১. মৃত আত্মা বা শয়তান মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে মানসিক রোগ হয় মানসিক রোগ নিয়ে খুব পুরোনো ভ্রান্ত ধারণা এটা। তাই এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মানুষ বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসার পরিবর্তে ওঝা, কবিরাজের কাছে গিয়ে ঝাড়-ফুঁক, মন্ত্র, তাবিজ ইত্যাদি নিয়ে থাকেন। মানসিক রোগ হয় জৈবিক, মানসিক ও পরিবেশগত উপাদানের সংমিশ্রণে এবং বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে এর চিকিৎসাব্যবস্থাও আছে (যেমন ওষুধ, সাইকোথেরাপি ও কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে)। সুতরাং মানসিক রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর দ্রুত এর সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
২. মানসিক রোগ বলে কিছু নেই, এসব লোকজনের বানানো বিষয় মানসিক রোগ অন্যান্য শারীরিক রোগের মতোই বাস্তবিক রোগ। মানসিক রোগের প্রভাব শারীরিকভাবেও প্রকাশ পেয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ মস্তিষ্কের কিছু রাসায়নিক উপাদানের অসামঞ্জস্যের কারণে ডিপ্রেশন হয়ে থাকে, যার ফলে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়, যেমন ক্লান্তি বা মুডের পরিবর্তন, আত্মহত্যার প্রবণতা, উদ্যোগের অভাব, কাজে অনাগ্রহ প্রভৃতি, যা ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনযাপনে ব্যাঘাত ঘটায়।
৩. দুর্বল ব্যক্তিত্বের কারণে এবং চারিত্রিক দোষের কারণে মানসিক রোগ হয়ে থাকে
ব্যক্তিত্বের দুর্বলতার জন্য মানসিক রোগ হয় না, বরং অনেক ধরনের জৈবিক ও পরিবেশগত উপাদান মানসিক রোগের জন্য দায়ী। যেমন জিনগত উপাদান, শারীরিক অসুস্থতা, আঘাতজনিত কারণ, মস্তিষ্কের রাসায়নিক উপাদানের অসামঞ্জস্য, নেতিবাচক অভিজ্ঞতা, মানসিক আঘাত, নানা রকমের নির্যাতন, পরিবারে কারও মানসিক সমস্যার ইতিহাস প্রভৃতি।
৪. মানসিক রোগ শুধু দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও দুর্বল মানুষের ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে
যেকোনো বয়স, লিঙ্গ, শিক্ষা, জনগোষ্ঠী বা আর্থিক অবস্থার মানুষের মধ্যেই মানসিক রোগের বিকাশ হতে পারে।
৫. শিশুদের মানসিক রোগ হয় না
মানসিক রোগের প্রায় অর্ধাংশের ক্ষেত্রেই প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেয় ১৪ বছর বয়সের আগে এবং এক–তৃতীয়াংশ রোগ শুরু হয় ২৪ বছর বয়সের আগে। এ ছাড়া শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণত যেসব মানসিক রোগ দেখা দেয় তা হলো—অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেশন, ফোবিয়া, অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার/অ্যাক্টিভিটি ডিজঅর্ডার, অপোজিশনাল ডিফায়েন্ট ডিজঅর্ডার, কন্ডাক্ট ডিজঅর্ডার, কনভার্সন ডিজঅর্ডার, অবসেসিভ-কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া প্রভৃতি। দ্রুত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পেলে অন্যান্য বিকাশজনিত সমস্যা থেকে শিশুরা রক্ষা পেতে পারে।
৬. মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি আক্রমণাত্মক আচরণ করে থাকে
শুধু কিছু গুরুতর মানসিক রোগে আক্রান্ত মানুষের মধ্যে ৩ থেকে ৫ শতাংশ আক্রমণাত্মক আচরণ করে থাকে এবং চিকিৎসার মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
৭. মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অকর্মক্ষম হয়ে থাকে এবং তারা মানসিক চাপ নিতে পারে না
কর্মক্ষেত্রে আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন কিন্তু অন্যরা বুঝতেও পারছেন না। তাঁরা উচ্চমাত্রার কর্মক্ষম এবং স্বাভাবিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এমনকি তাঁরা অন্য অনেক সুস্থ ব্যক্তির থেকেও ভালো কাজ করছেন, চাপ মোকাবেলা করছেন এবং কর্মক্ষেত্রের নিয়মনীতি অনুসরণ করে চলছেন সঠিক চিকিৎসাসেবা নেওয়ার মাধ্যমে।
৮. মানসিক রোগ কখনো ভালো হয় না, এর কোনো চিকিৎসা নাই
গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ভালোভাবে জীবন যাপন করতে পারেন এবং অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হতে পারেন (যেমন স্বাভাবিক জীবন যাপন করা, কাজ করা, লেখাপড়া করা, সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা প্রভৃতি)। মানসিক রোগ অন্যান্য শারীরিক রোগের মতোই। আর শারীরিক রোগের চিকিৎসার মতো মানসিক রোগেরও চিকিৎসা আছে। ওষুধ ও সাইকোথেরাপির মাধ্যমে এর চিকিৎসা হয়ে থাকে। কিছু মানসিক রোগ চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি সেরে যায় এবং কিছু গুরুতর মানসিক রোগ দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায় অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক রোগের মতোই। তবে কিছু মারাত্মক গুরুতর মানসিক রোগ যেমন সিজোফ্রেনিয়া (যা খুব সচরাচর নয়) চিকিৎসার মাধ্যমে পুরোপুরি সারিয়ে তোলা যায় না, কিন্তু নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
৯. মানসিক রোগীদের বাড়ি/সমাজ থেকে আলাদা রাখতে হয়
মানসিক রোগীদের বেশির ভাগই বাড়িতে থাকা অবস্থায় সঠিক চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন, তাঁদের দূরে থাকার প্রয়োজন হয় না। কেবল কিছুসংখ্যক গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তির হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় চিকিৎসার প্রয়োজন হয়ে থাকে
১০. মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যক্তির আপনজন বা কাছের মানুষদের কিছুই করার থাকে না
মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার পাশাপাশি তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন তাঁর সুস্থ জীবনযাপনের জন্য। যেমন তাঁকে চিকিৎসাসেবা নিতে সহযোগিতা করা, তাঁকে সাপোর্ট করা আর ভরসা দিয়ে বলা, ‘তোমার পাশে আমরা আছি।’ যেকোনো প্রয়োজনে সহযোগিতা করা, মানসিক রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করা (ব্যক্তিকে, তাঁর পরিবারকে এবং তাঁর আশেপাশের লোকজনকে), সম্মানের সঙ্গে তাঁর প্রতি আচরণ করা, খারাপ বা নিচু দৃষ্টিতে না দেখা, তাঁকে অসম্মানজনক শব্দে (যেমন পাগল, উন্মাদ, ক্র্যাক, বিকারগ্রস্ত, মাথায় ছিট ইত্যাদি) চিহ্নিত না করা।
১১. মানসিক রোগের ওষুধ ক্ষতিকর এবং তা একবার শুরু করলে আর বন্ধ করা যায় না
গুরুতর মানসিক রোগের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ব্যক্তিকে রক্ষা করতেই মানসিক রোগের ওষুধ প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। তবে সব ধরনের মানসিক সমস্যার জন্যই ওষুধ প্রয়োজন হয়, তা নয়। মানসিক রোগের ধরন এবং সেটা কতটা গুরুতর তার ওপর নির্ভর করে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। কিছু সমস্যার ক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য স্বল্প মেয়াদে ওষুধ প্রয়োগ হয়, আবার কিছু গুরুতর মানসিক রোগের (সিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার ও অন্যান্য সাইকোটিক ডিজঅর্ডার) জন্য দীর্ঘকালীন ওষুধ প্রয়োগ হয় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সারা জীবন ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে অবশ্যই সাইকিয়াট্রিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
১২. মানসিক রোগ প্রতিরোধ করা অর্থহীন, কারণ এটা অসম্ভব
শিশু ও কিশোরদের মানসিক, আবেগীয় এবং আচরণগত সমস্যা বিকাশের ক্ষেত্রে শৈশবের কোনো নির্যাতন, মানসিক আঘাত, নেতিবাচক অভিজ্ঞতা, অসুস্থ সামাজিক পরিবেশ, আবেগীয় সমর্থনের অভাব প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পক্ষান্তরে, ভালো কাজের প্রশংসা, ইতিবাচক কাজের জন্য পুরস্কৃত করা, সুস্থ সামাজিকতা, উন্নত পারস্পরিক সম্পর্ক প্রভৃতি ব্যক্তির মধ্যে উচ্চমাত্রার কর্মক্ষমতা, লেখাপড়ার ভালো ফলাফল, সুস্থ শারীরিক বিকাশ, উচ্চ আত্মমর্যাদাবোধ এবং আত্মশক্তি বৃদ্ধি করে, যা ব্যক্তিকে মানসিক সমস্যা প্রতিরোধে সহযোগিতা করে।
১৩. বন্ধুবান্ধব থাকলে সাইকোথেরাপি এবং কাউন্সেলিং প্রয়োজন হয় না
