দাঁত শরীরের অন্যতম শক্ত ও মজবুত অঙ্গ হলেও কোনো কোনো পরিস্থিতিতে তা ভেঙে যেতে পারে। দাঁত ভাঙলে অসহনীয় ব্যথার পাশাপাশি সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এই ভাঙা দাঁতের স্থায়ীত্ব নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। নানা কারণেই দাঁত ভাঙতে পারে:
সড়ক দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো দুর্ঘটনা, খেলাধুলায় আঘাতে কিংবা পড়ে গিয়ে দাঁত ভাঙতে পারে।
শক্ত খাবার যেমন হাড়, শক্ত ক্যান্ডি কিংবা শক্ত কিছু কামড়াতে গিয়ে দাঁত ভাঙতে পারে। ছোটখাটো দানা, বিচি, যেমন শুকনা মরিচের বিচি, পেয়ারার বিচিতে কামড় লেগেও দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
দাঁতের ক্ষয়রোগেও এ অবস্থা হতে পারে।
দীর্ঘদিন মেডিকেটেড টুথপেস্ট বা একই টুথপেস্ট ব্যবহারের কারণেও দাঁত ভাঙতে পারে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, বিশেষত বয়স পঞ্চাশের পর অনেকেরই দাঁতে ফাটল ধরে।
অনেক সময় দাঁত এমনভাবে ভাঙে যে বোঝাও যায় না। দাঁতে ক্ষয় না থাকলে কোনো কিছু কামড় দিয়ে ব্যথা লাগলে কিংবা ঠান্ডা বা গরমের অনুভুতি বেশি হলে, বুঝতে হবে দাঁত ভেঙেছে বা ফাটল ধরেছে। দাঁত ভাঙার ধরনেও রয়েছে ভিন্নতা:
● দাঁতের এনামেলে (বাইরের শক্ত আবরণ) ছোট ফাটল দেখা দিতে পারে। এতে কোনো ব্যথা হয় না, চিকিৎসারও প্রয়োজন নেই।
● মাড়ির উপরিভাগে দৃশ্যমান দাঁতের অংশ বা দাঁতের ফিলিংয়ের অংশজুড়ে ভেঙে যেতে পারে। এতেও খুব একটা ব্যথা হয় না।
● দাঁতের উপরিভাগ থেকে মাড়ি পর্যন্ত এ ফাটল দেখা যায় বা ভেঙে যায়। এভাবে ভাঙলে দাঁত শিরশির করে। ব্যথাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসার মাধ্যমে দাঁতটি রক্ষা করা যায়।
● মাড়ির নিচে দাঁত ভাঙলে বা ফাটল ধরলে সংক্রমণ না হওয়া পর্যন্ত খুব একটা বোঝা যায় না। এ ক্ষেত্রে দাঁত তুলে ফেলতে হয়।
● অনেক সময় উপরিভাগ থেকে মাড়ির নিচ পর্যন্ত দাঁত ভেঙে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে পুরো দাঁত না ফেলে একটি অংশ রেখে দেওয়া যায়।
দাঁত ভাঙার ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা ভিন্ন। এর মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হলো:
১. ভেঙে যাওয়া অংশ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ক্রাউন পদ্ধতি কার্যকর। মেটাল, পোরসেলিন, সিরামিকের তৈরি ক্রাউনে দাঁত আগের মতোই আকার, রং, চেহারা ফিরে পায়।
২. সামনের দিকের আংশিক ভাঙা দাঁতে ভেনিয়ার বা কম্পোজিট রেজিনের ব্যবহার একটি আধুনিক চিকিৎসা।
৩. ভেঙে যাওয়া দাঁতটি রক্ষা করা না গেলে একটি আধুনিক ও স্থায়ী সমাধান হতে পারে ডেন্টাল ইমপ্লান্ট।
৪. দাঁত ভাঙার পর পাল্প টিস্যুতে সংক্রমণ হতে পারে। এ ধরনের সমস্যায় রুট ক্যানেল করা হয়।
৫. ভাঙা দাঁতে কোনো ব্যথা না থাকলে ফিলিং একটি নিরাপদ পদ্ধতি।
সবচেয়ে বড় কথা, দাঁত ভেঙে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। নয়তো এই ভাঙা অংশগুলো থেকে জিহ্বা বা ঠোঁট কেটে যেতে পারে। ভাঙা দাঁত দিয়ে চিবানো বা কামড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। কুসুম গরম পানিতে লবণ দিয়ে মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন