বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হয় এশিয়া মহাদেশে। প্রধানত বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ব্যয়বহুল প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিবর্তে এ অঞ্চলের প্রথম পছন্দ...
চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ব্যবহার ২০২৬ সালের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ বাড়তে পারে। ওই সময় পণটির ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়াবে দৈনিক ১ কোটি ৬০ লাখ ব্যারেলে। একই মাত্রায়...
আমদানি করা পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিবহন এবং সঞ্চালনে নতুন ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা...
একসময় বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল ছিল বাংলাদেশ। পাশাপাশি গড়ে উঠেছিল জ্বালানি তেলভিত্তিক বেশকিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে সাশ্রয়ী প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে আসায় গুরুত্ব বাড়ে কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক (এলএনজি) বিদ্যুতের। কিন্তু বিশ্ববাজারে অব্যাহত দরবৃদ্ধির কারণে সরকারকে এখন এলএনজি নিয়েও চাপে পড়তে হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে ফার্নেস ও ডিজেলের দাম পড়তির দিকে। তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে সামনের দিনগুলোয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেলনির্ভরতা বাড়ার জোর সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমছে। অন্যদিকে জ্বালানি হিসেবে এলএনজির দাম এখনো তুলনামূলকভাবে বেশি। পরিবেশ দূষণকারী হিসেবে কয়লার জনপ্রিয়তাও দিন দিন কমছে। ফলে আবারো আলোচনায় উঠে আসছে জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। এরই ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অদূরভবিষ্যতে বাংলাদেশকেও জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে ঝুঁকতে হতে পারে। জ্বালানিবিষয়ক তথ্যসেবা ও আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষক সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটসের এক সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণেও একই কথা উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বিবেচনায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো, বিশেষত বাংলাদেশ ও পাকিস্তান জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে। বাংলাদেশে বর্তমানে জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মোট উৎপাদন সক্ষমতা সাড়ে সাত হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে ব্যবহার হচ্ছে আড়াই হাজার মেগাওয়াট। অন্যদিকে দেশে এখন গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ছয় হাজার মেগাওয়াটের মতো। সর্বশেষ গত মাসেও দেশে দৈনিক এলএনজি আমদানি হয়েছে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে ১৭ মিলিয়ন ঘনফুট এসেছে দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ চুক্তির ভিত্তিতে। বাকি তিন মিলিয়ন ঘনফুট কেনা হয়েছে স্পট মার্কেট থেকে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য স্পট মার্কেট থেকে সরবরাহকৃত এ তিন মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজিকেই ফার্নেস অয়েল ও ডিজেল দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্পট মার্কেটে এলএনজি দাম বেড়ে যায়। সে সময় প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ৩ ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ ডলারে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে না পারায় সে সময় দেশে গ্যাস সংকটও দেখা দিয়েছিল। দেশে বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা বাড়ায় ২০০৯ সালে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দেয়া হয়। এগুলোর বড় অংশই ছিল ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলভিত্তিক। ডিজেলচালিত এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ার পরও বিদ্যুতের চাহিদা বিবেচনায় এসব কেন্দ্রের অনেকগুলো নবায়ন করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সরকারি ও বেসরকারি বেশকিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসায় রেন্টাল ও কুইক রেন্টালভিত্তিক অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ আর নবায়ন করেনি পিডিবি। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের স্থাপিত সক্ষমতা ২২ হাজার মেগাওয়াট। মোট এ সক্ষমতায় জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের অংশ ৩২ শতাংশ। ব্যয় ও প্রাপ্যতা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশই একক জ্বালানিপণ্যে নির্ভরশীলতার পথ থেকে সরে এসেছে। নির্ভর করা হচ্ছে একাধিক জ্বালানিপণ্যের ওপর। জ্বালানিপণ্যগুলোর ওপর নির্ভরশীলতার এ বণ্টনকে সংজ্ঞায়িত করা হচ্ছে ফুয়েল মিক্স হিসেবে। কার্যকর একটি ফুয়েল মিক্সভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিল সরকার। কিন্তু এলএনজির দাম বাড়ায় সে পরিকল্পনাও ব্যর্থ হয়েছে। এলএনজির দাম বাড়তে শুরু করার পর ধারণ করা হয়েছিল, এটি সাময়িক। কিন্তু নানা পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরের মার্চের আগে পণ্যটির দাম কমার সম্ভাবনা খুবই কম। ধারণা করা হচ্ছে, ওই সময় পর্যন্ত জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের সুবিধা নিতে পারে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের ওঠানামা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে অস্বাভাবিক হলে সেটি ভিন্ন কথা, যেটি এলএনজির ক্ষেত্রে হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি সাশ্রয়ী বিবেচনায় এলএনজির পরিবর্তে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালিয়ে সাময়িক সুবিধা নেয়া যেতে পারে। সব হিসাব-নিকাশ করে দেখতে হবে আদৌ এটি সাশ্রয়ী কিনা। তবে এটি কোনো স্থায়ী পরিকল্পনা নয়, জ্বালানির দাম বাড়লে বিকল্প উপায়ে কীভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন সাশ্রয়ী করা যায় তারও ব্যবস্থা থাকা জরুরি। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে এখন পড়তির দিকে। গত বছরের ডিসেম্বর নাগাদ পণ্যটির দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৪৫ ডলার। চলতি বছরের জুলাইয়ে তা উঠেছিল ৭৪ ডলারে। গত আট মাসে ব্যারেলপ্রতি ৫-১০ ডলার কমলেও তা ৭০ ডলারের নিচে নামেনি। তবে চলতি মাসে আবার তা কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম নেমে এসেছে ৬২ ডলারে। ধারণা করা হচ্ছে, এ নিম্নমুখিতা অব্যাহত থাকবে। তবে সরকার বলছে, আগামীতে আমদানীকৃত জ্বালানি দিয়েই গ্যাসের চাহিদা পূরণ করা হবে। বিদ্যুতের নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন এ বিষয়ে বণিক বার্তাকে বলেন, আসন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর জ্বালানি জোগান নিশ্চিত করতে সরকার এলএনজি চুক্তি করছে। দেশী গ্যাসের সংকট থাকায় আমদানীকৃত জ্বালানি দিয়েই এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করা হবে। এলএনজির বর্তমান মূল্য বিবেচনায় জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর সম্ভাবনা সম্পর্কে তিনি বলেন, জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রয়োজন ছাড়া চালু করা হবে না। সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে উচ্চমূল্যের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দিচ্ছে। আগামীতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হবে। বিদ্যুৎ খাতের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশের ফুয়েল মিক্সে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ার কথা। এ অনুযায়ী মোট উৎপাদন সক্ষমতার ১০ শতাংশকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক করার লক্ষ্য ধরা হয়। যদিও এখনো তা ২-৩ শতাংশের ওপরে নেয়া যায়নি। বর্তমানে কয়লার পরিবর্তে সৌরশক্তি নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ অনুযায়ী সৌরশক্তিভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন ৩০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করতে একটি রোডম্যাপ করা হচ্ছে। বর্তমানে এটি আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। বিপিডিবির বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৭৬ হাজার ৬৭০ গিগাওয়াট ঘণ্টা। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৬৭২ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। এর মধ্যে ফার্নেস অয়েল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ পড়েছে প্রতি ইউনিট ১২ টাকা ৬৯ পয়সা। অন্যদিকে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৩ টাকা ২৫ পয়সা, হাইড্রো থেকে ২ টাকা ৫০ পয়সা ও কয়লা থেকে ৮ টাকা ৭৪ পয়সা। বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ায় এবং বহুমুখী জ্বালানির ব্যবহার বাড়ায় ২০১৭-১৮ সালের দিকে সরকারি ও বেসরকারি অন্তত অর্ধশতাধিক ছোট-বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দেয়া হয়। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের বড় অংশই ছিল গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক। কিন্তু পরিবেশের ক্ষতিকর ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে সরকার কয়লাভিত্তিক ১০টি বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করে। পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নবায়নযোগ্য প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। একই সঙ্গে আমদানীকৃত এলএনজি দিয়ে বিদ্যুতের জ্বালানি নিশ্চিত করতে বেশকিছু দেশের সঙ্গে চুক্তি করে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দাম ঊর্ধ্বমুখী ও স্থিতিশীল থাকায় চলতি বছরের শীত মৌসুমে দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বাণিজ্য চাঙ্গা রাখতে উত্তোলন বাড়চ্ছে রাশিয়া। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে উত্তোলনের দিক থেকে সৌদি আরবকে ছাড়িয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছে দেশটি। বছরের দ্বিতীয়ার্ধেও দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনে ঊর্ধ্বমুখিতা অব্যাহত থাকবে। রাশিয়ার জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো রোস্ট্যাট এ তথ্য জানিয়েছে। রোস্ট্যাটের বরাত দিয়ে রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা তাস জানায়, জানুয়ারি-মে পর্যন্ত রাশিয়া গড়ে দৈনিক ১ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছে। জ্বালানি তেল উত্তোলনে শীর্ষ দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের উত্তোলনের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার টন। এক্ষেত্রে শীর্ষ তালিকায় তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে সৌদি আরব। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনের পরিমাণ ছিল দৈনিক ৯০ লাখ ব্যারেলেরও নিচে। অয়েলপ্রাইসডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ও জোট নিয়ে গঠিত ওপেক প্লাস এপ্রিলে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন নিয়ন্ত্রিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সময় দেশগুলো দৈনিক ৯৭ লাখ ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন কমানোর বিষয়ে একমত হয়। মস্কোভিত্তিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিশোধক প্রতিষ্ঠান লুকঅয়েলের ভাইস প্রেসিডেন্ট লিওনেড ফেডান বলেন, ওপেক প্লাস জ্বালানি তেল উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্ত না নিলে ৪০-৪৫ দিনের মধ্যেই পণ্যটির বৈশ্বিক মজুদ পরিপূর্ণ হয়ে যেত। এতে করে বন্ধ হয়ে যেত রাশিয়ার তেল উত্তোলন কূপগুলো। দেশটিকে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি করতে হতো মাত্র ১৫-২০ ডলার মূল্যে। ফলে ওপেক প্লাসের এ সিদ্ধান্ত রাশিয়ার জন্য আশীর্বাদ বয়ে এনেছে। দেশটি প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেল ৩০-৪০ ডলার মূল্যে বিক্রির প্রত্যাশা করছে। এটি রাশিয়াকে দৈনিক ৭-৮ কোটি ডলার আয় এনে দেবে বলে মনে করছেন তিনি। এদিকে উত্তোলন ক্রমাগত বাড়ানোর পরিকল্পনা থাকলেও নতুন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে রাশিয়ার উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। করোনাসহ নানা কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া তেল কূপগুলো নতুন করে চালু করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত মাসে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। রোস্ট্যাটের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন প্রতিবন্ধকতার কারণে জুনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন এর আগের মাসের তুলনায় কিছুটা কমে গড়ে দৈনিক ১ কোটি ৪ লাখ ২০ হাজার ব্যারেলে নেমেছে। মে মাসে উত্তোলনের পরিমাণ ছিল গড়ে দৈনিক ১ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল। রয়টার্সের একটি সূত্র জানায়, রাশিয়ার বড় তেলক্ষেত্রগুলোতেও তেল কূপসংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে। এসব তেল কূপ নতুন করে চালু করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। কূপ থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে জ্বালানি তেল উত্তোলনে নিয়ন্ত্রণ আরোপকে ভালো চোখে দেখছেন না দেশটির জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এদিকে বছরের প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন বৃদ্ধি অব্যাহত রাখবে রাশিয়া। এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দেশটির নির্বাহী প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক। তিনি বলেন, আগস্ট থেকে রাশিয়া দৈনিক এক লাখ ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন বাড়াবে। চলতি বছরের মধ্যেই তেল উত্তোলনে মহামারী-পূর্ব প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে যেতে চায় দেশটি।
দীর্ঘ মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পঙ্গু ভেনিজুয়েলার অপরিশোধিত জ্বালানি খাত। তবে দেশটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জ্বালানি তেল খাতে ঘুরে দাঁড়ানোর জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে দেশটি অপরিশোধিত জ্বালানি...
সৌদি আরব থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি কমিয়েছে চীন। এর পরও জুনে দেশটির সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী দেশ ছিল সৌদি আরব। এ নিয়ে টানা আট মাস চীনের...
ভারতে করোনা মহামারীর নতুন ধরন প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছে। এর প্রভাবে দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলনে ধস নেমেছে। ভারতের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।...
চলতি সপ্তাহে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলো লিবিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল খাত। দেশটির হারিগা বন্দরে রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একটি কোম্পানি তেল উত্তোলন বন্ধের ঘোষণা দেয়। এর পরই...
গতকাল জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ১৩ মাসের সর্বোচ্চে দাঁড়িয়েছে। ভ্যাকসিন সরবরাহ বৃদ্ধিতে চাহিদা বৃদ্ধি এবং উত্তোলকদের সরবরাহ সংকোচনের কারণে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। খবর রয়টার্স। গতকাল অপরিশোধিত ব্রেন্টের দাম ৭৭ সেন্ট বা ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি দাঁড়িয়েছে ৬৩ দশমিক ২০ ডলারে। দিনের এক পর্যায়ে তা ব্যারেলপ্রতি ৬৩ দশমিক ৭৬ ডলারে দাঁড়িয়েছিল। ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারির পর এটা সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্রে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটে (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম ১ দশমিক শূন্য ৪ ডলার বা ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি দাঁড়িয়েছে ৬০ দশমিক ৫১ ডলারে, গত বছরের ৮ জানুয়ারির পর যা সর্বোচ্চ। গত সপ্তাহে তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক ও ওপেক প্লাস কর্তৃক তেল উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্তও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাব রেখেছে। রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার নোভাক জানান, বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং চলতি বছর দাম ব্যারেলপ্রতি ৪৫-৬০ ডলারের মধ্যে থাকবে। তিনি আরো বলেন, আমরা গত কয়েক মাসে দেখেছি তেলের বাজারে অস্থিরতা কমছে। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, বাজারে ভারসাম্যাবস্থা ফিরে আসছে এবং বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতি রেখে দাম চাঙ্গা হচ্ছে।
সর্বশেষ মন্তব্য