দেশে মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু আগের চেয়ে বেড়ে ৭২ দশমিক ৬ বছর হয়েছে। ফলে প্রবীণদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবীণদের একটি বড় অংশ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, অস্টিওপোরসিস, আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি জটিল রোগে ভোগেন। এসব নানা রোগের জন্য বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনজনিত জটিলতাসহ (পলিফার্মাসি) প্রবীণেরা বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যায়ও ভুগছেন। সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে এসব অসুস্থতা ও প্রতিবন্ধকতা এড়ানো সম্ভব। প্রবীণদের নানা সমস্যায় চিকিৎসার পাশাপাশি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে জীবনাচরণ পরিবর্তন আর ফিজিওথেরাপি।
অস্টিওআর্থ্রাইটিস, ফ্রোজেন শোল্ডার, ফ্র্যাকচার ইত্যাদি প্রবীণদের বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ কারণে প্রবীণদের ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা বেশি। এ ছাড়া হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়া, হাড় ভাঙা, বাত, মেরুদণ্ডে ব্যথা, হাড় ক্ষয় ও শারীরিক দুর্বলতায় ভোগেন তাঁরা। এসব দুর্ঘটনা এড়াতে ব্যালেন্সিং এক্সারসাইজ, স্ট্রেংথ ট্রেনিং এক্সারসাইজ গুরুত্বপূর্ণ।
বৃদ্ধ বয়সে মানুষের মোবিলিটি বা চলনক্ষমতা কমে আসে এবং মস্তিষ্কের সঙ্গে হাত-পার সমন্বয় লোপ পায়। তালায় চাবি ঢোকানো বা নখ কাটার মতো সূক্ষ্ম কাজে সমস্যা দেখা দেয়। এ অবস্থায় সঠিক ফিজিওথেরাপি বার্ধক্যেও যথাসম্ভব চলনক্ষম করে রাখতে ও দৈনন্দিন কাজকর্মে সচল রাখতে পারে। রোজ অ্যারোবিক ব্যায়ামের পর ১৫ মিনিটের স্ট্রেচিং হতে পারে সহায়ক।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা পক্ষাঘাতের (স্ট্রোক) কারণে অনেক প্রবীণ শয্যাশায়ী হচ্ছেন। স্ট্রোকের পর অবশ হয়ে যাওয়া হাত-পায়ের শক্তি ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ফিজিওথেরাপির সাহায্য নিতে পারলে সুফল মেলে। অন্যান্য নিউরোলজিক্যাল সমস্যা, যেমন পারকিনসন্স ডিজিজ, আলঝেইমারস, ডিমেনশিয়া ইত্যাদিতেও জেরিয়াট্রিক চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপিস্টের সমন্বিত চিকিৎসা প্রয়োজন।
হৃদ্রোগী ও ফুসফুসের রোগীদের সামান্য পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে ওঠা, শ্বাসপ্রশ্বাসের দক্ষতা বাড়াতে কার্ডিয়াক এবং পালমোনারি রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি।
প্রবীণদের ভারসাম্যহীনতা রোধে ও পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে ব্যালান্স প্র্যাকটিস করা উচিত। যেমন দাঁড়ানো অবস্থায় ফরোয়ার্ড রিচিং, হিল টো ওয়াক, টো স্ট্যান্ড ইত্যাদি। বাসের বা দোকানের লাইনে দাঁড়িয়েও এ অনুশীলন করা যায়। এক পায়ের ওপর ভর দিয়ে বকের মতো শরীরের ভার নিন। এরপর আবার পা বদলে অন্য পায়ে দাঁড়ান। বাড়িতে এটাই চোখ বন্ধ করে করুন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন