দাঁতের খুব যত্ন নিচ্ছ। তিন প্রহরে দাঁত ব্রাশ করছ। নানান ধরনের মাউথওয়াশ, ডেন্টাল ফ্লসে দাঁত পরিষ্কার করছ। তারপরও দাঁতে কেন ক্ষত হচ্ছে! এই অতিরিক্ত যত্ন–আত্তিই আবার দাঁতের ক্ষতি করে দিচ্ছে না তো! দীর্ঘ সময় ধরে খুব জোরে জোরে ব্রাশ করা কিন্তু দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ না করলে দাঁত পরিষ্কারের পরিবর্তে দাঁতে ক্ষত তৈরি হয়। ভুলভাবে দাঁত ব্রাশ করলে দাঁত ও মাড়ির সংযোগস্থলে দেখা দেয় প্রথম ক্ষত। দিনের পর দিন এমন চলতে থাকলে ক্ষতটা বাড়ে। লক্ষণ হিসেবে ঠান্ডা–গরম যেকোনো খাবার খেলে দাঁত শিরশির করে ওঠে। অতিরিক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহারও ক্ষতিকর। অতিরিক্ত ব্যবহারে দাগ পড়তে পারে দাঁতে। কিছু মাউথওয়াশে থাকে অ্যালকোহল। এ ধরনের মাউথওয়াশ মুখের ভেতরটা শুষ্ক করে দেয়। এমন পরিবেশে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি দ্রুত হয়। ক্ষত তৈরি হয় দাঁতে।
দাঁত দিয়ে হাতের নখ কাটার অভ্যাস যাঁদের আছে, তাঁদের দাঁতে ক্ষয় হয়। ঘুমের মধ্যে অনেকের দাঁত কামড়ানোর অভ্যাস আছে। এই বদভ্যাসগুলোর কারণেও দাঁত ক্ষয় হয়ে যায় দ্রুত।
এ ছাড়া দাঁতে গর্ত বা ক্ষত হওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ ব্যাকটেরিয়া। আমরা যে খাবারগুলো খাই, তার মধ্যের শর্করা ও স্টার্চ থেকেই ব্যাকটেরিয়াগুলো নিজেদের খাবার পেয়ে থাকে। এই খাবার থেকে তারা শক্তি অর্জন করে একধরনের অ্যাসিড উত্পন্ন করে। এই অ্যাসিড তখন দাঁতের বাইরের আবরণ এনামেলকে আক্রমণ করে বসে এবং আস্তে–ধীরে দঁাতে ক্ষত তৈরি করে। এই ক্ষতকে আমরা ডেন্টাল ক্যারিজ কিংবা ক্যাভিটি বলে থাকি। এই ক্যাভিটিতে যখন খাদ্যকণা জমে, তখন ক্যাভিটি বা গর্ত দৈর্ঘ্য–প্রস্থেও বাড়তে থাকে। তৈরি হয় দাঁতের বিভিন্ন রোগ।বিজ্ঞাপন
দাঁতের ক্ষত রোধে চিনিজাতীয় খাবার যিনি এড়িয়ে যান, তিনি বুদ্ধিমান। মুখে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তারকে চিনি আরও সহজ করে দেয়। অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার দাঁতের সুরক্ষাব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়। এ জন্য মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ খাবার সুস্থ দাঁতের জন্য খুব দরকার। এসব খাবারে থাকা উপাদানগুলো দাঁতের ক্ষয় রোধে দারুণ সহায়ক। শাকসবজি ও ফল শুধু দাঁতের সুরক্ষা দেয় না, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার দাঁতের জন্য খুব ভালো। এতে দাঁত মজবুত হয়। দাঁতের সুরক্ষায় ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করা উচিত। দাঁতের ক্ষয়রোধে ফ্লোরাইড একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। ব্যাকটেরিয়াগুলো যে অ্যাসিড নিঃসৃত করে দাঁতে ক্ষয় বা ক্যারিজ তৈরি করে, ফ্লোরাইড অ্যাসিডের বিরুদ্ধে একধরনের প্রতিরোধ–দেয়াল তুলে রেখে দাঁতের ক্ষয় হতে দেয় না। এই ফ্লোরাইড কোনো ওষুধ নয়, এটি একধরনের খনিজ। খাদ্য, ফলমূল ও খাওয়ার পানি থেকে আমরা প্রাকৃতিকভাবে এই ফ্লোরাইড পেতে পারি। টুথপেস্ট ও মাউথওয়াশের মাধ্যমেও দাঁতে ফ্লোরাইড প্রয়োগ করা যায়।
ট্যাবলেটের মাধ্যমেও ফ্লোরাইড নেওয়া যায়, তবে সে ক্ষেত্রে চিকিত্সকের পরামর্শে নিতে হবে।
সকালে খাওয়ার পর এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই বেলা সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করলে দাঁতের ক্ষয় এবং ক্ষত অনেকটাই এড়ানো যায়। আর যেটুকু একদমই এড়ানো যায় না, তার জন্য তো বিশেষজ্ঞরা রইলেনই।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন