পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বিলুপ্তপ্রায় কাইট্রা কচ্ছপ বা ‘বাটাগুর বাসকা’ প্রজাতির কচ্ছপের ৩৩টি ছানা জন্ম নিয়েছে। মাটির নিচে বিশেষ ব্যবস্থায় রাখার ৬৩ দিন পর বুধবার সকালে ৩৫টি ডিম থেকে এই ৩৩টি ছানা পেয়েছে কেন্দ্র। ডিম থেকে সদ্য ফুটে বের হওয়া বাচ্চাগুলোর শারীরিক অবস্থা খুবই ভালো। শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে ছানাগুলো কেন্দ্রের সুরক্ষিত চৌবাচ্চায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপ বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে দেখা যেত। কিন্তু অন্য দেশে এই প্রজাতির কচ্ছপ এখন প্রায় দেখাই যায় না। বাংলাদেশেও এই প্রজাতির কচ্ছপ বিলুপ্তির পথে। এই প্রজাতিকে বাঁচিযে রাখার জন্য ২০১৪ সালে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনসহ চারটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে বনবিভাগের বাগেরহাটের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে কার্যক্রম শুরু হয়। গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান থেকে এবং জেলেদের জালে ধরা পড়া বড় ৮টি ও ছোট ২০টি মিলিয়ে মোট ২৮টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ দিয়ে এর কার্যক্রম শুরু হয়। একজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারী দিয়ে এই কেন্দ্রের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বাটাগুর বাসকার প্রজনন, বংশ বিস্তার, খাদ্যাভ্যাস, গতিবিধি নির্ণয়সহ নানা বিষয়ে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
করমজল কেন্দ্রের কচ্ছপ প্রজনন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বন্যপ্রানী বিশেষজ্ঞ আব্দুর রব জানান, এ কেন্দ্রে ২০১৭ সাল থেকে কচ্ছপগুলো ডিম দেওয়া শুরু করে। ওই বছর ১৯ মার্চ ৩২টি ডিম দেয় একটি নারী কচ্ছপ। সেই ৩২টি ডিমের থেকে গত ২১ মে থেকে ২৩ মে দুপুর পর্যন্ত তিন ধাপে ২৯টি ডিম থেকে ২৯টি ছানা পায় কেন্দ্র। বাকি তিনটি ডিমের মধ্যে একটি ছানা ডিমের মধ্যে মারা যায় ও দুইটি নষ্ট হয়ে যায়। এর আগে ওই বছর ১৩ মে অন্য একটি নারী কচ্ছপের দেওয়া ৩১টি ডিম থেকে ২৮টি ছানা পায় কেন্দ্র। ২০১৭ সালে দুই নারী কচ্ছপের দেওয়া ৬৩টি ডিম থেকে ৫৭টি ছানা পেল কেন্দ্র। ২০১৯ সালে একটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ ৩২টি ডিম দেয়, যা থেকে ৩২টি ছানা জন্ম নেয়। চলতি বছর আমরা দুটি মা কচ্ছপ থেকে ৫৬টি ডিম পেয়েছি। এর মধ্যে প্রথম দফায় দেওয়া ৩৫টি ডিম থেকে এই ৩৩টি ছানা পেয়েছি। আশা করছি দ্বিতীয় দফায় ২১টি ডিম থেকেই আমরা সব ছানা পাব। এ কেন্দ্রে জন্ম নেয়া কচ্ছপগুলো একটু বড় হলে পর্যায়ক্রমে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় নদ-নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে। এ কেন্দ্রে ছোট বড় মিলিয়ে বর্তমানে ২৫২টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ রয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ক্যারিনাম-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশি ভাষায় পরিচিত কাইট্যা কচ্ছপ বা বড় কাইট্রার বৈজ্ঞানিক নাম বাটাগুর বাসকা। ইংরেজিতে এটিকে নর্দার্ন রিভার টেরাপিন বলে। একটি পূর্নবয়স্ক বাটাগুর বাসকা ৬০ সেন্টিমটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এর ওজন ১৮ থেকে ২৩ কেজি পর্যন্ত হয়। এটি মিঠা ও লবণ পানিতে থাকতে পারে। এই ক্ষমতা অন্য কোনো কচ্ছপের নেই। পূর্নবয়স্ক পুরুষ কচ্ছপের খোলসের রং বাদামি থেকে সবুজ। আর নারী কচ্ছপের খোলসের রং জলপাই ধূসর। নারী কচ্ছপ বছরে ৩০ থেকে ৪০টি ডিম দেয়। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচারের (আইইউসিএন) মহাবিপন্ন প্রাণীর তালিকায় এই কচ্ছপের নাম রয়েছে। এই মহাবিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপকে রক্ষার জন্যে আমরাই প্রথমে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম।’
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন