স্বাস্থ্যকর উপাদানের জন্য সয়াবিন বা সয়া পৃথিবীজুড়েই জনপ্রিয় খাবার। যদিও বলা হয় সয়াবিনের আদি জন্ম পূর্ব এশিয়ায়। তবে এখন দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকাতেও জন্মায়। মজার বিষয় হলো, সয়াবিন খাওয়ার ধরন কিন্তু একেক দেশে একেক ধরন। এশিয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সয়াবিন আস্ত খাওয়া হয়। কিন্তু বাইরের দেশগুলোতে সয়া অনেক বেশি প্রসেস করেই খাওয়ার প্রচলন দেখা যায়। সয়াবিনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এটি থেকে শুধু এক ধরনের পণ্য হয় না। বরং ময়দা, সয়া প্রোটিন, টফু, সয়া দুধ, সয়া সস, সয়াবিন তেলসহ আরও অনেক রকম পণ্য উৎপন্ন হয়।
সয়াবিনের রকম
সয়াবিন হয় তিন রকম, যা ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে অনেকে খেয়ে থাকেন। সবুজ রঙের সয়াবিন সেদ্ধ করে শুধু খাওয়া যায়। আবার সালাদ, তরকারি বা স্যুপে দিয়েও অনেকে খেতে পছন্দ করেন। হলুদ সয়াবিন থকে সয়া দুধ, টফু বা বেকিংয়ের জন্য ময়দা তৈরি করা হয়ে থাকে। আর একধরনের সয়াবিন হয় কালো রঙের। এটি এশিয়ায় ট্র্যাডিশনাল খাবারে ব্যবহার করা হয়।
ভেজিটারিয়ানদের প্রোটিন
নিরামিষাশীদের জন্য সয়াবিন কিন্তু প্রোটিন। তার মানে সয়া থেকে মাছ, মাংস ও ডিমের প্রোটিন পাওয়া যায়। এ ছাড়া সয়াবিনে থাকে ৯ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড, যা পেশি ও হাড়ের শক্তি বাড়ায়। আমাদের শরীর নিজ থেকেই এই উপাদানগুলো তৈরি করতে পারে না। তাই যারা আমিষাশী তারা মাছ, মাংস ও ডিম থেকে এই চাহিদা পূরণ করে থাকেন। এ ছাড়া শরীরের পেশি গঠনে যে ৯টি অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড প্রয়োজন হয় এর সব কটিই আছে সয়াবিনে।বিজ্ঞাপন
হার্টের জন্য উপকারী
সয়াবিনে থাকা মোট ফ্যাটের শুধু ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ফ্যাট স্যাচুরেটেড। অন্যদিকে গরু বা খাসির মাংসে এই মাত্রা অনেক বেশি; যা হার্টের অনেক বেশি ক্ষতি করে থাকে। তাই বলা যায় সয়াবিনের তৈরি টফু মাংসের বিভিন্ন খাবার থেকে হার্টের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
জিরো কোলেস্টেরল
অন্য যেকোনো সবজির মতো সয়াবিনও প্রাকৃতিকভাবে কোলেস্টেরলমুক্ত। নানা গবেষণায় দেখা গেছে, সয়াবিন শরীরের ৪ থেকে ৬ শতাংশ খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাই বোঝাই যাচ্ছে সয়াবিন হতে পারে একটি স্বাস্থ্যকর পছন্দ।
ফাইবারে পরিপূর্ণ
এক কাপ সয়াবিনে ১০ গ্রাম ফাইবার আছে। যেখানে সমপরিমাণ মাছ, মাংস ও ডিম ফাইবারের পরিমাণ খুবই কম। এ ছাড়া সয়াবিন আরও যে উপকার করে তা হলো অন্য খাবার থেকে যে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল পাই, তা কমাতে সাহায্য করে।
অনেক বেশি পটাশিয়াম
এক কাপ সয়াবিনে থাকে ৮৮৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। একটি মাঝারি আকারের কলার তুলনায় এই পরিমাণটি দ্বিগুণ। এ ছাড়া শরীরের সারা দিনের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ পূরণ করতে পারে এই এক কাপ সয়াবিন। ব্লাডপ্রেশার কমায় ব্লাডপ্রেশার কমাতে আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় যুক্ত করা যেতে পারে সয়াবিন; যা স্ট্রোকের আশঙ্কা ১৪ শতাংশ কমায়।
হাড়ের জন্য উপকারী
পুরুষদের থেকে নারীরা হাড়ের সমস্যায় ভোগেন অনেক বেশি। চিকিৎসকেরা হাড়ের চিকিৎসায় সয়া দিয়ে তৈরি খাবারগুলো খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এমনকি অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের শরীরের হাড় মজবুত করতে দারুণভাবে কাজ করে সয়াবিন।
ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য
শিশু বয়সে বা টিনএজার থাকতে অনেক বেশি সয়াবিন খেলে তা নারীদের ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় প্রায় অর্ধেক। এমনকি প্রাপ্তবয়স্করাও যদি প্রচুর পরিমাণে সয়াবিন খান তাদের ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কমবে। বিজ্ঞানীরা বলেন, সয়াতে থাকা ইসোফ্লাভন ও ফিটনউট্রিয়েন্ট ক্যানসার টিউমার কমাতে সাহায্য করে।
প্রোস্টেট ক্যানসার
সারা পৃথিবীতে দ্বিতীয় সাধারণ একটি ক্যানসার হলো প্রোস্টেট ক্যানসার। এশিয়ার যে দেশগুলোতে বেশি সয়াবিন খাওয়া হয় তারা এই ক্যানসারে কম ভোগেন। বিজ্ঞানীরা বলেন, সয়াবিনের উপকারী উপাদান টিউমার গ্রোথ কমাতে সাহায্য করে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন