মাংস না খেলে মানুষের স্বাদের অনুভূতি কমে যেতে পারে
মানুষের খাদ্যাভ্যাসকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একদল আমিষ বা মাংসভোজী এবং আরেকদল নিরামিষভোজী যাদেরকে ইংরেজিতে ভেজিটেরিয়ানও বলা হয়ে থাকে। মাংস না খেয়েও নিরামিষভোজীরা বেশ স্বাভাবিক এবং সুস্থ জীবনযাপন করেন।
কিন্তু কোনো আমিষভোজী ব্যক্তি যদি হঠাৎ করেই মাংস খাওয়া ছেড়ে দেন তার শরীরে কিছু পরিবর্তন ঘটে। যদিও তা বড় পরিবর্তন বা শারীরিক খুব ক্ষতি করে তা নয়।
ওজন কমতে পারে
জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মেডিসিন প্রফেসর নীল বার্নার্ড একটি গবেষণা করে দেখেন, উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল খাদ্যাভ্যাস মানুষের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। জার্নাল অব দ্য একাডেমিয়া অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ডাইটেটিকস’এ প্রকাশিত তার এ গবেষণায় তিনি বলেন, মাংস খাওয়া ছেড়ে দিলে মানুষের গড়ে ৭ দশমিক ৫ পাউন্ড ওজন কমে। হজমে পরিবর্তন মানুষের পাকস্থলীতে মাংস এবং সবজি উভয় পরিপাক করার জন্যই ভিন্ন ভিন্ন এনজাইম থাকে। মাংস খাওয়া বন্ধ করে দিলে মানুষের পাকস্থলীতে বসবাস করা ব্যাকটেরিয়াগুলোর আচরণে পরিবর্তন আসে। পাকস্থলীতে কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়াও জন্মায়। একই সঙ্গে নতুন ধরনের খাবারের জন্য পেটে গ্যাস জমা হতে পারে।
হৃদরোগের ঝুঁকি
একই ধরনের জীবনযাপন করা ৭৬ হাজার নারী ও পুরুষ যাদের অর্ধেক নিরামিষভোজী এবং বাকিরা মাংসাশী-তাদের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা যায়, নিরামিষভোজীদের হৃদরোগের ঝুঁকি ২৪ শতাংশ কম।
স্বাদ কমে যাওয়া
জিংক মানুষের দেহের বিভিন্ন কর্ম সম্পাদন করে যা মাংস থেকে পাওয়া যায়। একইভাবে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ (যেগুলো রেড মিটে প্রচুর পরিমাণে থাকে) মানুষের স্বাদ গ্রহণ এবং শ্রবণে সাহায্য করে। মাংস না খেলে তাই মানুষের স্বাদের অনুভূতি কমে যেতে পারে। যারা মাংস খায় না তাদের জিংকের চাহিদা অন্যদের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি থাকে।
হতে পারে ভিটামিনের ঘাটতি
আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি-১২ মানুষের স্নায়ু কাজ করার জন্য প্রয়োজন। কিন্তু মাংসের অভাবে শরীর সেসব কাজ স্বাভাবিকভাবে সম্পাদন করতে পারে না। তাই এসব পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করার জন্য কারো কারো সামান্য ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে। পেশীর শক্তির ঘাটতি মানুষের পেশীর গঠন এবং শরীরে পর্যাপ্ত শক্তির জন্য প্রাণীজ আমিষ খুবই প্রয়োজন। মাংস না খেলে সেই আমিষে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এর ফলে শরীরের শক্তি কমে যেতে পারে এবং পেশীর ক্ষতি হলে তা পুনরুদ্ধারে সময় বেশি লাগতে পারে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন