সয়াবিন এমন একটি শস্য যা রান্নার কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি উচ্চমাত্রার প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের জন্য বেশ জনপ্রিয়। বহুবছর ধরেই সয়াবিন বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়, এবং এর স্বাস্থ্যসুবিধা অনেক প্রশংসিত। তবে আপনি কি জানেন, আমাদের স্বাস্থ্যের উপর সয়াবিনের কিছু নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে? টাইমস অব ইন্ডিয়া সয়াবিন সম্পর্কে এমন পাঁচটি তথ্য প্রকাশ করেছে-
থাইরয়েড ফাংশনকে প্রভাবিত করে সয়া গাইট্রোজেন সমৃদ্ধ, যা দেহে আয়োডিনের সঠিক শোষণ বন্ধ করতে পারে এবং থাইরয়েডের কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে। ফ্রন্টিয়ার্স অফ এন্ডোক্রিনোলজিতে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, জেনিস্টেইনের মতো আইসোফ্লাভোন থাইরয়েড হরমোনের প্রজন্মকে বাধা দিতে পারে। যদিও এটি শুধুমাত্র প্রাণির ক্ষেত্রে ঘটেছে। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস নামক জার্নালে প্রকাশিত ১৮ টি সমীক্ষার মানবকেন্দ্রিক পর্যালোচনায় থাইরয়েডের কার্যক্রমে সয়াবিনের উল্লেখযোগ্য প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। সয়াবিন থাইরয়েড-উত্তেজক হরমোনগুলোকে (টিএসএইচ) কিছুটা বাড়িয়ে এনেছিলো, তবে হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব অস্পষ্ট থেকে যায়।
সয়াবিন তেল ওজন বৃদ্ধি করতে পারে ক্ষতিকারক স্যাচুরেটেড ফ্যাটের বিকল্প হিসেবে সয়াবিন তেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তবে স্বাস্থ্য জার্নাল নিউট্রিয়েন্টস-এ প্রকাশিত নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে, সয়াবিন তেল নিজেই ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত, যা ফ্যাট স্টোরেজ, ওজন বৃদ্ধি এবং প্রদাহের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। সয়াবিন তেলে ভাজা খাবার হলো ওজন বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
পুরুষদের মধ্যে যৌন হরমোনকে প্রভাবিত করে সয়াবিনে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইটোয়েস্ট্রোজেন রয়েছে, যা পুরুষদের মধ্যে যৌন হরমোন প্রভাবিত করতে সক্ষম। যদিও জাতীয় গ্রন্থাগার অফ মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণা টেস্টোস্টেরন জেনারেশনে সয়াবিনের কোনো নেতিবাচক প্রভাব আবিষ্কার করতে পারেনি। যেসব পুরুষ প্রতিদিন ৭০ গ্রাম সয়াবিন গ্রহণ করেন তাদের যৌন হরমোন ক্ষতি বা প্রভাবের ঝুঁকি বাড়ায় না। তবে, পুরুষদের অতিরিক্ত সয়াবিন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
স্তনের ক্যান্সারের বিষয়ে প্রতিবেদনগুলো মেনে চলা স্তন ক্যান্সারের জন্য অন্যান্য জিনগত কারণ ছাড়াও ইস্ট্রোজেনের বৃদ্ধি দায়ী। যেহেতু সয়াবিন শরীরে ইস্ট্রোজেনিক প্রভাবের জন্য দায়ী ‘আইসোফ্লাভোনস’ সমৃদ্ধ, তাই এটি স্তন ক্যান্সারে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, স্তন ক্যান্সার এবং সয়াবিন খাওয়ার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে বৈজ্ঞানিক রিপোর্টগুলো পরস্পরবিরোধী। কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন রিসার্চে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এশিয়ান নারীদের মধ্যে যারা বেশি সয়াবিন খান, তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ৩০% কম থাকে। একই জার্নালের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, পশ্চিমা দেশগুলোর নারীদের উপর সয়াবিনের কোনো প্রভাব নেই। এমনকি আন্তর্জাতিক আণবিক বিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রাণী গবেষণায় দেখা গেছে যে, সয়া দুধ ইঁদুরের মধ্যে টিউমার কোষের বৃদ্ধি দমন করতে সহায়ক হতে পারে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন