হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে। এতে বন্দর এলাকায় ভিড়ছে পাইকাররা। সেই সঙ্গে প্রতিদিনই কমছে দাম, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কমেছে ১২-১৪...
দিনাজপুরের হিলিতে চলতি বোরো মৌসুমে বাড়তি দামের আশায় জিরা সাইল ধানের আবাদ করেন স্থানীয় কৃষকরা। কিন্তু সে আসায় গুড়ে বালি। সম্প্রতি উপজেলায় আবাদকৃত ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমির ধানগাছে পচন দেখা দিয়েছে। ধানগাছগুলোর পাতা হলুদ হয়ে গোড়া পচে মরে যাচ্ছে। কৃষকরা নানা ওষুধ ও কীটনাশক প্রয়োগ করেও পচন ঠেকাতে পারছেন না। অজানা এ রোগের উপদ্রব কৃষকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। ধানের বাজারে অস্থিতিশীলতা, বাড়তি আমদানি ও ফড়িয়াদের দৌরাত্ম্যে কৃষকরা প্রায়ই ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই বেশি লাভের আশায় উপজেলার কৃষকরা এবার উন্নত জাতের জিরা সাইল ধানের আবাদ করেন। কিন্তু ধানগাছে পচন দেখা দেয়ায় ধান ঘরে তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ শঙ্কা বাস্তবে রূপ নিলে উপজেলার অনেক কৃষক বড় ধরনের লোকসানের সম্মুখীন হবেন। অন্যদিকে এ জাতের ধান দেশে অনুমোদিত না হওয়ায় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা এ রোগের প্রতিকার সম্পর্কে সঠিক নির্দেশনা দিতে পারছেন না। তাই তারা এ ধান চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে জিরা সাইল ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বোয়ালদার ও খট্টা মাধবপুর ইউনিয়নে পাতা ও গোড়া পচে ধানগাছ মরে যাওয়ার পরিমাণ বেশি। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, জিরা সাইল ধান উৎপাদনে বিঘাপ্রতি ব্যয় হয় ৮ থেকে সাড়ে ৮, ক্ষেত্র বিশেষে ৯ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ১৭-১৮ মণ ধান উৎপাদিত হয়। প্রতি বিঘা থেকে ফলন অনুপাতে ৫-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে উৎপাদন ব্যয় উঠিয়ে আনাই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন কৃষকরা। হিলির চেংগ্রাম গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, গত আমন মৌসুমে জিরা সাইল ধানের দাম বেশ ভালো ছিল। সে কথা মাথায় রেখেই বাড়তি লাভের আশায় এবার তিন বিঘা জমিতে জিরা সাইল ধানের আবাদ করি। কিন্তু সে ধানের গাছে অজানা এক রোগ দেখা দিয়েছে। ধানগাছের পাতা লাল বর্ণের হয়ে শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। ধানগাছ বাড়ছে না, শিকড়ও ছড়াচ্ছে না। ফলে দুশ্চিন্তায় আছি। একই গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে জিরা সাইল ধানের আবাদ করেছি। কিন্তু ধান যেমন লাগিয়েছি ঠিক তেমনি রয়েছে, একটুও বাড়েনি। গাছের পাতা লাল হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় সার বিক্রেতাদের পরামর্শ নিয়ে জমিতে সার ও ওষুধ দিচ্ছি। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। কৃষক সাইদুল হোসেন বলেন, বাধ্য হয়ে জমির যেসব ধান গাছ লাল হয়ে যাচ্ছে এবং মরে যাচ্ছে, সেগুলো শ্রমিকদের দিয়ে উঠিয়ে ফেলছি। লাভ তো দূরের কথা, আমরা যে খরচ করেছি তা উঠবে কিনা সে দুশ্চিন্তায় আছি। হিলির সাতকুড়ি বাজারের বীজ বিক্রেতা রেজাউল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারো আমরা কৃষকদের মাঝে বীজ সরবরাহ করেছি। তবে এবারের বীজের সমস্যা ছিল। বিষয়টি কৃষি অফিসকে জানিয়েছি। তারা মাঠ পরিদর্শন করে ধানের গাছগুলো দেখে আবহাওয়ার কারণে এটি হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে। তাদের পরামর্শ মেনে আমরা কৃষকদের ওষুধ দিচ্ছি। হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, এ উপজেলায় বেশকিছু অঞ্চলের কৃষক বিক্ষিপ্তভাবে এ জাতের ধান আবাদ করছেন। এ ধান রোপণের পর তারা অধিক পরিমাণ আগাছানাশক ব্যবহারের ফলে ধানগাছের পাতা লালচে বর্ণের হয়ে যাচ্ছে। আমরা ধানগাছের নমুনা সংগ্রহ করে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠাই। তাদের পরামর্শ মোতাবেক কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। বর্তমানে এসব জমিতে বিঘাপ্রতি পাঁচ কেজি করে ইউরিয়া সার, পাঁচ কেজি পটাশ ছিটানোর কথা বলছি। একই সঙ্গে জমিতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি থাকে, তাহলে পানি সরিয়ে মাটি নিংড়ে দেয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
বেশ কিছুদিন ধরে স্থিতিশীল থাকার পরে সরবরাহ কমার অজুহাতে আবারো দিনাজপুরের হিলিতে দেশী পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। দুদিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। দুদিন আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৪-২৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৩৫-৩৬ টাকা হয়েছে। তবে দু-একটি দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। এদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলাজাতীয় পণ্যটির দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা, দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা। হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম ও সাজ্জাদুর রহমান বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই পেঁয়াজের দাম ২০-২৫ টাকার মধ্যে ছিল। তবে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে গিয়েছে। দুদিন আগেও যেখানে পেঁয়াজ কিনেছি ২৪-২৫ টাকা কেজি দরে, সেই পেঁয়াজ আজ কিনতে এসে শুনি ৩৫-৩৬ টাকা হয়ে গেছে। হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা ফিরোজ হোসেন ও শেরেগুল ইসলাম জানান, পাবনা অঞ্চলে কৃষকরা যে তোরা পেঁয়াজ লাগিয়েছিলেন, সেটির উৎপাদন কম হওয়ার কারণে মোকামে পেঁয়াজ সরবরাহ কমে গেছে। চাহিদামতো পেঁয়াজ না পাওয়ায় পাবনার মোকামে দুদিন আগে যে পেঁয়াজ প্রতি মণ ১ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছিল, এখন সেটি বেড়ে ১ হাজার ৪০০-৫০০ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে আমাদের বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনতে হওয়ায় বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বর্তমানে দেশী জাতের পেঁয়াজ ৩৫-৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমতে পারে বলেও জানান তারা। হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, ভারত রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিলে সাড়ে তিন মাস বন্ধের পর গত ২ জানুয়ারি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। তবে দেশের বাজারে দেশী পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ ও দাম কম হওয়ায় পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসান হচ্ছিল। এ কারণে ২৭ জানুয়ারি থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছিলেন আমদানিকারকরা। সম্প্রতি দেশের বাজারে দরবৃদ্ধি পাওয়ায় ৩৬ দিন বন্ধের পর ৪ মার্চ বন্দর দিয়ে পুনরায় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। তিনি জানান, ওইদিন বন্দর দিয়ে এক ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়। এরপর ৭ মার্চ দুই ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়, যা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। চাহিদা থাকায় বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। তবে বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহ বাড়াতে এবং আসন্ন রমজানকে ঘিরে পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া উচিত বলেও জানান তিনি।
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে রোববার বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। একইসঙ্গে বন্দরের পানামা পোর্টের অভ্যন্তরে পণ্য...
বাজারে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। এর প্রভাব পড়েছে পণ্যটির দামে। বাড়তি সরবরাহের জের ধরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম দুদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি আরো ১০ টাকা কমে গেছে। এখানকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ বৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনগুলোয় পেঁয়াজের দাম বর্তমানের তুলনায় আরো কমে আসতে পারে। গতকাল হিলির পাইকারি বাজার ঘুরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ২০-২৪ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। দুদিন আগেও এসব পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩০-৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে হিলির পাইকারি বাজারে পণ্যটির দাম কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ১০ টাকা কমেছে। হিলির পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ফিরোজ হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, পাইকারি বাজারে কয়েকদিন আগেও প্রতি মণ মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। মাঝে পণ্যটির সরবরাহ সংকট দেখা দেয়। এর জের ধরে মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম এক ধাক্কায় মণপ্রতি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় উন্নীত হয়। এ কারণে ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজিতে বাড়তি ১০ টাকা করে নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, এখন স্থানীয় মোকামগুলোয় দেশে উৎপাদিত মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে কমে এসেছে দাম। দুদিনের ব্যবধানে হিলির পাইকারি বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম কেজিতে সর্বোচ্চ ১০ টাকা কমেছে। বর্তমানে পণ্যটির মণ ফের ৮০০-৯০০ টাকায় নেমে এসেছে। স্থানীয় বিক্রেতা শাকিল খান বণিক বার্তাকে বলেন, বাজারে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এজন্য কমতে শুরু করেছে দাম। পাইকারি পর্যায়ে কম দামে কিনতে পারায় খুচরা ব্যবসায়ীরাও তুলনামূলক কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছেন। এদিকে বাজারে দেশে উৎপাদিত মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ তুলনামূলক কমে আসার জের ধরে অনেক ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক ভারত থেকে আমদানি করে মোকাম ভরিয়েছেন। এখন দাম কমতে শুরু করায় তারা মজুদ করা এসব পেঁয়াজ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছেন। ফলে পেঁয়াজের সরবরাহ নিয়ে বিদ্যমান সংকট কেটেছে। এ বিষয়ে শাকিল খান বণিক বার্তাকে বলেন, এ পরিস্থিতি পেঁয়াজের দাম কমিয়ে দেয়ার পেছনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ সংকট থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। ফলে হিলির পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম দীর্ঘমেয়াদে কমতির দিকে থাকতে পারে। এমনকি পণ্যটির দাম বর্তমানের তুলনায় আরো কমে কেজিপ্রতি ২০ টাকার নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা দেখছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বুধবার ৪৯তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এই স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।...
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ভারত থেকে আমদানি শুরু হওয়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে প্রকারভেদে ১০...
রপ্তানি জটিলতার কারণে সীমান্তে লোড অবস্থায় থাকা পেঁয়াজগুলো হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা হলেও অধিকাংশ পেঁয়াজই পচে নষ্ট হয়ে গেছে। গতকাল শনিবার আমদানি করা পেঁয়াজগুলো পাঁচ...
সর্বশেষ মন্তব্য