পেশাদার সাইকোথেরাপিস্ট বা ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টের (মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ) সহযোগিতা নেওয়া এবং বন্ধুবান্ধবের পরামর্শ নেওয়ার মধ্যে বিশাল ব্যবধান। উভয়েই মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতে পারে। কিন্তু পেশাদার সাইকোথেরাপিস্ট চিকিৎসার প্রয়োজনে ব্যক্তির সমস্যাগুলোকে গঠনমূলকভাবে শনাক্ত ও বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন মনোবৈজ্ঞানিক কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে তার উপর্যুপরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করে থাকেন। বিচারের দৃষ্টিতে না দেখে নিরপেক্ষভাবে ব্যক্তির প্রয়োজনানুসারে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন, যার মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের উপযুক্ত সমাধান খুঁজে বের করেন। এটা ব্যক্তির কাছের মানুষের পরামর্শ দান থেকে সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন আঙ্গিকে হয়ে থাকে।
১৫. মানসিক রোগের একমাত্র চিকিৎসাপদ্ধতি হলো ওষুধ প্রয়োগ; সাইকোথেরাপি এবং কাউন্সেলিংয়ে কোনো কাজ হয় না
মানসিক রোগের অনেক ধরন আছে, সব ধরনের সমস্যার জন্য ওষুধ প্রয়োজন না–ও হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপি ও কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমেই চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। আবার কিছু গুরুতর রোগের ক্ষেত্রে একমাত্র ওষুধের মাধ্যমেই চিকিৎসা হয়ে থাকে। আবার কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ ও সাইকোথেরাপি—উভয়ের মাধ্যমেই চিকিৎসা করা হয়ে থাকে অর্থাৎ ওষুধের পাশাপাশি সাইকোথেরাপি ও কাউন্সেলিং প্রদান করা হয়ে থাকে, যেখানে অপেক্ষাকৃত ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে রোগের লক্ষণ দূর করে রোগীকে সুস্থ করা হয় আর সাইকোথেরাপির মাধ্যমে সমস্যা তৈরির পেছনের কারণ বের করে মনোবৈজ্ঞানিক কৌশলের মাধ্যমে তার প্রতিকার ও প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে শেখানো হয়।
সাইকিয়াট্রিস্ট (মানসিক রোগের চিকিৎসক) ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে মানসিক রোগের চিকিৎসা করে থাকেন আর ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এবং কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট সাইকোথেরাপি ও কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে মানসিক রোগের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। প্রচলিত ভুল ধারণা থেকে বের হয়ে মানসিক রোগসংক্রান্ত প্রকৃত তথ্য জেনে সঠিক প্রক্রিয়ায় দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করলে সুস্থ, সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোগের জটিলতা বাড়তে থাকে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাও কঠিনতর হয়ে পড়ে। সুতরাং মানসিক সমস্যার যেকোনো ধরনের লক্ষণ শনাক্ত বা প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও সহযোগিতা নেওয়া একান্তভাবেই প্রয়োজন, যাঁরা ব্যক্তির প্রয়োজন অনুসারে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে থাকেন। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি অন্যদের সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতন করে তোলা। লেখক: ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিট, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
মানসিক রোগসংক্রান্ত প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ও বাস্তবতা
মানসিক রোগসংক্রান্ত প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ও বাস্তবতা
মানসিক রোগসংক্রান্ত প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ও বাস্তবতা
মানসিক রোগসংক্রান্ত প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ও বাস্তবতা
মানসিক রোগসংক্রান্ত প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ও বাস্তবতা
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন