মানব শরীরের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান হচ্ছে ভিটামিন ও খনিজ। এ উপাদানগুলোর অভাব হলে তা আমাদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি সৃষ্টি করে।
আমাদের সবারই উচিত স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার আগেই সচেতন হওয়া। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক সবারই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন ও খনিজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ দুটির ঘাটতি মেটাতে পারে হাতের কাছের কিছু ফল। আসুন জেনে নিই সেই সম্পর্কে—
১. কমলা করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির দিকে। আর এর জন্য ভিটামিন ‘সি’ বেশি খাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আর এ কারণে কমলার জনপ্রিয়তা গত এক বছরে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কমলায় থাকা ভিটামিন ‘সি’ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া কমলা ভিটামিন ‘সি’ এবং ফোলেটের গুণাগুণে ভরপুর তা আমাদের জন্য দৈনিক পুষ্টির একটি নিখুঁত ঘাটতি মিটিয়ে দিতে পারে।
২. ডালিম ডালিম হচ্ছে ভিটামিন সি, এ ও ই’তে ভরপুর। আর এ কারণে এটি আপনার শরীরে ভিটামিনের ঘাটতির অনেকটাই সরবরাহ করতে পারে। এ ছাড়া ডালিমের লাল দানার বীজ শরীরে আয়রনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এর প্রতি ১০০ গ্রামে শূন্য দশমিক ৩ মিলিগ্রাম পর্যন্ত আয়রন থাকতে পারে। আর আয়রন সমৃদ্ধ এ ফলটি রক্তশূন্যতার বিরুদ্ধে লড়াই করতেও অনেক কার্যকরী।
৩. কলা কলা এতই পরিচিত একটি ফল যে, আমাদের দেশের যে কোনো জায়গায় কলা খুঁজে পেতে পারেন এবং এটি তাত্ক্ষণিকভাবে আপনার ক্ষুধা মেটাতে পারে। সুমিষ্ট এ ফলটিতে পটাশিয়াম, ভিটামিন ‘বি’ এবং ফোলেটের পরিমাণ বেশি থাকায় কলাকে সুপারফুড বলা হয়। আর এটি শরীরে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
৪. আপেল পুষ্টিকর ফল হিসেবে আপেলের অনেক খ্যাতি রয়েছে। এ ফলটি আয়রনের অন্যতম একটি ভালো উৎস এবং এটি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে অনেক কার্যকরী। এটি অ্যামিনিয়া রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং এতে চিনির পরিমাণ কম থাকার কারণে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও উপকারী।
৫. স্ট্রবেরি যদিও আমাদের দেশে এই ফলটি তেমন বেশি প্রচলিত না, কিন্তু তার পরও এই ফলটি ভিটামিন ও খনিজের অনেক ভালো একটি উৎস। এখন আমাদের দেশেও অনেক চাষ করা হচ্ছে এ ফলটি। এটিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন ‘সি’ থাকে, যা আমাদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে অনেক কার্যকরী হিসেবে কাজ করে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন