বিশ্বজুড়ে অকাল মৃত্যুর অন্যতম কারণ হৃদ্রোগ। ইদানীং ৩০-৪০ বছর বয়সেও অনেকের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। এ সমস্যা প্রতিরোধে আমাদের জীবনাচরণ হতে হবে হৃদ্বান্ধব। সাত পরামর্শ ঠিকভাবে মেনে চললে সহজেই হৃদ্রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।
খাদ্যাভ্যাস
হৃদ্বান্ধব স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। চর্বিযুক্ত খাবার যেমন রেড মিট (গরু-খাসির মাংস), কলিজা, মগজ, বড় চিংড়ির মাথা, ঘি-মাখন, ডালডা এবং এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ট্রান্স-ফ্যাট হলো ক্ষতিকর চর্বি। উচ্চ তাপে ভোজ্যতেল থেকে ক্ষতিকর ট্রান্স-ফ্যাট তৈরি হয়। এ কারণে বেকারির খাবার ও ফাস্ট ফুডে এই ক্ষতিকর উপাদানের হার তুলনামূলক বেশি থাকে। বাড়িতেও একই তেল বারবার ব্যবহার করলে তা ট্রান্স-ফ্যাটে পরিণত হয়।
ওমেগা-৩ ফ্যাটসমৃদ্ধ উপকারী চর্বিজাতীয় খাবার হৃদ্বান্ধব। এসব খাবার হলো মাছ ও মাছের তেল, বাদাম ও বীজজাতীয় খাবার, বাদাম তেল, অলিভ অয়েল। আঁশযুক্ত খাবারও প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। যব, ভুট্টা, লাল আটার রুটি, টাটকা শাকসবজি, ফলমূল ও সালাদ হলো আঁশযুক্ত খাবার।
অন্যের তৈরি করা কোনো ডায়েট চার্ট নয়, বরং নিজের জন্য জুতসই একটি খাদ্যতালিকা বানিয়ে নিন।
১. লবণ সীমিত
সারা দিনে একজন মানুষের ৬ গ্রাম, অর্থাৎ প্রায় ১ চা–চামচের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। তাই বাড়তি লবণ বাদ দিন। অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার যেমন প্রক্রিয়াজাত মাংস, আচার, পনির, সস, সয়া সস, লবণ মাখানো চানাচুর বা বাদাম ইত্যাদিও কম খেতে হবে।
২. ধূমপান ও মদপানকে না
ধূমপান এবং যেকোনো তামাক যেমন জর্দা, গুল ইত্যাদি চিরতরে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিন। পরোক্ষ ধূমপানও ক্ষতিকর। মদপানও ত্যাগ করতে হবে।
৩. বাড়তি ওজন ঝেড়ে ফেলুন
উচ্চতা অনুযায়ী নিজের ওজন ঠিক রাখুন। ভুঁড়ি যেন না বাড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৪. কর্মক্ষম থাকুন
কিছুটা সময় বের করে প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। রোজ ৩০ মিনিটই যথেষ্ট। হাঁটা ছাড়াও সাইকেল চালানো, সাঁতার, খেলাধুলা করতে পারেন। এতে মন সতেজ হওয়ার পাশাপাশি শরীরও ঠিক থাকবে।
৫. নিজেকে জানুন
বয়স চল্লিশের কোঠা ছুঁলে নিয়মিত কিছু পরীক্ষা করা উচিত। এর মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নির্ণয় অন্যতম।
উচ্চ রক্তচাপ হলো নীরব ঘাতক। কাজেই একে অবহেলা করবেন না। নিয়মিত ওষুধ সেবন করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
রক্তের শর্করা পরীক্ষা করুন প্রতিবছর। ডায়াবেটিস ধরা পড়লে তা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখুন। ‘খারাপ’ কলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা বেশি থাকলে তা কমিয়ে ‘ভালো’ কোলেস্টেরল বা এইচডিএলের মাত্রা বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, নিয়মিত ব্যায়াম ও প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবনে রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৬. চাই পর্যাপ্ত ঘুম
হৃদ্রোগ এড়াতে একজন সুস্থ মানুষের চাই দৈনিক সাত-আট ঘণ্টার নির্বিঘ্ন ঘুম। তাই রাত জাগার অভ্যাস ছাড়ুন। রাতের খাওয়া নয়টার মধ্যে সেরে ফেলার চেষ্টা করুন।
৭. প্রশান্তিতে থাকুন
অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। মানসিক চাপ কমাতে শখের কাজগুলো করতে পারেন। মাঝেমধ্যে কাজে বিরতি নিন। কোথাও বেড়াতে গেলে মন প্রফুল্ল হয়। এ ছাড়া মেডিটেশন বা যোগব্যায়াম, বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখায়ও মন সতেজ হয়।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন