আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

বিশ্ব

পোষা প্রাণী: ঘোড়ার দাম ছয় কোটি ডলার, বিশ্বের সবচেয়ে দামী কুকুর, বেড়াল, কবুতর যেগুলো

বিগ ডেইভ’ নামের একটি হাঁসকে একদিন নিলামে ওঠানো হল। বিগ ডেইভ ছিল পুরস্কারজয়ী পুরুষ মাস্কভি হাঁস – যেটি হাঁস প্রজননকারীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় ছিল। বেশ ভালো জাতের হাঁস ছিল বিগ ডেইভ।

হাঁসটির মালিক গ্রাহাম হিকস সেসময় বিবিসিকে বলেছিলেন, “তার মেজাজ খুবই চমৎকার। সে সবসময় পরিচ্ছন্ন থাকে, সবসময় নিজের খেয়াল রাখে। আর আপনি যখন তাকে প্রদর্শনীতে নিয়ে আসবেন, সে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে।”

বিগ ডেইভের এই খ্যাতির কথা স্বীকার করেন অন্যান্যরাও। বিগ ডেইভকে ‘বড় চরিত্র’ বলে মনে করেন হিকসের মত আরেকজন প্রজননকারী জ্যানিস হটন-ওয়ালেস, যিনি যুক্তরাজ্যের টার্কি ক্লাবের সেক্রেটারি। গ্রাহাম হিকসের সাথে সবসময়ই তার ভালো সম্পর্ক ছিল।

গ্রাহাম হিকস যখন প্রজননকারী হিসেবে অবসরে যাচ্ছিলেন, তখন বিগ ডেইভসহ তার অন্যান্য পাখি ও হাঁসও বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন।

সেসময় বিগ ডেইভকে কেনার জন্য বিদেশ থেকে প্রজননকারীরাও আগ্রহী হয়ে উঠছিল বলে গুজব ছড়িয়েছিল। বিগ ডেইভের জিনের জন্যই হাঁসটির চাহিদা বেড়েছিল।

এই হাঁসটি বিগ ডেইভ নয়, কিন্তু একই প্রজাতির একটি মাস্কভি হাঁস
ছবির ক্যাপশান,এই হাঁসটি বিগ ডেইভ নয়, কিন্তু একই প্রজাতির একটি মাস্কভি হাঁস

নিলাম শুরু হওয়ার পর অবশ্য বেশ চমকপ্রদ একটি ঘটনা ঘটে।

হাঁসটির মালিক গ্রাহাম হিকসকে না জানিয়ে তার বন্ধু হটন-ওয়ালেস একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে, যাদের উদ্দেশ্য ছিল ডেইভকে কিনে নেয়া।

হটন-ওয়ালেস ডেইভের দাম হাঁকা শুরু করেন ৯০০ পাউন্ড দিয়ে। ধীরে ধীরে নিলামে ডেইভের দাম চড়তে থাকে।

এক পর্যায়ে হটন-ওয়ালেস বিগ ডেইভকে কিনে নেন ১৫০০ পাউন্ড বা ২,০৭০ ডলারের বিনিময়ে – যা পৃথিবীর যে কোনো হাঁসের জন্য সবচেয়ে বেশি দাম।

কেনার পর সাথে সাথেই সিন্ডিকেট বিগ ডেইভকে তার পুরনো মালিক গ্রাহাম হিকসের কাছে হস্তান্তর করে দেয়। আসলে হটন-ওয়ালেস তার পুরনো বন্ধু হিকসকে তার অবসর উপলক্ষে উপহার দিতে চাচ্ছিলেন, তাই হিকসের প্রিয় হাঁস বিগ ডেইভকেই কিনে আবার তারই কাছে ফেরত দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

সেদিন ডেইভ পৃথিবীর সবচেয়ে দামী হাঁস হিসেবে স্বীকৃতি পায়। পাশাপাশি সে যোগ দেয় হাতে গোনা কয়েকটি প্রাণীর একটি তালিকায় যাদেরকে পৃথিবীর সবচেয়ে দামী প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিগ ডেইভ নিজেকে হাঁসদের মধ্যে সবচেয়ে দামী দাবি করতে পারে, কিন্তু এমন আরো অনেক প্রাণীই রয়েছে যেগুলোর দাম বিগ ডেইভের চেয়ে বহুগুণ বেশি।

এরপর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান প্রাণী তাহলে কোনগুলো? আর এগুলোর দাম নির্ধারণই বা হয় কী করে?

এসব প্রশ্নের উত্তর আপাত দৃষ্টিতে যতটা সহজ বলে মনে হয়, আসলে ততটাও সহজ নয়।

এই প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ শুরু করার আগে বলে নেয়া ভালো যে, জীবিত প্রাণীকে তাদের মূল্যের ভিত্তিতে র‍্যাঙ্কিংয়ে ফেলার বিষয়টি অনেকের কাছে অরুচিকর মনে হতে পারে।

খুব সাধারণ একটি কবুতরের মত দেখতে হলেও নিউ কিমের দাম ১৮ লাখ ডলার
ছবির ক্যাপশান,খুব সাধারণ একটি কবুতরের মত দেখতে হলেও নিউ কিমের দাম ১৮ লাখ ডলার।

পশুপাখির অর্থনৈতিক মূল্য কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?

পশুপাখিদের কী অর্থনৈতিক মূল্যের ভিত্তিতে পরিমাপ করা উচিৎ? জীবিত কোনো প্রাণীর দাম নির্ধারণ করাও কি আসলে উচিৎ?

