চলছে মাইগ্রেন সচেতনতা সপ্তাহ ২০২১। এ উপলক্ষে এসকেএফের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথম আলো আয়োজন করে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘মাথা নিয়ে মাথাব্যথা’। সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটির প্রথম পর্বের বিষয় ছিল ‘মাইগ্রেনের জানা-অজানা কথা’। এ পর্বে অতিথি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আরিফুল ইসলাম। সঞ্চালনায় ছিলেন সুস্মিতা শ্রুতি চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো ও এসকেএফের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জানা গেল মাথাব্যথার কারণ সম্পর্কে। দুই রকমের মাথাব্যথা হয়ে থাকে। প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি। প্রাইমারি মাথাব্যথার মধ্যে আছে টেনশনজনিত মাথাব্যথা ও মাইগ্রেন। এর মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষই টেনশনজনিত মাথাব্যথায় ভুগে থাকে। সেকেন্ডারি মাথাব্যথা সাধারণত ঠান্ডা, জ্বর, সাইনোসাইটিস, চোখের বিভিন্ন সমস্যা, কানের ইনফেকশন ইত্যাদির উপসর্গ হিসেবে হয়ে থাকে। এ ছাড়া মস্তিষ্কের নানা রকমের রোগের জন্য যে মাথাব্যথা হয়, সেগুলোকে সেকেন্ডারি মাথাব্যথার ক্যাটাগরির ভেতর ধরা হয়।বিজ্ঞাপন
সারা বিশ্বে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ মানুষের মাথাব্যথা মাইগ্রেনজনিত। অন্য যেকোনো মাথাব্যথার থেকে এটি আলাদা। ডা. মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, মাইগ্রেনের ব্যথা প্রথমে মাথার এক পাশ থেকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে এটি দুই পাশে বা সমস্ত মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় মাথার ভেতর দপ দপ করে ব্যথা হতে থাকে। এমনকি মাথার কোথাও স্পর্শ করলে বা চুল আঁচড়ালেও ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা কেন হয়, সেটার আসল কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে জেনেটিক, হরমোনজনিত সমস্যা (সেরোটোনিন বা সিজিআরপির প্রভাবে মস্তিষ্কের চারপাশে রক্তনালির যে ভেজোডাইলেটেশন হয়) এগুলোর জন্য মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এই ব্যথা সাধারণত মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের হয়ে থাকে। ব্যথার স্থায়িত্বকাল ছয় ঘণ্টা থেকে বাহাত্তর ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। এর সঙ্গে আরও কিছু উপসর্গ থাকে। যেমন বমিভাব বা বমি হওয়া (মাথাব্যথার চূড়ান্ত পর্যায়ে বমি হয়ে গেলে ব্যথা কমে আসে), শব্দ বা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা ইত্যাদি।
সব বয়সীদেরই মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের ব্যথাটি বেশি হতে দেখা যায়। বিশেষ করে এই বয়সী নারীদের মাইগ্রেনের ব্যথা বেশি হয়। এর পেছনে একটি বড় কারণ হরমোনের পরিবর্তন। এ ছাড়া আমাদের দেশে বয়স্কদের মধ্যে মাথাব্যথার প্রবণতা অনেক বেশি। তাদের মাইগ্রেন, টেনশনজনিত মাথাব্যথা ছাড়াও অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, স্ট্রোক ও টিউমারের কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে। এ ছাড়া বয়সের কারণে ঘাড়ের হাড়ে যে পরিবর্তন হয়, সে জন্য মাথার পেছনের দিকে ব্যথা হয়।বিজ্ঞাপন
মাইগ্রেনের চিকিৎসার অংশ হিসেবে রয়েছে ওষুধ এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন। এর জন্য সবার আগে বের করতে হবে মাইগ্রেনের ট্রিগারগুলো কী। অর্থাৎ, কী কী কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা হয়, সেটা জানা। কারও বেশি রোদে গেলে, কারও ক্ষেত্রে বেশি শব্দ বা ঠান্ডা অথবা মানসিক উদ্বেগে হতে পারে। আবার কিছু খাবার, যেমন চকলেট, চিজ, টেস্টিং সল্ট, অ্যালকোহল বা বেশিক্ষণ না খেয়ে থাকলেও ব্যথা হতে পারে। এসব জিনিস খুঁজে বের করে জীবনযাত্রা পরিবর্তন করতে হবে। এভাবে এ ব্যথা এড়ানো বা কমানো সম্ভব। আর মাইগ্রেনের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা হিসেবে পেইনকিলার এবং সেই সঙ্গে বমি না হওয়ার ওষুধ দেওয়া হয়। আর যাদের ঘন ঘন তীব্র ব্যথা হয়, তাদের ব্যথা প্রতিরোধক ওষুধও প্রেসক্রাইব করা হয়। এ ওষুধগুলো তিন থেকে ছয় মাসের মতো খেতে হয়।
মাথাব্যথার কিছু বিপৎসংকেত নিয়েও অনুষ্ঠানে আলোচনা করা হয়। এ সম্পর্কে ডা. মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ করে তীব্র মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা, সেই সঙ্গে রোগী যদি অজ্ঞান হয়ে যায়, তাহলে সেটাকে প্রাথমিক অবস্থার স্ট্রোক বা সাবেরেকনোয়েড হেমোরেজ হিসেবে সন্দেহ করা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য রেড ফ্ল্যাগ সাইনের মধ্যে রয়েছে সকালবেলায় মাথাব্যথা এবং সঙ্গে বমি, তীব্র মাথাব্যথা কোনো ওষুধে সেরে না যাওয়া, ব্যথার সঙ্গে চোখে ঝাপসা বা দুইটা করে দেখতে থাকা, খিঁচুনি, শরীরের কোনো পাশ অবশ হয়ে যাওয়া বা মুখ বেঁকে যাওয়া ইত্যাদি। এই উপসর্গগুলো দেখা গেলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে এবং তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে অন্য কোনো খারাপ রোগ হয়েছে কি না, সেটা জানার জন্য।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাথাব্যথার রোগীর রোগ নির্ণয়ের জন্য ইতিহাস বা ক্লিনিক্যাল এক্সামিনেশন করা হয়। এর মধ্যে আছে ফান্ডাস বা চোখের মাধ্যমে রোগীর মস্তিষ্কের অবস্থা কিছুটা হলেও বোঝা যায়। আর রেড ফ্ল্যাগ সাইনগুলোর ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করে দেখা হয় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা কোনো টিউমার হয়েছে কি না। পঞ্চাশ থেকে ষাটোর্ধ্ব রোগীদের তীব্র মাথাব্যথার সঙ্গে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, এগুলো জায়ান্ট সেল আর্টেরেটিস নামের মারাত্মক রোগের উপসর্গ। এতে রোগীর দৃষ্টিশক্তি হারানোর বড় ঝুঁকি থাকে। এটি নির্ণয়ের জন্য রক্তের সিবিসি, ইএসআর, সিপিআর টেস্টগুলো করতে হয়। এটি নিয়ে ডা. মো. আরিফুল ইসলাম আলাদা করে বলেন, সময়মতো যদি রোগটি নির্ণয় সম্ভব হয় এবং এর সঠিক চিকিৎসা করা হয়, তাহলে রোগীর দৃষ্টিশক্তি বাঁচানো সম্ভব।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন