নিজের মতো করে এবার মিষ্টি বানান বাড়িতেই। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য অতিথি আপ্যায়নে তো বটেই মাঝে মাঝে বাড়িতেও মজা করে খাওয়ার জন্য মিষ্টি বানানো যায়। মিষ্টি বানানোর উপকরণ সংগ্রহ করা কিন্তু কঠিন কোনো কাজ নয়। আপনার হাতের কাছেই থাকে বিভিন্ন উপকরণ। সেগুলো দিয়ে কীভাবে মিষ্টি বানাতে পারেন তার রেসিপি দিয়েছেন জেবুন্নেসা বেগম।বিজ্ঞাপন
স্পঞ্জ মিষ্টি
উপকরণ
ছানা: দুধ ১ লিটার, ভিনেগার ৩ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়া সিকি চা চামচ, ময়দা ১ টেবিল চামচ।
শিরা: পানি ৫ কাপ, চিনি ১ কাপ।
প্রণালি
১ লিটার দুধ জ্বাল দিন, দুধ ফুটে উঠলে অল্প অল্প করে ভিনেগার দিন। ছানা জমে পানি আলাদা হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে পানি ঝরিয়ে সামান্য পানি দিয়ে ধুয়ে নিন, যাতে ভিনেগারের টক না থাকে। একটা পাতলা সুতি কাপড়ের ভেতর ছানা এক ঘণ্টা ঝুলিয়ে নিন, যাতে কোনো পানি না থাকে। ছানার সঙ্গে এলাচ গুঁড়া ও ময়দা হাতের তালু দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিন। গোল গোল বল তৈরি করুন। একটি পাত্রে চিনি ও পানি দিয়ে বলক আসার পর বলগুলো দিয়ে অল্প আঁচে রান্না করুন। মিষ্টি ফুলে বড় হয়ে গেলে চুলা বন্ধ করে দিন।
সন্দেশ
উপকরণ ছানা দেড় কাপ, আইসিং সুগার ২ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়া সিকি চা-চামচ, কনডেন্সড মিল্ক ৩ টেবিল চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি
ছানা, আইসিং সুগার, এলাচ গুঁড়া একসঙ্গে মেশান। একটি প্যানে অল্প আঁচে ছানা ও কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে নাড়ুন। লক্ষ রাখবেন যেন সাদা রং থাকে, বাদামি রং যেন না হয়। একটি প্লেটে ঘি ব্রাশ করে চার কোনা করে জমিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে সন্দেশ আকারে কেটে নিন।বিজ্ঞাপন
গোলাপজাম
উপকরণ গুঁড়া দুধ ১ কাপ, সুজি দেড় টেবিল চামচ, ময়দা ২ টেবিল চামচ, বেকিং সোডা আধা চা-চামচ, ঘি ২ টেবিল চামচ, ডিম ১টি।
শিরার জন্য: চিনি ১ কাপ, পানি ১ কাপ, এলাচ গুঁড়া সামান্য, লেবুর রস ১ চা-চামচ। ভাজার জন্য: তেল।
প্রণালি
গুঁড়া দুধ, সুজি, ময়দা, বেকিং সোডা দিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে ঘি ও ডিম দিয়ে ভালোভাবে হাত দিয়ে মেশান। এবার ছোট ছোট বল তৈরি করুন। প্যানে তেল গরম করে কাপ কমিয়ে বলগুলো তেলে ছেড়ে দিন, সোনালি রং না হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। চিনি, পানি দিয়ে শিরা তৈরি করে ভাজা বল এতে ঢেলে দিন। ১ ঘণ্টা শিরায় ডুবিয়ে রাখুন।
পানতোয়া
উপকরণ ছানা ২ কাপ, ময়দা ৩ টেবিল চামচ, মাওয়া ৩ টেবিল চামচ, ঘি ২ টেবিল চামচ, বেকিং সোডা কোয়ার্টার চা-চামচ, ভাজার জন্য তেল (পরিমাণমতো)
শিরার জন্য: চিনি ২ কাপ, পানি ২ কাপ।
প্রণালি
ছানার সঙ্গে ময়দা, মাওয়া, ঘি, বেকিং সোডা ভালোভাবে মেশান। এবার পানতোয়া আকারে ছোট ছোট বল তৈরি করুন। তেলে সোনালি রং করে ভেজে নিন। চিনির শিরায় অল্প আঁচে ১৫ মিনিট রাখুন। চুলা থেকে নামিয়ে আরও ৩০ মিনিট শিরায় রাখুন। শিরা থেকে তুলে মাওয়া ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
মালাই চপ
উপকরণ তরল দুধ দেড় লিটার, চিনি ১ কাপ, গুঁড়া দুধ ১ কাপ, বেকিং পাউডার আধা চা-চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ, ডিম ১টা, এলাচ ২টা।
প্রণালি
দেড় লিটার দুধ থেকে ১ লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে ১ কাপ করে রাখুন। গুঁড়া দুধ, বেকিং পাউডার, ঘি, ডিম ভালোভাবে মেখে ১০ মিনিট রেখে দিন। এবার ছোট ছোট বল করে একটু চেপে মালাই মিষ্টির মতো লম্বা করে আকার তৈরি করুন। বাকি আধা লিটার দুধে চিনি ও এলাচ দিয়ে চুলায় দিন। বলক এলে মালাই চপগুলো দিয়ে ১০ মিনিট অল্প আঁচে রান্না করুন। মিষ্টি ফুলে উঠলে ঘন দুধ বা মালাই ঢেলে দিন। আরও কয়েক মিনিট চুলায় রেখে নামিয়ে নিন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন