প্রচুর ক্রয়াদেশ থাকলেও নানান সমস্যা পিছু ছাড়ছে না দেশের তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের। চীনে বিদ্যুৎ-সংকটের কারণে বস্ত্রকলগুলো পুরোদমে উৎপাদন করতে পারছে না। সে জন্য সময়মতো কাঁচামাল পাওয়া...
সারা বিশ্বে তুলা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ আঁশ জাতীয় ফসল। এদেশে তুলা উৎপাদনের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকলেও এখন পর্যন্ত এদেশে তুলা উৎপাদনের পরিমান তেমন বেশি নয়। তুলা উন্নয়ন...
অবশেষে উজবেকিস্তান থেকে সহজ শর্তে তুলা আমদানির বাধা দূর হচ্ছে। সে দেশে বিনিয়োগ করলেই ১০ বছরের জন্য জমি ফ্রি। গ্যাস-বিদ্যুত কিংবা শ্রমিক মজুরিতেও মিলবেভর্তুকি। এজন্য দুই...
পৃথিবীর অর্থকরী ফসলের মধ্যে তুলা অন্যতম। এই ফসল রপ্তানিকারক হিসেবে প্রথম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পৃথিবীতে মোট রপ্তানির প্রায় ৩৬ ভাগ তুলা রপ্তানি করে থাকে দেশটি। তাই...
২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে চলমান আগস্ট—গত নয় মাসে তুলার দাম বেড়েছে ৪৭ শতাংশ। এ তুলা থেকে সুতা উৎপাদন করে দেশের স্পিনিং মিলগুলো, যার দাম গত নয় মাসে বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গত নয় মাসে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কেনা তুলা ও দেশের মিলগুলোয় উৎপাদিত সুতার দামের গতি-প্রকৃতি জানিয়ে বিটিএমএ বলছে, সুতার মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে বিভিন্ন অজুহাত তৈরি ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি বেনাপোলসহ সব স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি ও সুতার পার্শিয়াল শিপমেন্ট অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ চেষ্টাকে অপচেষ্টা উল্লেখ করে ১৯ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছে বিটিএমএ। চিঠিতে বলা হয়েছে, কতিপয় সংগঠন স্থানীয় সুতার মূল্য আন্তর্জাতিক বাজার অপেক্ষা ৫০-৬০ শতাংশ বেশি—এ তথ্য উত্থাপনের মাধ্যমে বেনাপোলসহ সব স্থলবন্দর দিয়ে বস্ত্র ও পোশাক খাতের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল তথা সুতা, বস্ত্র পণ্য আমদানি, সুতার আংশিক শিপমেন্টসহ এ-সংক্রান্ত কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রস্তাব পেশ করেছে। কতিপয় সংগঠনের প্রস্তাবে স্থানীয়ভাবে তৈরি সুতার উচ্চমূল্যের অভিযোগ এনে সুতার আংশিক শিপমেন্টসহ এ-সংক্রান্ত কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণের তাগিদ জানানো হয়েছে। বিটিএমএ এ ধরনের বক্তব্য ও প্রস্তাবকে সম্পূর্ণ অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও স্থানীয় টেক্সটাইল খাতে প্রতিষ্ঠিত একটি কার্যকর ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংসের একটি প্রক্রিয়া বলে মনে করে এবং এর দ্বারা সরকারের নীতিনির্ধারকসহ জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। অপচেষ্টার অভিযোগ জানিয়ে নিজস্ব প্রস্তাবও উপস্থাপন করা হয়েছে বিটিএমএর চিঠিতে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে শুরুতেই বলা হয়েছে, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বন্ডের মাধ্যমে সুতা আমদানির বিধান রয়েছে। তাই বেনাপোল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানির ক্ষেত্রে আংশিক শিপমেন্টের অনুমতি দেয়া আত্মঘাতী হবে। কেননা আংশিক শিপমেন্টের অনুমোদন দেয়া হলে একটি এলসির বিপরীতে কয়েকটি চালানে একই এলসির সুতার নামে সুতার অনেক ট্রাকের অনুপ্রবেশ হবে, যা অতীতে হয়েছে তার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনীত সুতা স্থানীয় বাজারে বিক্রির কারণে দেশীয় স্পিনিং মিলগুলো অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়ে একসময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিটিএমএর দ্বিতীয় প্রস্তাবটি হলো ভোমরা, সোনা মসজিদসহ অন্যান্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানিসংক্রান্ত। বলা হয়েছে, ভোমরা, সোনা মসজিদসহ অন্যান্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি ও রফতানি বাণিজ্য বর্তমানে অনেকাংশে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। কেননা ওই বন্দরগুলোর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি হয়নি। এছাড়া টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক খাতের আমদানি করা সুতার কাউন্ট পরিমাপক যন্ত্র, দক্ষ জনবলসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। ফলে সুতার মতো স্পর্শকাতর কাঁচামালের আমদানির অনুমতিসহ আংশিক শিপমেন্ট অনুমতি দেয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে বলে মত জানিয়েছে বিটিএমএ। ভোমরা, সোনা মসজিদসহ অন্যান্য স্থলবন্দর সুতা আমদানির জন্য খুলে দেয়া হলে মিস ডিকলারেশনের (মিথ্যা ঘোষণা) মাধ্যমে অননুমোদিত সুতার ব্যাপক বাজারজাতের ফলে দেশীয় টেক্সটাইল মিল অসম প্রতিযোগিতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জানিয়েছে বিটিএমএ। একই সঙ্গে সরকার ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। সর্বোপরি এর ফলে আমাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অন্য দেশের কাছে তুলে দেয়া হবে বলে মনে করছে বিটিএমএ। গত এক বছর বা তারও বেশি সময়ের মধ্যে প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতে যে ১৫ লাখের বেশি নতুন স্পিন্ডল যোগ হতে যাচ্ছে, তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে সুতার বর্ধিত চাহিদার সংকট উত্তরণের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তা ব্যাহত হবে। তাই এ বিবেচনা থেকে বেনাপোলসহ অন্য যেকোনো স্থলবন্দরকে সুতা আমদানির জন্য খুলে দেয়া বাঞ্ছনীয় হবে না বলে জানিয়েছে বিটিএমএ। বিটিএমএর প্রস্তাবনাগুলোর যৌক্তিকতা এবং বিভিন্ন মহল কর্তৃক সুতার মূল্য বৃদ্ধি সম্পর্কে যে বক্তব্য দেয়া হচ্ছে, সে সম্পর্কে বিটিএমএর অবস্থান উপস্থাপন করা হয়েছে এনবিআরকে দেয়া চিঠিতে। এর মধ্যে প্রথমে বলা হয়েছে সুতা তৈরিতে তুলার খরচই সর্বোচ্চ, যা ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশের মতো। তাই সুতার মূল্য তুলার খরচ ও বাজারে সুতার চাহিদা ও সরবরাহ তারতম্য, এ দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে অর্থাৎ ওই দুটিই সুতার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে চালিকাশক্তি, ম্যানুফ্যাকচারারের কোনো ভূমিকা নেই। বিটিএমএ জানিয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরে তুলার মূল্য ছিল প্রতি কেজিতে ১ দশমিক ৬৫ ডলার, যা এ মাসে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২ দশমিক ৪৩ ডলার। অর্থাৎ এক্ষেত্রে তুলার দাম বেড়েছে ৪৭ শতাংশ। একই সময়ে তার বিপরীতে সুতার মূল্য ছিল (ডিসেম্বর, ২০২০) প্রতি কেজিতে ৩ দশমিক ১০ ডলার ও আগস্টে (২০২১) প্রতি কেজিতে ৪ দশমিক ২৫ ডলার। অর্থাৎ এক্ষেত্রে সুতার দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। তথ্যটি বিশ্লেষণ করলে তুলার মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে সুতার মূল্যবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশ কম। সর্বোপরি সমিতির তথ্যানুযায়ী গত পাঁচ মাসে সুতার মূল্য গড়ে বৃদ্ধি হয়েছে ৫ সেন্টস করে।
পাকিস্তানের তুলা আমদানিতে উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের ১১ মাসে দেশটি সব মিলিয়ে ২৩০ কোটি বেল তুলা আমদানি করেছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় আমদানি বেড়েছে ৪৪ শতাংশ। খবর ডন। ২০২০-২১ অর্থবছরে পাকিস্তান মাত্র ৫৬ লাখ বেল তুলা উৎপাদন করেছে। উৎপাদন ঘাটতির কারণে আমদানি বাড়াতে বাধ্য হয়েছে দেশটি। অথচ এমন পরিস্থিতির মধ্যেই সর্বাধিক ক্রয়াদেশ ও রফতানি বাড়াতে নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়েছে দেশটির সরকার। ঊর্ধ্বমুখী তুলা আমদানি দেশটির টেক্সটাইল খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। এদিকে তুলা উৎপাদন খাতকে নানা ধরনের সহায়তা দেয়া সত্ত্বেও দেশটির অর্থমন্ত্রী শওকত তারিন তুলার বিক্রয় কর বৃদ্ধি করেছেন। ২০২০-২১ অর্থবছর তুলার বিক্রয় কর এর আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে তুলার তেলবীজ বিক্রিতেও কর আরোপ করা হয়েছে। আগে করমুক্ত থাকলেও ২০২০-২১ অর্থবছর পণ্যটির ওপর ১৭ শতাংশ আরোপ করা হয়। কর বৃদ্ধি ও উৎপাদন ঘাটতির কারণে বিপাকে পড়েছেন দেশটির তুলাচাষী ও বাজারসংশ্লিষ্টরা। সরকার কর মওকুফ না করলে তারা আন্দোলনে নামবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। পাকিস্তান কটন জিনার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ড. জাসোমাল ডনকে জানান, তুলার ওপর আরোপিত নতুন করের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পাকিস্তানের অর্থনীতিতে তুলা খাতের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে। তুলা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় টেক্সটাইল খাতে। এর বাইরে তুলা থেকে তেল ও কেকও উৎপাদন করে পাকিস্তান। এ খাতে দেশটির কয়েক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। ড. জাসোমাল জানান, পাকিস্তান সরকার তুলা ও টেক্সটাইল পণ্য রফতানির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ অর্থবছর দেশটির তুলা উৎপাদনে ধস নেমেছে। এমন পরিস্থিতিতে পণ্যটির বিক্রয় কর বৃদ্ধি করা অত্যন্ত অযৌক্তিক। তিনি আরো জানান, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও দেশের সব রাজ্যে তুলা আবাদ হ্রাস পেয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্যটির আবাদ গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে। এটি তুলা খাতের জন্য বড় ধরনের হুমকি। পাঞ্জাবে ৪০ লাখ হেক্টর জমি তুলা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আবাদ করা হয়েছে ৩১ লাখ হেক্টর জমিতে। সিন্ধু রাজ্যে আবাদ কমে ১৩ লাখ হেক্টর জমিতে নেমে এসেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের ১১ মাসে তুলা আমদানি ব্যয় ৩০০ কোটি ডলারের গণ্ডিকে ছাড়িয়ে গেছে। আবাদ ও উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় ফুলেফেঁপে উঠছে আমদানি, পাশাপাশি বেড়েছে আমদানি ব্যয়ও। এদিকে স্থানীয় বাজারে তুলার দাম ঊর্ধ্বমুখী। দেশীয় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পণ্যটির দাম ক্রমে আকাশছোঁয়া হয়ে উঠছে বলে জানান বাজারসংশ্লিষ্টরা।
নিউজ ডেস্ক: বছরে ১০ লাখ বেল ভারতীয় তুলা রফতানি হবে বাংলাদেশে। দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে এ নিয়ে স্বাক্ষর হবে সমঝোতা স্মারক। ভারতীয় গণমাধ্যমে উঠে আসা এমন খবরে...
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে তুলা আমদানি বেড়েছে। দেশের বস্ত্রকল ও সুতা উৎপাদনকারী মিল মালিকদের কাছে পণ্যটির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমদানিতে এমন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এক...
করোনা মহামারীতে বৈশ্বিক বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তুলা উৎপাদনে নতুন করে আশা দেখছে বিশ্ব। বছরান্তে তুলা শিল্পের বাজার আরো বড় হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি ২০২৫...
সর্বশেষ মন্তব্য