চীনের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ (সিএনবিজি) বা সিনোফার্ম করোনার টিকা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে। এ প্রতিষ্ঠানের অধীনে দুটি টিকা প্রস্তুতে কাজ করছে দুটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এগুলোর চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে। প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই এটি অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম। অন্যদিকে, এর আগে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের টিকার উচ্চ কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। তবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় উৎপাদনগত ত্রুটি ধরা পড়েছে। পরীক্ষায় দুই রকম ফল আসার পর বিভিন্ন পক্ষ থেকে এই পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এরপর ত্রুটির কথা স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ। খবর নিউইয়র্ক টাইমস ও সিনহুয়ার।
সিনোফার্মের উপব্যবস্থাপক শি শেংগির বরাত দিয়ে গত মঙ্গলবার চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, সিনোফার্মের সহযোগী প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপ দুটি করোনার টিকার অনুমোদন পাওয়ার জন্য আবেদন করেছে। বর্তমানে টিকাটির কার্যকারিতা ও নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দক্ষিণ আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের ১০টি দেশে এ টিকার পরীক্ষা চলছে। অবশ্য এখনও সিনোফার্মের টিকার নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের টিকা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও তাদের জার্মান সহযোগী বায়োএনটেকের একটি টিকা এবং আরেক প্রতিষ্ঠান মডার্নার একটি টিকার ফলাফল ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। কভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে এসব টিকা প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করা হয়েছে। এ অবস্থায় চীনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে টিকা ব্যবহারের অনুমোদন চাওয়া হয়।
গত সপ্তাহে ফাইজার তাদের টিকার ফল জানানোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছে টিকার জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পেতে আবেদন করে। মডার্নাও শিগগিরই অনুমোদনের আবেদন করবে। এখন পর্যন্ত রাশিয়া একমাত্র দেশ, যারা তাদের একটি টিকা সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে।
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের’ এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে ওষুধ নিয়ন্ত্রক ন্যাশনাল মেডিকেল প্রোডাক্টস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গত জুলাই মাসে সিনোফার্মের দুটি টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয়। প্রাথমিক পরীক্ষার তথ্যের ভিত্তিতে উচ্চঝুঁকিপূর্ণ লোকজনকে ওই টিকা দেওয়া হয়। বিশেষ কর্মসূচির আওতায় প্রায় ১০ লাখ মানুষকে ওই টিকা দেওয়া হয়। টিকার প্রাথমিক পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই এটি অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে, যা প্রতিরোধের নির্দেশক। তবে টিকার চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার ফল পর্যালোচনার জন্য জমা দিতে হবে। টিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে যারা প্রথম দিকে কাজ শুরু করেছিল তার মধ্যে অন্যতম সিনোফার্ম। তারাই প্রথম বিশ্বে তৃতীয় ধাপের তথা চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু করেছিল। তারা তৃতীয় ধাপে ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর পরীক্ষা চালায়। দুই সপ্তাহ আগে সিনোফার্ম জানিয়েছিল, তাদের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এ সংক্রান্ত সব তথ্য প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে।
সিনোফার্মের চেয়ারম্যান লিউ জিংজেন টিকাটির নিরাপত্তার বিষয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেছেন, টিকাটির মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া আর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এটি বিদেশে পরীক্ষা শুরুর আগে দেশের ৫৬ হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছিল। তাদের কারও করোনা হয়নি। টিকাটি বিদেশে ৮১ জন ফিনোফার্মের কর্মীকে দেওয়া হয়েছিল। তাদের কারও করোনা হয়নি। চলতি বছরেই সিনোফার্মের দুটি কারখানায় এ টিকা তৈরি হবে। এ বছর ১০ কোটি ডোজ টিকা তৈরির পাশাপাশি উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন লিউ জিংজেন। আগামী বছর ১০০ কোটি ডোজ টিকা তৈরির কথা রয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্সফোর্ডের টিকায় উৎপাদনগত ত্রুটির কথা স্বীকার করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে, এটি মানুষের শরীরে ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। কর্তৃপক্ষ সে সময় জানিয়েছিল, যাদের শরীরে প্রতিষেধকের কম ডোজ দেওয়া হয়েছে, তাদের শরীরে ৯০ শতাংশ কাজ করেছে টিকাটি এবং যাদের একাধিক ডোজ দেওয়া হয়েছে তাদের শরীরের ৬২ শতাংশ কাজ করছে। পরীক্ষায় দুই রকম ফল আসায় এ পদ্ধতি নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। পরে গত বুধবার এক বিবৃতিতে উৎপাদনগত ত্রুটির কথা স্বীকার করে কর্তৃপক্ষ।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন