মিষ্টিকুমড়া বাংলাদেশে জনপ্রিয় একটি সবজি। এটি দেখতে যত সুন্দর, স্বাস্থ্যের পক্ষে ঠিক ততটাই উপকারী। ভিটামিন এ, বি কমপ্লেক্স, সি এবং ই, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাংগানিজ, আয়রন, জিংক, ফসফরাস, কপার, ক্যারটিনয়েড এবং অন্য অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের আধার মিষ্টিকুমড়া। এ ছাড়া বিটা-ক্যারোটিনসমৃদ্ধ এই সবজি আমাদের দেহের ক্যানসার প্রতিরোধক কোষ গঠন করে।
আমরা সাধারণত মিষ্টিকুমড়া দিয়ে ঝালজাতীয় খাবার রান্না করে থাকি। কিন্তু এটি দিয়ে যে হালুয়া বা লাড্ডু তৈরি করা যায়, অনেকেই হয়তো আমরা সেটা জানি না। লাড্ডু পছন্দ করেন না, এমন ব্যক্তি খুব কমই আছেন আমাদের মধ্যে। নানা রকম লাড্ডুর ভিড়ে আমার নতুন সংযোজন মিষ্টিকুমড়ার শাহি লাড্ডু।
বাংলাদেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে মিষ্টিকুমড়া দিয়ে স্যুপ এবং সবজি ছাড়াও তৈরি করা হয় বিভিন্ন রকমের মিষ্টান্ন, যেমন পামকিন পাই, পামকিন কেক ইত্যাদি। সেই ভাবনা থেকেই মিষ্টিকুমড়া দিয়ে আমার হালুয়া বানানোর প্রচেষ্টা এবং শতভাগ সফলতা লাভ!
আমার বানানো গাওয়া ঘি এবং বিভিন্ন বাদামের ব্যবহার এ লাড্ডুতে যোগ করেছে একটি শাহি ফ্লেভার। একবার বানালে বারবার খেতে চাইবেন, সঙ্গে পাওনা হবে প্রিয়জনের বিরাট প্রশংসা।
লাড্ডুর উপকরণ
১. মিষ্টিকুমড়া (ছোট টুকরা করা ৪ কাপ)। তবে আপনি চাইলে গ্রেট করেও নিতে পারেন। ২. তরল দুধ ১.৫ কাপ ৩. ঘি ১ টেবিল চামচ ৪. দারুচিনি ছোট ৩ টুকরা এবং এলাচি ৪টি এবং ৫. বিভিন্ন রকমের বাদামের কুচি।
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে মিষ্টিকুমড়া ধুয়ে পরিষ্কার করে ছিলে ছোট ছোট টুকরা করে নিন। ভাজির মতো কুচি করেও নিতে পারেন।
একটি পাত্রে মিষ্টিকুমড়ার টুকরাগুলো দুধ দিয়ে ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিন ৫-৬ মিনিট। সেদ্ধ মিষ্টিকুমড়া একটি হ্যান্ড হুইস্ক অথবা ডাল ঘুঁটনি দিয়ে ভালো করে ঘুঁটে থকথকে মিশ্রণ বানিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন।
চুলার আঁচ বাড়িয়ে কমিয়ে মিষ্টিকুমড়ার মিশ্রণটিকে ভালো করে ভেজে নিন ৪-৫ মিনিট। মিশ্রণটি থেকে পানি শুকিয়ে এলে দিয়ে দিন স্বাদমতো চিনি। চিনি গলে মিশ্রণটি একটু নরম হয়ে আসবে। আর ৪-৫ মিনিট ভাজলেই চিনির পানি শুকিয়ে মিষ্টিকুমড়ার মিশ্রণটি ফ্রাইপ্যানের গা ছেড়ে আসবে। এ পর্যায়ে দিয়ে দিন বাদাম।
বাদাম দিয়ে আর ২-৩ মিনিট ভাজলেই তৈরি হবে মিষ্টিকুমড়ার মজাদার হালুয়া। এই হালুয়া থেকেই ছোট ছোট লাড্ডু বানিয়ে নিন। লাড্ডু বানানোর সময় দিতে পারেন মিষ্টিকুমড়ার আকৃতি, যা দেখতে লাগবে ভীষণ আকর্ষণীয়। বানানো একটি লাড্ডু হাত দিয়ে একটু চ্যাপ্টা করে নিন। একটি কাঠি দিয়ে চারপাশ থেকে একটু খাঁজ কেটে নিন মিষ্টিকুমড়ার মতো। একটি লবঙ্গ ওপর থেকে গেঁথে দিন। ব্যস হয়ে গেল মিষ্টিকুমড়ার আকৃতির লাড্ডু।
এবার এই লাড্ডুগুলো শুকনো নারকেলের গুঁড়ায় গড়িয়ে নিন। তৈরি মজাদার মিষ্টিকুমড়ার শাহি লাড্ডু। শবে বরাতে এই লাড্ডু বানিয়ে চমকে দিন সবাইকে। না বলে দিলে কেউ বুঝবেই না এটি মিষ্টিকুমড়া দিয়ে তৈরি।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন