শীতের শুষ্ক বায়ু চুল থেকে আর্দ্রতা কেড়ে নিয়ে রুক্ষ করে ফেলে
জেঁকে বসেছে শীত। হাড়কাপুনি শীতে কাঁপছে পুরো দেশ। আর শীতকাল মানেই রুক্ষতা। হাত-পা থেকে শুরু করে মাথার চুল পর্যন্ত রুক্ষ হয়ে থাকে। এই সময়ে শুধু ত্বকের নয় চুলেরও অনেক ক্ষতি হয়। শুষ্ক বায়ু চুল থেকেও আর্দ্রতা কেড়ে নিতে পারে। ফলে চুল হয়ে যায় রুক্ষ, ছিঁড়ে যায়।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী কী কারণে শীতের মৌসুমে চুল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ভেজা চুলে বাইরে যাওয়া
ভেজা চুলে বাইরে গেলে অনেকেরই ঠাণ্ডা লেগে যায়। ঠাণ্ডা না লাগলেও, ভেজা চুলে বাইরে যাওয়াটা চুলের জন্য ক্ষতিকর। এই সমস্যা সমাধানে দু’টি কাজ করা যেতে পারে। রাতে গোসল করে ঘুমাতে পারেন অথবা সকালে গোসল করলে ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে তারপর বাইরে বের হতে পারেন। ড্রায়ার ব্যবহার করলে অবশ্য হেয়ার প্রটেক্টিং স্প্রে বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার না করা
শীতকালে চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে হাইড্রেটিং কন্ডিশনার, মাস্ক ও ট্রিটমেন্ট করা উচিত। এসব ব্যবহারে চুল সুস্থ থাকবে। এসময়ে চুলে তেল ব্যবহার করাটাও উপকারী। এতে মাথার ত্বক পরিবেশের শুষ্কতা থেকে নিরাপদ থাকবে।
গরম পানিতে চুল ধোয়া
গরম পানি যেমন ত্বক শুষ্ক করে দিতে পারে, তেমনই তা চুল ও মাথার তালু থেকেও আর্দ্রতা কেড়ে নিতে পারে। মাথা ধোয়ার জন্য ঠাণ্ডা কিংবা একদম হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। এতে চুল ভালো থাকবে। একেবারে ঠাণ্ডা বা খুব গরম পানি দুটোই ত্বক ও চুলের জন্য ক্ষতিকর।
চুল বেশি ধোয়া
অনেকেই প্রতিদিন শ্যাম্পু করেন। কিন্তু শীতকালেও তা করাটা উপকারী নয় বরং ক্ষতিকর। যাদের চুল কোঁকড়া, তাদের জন্য এটা বেশি ক্ষতিকর। স্ট্রেইট চুল হলে শ্যাম্পু করা দরকার ২-৩ দিন পর পর। আর কোঁকড়া চুল শ্যাম্পু করা দরকার ৪-৫ দিন পর পর।
যাদের চুল তৈলাক্ত, তারা ভাবেন ঘন ঘন শ্যাম্পু করলে চুল ভালো থাকবে। আসলে শ্যাম্পু বেশি করার কারণে মাথার তালুতে তেলের উৎপাদন আরও বেড়ে যায়। চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করে কন্ডিশনার দিন। কন্ডিশনার লাগিয়ে চুল উঁচু করে বেঁধে রাখুন কয়েক মিনিট। এরপর মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিন ও কন্ডিশনার ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালকোহলযুক্ত পণ্য ব্যবহার
শীতে শুষ্ক চুলের জন্য অ্যালকোহলযুক্ত পণ্য খুবই ক্ষতিকর। কারণ তা চুলকে আরও শুষ্ক করে দিতে পারে। কিছু কিছু পণ্যে সাধারণত অ্যালকোহল থাকে যেমন হেয়ার স্প্রে, হিট প্রটেক্টিং স্প্রে এমনকি সল্ট স্প্রে। এগুলো শীতকালে এড়িয়ে চলা উচিত। পণ্যের উপাদানের লিস্ট পড়ে দেখুন। পণ্যে ইথানল, ইথাইল অ্যালকোহল, প্রোপানল, ইয়াসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল, আইসোপ্রোপানল, ডিন্যাচারড অ্যালকোহল ও বেনজাইল অ্যালকোহল সহজে চুলের ক্ষতি করে। তবে অন্যদিকে কিছু কিছু অ্যালকোহল চুলের জন্য উপকারীও হতে পারে, যেমন সেটাইল, স্টিয়ারিল, সেটিয়ারিল, মাইরিস্টিল, বেহেনাইল ও লরাইল অ্যালকোহল।
বেশি সময় টুপি পরে থাকা
শীতকালে কান ও মাথা গরম রাখতে নারী-পুরুষ সবাই ব্যবহার করেন উলের বা অন্য কোনো গরম কাপড়ের টুপি। কিন্তু এসব টুপি চুলের ক্ষতি করতে পারে। বারবার টুপি খোলা ও পরার কারণে চুল ছিঁড়ে যেতে পারে। সারাদিন টুপি পরে থাকলে ঘর্ষণ থেকে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাহলে কী করবেন? টুপি পরা বন্ধ করে দেবেন? না, বরং ব্যবহার করুন মসৃণ কাপড়ে তৈরি টুপি যাতে চুল ভালো থাকে। টুপির ভেতরের দিকে সিল্ক বা সাটিনের লাইনিং দেওয়া থাকলে ভালো। সারাদিন না পরে থেকে কিছু সময় মাথা খুলে রাখুন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন