সম্প্রতি ভারতের গুজরাটের ভানসদা ন্যাশনাল পার্কে ক্যামেরায় ৫০ বছর পর ধরা পরে ঢোল বা বন কুকুর। এর ৫০ বছর আগে বন কুকুরটি বিলুপ্ত হয়ে যায় গুজরাট থেকে। তবে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে বিপন্নপ্রায় প্রাণিটি এখনো কিছু সংখ্যক টিকে আছে।
বাংলাদেশে কতগুলো আছে তা নিয়ে কোনো গবেষণা বা জরিপ এখনো হয়নি। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে এ বন কুকুরের দেখা পেয়েছেন। সেই সাথে ক্রিয়েটিভ ফর কনজারভেশনের অ্যালায়েন্সের ক্যামেরা ট্রাপিংয়ে বান্দরবানে দেখা মিলেছে এ কুকুরের। গবেষকদের ধারণা, সিলেট এবং চট্টগ্রামের কিছু বনে এ কুকুর এখনো টিকে আছে। তবে তা অত্যন্ত দুর্লভ।
আইইউসিএনের বাংলাদেশের কর্মকর্তা সীমান্ত দিপু জানান, বন কুকুরকে বাংলাদেশে বিপন্ন হিসেবে ঘোষণা করেছে আইইউসিএন। আইইউসিএনের হিসেবে পৃথিবীতে এ প্রাণি মাত্র ২ হাজারের মত টিকে আছে।
হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বন কুকুরের দেখা পাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের গবেষক দলটির পরিচালক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মুনতাসির আকাশ জানান, অঞ্চলভিত্তিক বন কুকুরকে জংলি কুকুর, বন কুকুর, রাম কুকুর, লাল কুকুর বা ঢোল নামেই ঢাকা হয়। এর ইংরেজি নাম এশিয়াটিক ওয়াইল্ড ডগ। বৈজ্ঞানিক নাম Cuon alpinus। নেকড়ে ও কুকুরের সাথে অনেক মিল থাকলেও চেহারা অনেকটা শেয়ালের সাথে মেলে। পা খাটো কিন্তু নাকের উপরের অংশ উঁচু, লেজ ঝোপালো, লেজের আগা কালো। মাথা এবং দেহের উপরের অংশ লালচে বাদামি রং, কানের ভেতর, মুখের নিচ গলা ও দেহের নিচের অংশ সাদা।
একসময় বাংলাদেশে এদের সচরাচর দেখা গেলেও বর্তমানে একেবারেই বিরল ও বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এ কুকুর আকারে জার্মান শেফার্ডের মত। কিন্তু হিংস্র ও ক্ষীপ্রতায় অন্য যেকোনো প্রাণি থেকে ভয়ঙ্কর। দলের সামনে বাঘ বা চিতা পড়লেও সমজে চলতে হয়। এরা ২ থেকে ২০টির মতো দলবেঁধে ঘোরে এবং শিকার ধরে। পছন্দের খাবার হরিণ, শূকর, বন ছাগল জাতীয় প্রাণি। তবে প্রয়োজনে গরু-মহিষকেও আক্রমণ করে।
নিজেদের ওজনের দশ কেজি বেশি ওজনদার প্রাণিকেও অনায়াসে মেরে ফেলতে পারে। দলের সামনে যেকোনো বড় প্রাণিও অসহায়। বড় শিকার ধরার বেলায় প্রাণিকে সামনে-পেছনে উভয় দিক থেকেই আক্রমণ করে বা তাড়িয়ে নিয়ে যায়। তাড়াতে তাড়াতে ক্লান্ত করে মারে। এরা যে প্রাণিকে টার্গেট করে, তাকে প্রথমে চোখে আক্রমণ করে না মরা পর্যন্ত ছাড়ে না। তাড়িয়ে তাড়িয়ে ক্লান্ত করে মেরে ফেলে। তাড়ানো অবস্থায়ই জীবিত প্রাণিটিকে খাবলে খেতে থাকে।
এভাবে ১০ থেকে ১৫টি কুকুর মিলে খুব কম সময়ের মধ্যেই যেকোনো বড় প্রাণিকে শেষ করে ফেলতে পারে। কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে না বরং শিস দেওয়ার মতো শব্দ করে ডাকে। ইংরেজিতে এদের তাই হুইসলিং ডগও বলা হয়। এরা সচরাচর ভালুক, চিতাবাঘ বা বাঘকে এড়িয়ে চলে; তবে আক্রান্ত হলে তাদেরও ছাড়ে না।
প্রাকৃতিক বন নষ্ট এবং গণহারে হত্যার কারণে এ প্রাণি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। মুনতাসির আকাশ জানান, এখনো এ প্রাণিকে রক্ষা করা সম্ভব।
গবেষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৫৭ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত এস.এন. মিত্রর লেখা ‘বাংলার শিকার প্রাণী’ বইতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে নেকড়ে বিপন্ন হওয়ার কারণ ছিল নির্বিচারে হত্যা। একইভাবে বন কুকুর মারতেও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এ দেশে পুরস্কার পর্যন্ত ঘোষণা করেছিল। যা প্রাণিটিকে বিলুপ্তির পথে নিয়ে গেছে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন