কৃষি মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি প্রদানের উপকরণ। দেশের অর্থনীতি বহুলাংশে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বিবিএস প্রতিবেদন-২০২০ অনুযায়ী দেশের শ্রমশক্তির ৪০.৬ শতাংশ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশের জিডিপিতে কৃষির...
অষ্টাদশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষে ব্রিটিশরা আসাম ও তত্সংলগ্ন এলাকায় প্রথম চা চাষ শুরু করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী তীরবর্তী এলাকায় চা চাষের জন্য জমি বরাদ্দ দেয়া হয় ১৮২৮ সালে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেটি বিলম্বিত হয়। যদিও বাংলাদেশে প্রথম অবাণিজ্যিকভাবে চা চাষ শুরু হয় ব্যক্তি পর্যায়ে। ১৮৪০ সালে চট্টগ্রাম শহরের টাইগার পাস, লালখান বাজার, বাটালি হিল, বর্তমান চট্টগ্রাম ক্লাব, লেডিস ক্লাব পাহাড় এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে চা চাষ শুরু হয়। এ চা বাগান কুণ্ডুদের বাগান নামে পরিচিত ছিল। ওই সময়ে বর্তমান চট্টগ্রাম ক্লাব এলাকাটি ছিল চা উৎপাদনের কারখানা এবং সার্কিট হাউজ অংশটি ছিল চা বাগান সম্পর্কিত অফিস। পরবর্তী সমেয় ব্রিটিশদের এ চা উৎপাদনের অবাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। হিসাবমতে, দেশের প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন শুরু হয় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া উপজেলার কোদালা চা বাগানে। ১৮৪৬ সালে কোদালা টি এস্টেটে প্রথম চায়ের চারা রোপণ করা হয়। কিন্তু ভৌগোলিক কারণে তৎকালীন সময়ে দুর্গম এ এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চা চাষ প্রকল্পটি ব্যর্থ হয়। ১৮৫৪ সালে সিলেটের এয়ারপোর্ট রোডের সন্নিকটে মালনীছড়া চা বাগানের কার্যক্রম শুরু করে ব্রিটিশরা। এখানেই বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদনে সাফল্য আসে। এ হিসাবে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম চা বাগান বলা হয় মালনীছড়াকে। যদিও ১৯৬৪ সালে চট্টগ্রামের কোদালা চা বাগানে ফের চা উৎপাদন বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়। দেশ স্বাধীনের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে শুধু দুটি জেলায় চা আবাদ করা হতো, একটি সিলেট জেলায়, যা ‘সুরমা ভ্যালি’ নামে পরিচিত ছিল। অন্যটি চট্টগ্রাম জেলায় যা ‘হালদা ভ্যালি’ নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে বৃহত্তর সিলেটের সুরমা ভ্যালিকে ছয়টি ভ্যালিতে ভাগ করা হয়েছে যথাক্রমে লস্করপুর ভ্যালি, বালিশিরা ভ্যালি, মনু-দলই ভ্যালি, লংলা ভ্যালি ও নর্থ সিলেট ভ্যালি। তাছাড়া হালদা ভ্যালিকে চট্টগ্রাম ভ্যালি নামকরণ করা হয়েছে। এ দেশের আবহাওয়া চা চাষে উপযোগী হওয়া ও বাণিজ্যিকভাবে চা চাষে সাফল্য আসায় ব্রিটিশ আমল থেকেই চা উৎপাদনে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এক পর্যায়ে ১৯৭০ সালেই বাংলাদেশে চা বাগানের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৫০। ২০০২ সাল থেকে সিলেট ও চট্টগ্রামের পাশাপাশি বাংলাদেশ চা বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুরের সমতল ভূমি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলায় ক্ষুদ্রায়তনে চা আবাদ শুরু করেছে। বাংলাদেশে ১৯৭০ সালে চায়ের বার্ষিক উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার কেজি। ২০১৬ সালে উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে ৮ কোটি ৫০ লাখ ৫০ হাজার কেজিতে উন্নীত হয়। ২০১৮ সালে উৎপাদনের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেড়ে ৮ কোটি ২১ লাখ ২০ হাজার কেজি ও ২০১৯ বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড ৯ কোটি ৬০ লাখ ৭০ হাজার কেজিতে উন্নীত হয়। যদিও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ২০২০ সালে উৎপাদন কিছুটা কমে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার কেজিকে নেমে আসে। অতীতে বাংলাদেশের দুই-তৃতীয়াংশ চা রফতানি হলেও দীর্ঘদিন পর ২০২০ সালে রেকর্ড ২১ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা বিশ্ববাজারে রফতানি হয়। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট টি এস্টেট/চা বাগানের সংখ্যা ১৬৭, যার মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় সবচেয়ে বেশি ৯১টি বাগান বা টি এস্টেট রয়েছে। এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা হবিগঞ্জে ২৫টি, চট্টগ্রামে ২১, সিলেট ১৯, রাঙ্গামাটিতে দুই, পঞ্চগড়ে আট ও ঠাকুরগাঁওয়ে একটি চা বাগান/টি এস্টেট রয়েছে। এর মধ্যে টি এস্টেট হচ্ছে চা গাছ থেকে কুঁড়ি উত্তোলন ও প্রক্রিয়াকরণ, বাজারজাত ছাড়াও শ্রমিক/কর্মচারীদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা হয় এসব বাগানে। অন্যদিকে চা বাগান বলতে শুধু চা গাছ সৃজন, চা উৎপাদনসহ এ প্রক্রিয়া যেকোনো একটি বা দুটি কাজ সম্পন্ন হয় এখানে। এ হিসাবে দেশে টি এস্টেট রয়েছে ১২৯টি, চা বাগান রয়েছে ৩৮টি। চায়ের ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ, রফতানি বাজার সম্প্রসারণ, গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদন বৃদ্ধি, চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার উন্নয়নের পথনকশা: বাংলাদেশ চা শিল্প প্রণয়ন করেছে। এ পথনকশা ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার অনুমোদন করে। এতে স্বল্পমেয়াদি (২০১৬-২০২০), মধ্যমেয়াদি (২০১৬-২০২৫) ও দীর্ঘমেয়াদি (২০১৬-২০৩০) মোট ১১টি কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরই মধ্যে স্বল্পমেয়াদি কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে দেশে রেকর্ড ৯৬ দশমিক শূন্য ৭ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। যদিও কভিডের কারণে ২০২০ সালে উৎপাদন কিছুটা কমে ৮৬ দশমিক ৩৯ মিলিয়নে নেমে আসে। এর পরও পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের মাধ্যমে বিশ্বে শীর্ষ চা উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় নাম লেখাতে চায়। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে চা খাতে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা জাগাচ্ছে উত্তরাঞ্চলের সমতলে ক্ষুদ্রায়তনে চা চাষ। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার সমতলে চা চাষের কার্যক্রম শুরু করে। ২০২০ সালে এ অঞ্চল থেকে ১০ দশমিক ১৩ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রামেও ক্ষুদ্রায়তনে চা চাষ কার্যক্রম শুরু করেছে চা বোর্ড। উত্তরাঞ্চলের জন্য চা বোর্ডের দুটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। পাশাপাশি পার্বত্য এলাকায় চা চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বান্দরবানে একটি চা প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন করা হয়েছে।
কৃষি মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি প্রদানের উপকরণ। দেশের অর্থনীতি বহুলাংশে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বিবিএস প্রতিবেদন-২০২০ অনুযায়ী দেশের শ্রমশক্তির ৪০.৬ শতাংশ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশের জিডিপিতে কৃষির...
প্রাকৃতিকভাবেই কুমিল্লার মাটি ও পানি মাছ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। মাছ উৎপাদনে কুমিল্লা বাংলাদেশে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। আবার কুমিল্লার মাছ দেশের অন্য জেলায় উৎপাদিত মাছের চেয়ে...
সোমবার (৫ এপ্রিল) জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২১ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের...
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, শ্রমঘন পাটখাতের উন্নয়ন করে দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ধারা বেগবান রাখতে সরকার কাজ করছে। এজন্য সামগ্রিক পাটখাতের উন্নয়নে বস্ত্র ও...
কারখানায় উৎপাদিত পণ্য কিংবা সেবাখাতের বিভিন্ন ধাপে মূল্য সংযোজন করা সহজ হলেও মাঠ ফসল বা কৃষি খামারে উৎপাদিত পণ্য এবং সেবার যে কোন ধাপে মূল্য সংযোজন...
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, শ্রমঘন পাটখাতের উন্নয়ন করে দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ধারা বেগবান রাখতে সরকার কাজ করছে। এ জন্য সামগ্রিক পাটখাতের উন্নয়নে বস্ত্র...
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পুষ্টিপ্রাচুর্য ও নিরাপদ খাদ্যের ঠিকানা হবে আমাদের সোনার বাংলাদেশ। বিদ্যমান কৃষিকে বাণিজ্যিক রূপান্তরের অভিযাত্রায় কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণ এবং সরকারের নীতি-সহায়তা ও...
শূন্যের ভেতর একটি কুঁড়িতে দুটি চায়ের পাতা। পেছনে পড়ন্ত বিকেলের রোদ পড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা। পঞ্চগড়ের পর্যটনকে ব্র্যান্ডিং করতে জেলা প্রশাসনের তৈরি লোগো এমন। বাংলাবান্ধার জিরো পয়েন্ট, সমতলে...
সর্বশেষ মন্তব্য