আমাদের সবার পরিচিত মসলা এলাচ। অনেকের ধারণা— এটি শুধু রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি করে। তরকারির স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাচের বহুগুণ রয়েছে।
প্রাকৃতিক মাউথ ফ্রেশনার হিসেবে খ্যাতি রয়েছে এই মসলাটির। আর হজমের উপকার করে, হার্টকে ভালো রাখে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমানোর পাশাপাশি আরও অনেক স্বাস্থ্য উপকার রয়েছে বহুগুণী এ মসলাটির। আসুন জেনে নিই সেই সম্পর্কে—
১. হজমে উপকার করে
এলাচ হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক কার্মিনেটিভ এবং এটি হজম গতিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া পেটের আস্তরণের প্রদাহ কমাতে, হার্ট পোড়া এবং বমি বমি ভাবের সঙ্গে লড়াই করতেও অনেক কার্যকরী এলাচ। এটি অ্যাসিডিটি এবং পেট খারাপের উপসর্গ কমাতে পারে।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বলছে, এলাচ পেটে পানি এবং বায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলো হ্রাস করে দক্ষতার সঙ্গে খাবার হজম করতে সহায়তা করে।
২. মাথাব্যথা কমায় অনেক সময় বদহজমের কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে। এমনটা হলে তার দারুণ একটি প্রতিকার হিসেবে বেছে নিতে পারেন এলাচ। এর জন্য আপনি সবচেয়ে বেশি উপকৃত হতে পারেন এলাচ দিয়ে চা বানিয়ে খেলে। এলাচ ও চায়ের মিশ্রণ বদহজমের সমস্যা সমাধান করে মাথাব্যথা দূর করতেও অনেক কার্যকর হিসেবে কাজ করবে।
৩. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে প্রাকৃতিক মাউথ ফ্রেশনার হিসেবে অনেক খ্যাতি রয়েছে এলাচের। জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট থাকার পাশপাশি এর শক্তিশালী স্বাদ ও মনোরম গন্ধ রয়েছে। এ কারণে এটি মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
৪. গ্যাস্ট্রিক ও পেটের জ্বালাপোড়া কমায় এলাচে থাকা বিভিন্ন উপাদান আমাদের পেটের মিউকোসাল আস্তরণকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া আমাদের মুখের লালা উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে সহায়তা করে এটি। আর মুখের লালা আমাদের ক্ষুধা বাড়িয়ে দিতে এবং পেটের জ্বালাপোড়া কমাতে সহায়তা করে।
৫. শ্বাসকষ্ট দূর করে এলাচ আপনার ফুসফুসের মধ্যে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দিয়ে হাঁপানি, ঠাণ্ডা এবং কাশির মতো শ্বাসকষ্ট সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। আয়ুর্বেদ অনুযায়ী এলাচ একটি উষ্ণ মসলা হিসাবে পরিচিত, যা শরীরকে অভ্যন্তরীণভাবে উত্তপ্ত করে কফ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং বুকের যানজট দূর করে।
৬. হৃদস্পন্দন নিয়মিত করতে উপকারী পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থসহ অপরিহার্য ইলেক্ট্রোলাইটের জন্য একটি সোনার খনি হচ্ছে এলাচ। আমাদের শরীরে রক্ত, তরল এবং কোষের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো পটাশিয়াম। আর অত্যাবশ্যক এই খনিজের প্রচুর পরিমাণে সরবরাহ করে আপনার হৃদস্পন্দনকে নিয়মিত করতে সাহায্য করে এবং আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করতে পারে এলাচ।
৭. রক্তাল্পতায় উপকারী এলাচে থাকা অন্যতম প্রধান উপাদান হলো তামা, আয়রন এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন যেমন— রাইবোফ্লাভিন, ভিটামিন সি ও নিয়াসিন। আর এসব উপাদান লোহিত রক্তকণিকা এবং সেলুলার বিপাক উৎপাদনে অপরিসীম ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া কপার, রাইবোফ্লাভিন, ভিটামিন সি এবং নিয়াসিন রক্তাল্পতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে কাজ করে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন