নাকডাকার বিষয়টি সবার জন্যই বিব্রতকর। যে নাক ডাকে এবং সঙ্গে বা আশেপাশে কেউ থাকলে সেও বিব্রত হয়। এতে করে লজ্জায়ও পড়তে হয়। গবেষণা বলে, শতকরা প্রায় ৪৫ জন মানুষ নাকডাকার সমস্যায় ভুগেন।
বিবিসি আর্থ ল্যাবের প্রতিবেদক ও উপস্থাপক জেমস মে এক গবেষণাকে উদ্ধৃতি করে বলেছেন, ৬০ বছর বয়সী ৪০ ভাগ নারী এবং ৬০ ভাগ পুরুষ নাক ডাকার সমস্যায় ভোগেন। শিশুদের চাইতে বয়স্করা নাক ডাকার সমস্যায় বেশি ভুগে থাকেন।
শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় মানুষেরও শ্বাসনালীতে বাধার কারণে শ্বাসনালীর পেশী কাঁপতে থাকে এবং এক ধরনের শব্দ তৈরি হয়। এটাই নাক ডাকা। জেগে থাকার সময় পেশীর দৃঢ়তা শ্বাসনালীকে মজবুত ও সঠিক শেপ বা গথনে রাখে বলে শব্দ হয় না। এই তথ্যটি জানিয়েছেন ব্রিটিশ স্নোরিং এন্ড স্লিপ অ্যাপনি এ্যাসোসিয়েশন।
নাক ডাকার কারণ কী?
নাক ডাকা মানেই নাকের সমস্যা নয়, এর পেছনে আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। জাতীয় নাক-কান-গলা ইনস্টিটিউটের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মাহফুজ আহমেদ বলেন, নাকের সমস্যা ছাড়াও নাক ডাকার সমস্যা থাকতে পারে। তিনি বলেন-
>> যারা অনেক মোটা
>> যারা অ্যালকোহল গ্রহণ করেন
>> অন্য কোনো চিকিৎসায় ওষুধ খাচ্ছেন
>> ডিপ্রেশনে ভোগা রোগী যারা সাইক্রেটিস্টের চিকিৎসা নিচ্ছেন
>> এবং নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।
ডা. মাহফুজ আহমেদ বলেন, নাক ডাকা হয় মূলত নাক, নাকের পেছনের অংশ এবং গলা এই তিনটি অঙ্গের কোনো সমস্যা তৈরি হলে।
>> নাকের হাড় বাঁকা থাকলে
>> কোনো মাংসপেশী খুলে থাকলে
>> নাকে টিউমার থাকলে
>> নাকের বাল্বগুলো ছোট হলে
>> নাকের পেছনে টনসিল বড় থাকলে
>> গলার মধ্যে কোনো টিউমার থাকলে
>> যাদের জিহ্বা মোটা এবং লম্বা
>> জন্মগতভাবে যদি চোয়াল পেছনের দিকে থাকে তাহলে নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।
বিবিসির সাইন্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নাক ডাকার সমস্যা বাড়তে থাকে। কিন্তু এর সঙ্গে শরীরের আকার ও গঠন জড়িত। যাদের গলা ছোট ও প্রসস্থ থাকে তাদের নাক ডাকার সম্ভাবনা বাড়ে। কারণ ওই ব্যাক্তি ঘুমিয়ে থাকলে তার শ্বাসনালীর চারপাশের চরবির কারণে সেটি সংকীর্ণ হয়ে আসে। সাধারণভাবে বলা যায়, যাদের কলারের মাপ ১৬.৫ ইঞ্চি তাদের নাক ডাকার সম্ভাবনা বেশি।
নাক ডাকার সমাধান কী?
ব্রিটিশ স্নোরিং এন্ড স্লিপ অ্যাপনি এ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, নাক ডাকা চাইলেই বন্ধ করা যায় না। এটি নিরাময়ও হয় না। তবে এটি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। শারীরিক অস্বাভাবিকতার কারণে নাক ডাকে, তাই এটি নিয়ন্ত্রণে আনারা আগে জানতে হবে কোন ধরণের নাক ডাকার সমস্যায় ভুগছেন আপনি।
ওজন বাড়ার কারণে যদি কেউ নাক ডাকে, তবে ওজন কমিয়ে ফেললে ছয় মাসের মধ্যে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এমনটাই মনে করেন ডা. মাহফুজ আহমেদ।
এছাড়া শারীরিক কোনো অঙ্গের কোনো সমস্যা থাকলে চিকিৎসার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে। বিবিসি সাইন্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শারীরিক কোনো জটিলতা না থাকলে বা কোনো অঙ্গের গঠন বিকৃত না হলে, তবে কিছু উপায় অনুসরণ করা যায় নাক ডাকা বন্ধ করতে। সেগুলো হচ্ছে-
>> ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘুমের ওষুধ খাওয়া, অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকুন।
>> ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত চার ঘণ্টা আগে ভারী খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
>> চিৎ হয়ে না শুয়ে যেকোনো একপাশ ফিরে ঘুমান।
>> ঘরে বাতাসের আদ্রতা বাড়ানোর ব্যবস্থা করুন।
>> নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এটি নাক ডাকা নিয়ন্ত্রণে সহয়তা করবে এবং ওজন কমাবে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন