হঠাৎ ওজন বেড়ে গেছে মনে হচ্ছে, আগের মতো ঝরঝরে লাগছে না নিজেকে। আগে যেভাবে দৌড়ঝাঁপ করতে পারতেন, এখন একটুতেই হাঁপিয়ে উঠছেন। আগের পোশাকগুলো ঠিকভাবে লাগছে না গায়ে। মেপে দেখলেন সত্যিই বেড়েছে ওজন। এবার তার কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখলেন বিগত কয়েক মাস খাবারে নিয়ন্ত্রণ আনেননি। ইচ্ছেমতো খেয়েছেন। দাওয়াত, পার্টি, রেস্টুরেন্ট সব মিলিয়ে ডায়েটের বারোটা বাজিয়েছেন। ওজন তো বাড়বেই! এবার সিদ্ধান্ত নিলেন, আর না! ওজন কমাতে হবে। সকাল থেকে শুরু করবেন শরীরচর্চা, সেইসঙ্গে ডায়েট।
এবার আপনার পরিচিতজনদের সেকথা বলতেই তারা পরামর্শ দিলেন প্রতিদিন সকালে একগ্লাস হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার জন্য। তারা আরও বললেন, এটি চর্বি গলাতে সাহায্য করে, শরীর থেকে টক্সিন দূর করে। আপনিও তাদের কথা মেনে গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করলেন। কদিন যেতেই দেখা গেল নানা শারীরিক সমস্যা। অ্যাসিডিটি, বমি, গ্যাস, ক্ষুধামন্দায় আপনি নাজেহাল!
লেবু নিঃসন্দেহে আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু এমন কিছু খাবার আছে যার সঙ্গে লেবু মিশিয়ে খেলে তা উপকারের বদলে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটি খাবারের থাকে নিজস্ব স্বাদ, যা আমাদের হজমে ভালো বা খারাপ প্রভাব ফেলে। আর এ কারণেই খাবারের সংমিশ্রণ সম্পর্কে জানাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যখন বিপরীত বৈশিষ্ট্যের দুটি খাবার মিশে যায়, তখন তা হজম প্রক্রিয়াকে ব্যহত করতে পারে। এর পাশাপাশি বাড়ে শরীরে বিষাক্ত উপাদানের পরিমাণ। সংমিশ্রণের পাশাপাশি কখন খাচ্ছেন, সেটিও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ধরুন, সকালে খালি পেটে লেবু খেলে এর সাইট্রিক অ্যাসিড পাকস্থলীর ক্ষতি করতে পারে। জেনে নিন কোন খাবারগুলো লেবুর সঙ্গে খাবেন না-
পেঁপে ও লেবু
পেঁপে উপকারী ফল। এটি কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। কাঁচা হোক কিংবা পাকা, পেঁপে কখনো লেবুর সঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। আপনি যদি পেঁপের সঙ্গে লেবু মিশিয়ে খান তবে হিমোগ্লোবিন ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। এমনকী আপনি শিকার হতে পারেন অ্যানিমিয়ার মতো কঠিন অসুখেরও। এটি বড়দের থেকেও বেশি মারাত্মক শিশুদের ক্ষেত্রে। তাই লেবু ও পেঁপে একসঙ্গে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
দই ও লেবু
দই খেলে নানা উপকার পাওয়া যায় সেকথা জানেন নিশ্চয়ই। কিন্তু উপকারী এই খাবার কখনেই লেবুর সঙ্গে মিশিয়ে খাবেন না। দুগ্ধজাত খাবারের সঙ্গে সাইট্রাস জাতীয় ফলের মিশ্রণ হজমে খারাপ প্রভাব ফেলে। আপনি যদি দইয়ের সঙ্গে লেবু মিশিয়ে খান তবে তা শরীরে আরও বেশি টক্সিন উৎপাদন করে। সেইসঙ্গে সর্দি, ঠান্ডা, সাইনাস বা অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দুধ ও লেবু
দুধের সঙ্গে কোনো ধরনের সাইট্রাস ফল মেশাবেন না। এটি আপনাকে বদহজমের মতো সমস্যায় ফেলতে পারে। শুধু তাই নয়, দেখা দিতে পারে অ্যাসিডিটি, বমি ইত্যাদি সমস্যাও। দুধ পান করার আগে বা পরে অন্তত এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে তারপর লেবু খান। এতে আপনি নিরাপদ থাকবেন।
টমেটো ও লেবু
এই দুই খাবার একসঙ্গে খাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। কারণ সালাদের ক্ষেত্রে এই দুই খাবার একসঙ্গে মেশানো হয় অনেক বাড়িতেই। এই কাজ থেকে বিরত থাকুন। টমেটোর সঙ্গে কখনোই লেবু মেশানো উচিত নয়। আপনি টমেটো ও লেবু একসঙ্গে মিশিয়ে খান তবে তা পাচনতন্ত্রের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন