নতুন ঋতু শুধু যে খুশির বার্তা বয়ে আনে তা নয়, ঘরে ঘরে সর্দি, কাশি, জ্বর আর বিভিন্ন সংক্রামকও নিয়ে আসে। এসব ছোটখাটো সমস্যা রুখে দেবার উপযুক্ত পদ্ধতি জানা থাকলে রোগের বংশ নিমেষেই ধ্বংস করা সম্ভব। এজন্য কিছু ঔষধি গাছের ব্যবহার জানতে হবে। ঔষধি গাছ ব্যবহার করে কয়েকটি সংক্রামক রোগ সারানোর উপায়-
ব্রণ সমস্যা
সব ধরণের অসুখের জন্যই কোনও-না-কোনও ঔষধি গাছ পৃথিবীতে আছে। এজন্য সেগুলোর ব্যবহার জানতে হবে ও খুঁজে বের করতে হবে। নতুন ঋতুর আগমনে ব্রণের সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান রয়েছে। এটা সারাতে সাহায্য করে আপেলের তৈরি ভিনেগার। আপেল ভিনেগারের মধ্যে একটু তুলো ভিজিয়ে তা পরিষ্কার মুখে অর্থাৎ ব্রণের স্থানে লাগান। এভাবে কয়েকদিন লাগাতে থাকুন। দেখবেন কয়েকদিনের মধ্যেই ব্রণের বংশ ধ্বংস হয়ে গেছে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধে গাজর
৫০০ গ্রাম গাজর একটু লবণ দিয়ে ১ লিটার পানিতে ১ ঘণ্টা সেদ্ধ করে নিন। তারপর ভালো করে চটকে নিন। দিনে কয়েকবার এই ঘন স্যুপটি খেলে পেটের জীবাণু প্রায় নির্মূল হবে। ডায়রিয়া বা পেট খারাপ প্রতিরোধের ১০০ বছরের পুরনো এই কার্যকরী পদ্ধতিটি দিয়েছেন জার্মানির হাইডেলবার্গ শহরের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মোরো।
সালবাই পাতা দূর করবে গলা ব্যথা
গলা ব্যথা বা টনসিলের জন্য সালবাই পাতা ব্যবহার খুবই কার্যকরী। বড় ১ চামচ সালবাই পাতা আড়াইশ মিলি লিটার পানিতে ফুটিয়ে নিন। পানি কুসুম গরম হলে দিনে কয়েকবার তা দিয়ে গার্গল করুন। এটা কয়েকদিন ব্যবহার করলে গলা ব্যথা আর টনসিল থাকবে না।
ভেষজ অ্যান্টিবায়োটিক
১০০ গ্রাম রসুন, ৫টি অর্গানিক লেবু, ৭০ গ্রাম আদা, ৩০ গ্রাম কাঁচা হলুদ ভালো করে ধুয়ে কুঁচি কুঁচি করে কেটে ১ লিটার পানি দিয়ে ব্লেন্ডার করে মিশ্রণ করুন। এক চিমটি কালো গোল মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে চুলায় কিছুক্ষণ গরম করার পর ২০ মিনিট ঢেকে রাখুন। এবার তরল ছেকে বোতলে ঢেলে ফ্রিজে রেখে দিন। শীতের মাসগুলোতে ঘরে তৈরি এই ‘ভেষজ অ্যান্টিবায়োটিক’ প্রতিদিন চার চামচ করে খেলে শীতের নানা অসুখকে দূরে রাখা সম্ভব।
মধু সেবন
রোগ প্রতিরোধে মধু অতুলনীয়। কাবু কণ্ঠস্বরকে চাঙ্গা করতে মধু খুবই পটু। গলা দিয়ে আওয়াজ বের না হলে দিনে কয়েকবার এক চা চামচ করে মধু ধীরে ধীরে খান৷ একবারে বেশি পরিমাণে খেলে গলায় আটকে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। গলার ভাইরাস, সংক্রমণ এবং জীবাণু দমন করতে মধু বিশেষভাবে সহায়ক৷
মাড়ির ইনফেকশন রুখতে সূর্যমুখী তেল
আগে থেকে দাঁতের মাড়ির ইনফেকশনকে রুখতে প্রতিদিন গোসলের আগে ১ টেবিল চামচ সূর্যমুখী তেল মুখের ভেতর নিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন। তারপর মুখ থেকে তেল ফেলে দিয়ে সাধারণ পানি দিয়ে কুলকুচি করুন। এ তেল মুখের ভেতরের জীবাণু ধ্বংস করতে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন