এগুলো কোনোটি মিষ্টি, কোনোটি টক আবার কোনোটি অপূর্ব স্বাদযুক্ত। আমাদের দেশে পুষ্টির চাহিদা জোগানে দেশি ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। ফল বহুগুণে পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর একটি সুষম খাবার। এটি পেট ভরার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়। ফল খেলে ওজন কমে-ত্বক ভালো রাখে এবং বাড়ায় উজ্জ্বলতাও। ফল বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণসম্পন্ন, যা জীবদেহের পুষ্টিসাধন, দেহের ক্ষয়পূরণ, দেহের রোগপ্রতিরোধক শক্তি উৎপাদন এবং কর্মশক্তি ও তাপ উৎপাদনে বিরাট ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ফল খাওয়া উচিত। কিন্তু ফলের সম্পূর্ণ উপকার পেতে হলে তা খেতে হবে সঠিক সময়ে।রাতে ফল খাওয়া নিয়ে অনেক রকম কথা শোনা যায়। কারও মতে, রাতে ফল খাওয়া ভীষণ ক্ষতিকর। আবার কেউ নিশ্চিন্তে রাতে ফল খান অথচ কোনোরকম অসুস্থতাই অনুভব করেন না। তা হলে কি রাতে ফল খাওয়া আসলে ক্ষতিকর নয়?বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতে ফল খেলে শরীরের শর্করা এবং শক্তির মাত্রা বেড়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে ঘুমও ব্যাহত হয়। তাই রাতে ফল খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। তবে যদি সূর্যাস্তের আগে ফল খাওয়া হয় তাহলে ফলের সব রকমের উপাদান শরীরে ভালোভাবে প্রবেশ করে।বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালের নাশতায় ফল খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়া ব্যায়ামের পরে এবং শুরু করার আগে ফল খেতে পারেন।
আয়ুর্বেদ অনুসারে, খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পর ফল খাওয়া উচিত। আর যদি রাতে ফল খেতে হয় তা হলে শুতে যাওয়ার অন্তত ৩-৪ ঘণ্টা আগে ফল খাওয়া উচিত। ফল অনেক সহজে এবং তাড়াতাড়ি হজম হয়। পেট ভর্তি খাওয়ার পর ফল খেলে খাবারের আগে ফল হজম হয়ে যায়। ফলের পুষ্টিগুণ শরীরে দ্রুত প্রবেশ করার ফলে খাবারের অনেক পুষ্টিগুণ শরীরে শোষিত হয় না। হজমের সমস্যা হতে পারে।আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় আরও বলা হয়েছে, রাতে প্লেট ভর্তি ফল খাওয়া ঠিক নয়। যদি মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করে, তাহলে শুধু একটি টুকরো ফল যেটাতে চিনি কম এবং ফাইবার বেশি থাকে, যেমন তরমুজ, নাশপাতি বা কিউই খেতে পারেন। এ ছাড়া ফল খাওয়ার পরপরই ঘুমাবেন না।আর্য়ুবেদ চিকিৎসা অনুযায়ী, বিকেল কিংবা সন্ধ্যায় ফল খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। ঘুমের নিয়মেও হেরফের ঘটে সন্ধ্যায় ফল খাওয়া হলে। বিভিন্ন ফলেই প্রচুর পুষ্টির উপাদান থাকে। তার থেকে কর্মশক্তি বাড়ে। সন্ধ্যায় কাজের শেষে সেই খাবার খেলে কর্মক্ষমতা কাজে লাগে না। কিন্তু ঘুমও আসে না। এ ছাড়া, ফল হজম করতে সময় লাগে। সন্ধ্যার পর হজমশক্তি এমনিই কমে। তখন যদি কঠিন কোনও খাদ্য পেটে যায়, হজমের গোলমাল হতে পারে। তার প্রভাবও ঘুমের ওপর পড়ে। আবার অনেক ক্ষণ খালি পেটে থাকার পর ফল খেলেও অ্যাসিডিটি ও বদহজমের সমস্যা হতে পারে। এই বিষয়গুলো মেনে চললেই রাতে ফল খাওয়াতে কোনো বাধা নেই।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন