দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় জলাবদ্ধতা নিরসনে বারাইপাড়া এলাকায় প্রশাসনের উদ্যোগে খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার এই কাজের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম। তবে ধানের খেতসহ ফসলি জমির ওপর দিয়ে খাল খনন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন জমির মালিকেরা। তাঁরা ফসল ও জমির ক্ষতিপূরণের দাবিতে বারাইপাড়া এলাকায় মানববন্ধন করেন।
খননকাজে বাধা দেওয়ার সময় স্থানীয়দের সঙ্গে জমির মালিকদের হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় আহত হারুন অর রশিদ নামের এক জমিমালিককে দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।বিজ্ঞাপন
খননকাজে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু কোনো প্রকার নোটিশ প্রদান করা হয়নি। জমি অধিগ্রহণও করা হয়নি। আর কয়েক দিন পরই ধান কাটা হবে। সেই ধানখেতসহ বেগুন, কচু ও কলাখেতের ওপর দিয়েই খননকাজ শুরু হয়েছে।
হারুন অর-রশিদ, জমির মালিক, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর
খালের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় আধা কিলোমিটার ও প্রস্থ হবে ১৫ ফুট। বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক খননকাজের উদ্বোধন করেন। পরে তিনটি এক্সকাভেটর দিয়ে খননকাজ শুরু হয়। খালের মাটি পাড়ে ফেলায় বেগুন, কচুখেত নষ্ট হয়। এ ছাড়া খালের মুখে আকাশমণিগাছের বাগানের কিছু গাছ উপড়ে ফেলা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন বছর ধরে উপজেলার দৌলতপুর ও খয়েরবাড়ি ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার বিঘা জমি জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। সেখানে খেতের ফসল নষ্ট হচ্ছে। খাল খনন করা হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার পানি প্রবাহিত হয়ে শাখা যমুনা নদীতে গিয়ে পড়বে।
তবে জমির মালিকেরা বলছেন, উপজেলার চণ্ডীপুর, জয়নগর, ঘোনাপাড়া এলাকায় খাসজমিসহ ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে গত কয়েক বছরে ৩০-৩৫টি পুকুর খনন করা হয়েছে। তিন-চারটি কালভার্টের মুখ বন্ধ করে ওই সব পুকুরের পাড় দেওয়ায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এখন ফসলি জমির ওপর দিয়ে খাল খনন করা হচ্ছে।
জমির মালিক হারুন অর-রশিদ বলেন, ‘খাল খননকাজে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু কোনো প্রকার নোটিশ প্রদান করা হয়নি। জমি অধিগ্রহণও করা হয়নি। আর কয়েক দিন পরই ধান কাটা হবে। সেই ধানখেতসহ বেগুন, কচু ও কলাখেতের ওপর দিয়েই খননকাজ শুরু হয়েছে।’বিজ্ঞাপন
পুরো বিষয়টি নিজেই তদারকি করব। খননের ফলে যেসব কৃষকের ফসল ও জমির ক্ষতি হবে, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।
মাহমুদুল আলম, জেলা প্রশাসক, দিনাজপুর
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ওই এলাকায় খাল খননের উদ্যোগ নিয়েছিল। তখন জমির মালিকেরা খাল খননের সঠিক কার্য নীতিমালা ও অনুমোদিত নকশার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে খননকাজ স্থগিত করা হয়। জেলা পাউবোর সদ্য বিদায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান বলেন, এক বছর আগে ‘ছোট নদী, খাল জলাশয় খনন’ প্রকল্পের আওতায় সেখানে খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। জমির মালিকেরা বাধা দেওয়ায় প্রকল্প স্থগিত করা হয়। সংশ্লিষ্ট এলাকায় একাধিক পুকুর আছে। পুকুরে পাড় দেওয়ায় ওই এলাকার পানিপ্রবাহে সমস্যা হচ্ছে। এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম বলেন, ‘খয়েরবাড়ি ও দৌলতপুর এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে ফসল হচ্ছে না। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন পরিদর্শন করি। তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে। পুরো বিষয়টি নিজেই তদারকি করব। খননের ফলে যেসব কৃষকের ফসল ও জমির ক্ষতি হবে, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।’
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন