উৎপাদন বৃদ্ধিতে মালয়েশিয়ার পাম অয়েল উৎপাদন শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াবে। এমনই পূর্বাভাস দিয়েছে পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক রিসার্চ (পিআইভিবি রিসার্চ)। খবর দ্য সান ডেইলি। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, অপরিশোধিত...
নিজেদের পাম অয়েল শিল্প রক্ষায় যূথবদ্ধ হলো পাম অয়েল উৎপাদনকারী দুই শীর্ষ দেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। পাম অয়েলের বিরুদ্ধে ইউরোপজুড়ে চলা ক্যাম্পেইনের বিরুদ্ধে এমন উদ্যোগ নিল...
মালয়েশিয়ার পাম অয়েলের দরপতন হয়েছে। বিশ্ববাজারে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত সয়াবিন তেলের দাম কমায় পাম অয়েলের দরও কিছুটা পড়তে শুরু করেছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, দ্রুতই এ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে। খবর রয়টার্স। বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে সর্বশেষ ১২০ রিংগিত বা ৩ শতাংশ কমে প্রতি টন পাম অয়েলের দাম দাঁড়িয়েছে ৯৪৮ দশমিক ৪৪ ডলারে। দীর্ঘ ১৩ বছর দামের শীর্ষে থাকার পর ২০০২ সালে বাজার হারাতে শুরু করে পাম অয়েল। সাউদার্ন পেনিনসুলা পাম অয়েল মিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বাভাসে বলা হয়, আগের মাসের চেয়ে মার্চের প্রথম পক্ষে উৎপাদন ৬২ শতাংশ কমবে। একই সময়ে মালয়েশিয়ান পাম অয়েল রফতানি ফেব্রুয়ারি থেকে ১ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৪৯ হাজার ২৭৩ টনে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে ইইউর এখন পর্যন্ত ৩৮ দশমিক ৭ লাখ টন তেল রফতানি করেছে তারা। গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৪০ দশমিক ১ লাখ টন।
মালয়েশিয়ার বাজারে একদিনে পাম অয়েলের দাম প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অন্যান্য ভোজ্যতেলের দাম বাড়তির পথে রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে মালয়েশীয় পাম অয়েলের বাজারে। বাড়তে শুরু করেছে দাম। খবর স্টার অনলাইন। বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে গতকাল পাম অয়েলের দাম আগের দিনের তুলনায় ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে। দিন শেষে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন পাম অয়েলের দাম দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬১৮ রিঙ্গিত (মালয়েশীয় মুদ্রা) বা ৮৯৫ ডলার ৭৭ সেন্টে। একদিনের ব্যবধানে মালয়েশিয়ার বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে টনে ৯৬ রিঙ্গিত। এ নিয়ে টানা দুদিন ধরে মালয়েশিয়ার বাজারে পাম অয়েলের দামে চাঙ্গা ভাব বজায় রয়েছে। গতকাল চীনের ডালিয়ান কমোডিটি এক্সচেঞ্জে সয়াবিন তেলের দাম আগের দিনের তুলনায় ২ দশকি ৪ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) পণ্যটির দাম বেড়েছে দশমিক ৫ শতাংশ। খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, এর প্রভাব পড়েছে মালয়েশীয় পাম অয়েলের দামে। পাম অয়েলের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে রফতানিতে চাঙ্গা ভাব প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। অ্যামস্পেক এগ্রি মালয়েশিয়া জানিয়েছে, ১ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি সময়ে দেশটি থেকে সব মিলিয়ে ৬ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৪ টন পাম অয়েল রফতানি হয়েছে। আগের মাসের একই সময়ের তুলনায় দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ।
মালয়েশিয়া থেকে গত মাসে পাঁচ লাখ টনেরও বেশি পাম অয়েল আমদানি করেছে ভারত। একই সময়ে দেশটির মোট ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে ১০ লাখ ৭০ হাজার টন। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। সলভেন্ট এক্সট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি শিল্পসংশ্লিষ্ট গ্রুপ বলছে, গত মাসে মালয়েশিয়া থেকে ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৭ টন অপরিশোধিত পাম অয়েল (সিপিও) আমদানি করেছে ভারত। এছাড়া অপরিশোধিত পাম কার্নেল অয়েল ও আরবিডি পাম অয়েল আমদানি হয়েছে যথাক্রমে ৯ হাজার ২০৪ ও ২ হাজার ৭০১ টন। গত বছরের ডিসেম্বরে মোট ভোজ্যতেল আমদানির ৫৮ শতাংশ ছিল পাম অয়েল। সয়াবিন তেল আমদানি কমাতে গত দুই মাসেই পাম অয়েল আমদানি বেড়েছে। মালয়েশিয়া থেকে ভারতের সিপিও আমদানি ডিসেম্বরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেড়েছে বলে জানায় সলভেন্ট এক্সট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশন। অবশ্য ভারতের মোট ভোজ্যতেল আমদানি গত ডিসেম্বরের ১৩ লাখ ২০ হাজার টনের তুলনায় গত মাসে ১০ লাখ ৭০ হাজার টনে নেমে এসেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারতের অপরিশোধিত পাম অয়েল আমদানি ৪৫ শতাংশ বেড়ে ৭ লাখ ৬৭ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। দ্য সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (এসইএ) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ভারত ৫ লাখ ২৯ হাজার টন অপরিশোধিত পাম অয়েল আমদানি করেছিল। গত বছরের ২ নভেম্বর অপরিশোধিত পাম অয়েল (সিপিও) রফতানি শুল্ক ৩৭ দশমিক ৫ থেকে কমিয়ে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ভারতে পাম অয়েলের প্রধান সরবরাহকারী হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। এসইএর উপাত্তে দেখা গেছে, গত মাসে মালয়েশিয়া থেকে সিপিও এসেছে ৪ লাখ ৯৭ হাজার টন। অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়া থেকে এসেছে ২ লাখ ৭০ হাজার টন। গত মাসে ভারতের মোট ভেজিটেবল অয়েল আমদানি ৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছিল ১০ লাখ ৯৬ হাজার টনে। এর মধ্যে ভোজ্যতেল ছিল ১০ লাখ ৭৪ হাজার ও অভোজ্যতেল ২২ হাজার ৩৪ টন। নভেম্বর ২০২০ থেকে জানুয়ারি ২০২১—তিন মাসে ভারতের মোট ভেজিটেবল অয়েল আমদানি হয়েছে ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার টন, যা গত বছরের একই সময়ের ৩৪ লাখ ৫১ হাজার টন থেকে ৩ শতাংশ বেশি। গত মাসে সয়াবিন তেল আমদানি লক্ষ্যণীয়ভাবে কমেছে। এবার যেখানে ৮৮ হাজার ৬৬৭ টন সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে সেখানে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আমদানি হয়েছিল ২ লাখ ৬০ হাজার টন। আর্জেন্টিনা থেকে আমদানি ব্যাহত হওয়ায় গত মাসে রেকর্ড সর্বনিম্ন সয়াবিন তেল আমদানি হলো। গত নভেম্বরে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে ট্রাকচালকদের ধর্মঘট ব্যাপকভাবে তাদের রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ১ ফেব্রুয়ারি নাগাদ ভারতের বিভিন্ন বন্দরে ভোজ্যতেলের মজুদ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫৭ হাজার টনে। এর মধ্যে পাম অয়েল ৩ লাখ ৫৮ হাজার ও সয়াবিন তেল ১ লাখ ১৮ হাজার টন।
গত মাসে মালয়েশিয়ার পাম অয়েলের দাম কমেছে প্রায় ২ শতাংশ। বিশ্বের শীর্ষ ভেজিটেবল অয়েল আমদানিকারক ভারতের আমদানি কমায় পাম অয়েলের দামে এ প্রভাব পড়েছে। গতকাল প্রকাশিত এক সরকারি উপাত্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স। গত সপ্তাহে টনপ্রতি পাম অয়েলের দাম ৬৫ রিঙ্গিত বা ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমে ৩ হাজার ৪২৫ রিঙ্গিতে বা ৮৪৭ দশমিক ৩৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এদিকে গত সোমবার পাম অয়েল আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। গত সোমবার কার্গো সার্ভেয়ারস জানায়, জানুয়ারিতে মালয়েশিয়ার পাম অয়েল রফতানি গত ডিসেম্বরের তুলনায় ৩২ থেকে ৩৭ শতাংশ কমেছে। অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি উপাত্তে আশাবাদী হতে পারেন মালয়েশিয়ার পাম অয়েল রফতানিকারকরা। সোমবার ইউরোপীয় কমিশন জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৩ লাখ ৮০ হাজার টন পাম অয়েল আমদানি করেছিল ইইউ, তার আগের অর্থবছরে যেখানে আমদানি হয়েছিল ৩২ লাখ ৯০ হাজার টন।
সর্বশেষ মন্তব্য