দুশ্চিন্তা, অনিশ্চয়তা আর দুঃসংবাদ হয়ে উঠেছে আমাদের নিত্যসঙ্গী। জেনে নিন কীভাবে এই দিনগুলোতেও ভাল রাখবেন মন
ভাল্লাগে না কিছুই যেন আর আগের মতো ভাল লাগে না। যতই নিয়ম করে পুবদিকে সূর্য উঠুক আর পশ্চিমে অস্ত যাক না কেন, কিছুই যেন আর আগের মতো নেই। দুশ্চিন্তা, অনিশ্চয়তা আর দুঃসংবাদ হয়ে উঠেছে আমাদের নিত্যসঙ্গী। জেনে নিন কীভাবে এই দিনগুলোতেও ভাল রাখবেন মন।
১. পাঁচমাস আগেও আমাদের যার যাই রুটিন থেকে থাকুক না কেন, এতদিনে তার অনেকটাই এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। নিউ নর্ম্যাল এই যাপনে তাই দূরে রাখার চেষ্টা করুন একঘেয়েমি। সকালে উঠে ছাদে হোক বা বারান্দায় বা নিদেনপক্ষে ঘরের মধ্যেই, খানিক হাঁটাহাঁটি করতে পারলে দিনভর শরীর-মন দুইই ঝরঝরে লাগবে।
২. বাগানে বা বারান্দায় বা ছাদে, কোথাও কি কিছু গাছ লাগিয়েছেন? সকাল-সকাল তাদের খানিক পরিচর্যা করতে পারেন। যাদের বাড়িতে এখনও গাছ নেই, জোগাড় করে ফেলতে পারেন কিন্তু।
৩. বাড়ির কাজ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়ার চেষ্টা করুন। দিনভর বাড়ি থেকে অন্তত কিছু কাজে হাত লাগালে, বিশ্বাস করুন, দিনের শেষে খানিকটা হলেও ভালই লাগে!
৪. ঘরের কাজ হোক বা অফিসের, যে কাজই করুন না কেন, কাজের সময়টুকু তা ভালবেসে, মন দিয়ে করার চেষ্টা করুন। তা নাহলে না কাজটা ভাল হবে, না-ই মন ভাল থাকবে।
৫. ঘনিষ্ঠ প্রিয়জনদের সঙ্গেও অনেকেরই বেশ কিছুদিন হল দেখা হয় না। অনেকে বাবা-মার থেকেও দূরে আছেন। স্বাভাবিকভাবেই, তাঁদেরও মন ভাল নেই, আপনারও। সময় করে এবং নিয়ম করে ফোনে বা ভিডিয়ো কলে তাদের খোঁজ নিন।
৬. বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গেও অনেকদিন মুখোমুখি বসা হয় না, বাইরে বেরনো হয় না। সময় করে তাদের ফোন করুন, মেসেজ করুন, হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে ভিডিয়ো কলে একসঙ্গে কয়েকজন মিলে আড্ডা বসিয়ে দিন। সময় কীভাবে হুহু করে কেটে যাবে, বুঝতেই পারবেন না, মনটাও ভালই থাকবে।
৭. বাড়িতে ছোটরা আছে? আপনার চেয়েও বেশি খারাপ অবস্থা বোধ হয় ওদের। সময় নিয়ে ওদের বোঝান, এই পরিস্থিতি সাময়িক। প্রয়োজনে ওদের সঙ্গে লুডো, ক্যারম বা দাবার মতো ইনডোর গেমস খেলুন। ওদের গল্প পড়ার অভ্যেস গড়ে তুলুন।
৮. নিজের অপূর্ণ শখ কিছু থেকে থাকলে এই মরশুমে তা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। গান গাওয়া, ছবি আঁকা, গল্প-কবিতা লেখা, বই পড়া, সিনেমা/সিরিজ দেখা, রান্না করার মতো বহু শখ এই বেলা পূরণ করে নিতে পারেন। শেখানোর জন্য আর কেউ যদি নাও থাকে, হাতের স্মার্টফোনে ইউটিউব তো আছেই!
৯. টিভিতে সারাক্ষণ খবর দেখে মাথা খারাপ না করে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে খবরের কাগজ পড়ুন, নিউজ দেখুন। বাদবাকি সময়টা বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখতে পারেন। মোবাইলে গান, গেমস, এসবও তো রয়েছেই।
১০. সচেতন থাকব, সতর্ক থাকব কিন্তু অযথা দুশ্চিন্তা করব না। নিউ নর্ম্যালে এই কথাগুলো নিজেকে ভাল করে বোঝান। রোজ সারা পৃথিবীর কোথায় কতজন আক্রান্ত হলেন আর কতজন সেরে উঠলেন, সেই হিসেবে চোখ রাখা ভাল, কিন্তু ওটুকুই। চোখ বেয়ে সেই হিসেব আর তার পিছনেই ধাওয়া করে আসা একরাশ দুশ্চিন্তাকে মাথায় উঠে বসতে দিলেই চিত্তির!
সবাই মিলে একে অন্যকে ভাল রাখতে-রাখতে এভাবেই একদিন পেরিয়ে যাওয়া যাবে এই কঠিন সময়। পেরতে যে হবেই।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন