শখের বাগান ছাড়াও প্রয়োজনীয় বাগান করা যায়। তাই অনেকেই বাসার বারান্দায় বা ছাদে বিভিন্ন ধরনের ফুল বা শোভা বাড়ানোর গাছ লাগান। এর পাশাপাশি টবে লাগাতে পারেন বিভিন্ন ধরনের ওষুধি গাছ। গাছগুলো অনেক উপকারে আসে। জেনে নিন টবে ওষুধি গাছ লাগানোর উপকারিতা সম্পর্কে-
ল্যাভেন্ডার
ল্যাভেন্ডার সবার কাছে প্রিয় একটি ফুল। এ গাছ নিজেকে ও অন্য সব ইন্ডোর প্ল্যান্টকে পোকা-মাকড়ের হাত থেকে মুক্ত রাখে। অনিদ্রা রোগ দূর করতে শোবার ঘরে ল্যাভেন্ডার ফুল গাছ রাখতে পারেন। মাথা ব্যথা বা মাইগ্রেনের সমস্যা হলে এ ফুলের ঘ্রাণে খুব দ্রুত ব্যথা সারে। পানিতে একমুঠো ল্যাভেন্ডার ফুল দিয়ে গোসল করলে আরাম অনুভব করবেন। ত্বকের কোন সমস্যা থাকলেও সেরে যাবে।
অ্যালোভেরা
ভেষজ গুণ সম্পন্ন অ্যালোভেরা জানালার পাশে বা বারান্দায় থাকলে শোভা বাড়ানোর পাশাপাশি ওষুধ হিসেবেও কাজ করে। পুড়ে যাওয়া স্থানে এর আঠালো রস লাগালে যন্ত্রণা কমে। পাশাপাশি ক্ষত দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে। এছাড়া হজম সমস্যা, পাকস্থলির ইনফেকশন, অস্বাভাবিক ঋতু সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ ত্বকের নানাবিধ সমস্যায় উপকার পাওয়া যাবে। অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় এর পাতা দিয়ে তৈরি সরবত বেশ উপকারী।
তুলসি
হাজারো গুণ সম্পন্ন এ গাছের ফুল, পাতা, কাণ্ড ও মূল বিশেষ উপকারী। সর্দি, কাশি, হাপানি, লিভার, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি অনেক কার্যকরী। তুলসি ব্যথানাশক ও স্মৃতিবর্ধক। ত্বকের সমস্যায় ব্রণ ও বলিরেখা দূর করে।
পুদিনা
পুদিনা পাতা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস সম্পন্ন হওয়ায় এর রস পেটের সব ধরনের সমস্যার উপশম করে। ত্বকের তৈলাক্ত ভাব ও ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে কাচা পাতা বেটে মুখে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। চুলে উকুন হলে পুদিনা গাছের শেকড়ের রস চুলের গোড়ায় লাগালে সমাধান পাওয়া যাবে। এলার্জি, ত্বকের সংক্রমণ এবং ঘামের দুর্গন্ধ থেকে রক্ষা পেতে পুদিনা পাতা ভেজানো পানিতে গোসল করতে পারেন।
গাঁদা
গাঁদা ফুলের ঘ্রাণ অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এমনকি এই ফুল খাওয়ার উপযোগী। এর পাতার রস ত্বকের কাঁটা স্থানের রক্ত পরা ও ক্ষত সারাতে কাজ করে। এছাড়া গাঁদা ফুলের পাতার রস কান পাকা রোগ সারায়। ত্বক মসৃণ ও ব্রণমুক্ত রাখতে, হজমে ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে, হাড়ের ক্ষয় রোধ ও আর্থাইটিসের মত জটিল সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত গাঁদা ফুলের চা পান করতে পারেন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন