ শতাংশ বেড়ে ৪৮ লাখ টনে গিয়ে ঠেকতে পারে। একই সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় রফতানির পরিমাণ ১০ শতাংশ কমে যেতে পারে।
বাম্পার ফলন হওয়ায় গত ফসলি মৌসুমটা বেশ ভালো গেছে অস্ট্রেলিয়ার জন্য। তবে আসন্ন মৌসুমে হয়তো এর উল্টো অভিজ্ঞতা পেতে হবে দেশটিকে। উত্পদিত পণ্যের দাম পড়তির দিকে থাকায় এবং ফসল ও প্রাণিজ উৎপাদনের পরিমাণ কম হওয়ার আশঙ্কায় আগামী মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার কৃষি খাতের জন্য কিছুটা নেতিবাচক পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। খবর ব্লুমবার্গ। অস্ট্রেলিয়ার ব্যুরো অব এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রিসোর্স ইকোনমিকসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ মৌসুমে দেশটির কৃষিজ উৎপাদনের মূল্যমান ৪ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৩৩০ কোটি অস্ট্রেলীয় ডলারে (৪৪ হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার) নেমে আসতে পারে। গত মৌসুমে কভিড-১৯ মহামারীর প্রকোপের মধ্যেও এ খাতের পারফরম্যান্স বেশ ভালো ছিল। এ সময়ে দেশটির কৃষি খাতের প্রডাকশন ভ্যালু আগের মৌসুমের চেয়ে ৮ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ৬০০ কোটি অস্ট্রেলীয় ডলারে দাঁড়ায়। আর এ সাফল্যের নেপথ্যে ছিল পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত। আগের মৌসুমের চেয়ে এবার কিছুটা কম হলেও আগামী পাঁচ বছর অস্ট্রেলিয়ার কৃষিজ উৎপাদন ৬ হাজার কোটি অস্ট্রেলীয় ডলারের নিচে নামবে না বলে আশা করছে দেশটির সরকার। তবে এ সময়ে দেশটিকে বেশকিছু চাপ সামলাতে হবে। যেমন চীনের শূকরের খামারগুলোর কার্যক্রম পুনরায় গতি পেতে শুরু করায় অস্ট্রেলিয়ার রেড মিটের বাজার কিছুটা মূল্যচাপে থাকবে। এছাড়া জলবায়ুর অস্বাভাবিক আচরণও বিপাকের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে দেশটির কৃষি খাতের জন্য। এদিকে তুলা, পশম ও দুগ্ধজাত পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ২০২১-২২ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার কৃষিজ পণ্য রফতানি ৬ শতাংশ বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। এ পূর্বাভাস সত্য হলে চার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখবে খাতটি।
রফতানি চাহিদা ছয় বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছায় ভারতে কুইন্টালপ্রতি ১০০-১৫০ রুপি পর্যন্ত বেড়েছে ভুট্টার দাম। মূলত ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ায় উচ্চচাহিদার কারণে এমনটা হয়েছে। খবর দ্য হিন্দু বিজনেস। কলকাতাভিত্তিক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান বেনগানি ফুড প্রডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বিমল বেনগানি বলেন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ায় রফতানি চাহিদা বেড়েছে, যা এর আগে রবিশস্যের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল। দেশ দুটিতে প্রতি মাসে দুই-আড়াই টন ভুট্টা রফতানি করা হয়। এ চাহিদা আরো বাড়ছে। দেশটির কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ভুট্টার মান ও অঞ্চলভিত্তিক উৎপাদনের কারণে এর দাম ওঠানামা করে। কর্ণাটকে প্রতি কুইন্টাল ভুট্টার দাম ১ হাজার ৩৫০ ও তামিলনাড়ুতে ১ হাজার ৭০০ রুপি পর্যন্ত দাম পৌঁছে। কৃষি উৎপাদন ও বিপণন কমিটির নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ২০২০-২১ শস্য বছরের জন্য প্রতি কুইন্টাল ভুট্টার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৮৫০ রুপি। চেন্নাইভিত্তিক কৃষি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান রাজঠি গ্রুপের পরিচালক মদন প্রকাশ বলেন, রফতানি চাহিদা বাড়ার ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারেও দাম বেড়েছে। আমরা এসব দেশে প্রতি সপ্তাহে দুই হাজার টন ভুট্টা রফতানি করছি। মুম্বাইতে আমরা ‘ফ্রি অন বোর্ড’ নীতিতে প্রতি টন ভুট্টা ১৬ হাজার ৫০০ রুপিতে সংগ্রহ করছি, যা গত মাসের তুলনায় ১ হাজার রুপি বেশি। চলতি শস্য বছরে মৌসুমি ভুট্টার উৎপাদন সর্বোচ্চ ১ কোটি ৯৮ লাখ টন ধরা হয়েছে, যা গত বছর ১ কোটি ৯৬ লাখ টন ছিল। বুধবার প্রকাশিত ভারতের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর ভুট্টা উৎপাদন তিন কোটি টন ছাড়াবে, যা গত বছর ২ কোটি ৮৬ লাখ টন ছিল। যদিও ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়ায় ভুট্টার অধিকাংশ চালান পৌঁছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ও নেপালের আমদানি চাহিদার কারণে তা রেকর্ড পরিমাণ দাম স্পর্শ করেছে। ভারতের কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, চলতি শস্য বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বরে ১৪ লাখ ১৮ হাজার টন ভুট্টা রফতানি হয়েছে। এপ্রিল থেকে নভেম্বরে বাংলাদেশ ভারতীয় ভুট্টা আমদানি করেছিল ৯ দশমিক ৯৫ টন। একই সময়ে নেপাল আমদানি করেছিল ৩ দশমিক ৩৮ টন ভুট্টা। আন্তর্জাতিক শস্য কাউন্সিলের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র রফতানিযোগ্য প্রতি কুইন্টাল ভুট্টার ২৫১ ডলার, আর্জেন্টিনা ২৪৬ ও ব্রাজিল ২৬১ ডলার নির্ধারণ করেছে।
চলতি ২০২১-২২ মৌসুমে (সেপ্টেম্বর-আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টা ও সয়াবিনের বাম্পার ফলন হতে পারে। গত সপ্তাহে এক পূর্বাভাসে এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয় (ইউএসডিএ)। খবর প্লাটস। ২০২১-২২ মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রে ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে ১ হাজার ৫১৫ কোটি বুশেল (১ বুশেল = ৬০ পাউন্ড), যা ২০২০-২১ মৌসুমের ১ হাজার ৪১৮ কোটি বুশেলের চেয়ে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। এছাড়া সয়াবিন উৎপাদন ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৪৫২ কোটি ৫০ লাখ বুশেলে দাঁড়াতে পারে। চলতি মৌসুমে ভুট্টা আবাদ ১২ লাখ একর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ২০ লাখ একর। সয়াবিন চাষ ৬৯ লাখ একর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি একরে। স্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করায় উচ্চফলনের আশা করা হচ্ছে। ইউএসডিএর পূর্বাভাস, চলতি মৌসুমে একরপ্রতি ১৮০ বুশেল ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে, যা ২০২০-২১ মৌসুমের চেয়ে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে সয়াবিন উৎপাদন ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে একরপ্রতি ৫০ দশমিক ৮ বুশেলে দাঁড়াতে পারে। চলতি মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টা রফতানি হতে পারে ২৬৫ কোটি বুশেল। গত মৌসুমে যেখানে রফতানি হয়েছিল ২৬০ কোটি বুশেল। ভুট্টা রফতানি কিছুটা বাড়লেও সয়াবিন রফতানি বছরওয়ারি ২ দশমিক ২ শতাংশ কমে ২২০ কোটি বুশেলে দাঁড়াতে পারে।
করোনা মহামারীর কারণে আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশগুলোয় চালের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে খাদ্যপণ্যটির রফতানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিল কম্বোডিয়া। তবে বাস্তবে সেসব উদ্যোগের সুফল মেলেনি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটি থেকে চাল রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২ শতাংশের বেশি কমেছে। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে কম্বোডিয়ার চাল রফতানিতে মন্দা ভাব বজায় থাকার সম্ভাবনা দেখছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) মন্দার মধ্য দিয়ে কাটাবে কম্বোডিয়ার চাল রফতানি খাত। খবর রয়টার্স ও খেমারটাইমসডটকম। চাল উত্পাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় কম্বোডিয়ার অবস্থান ১৩তম। তবে কম্বোডিয়া বিশ্বের অষ্টম শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ। প্রতি বছর দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে ১০-১২ লাখ টনের বেশি চাল রফতানি হয়। কম্বোডিয়া রাইস ফেডারেশনের (সিআরএফ) প্রেসিডেন্ট সং সারান বলেন, চলতি বছরটা মন্দা ভাবের মধ্য দিয়ে শুরু করেছে কম্বোডিয়ার চাল রফতানি খাত। এ মন্দা ভাব জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকজুড়ে বজায় থাকতে পারে। সিআরএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে কম্বোডিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৩৪ হাজার ২৭৩ টন চাল রফতানি হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে খাদ্যপণ্যটির রফতানি কমেছে ৩২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এ সময় মোট ২৮টি দেশে চাল রফতানি করেছে কম্বোডিয়া। চাল রফতানি করে গত জানুয়ারিতে কম্বোডিয়ার রফতানিকারকরা মোট ৩ কোটি ৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার আয় করেছে। খাদ্যপণ্যটির রফতানি কমার বিষয়ে সং সারান বলেন, জানুয়ারিতে কম্বোডিয়ার চাল রফতানিতে রীতিমতো ধস নেমেছে। ফেব্রুয়ারি-মার্চেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলে বছরের প্রথম প্রান্তিকে কম্বোডিয়ার চাল রফতানিতে পতন বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অথচ আমরা রফতানি বৃদ্ধির আশা নিয়ে ২০২১ সাল শুরু করেছিলাম। সে আশা পূরণ হয়নি। চলতি বছরের প্রথম মাসে চীনের বাজারে কম্বোডিয়া থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী চাল রফতানি হয়েছে বলে জানিয়েছে সিআরএফ। তবে একই সময়ে দেশটি থেকে ইউরোপের বাজারে খাদ্যপণ্যটি রফতানিতে ৬০ শতাংশ পতন দেখা দিয়েছে। জানুয়ারিতে কম্বোডিয়া থেকে রফতানি হওয়া চালের ৪৭ শতাংশ গেছে চীনে। ইউরোপের বাজারে গেছে রফতানি হওয়া চালের ২৩ শতাংশ। ১০ শতাংশ চাল রফতানি হয়েছে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোয়। এ সময় কম্বোডিয়া থেকে বাকি ২০ শতাংশ চাল রফতানি হয়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশে। এ পরিস্থিতির পেছনে পণ্যবাহী কার্গো সংকটকে দায়ী করছেন কম্বোডিয়ার চাল রফতানিকারকরা। তাদের মতে, করোনা মহামারীর কারণে সময়মতো পণ্যবাহী কার্গো পাওয়া যাচ্ছে না। পেলেও গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। এতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে কম্বোডিয়ার চাল রফতানিতে। কমে এসেছে খাদ্যপণ্যটির রফতানি। এ বিষয়ে সিআরএফের প্রেসিডেন্ট সং সারান আরো বলেন, পণ্যবাহী কার্গো সংকট একটি বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এতে কম্বোডিয়ার একক হাত নেই। তবে এর শিকার হয়েছে কম্বোডিয়ার চাল রফতানি খাত। আগামী মাসগুলোয় এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে রফতানিমুখী এ খাতকে। সং সারান বলেন, আমাদের কাছে চালের নতুন রফতানি অর্ডার আসছে। তবে ক্রেতাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা চাল সরবরাহ করতে পারছি না। বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে চলমান কার্গো সংকট। এদিকে কম্বোডিয়ার চাল রফতানি খাত স্থবিরতা কাটিয়ে গত বছর ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে কম্বোডিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টন চাল রফতানি হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালেও কম্বোডিয়া থেকে একই পরিমাণ চাল রফতানি হয়েছিল। তবে করোনা মহামারীর মধ্যে গত বছর দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যটির রফতানি আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ লাখ টনে। কম্বোডিয়ার ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বেশি চাল রফতানির রেকর্ড। এর পর পরই মন্দা ভাবের মধ্য দিয়ে ২০২১ সাল শুরু করেছে কম্বোডিয়ার চাল রফতানি খাত।
ইউক্রেনের বাজারে সর্বশেষ সপ্তাহে গমের রফতানি মূল্য অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে এ সময় বেড়েছে ভুট্টার রফতানি মূল্য। দেশটির কৃষিপণ্যবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এপিকে-ইনফর্ম এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্স ও বিজনেস রেকর্ডার। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ সপ্তাহে ইউক্রেনের বাজারে ফ্রি অন বোর্ড (এফওবি) চুক্তিতে রফতানিযোগ্য সাড়ে ১২ শতাংশ প্রোটিনসমৃদ্ধ প্রতি টন ব্ল্যাক সি গমের রফতানি মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৭৮-২৮৫ ডলার। এ সময় সাড়ে ১১ শতাংশ প্রোটিনসমৃদ্ধ গমের রফতানি মূল্য ছিল টনপ্রতি ২৭৬-২৮৪ ডলার। আগের সপ্তাহেও ইউক্রেনে গমের রফতানি মূল্য প্রায় একই রকম ছিল। তবে গমের অপরিবর্তিত থাকলেও সর্বশেষ সপ্তাহে ইউক্রেনে ভুট্টার রফতানি মূল্য আগের সপ্তাহের তুলনায় টনপ্রতি ২ ডলার বেড়েছে। এপিকে-ইনফর্ম জানিয়েছে, এ সময় ইউক্রেনের বাজারে এফওবি চুক্তিতে ভুট্টার রফতানি মূল্য টনপ্রতি ২৭৮-২৮৫ ডলারের মধ্যে অবস্থান করেছে। অন্যদিকে দেশটির বাজারে একই সময়ে এফওবি চুক্তিতে প্রতি টন যবের রফতানি মূল্য ছিল ২৫৩-২৬১ ডলার, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় টনে সর্বোচ্চ ৬ ডলার বেশি। ইউক্রেন বিশ্বের শস্য রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ইউক্রেন থেকে ৩ কোটি ৯ লাখ টন শস্য রফতানি হয়েছে, যা গত মৌসুমের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ কম। এর মধ্যে ইউক্রেন থেকে ১ কোটি ৩৩ লাখ টন গম, ১ কোটি ৩১ লাখ টন ভুট্টা ও ৩৯ লাখ ৬০ হাজার টন যব রফতানি হয়েছে।
দেখতে প্রায় জিরার মতো। নাম ক্যারাওয়ে সিড। ভারত, মিসর, ভিয়েতনামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উৎপাদন হয় মসলাজাতীয় পণ্যটি। তবে দেশের বাজারে এটি এখন জিরার সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। বৈধ পথে মসলা আমদানির ঘোষণা দিয়ে ক্যারাওয়ে সিড আনার কারণে জিরার বাজার দীর্ঘদিন ধরে অস্থিতিশীল। ভারত, আফগানিস্তান থেকে আমদানি হওয়া প্রকৃত জিরার মূল্যের চেয়েও বাজারে কম দামে বিক্রি হচ্ছে ক্যারাওয়ে মিশ্রিত জিরা। দেশের সবচেয়ে বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, একশ্রেণীর আমদানিকারকদের সঙ্গে যোগসাজশে ব্যবসায়ীরা ক্যারাওয়ে জিরার সঙ্গে সিড মিশিয়ে বিক্রি করছে। দেখতে হুবহু একই রকমের হওয়ায় সাধারণ চোখে এটির পার্থক্য ধরতে পারেন না খুচরা ব্যবসায়ীরা। ফলে সাধারণ ভোক্তারা জিরা মনে করে তুলনামূলক কম দামে ক্যারাওয়ে সিড কিনছেন। ক্যারাওয়ে সিডের নিজস্ব কোনো ঘ্রাণ না থাকলেও প্রকৃত জিরার সঙ্গে মেশানোর ফলে আলাদা করা কষ্টসাধ্য। যার কারণে প্রতি এক বস্তা জিরার সঙ্গে এক বস্তা ক্যারাওয়ে সিড মিশিয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে ক্লোন জিরা। সাধারণ জিরার তুলনায় দাম কম হওয়ায় কিছুসংখ্যক ব্যবসায়ী নতুন এ জিরা কিনে খুচরা ও পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন। এতে করে দেশে জিরা আমদানি করে গত দুই বছর ধরে বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়েছেন এ খাতের প্রকৃত আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা। কাস্টমসের তথ্যে জানা গেছে, ক্যারাওয়ে সিডের এইচএস কোড ০৯০৯৬১৯০। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে চট্টগ্রাম কাস্টমস দিয়ে ক্যারাওয়ে সিড আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৫২১ দশমিক ২৬ টন। এ সময়ে আমদানি হওয়া ক্যারাওয়ে সিডের কেজিপ্রতি আমদানি মূল্য ৭১ টাকা। ১৫ শতাংশ শুল্কসহ সর্বমোট আমদানি মূল্য দাঁড়ায় ৮২ টাকা। আবার ২০২০-২১ অর্থবছরে আমদানি হওয়া ৩ হাজার ৫৩৩ দশমিক ৭৪ টন ক্যারাওয়ে সিডের আমদানি মূল্য হিসেবে কেজিপ্রতি মূল্য দাঁড়ায় ৬৬ টাকা। শুল্ক হিসাব করলে কেজিপ্রতি মূল্য দাঁড়ায় ৭৬ টাকা। অথচ একই সময়ে দেশে আমদানি হওয়া জিরার শুল্কসহ আমদানি মূল্য প্রায় ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। ফলে জিরার সঙ্গে মিশ্রণ করে পাইকারি বাজারে ক্যারাওয়ে সিড বিক্রি ও জিরার সঙ্গে মিশ্রিত করে বড় ধরনের মুনাফা করছেন একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। কাস্টমসের মাসভিত্তিক নিত্যপণ্য আমদানি চিত্রে দেখা গেছে, প্রতি মাসে গড়ে দেশে জিরা আমদানি হয় ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টন। সর্বশেষ নভেম্বর মাসে আমদানি হওয়া ১ হাজার ৩৩৫ টন জিরার টনপ্রতি গড় মূল্য ছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৮৮ দশমিক ১৭ টাকা। অর্থাৎ প্রতিকেজি জিরা আমদানি হয়েছে ১৫৭ টাকায়। এর মধ্যে ছয় ধরনের শুল্ক পরিশোধ করতে হয় প্রায় ৪৬ শতাংশ। এ হিসেবে প্রতিকেজি জিরার আমদানি মূল্য দাঁড়ায় ২৩০ টাকা। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ যুক্ত করলে প্রতিকেজি জিরার প্রকৃত আমদানি মূল্য হয় প্রায় ২৫০ টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজারে প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৪৫ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ জিরা আমদানিতে কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা হারে লোকসান দিচ্ছেন আমদানিকারকরা। মূলত ক্যারাওয়ে সিড মেশানোর কারণে নকল ক্লোন জিরার দাম কম থাকায় প্রকৃত জিরা ব্যবসায়ীরা লোকসানের মধ্যে পড়েছেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খাতুনগঞ্জের এক আমদানিকারক বণিক বার্তাকে বলেন, ক্যারাওয়ে সিড জিরার বিকল্প হিসেবে ব্যবসায়ীদের কাছে চাহিদা বাড়ছে। এ কারণে অনৈতিক হলেও ক্রেতাদের চাহিদার চাপে ক্যারাওয়ে আমদানি করতে হচ্ছে। জিরার সঙ্গে মিশ্রিত করে বিক্রি করা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় জিরা হিসেবে বিক্রি করে অতি মুনাফায় ঝুঁকেছে খাতুনগঞ্জ, মৌলভীবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা। আমদানিকারকদের কাছ থেকে স্বাভাবিক দামে ক্রয় করলেও মিশ্রণ কিংবা জিরার বিকল্প হিসেবে বিক্রি করলে প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি মুনাফা হওয়ায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী ক্যারাওয়ে সিড মিশ্রণে ঝুঁকছে বলে দাবি করেছেন তিনি। খাতুনগঞ্জের মসলা পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স অসীম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী অসীম কুমার দাশ বণিক বার্তাকে বলেন, ক্যারাওয়ে সিড বাংলাদেশে ব্যবহারযোগ্য মসলা পণ্য নয়। তবে অনেক ব্যবসায়ী জিরার সঙ্গে মিশিয়ে ক্যারাওয়ে বিক্রি করে। সবাই আমদানি না করলেও অতি মুনাফার লোভে কিছু ব্যবসায়ী ক্যারাওয়ে আমদানির সঙ্গে যুক্ত। গরম মসলার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় জিরার আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা ক্যারাওয়ের কারণে দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে পড়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে প্রশাসনিক ব্যবসা নেয়া ছাড়া এ ধরনের ব্যবসা বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি। জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৯ মে চট্টগ্রামের চাক্তাই এলাকার মেসার্স মোল্লা অ্যান্ড কোম্পানিতে অভিযান চালিয়ে নকল জিরা হিসেবে পরিচিত ক্যারাওয়ে সিড উদ্ধার করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হাসানের নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ প্রতিষ্ঠান থেকে ৩০ টন ক্যারাওয়ে সিড উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯-এর ৪১ ধারায় প্রতিষ্ঠানটিকে ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত কয়েক দিনে খাতুনগঞ্জের চাক্তাই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি পাইকারি মসলার দোকানেই ক্যারাওয়ে সিড মেশানো জিরা পাওয়া যাচ্ছে প্রতিকেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে। চাক্তাইয়ের একটি মসলা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ক্যারাওয়ে সিডের একটি বস্তা পাওয়া যায়। ওই বস্তায় ক্যারাওয়ে সিড উৎপাদক দেশ লেখা রয়েছে মিসর। ২৫ কেজির প্রতিটি বস্তার উৎপাদন সাল লেখা রয়েছে ২০২০ ও মেয়াদোত্তীর্ণের সাল দেয়া রয়েছে ২০২২। আছদগঞ্জ এলাকার জাফর মার্কেটের মেসার্স রিফাত এন্টারপ্রাইজ এ ক্যারাওয়ে সিড আমদানি করেছে। যার টিন নাম্বার হচ্ছে—৬৯২৫২৭৮০২০৫০ এবং বিন নাম্বার হচ্ছে ০০০৫২৪৫৪৩-০৫০৩। তবে জাফর মার্কেটের রিফাত এন্টারপ্রাইজে খোঁজ নেয়া হলে সেখানকার ম্যানেজার মো. দেলোয়ার হোসেন ক্যারাওয়ে সিড আমদানির বিষয়টি অস্বীকার করেন। মসলা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশের গরম মসলার বাজারে প্রধান পণ্য জিরা। মূলত জিরা ও দারচিনি সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে থাকায় এ দুটি পণ্যই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। এছাড়াও এলাচ, লবঙ্গ, গোলমরিচ গরম মসলা হিসেবে বাংলাদেশে সর্বাধিক জনপ্রিয়। সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে থাকা জিরার চাহিদা বেশি থাকায় ভেজাল মিশিয়ে বিক্রি করে অস্বাভাবিক মুনাফা করছেন একশ্রেণীর ব্যবসায়ী। অপরদিকে দীর্ঘদিন মসলা আমদানির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা ক্যারাওয়ে সিডের কারণে জিরার ব্যবসায়ী গত কয়েক বছর ধরে বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়েছে। খাতুনগঞ্জের মেসার্স দরবার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নাজিম উদ্দিন বণিক বার্তাকে অভিযোগ করে বলেন, একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা গ্রামাঞ্চলের ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামের জিরা হিসেবে ক্যারাওয়ে সিড মেশানো জিরা বিক্রি করছে। এ কারণে অনেক ব্যবসায়ী জিরা কিনেও লোকসানের কারণে বিক্রি করতে পারছে না। রোজাকে সামনে রেখে বাজারে মজুদ বাড়ালেও দাম কমে যাওয়ায় লোকসান দেয়া ছাড়া উপায় নেই। প্রশাসনের উচিত কাস্টমসের মাধ্যমে ক্যারাওয়ে সিড আমদানি বন্ধ করা। না হলে নকল জিরার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ছাড়াও জিরা আমদানি কমে দেশের মসলা বাজারের ভারসাম্য নষ্ট হবে।
ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে ব্রিদিং এক্সারসাইজ বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যয়ামের কোনো বিকল্প নেই- একথা আমরা সবাই জানি। করোনার প্রকোপ বাড়ার পর থেকেই ফুসফুস ভালো রাখতে ও মানসিক চাপ...
এক দশক আগেও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন ভাবনায় গুরুত্ব পেয়েছে কয়লা। তখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বেসরকারি খাতের একের পর এক বিনিয়োগ প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ খাতের বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও জ্বালানি হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে কয়লা। অন্যদিকে অনেকটাই গুরুত্বহীন ছিল নবায়নযোগ্য জ্বালানি। পরিকল্পনার দিক থেকেও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের লবিস্টদের দাপটে অনেকটাই ব্যাকফুটে ছিলেন নবায়নযোগ্য জ্বালানির সমর্থকরা। এক পর্যায়ে দেখা গেল, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে যেতে পারছে না। এ কারণে অনেক বড় বিনিয়োগ পরিকল্পনাও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। অন্যদিকে দূষণ নিয়ন্ত্রণের তাগিদে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার কমানোরও জোর দাবি উঠছে বিশ্বব্যাপী। জ্বালানিটি থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে অর্থায়নকারী সংস্থাগুলোও। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে সুরক্ষা নিশ্চিতে পরিচ্ছন্ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হচ্ছে নীতিনির্ধারকদের। এ কারণে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমর্থকরাও এখন আর এর পক্ষে জোরালো অবস্থান নিতে পারছেন না। সরকারের কাছেও জ্বালানি হিসেবে দিন দিন আবেদন হারাচ্ছে কয়লা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও সম্প্রতি এক ওয়েবিনারে জানিয়েছেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে কীভাবে সরে আসা যায়, সরকার এখন সে বিষয় বিবেচনা করে দেখছে। বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির চাহিদা ও ব্যবহার বাড়ছে। এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশেও। ব্যক্তি খাতের হেভিওয়েট উদ্যোক্তারাও এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে আসছেন। এক্ষেত্রে সৌরশক্তিতেই (সোলার) তাদের মনোযোগ বেশি। সরকারের পরিকল্পনায়ও এখন পরিচ্ছন্ন জ্বালানির পাশাপাশি গুরুত্ব পাচ্ছে সৌর ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সৌরশক্তি নিয়ে নতুন করে রোডম্যাপ তৈরি করেছে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)। পরিকল্পনার খসড়া এরই মধ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৮ হাজার ৭৪৩ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর স্থাপিত সোলার থেকে আসবে ৩ হাজার মেগাওয়াট। রুফটপ সোলার, মিনিগ্রিড, সোলার হোম সিস্টেমসহ অন্যান্য উৎস থেকে আসবে আরো সাড়ে ৫ হাজার মেগাওয়াট। দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ ও চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে সোলার থেকেই ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব হবে। এ বিষয়ে স্রেডার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দীন বণিক বার্তাকে বলেন, সোলার নিয়ে আলাদাভাবে পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ সোলার প্রযুক্তির খরচ কমে এসেছে। খরচ কম হওয়ায় অনেকে এ প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক গাড়ি আসবে। জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমে যাবে। বিশ্ব যেদিকে যাবে আমাদেরও তো সেদিকে যেতে হবে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ পতিত জমি রয়েছে, সেসব জায়গায় সোলার স্থাপন করে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব। এরই মধ্যে সোলার নিয়ে মহাপরিকল্পনার খসড়া আমরা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি। এরই মধ্যে জাতীয় গ্রিডে সৌরবিদ্যুৎ যুক্ত হওয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে জাতীয় গ্রিডে সৌরবিদ্যুৎ যুক্ত হওয়া শুরু হয়েছে। টেকনাফে নাফ নদীর তীরে ১১৬ একর জমিতে কার্যক্রম শুরু করেছে টেকনাফ সোলারটেক...
সর্বশেষ মন্তব্য