জীবিত প্রাণী বা প্রকৃতির কোনো উপাদানের দাম নির্ধারণ করার ধারনাটির বিরোধিতা করেন অনেকেই। কিন্তু বাস্তবতা হল, পশুপাখি সবসময়ই মানুষের অর্থনৈতিক কাঠামোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।

পশুপাখির মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে মানুষ যেসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে থাকে, এবং প্রাণী কেনার ক্ষেত্রে যে কখনো কখনো পরিমাণ দাম দিতে রাজী থাকে – তা পর্যবেক্ষণ করলে আমাদের বিশ্ব সম্পর্কে বিচিত্র তথ্য পাওয়া যায়।

পশুপাখি কেনার ক্ষেত্রে মাথা ঘুরিয়ে দেয়া দামের নজির দেখা যায় কৃষিক্ষেত্রে, যেখানে পশুপাখি কেনা-বেচা সবসময়ই স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত ছিল।

যেমন, খামারে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, এমন একটি প্রাণী ভেড়ার কথাই ধরুন।

কিছু কিছু অনুমান অনুযায়ী বিশ্বে মোট ভেড়ার সংখ্যা প্রায় ১০০ কোটি, আর এর মধ্যে অধিকাংশই খুব একটা দামী নয়।

Horses racing
ছবির ক্যাপশান,কেন্টাকি রেসে ফুসাচি পেগাসাস (বামে)

তবে যুক্তরাজ্যের কোনো এক জায়গায় ‘ডাবল ডায়মন্ড’ নামের একটি বিশেষ ভেড়া রয়েছে, যেটির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেশি।

ভেড়াটির দামের পেছনে কারণ এর জিন। নেদারল্যান্ডসের একটি ছোট দ্বীপে পাওয়া যাওয়া টেক্সেল জাতের ভেড়ার উৎকৃষ্ট উদাহরণ এটি।

২০২০ সালের শেষদিকে একদল কৃষকের একটি সংঘ একটি নিলাম থেকে এই ভেড়াটি কেনে সাড়ে তিন লাখ গিনি – যা যুক্তরাজ্যে গবাদি পশু নিলামের জন্য ব্যবহৃত মুদ্রা – বা চার লাখ ৯০ হাজার ৫০০ ডলারে।

সেসময় ঐ কৃষকদের একজন বিবিসিকে বলেছিলেন, “একটা ভেড়ার জন্য এই মূল্য সত্যিই অস্বাভাবিক। কিন্তু আমরা এর জিনের জন্য ভেড়াটি কিনেছি।”

খামারে থাকা কুকুরের মধ্যে সবচেয়ে দামী কুকুরটির নাম কিম। কলি জাতের এই কুকুরটি ২০২১ সালের শুরুর দিকে ওয়েলসে কেনা হয় ২৮ হাজার ৪৫৫ পাউন্ড বা ৩৮ হাজার ৯০০ ডলারে।

তবে খামারের প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম গরু আর ষাঁড়ের। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তুলেছিল হলস্টেইন জাতের একটি গাভীর নিলাম।

মিসি নামের ঐ গাভীটি ২০০৯ সালে ১২ লাখ ডলারে কেনা হয়েছিল।

এর দশ বছর পর ২০১৯ সালে অ্যাঙ্গাস জাতের একটি ষাঁড়, যেটির নাম ছিল ‘এসএভি আমেরিকা ৮০১৮’, ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক এক উপদেষ্টার কাছে বিক্রি হয় ১৫.১ লাখ ডলারে। টাকায় রূপান্তর করলে অঙ্কটা দাঁড়ায় ১২ কোটি ৮৭ লাখ টাকার বেশি।

'বিগ স্প্ল্যাশ'এর মত ম্যাস্টিফ জাতীয় কুকুর চীনে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়
ছবির ক্যাপশান,’বিগ স্প্ল্যাশ’এর মত ম্যাস্টিফ জাতীয় কুকুর চীনে আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়

পোষা প্রাণী

শুধু খামার শিল্পেই যে প্রাণী কেনাবেচার ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক উচ্চ দামের নজির দেখা যায়, তা নয়। কিছু মানুষ পোষা প্রাণীর জন্যও বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ করে থাকে।

পোষা প্রাণীর মধ্যে কুকুরের দামের হিসেবে সবচেয়ে বেশি দাম ছিল একটি তিব্বতি ম্যাস্টিফের, যেটির নাম বিগ স্প্ল্যাশ।

এক কোটি চাইনিজ ইউয়ান বা ১৫.৫ লাখ ডলারে এই কুকুরটি কেনেন চীনা একজন ব্যবসায়ী। গত কিছু বছর ধরে চীনে ম্যাস্টিফ জাতের কুকুরকে অনেকটা আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কুকুরের পর এবার বিড়ালের দামের দিকে নজর দেয়া যাক। ঘরে পালন করা বিড়ালের মধ্যে অন্যতম মূল্যবান ধারণা করা হয় সাভানাহ জাতের বিড়ালকে – এই জাতের একটি বিড়ালছানার দাম হতে পারে ২০,০০০ ডলার বা প্রায় ১৭ লাখ টাকা।

একটি বিড়ালের সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড কী, তা গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নেই।

কুকুরের মত বিড়ালের দাম সরাসরি মিলিয়ন ডলার না ছাড়ালেও অন্য পদ্ধতিতে গৃহপালিত বিড়ালের মূল্য যাচাই করার নজির আছে।

বিশ্বের সব জায়ান্ট পান্ডার মালিকানা চীনের
ছবির ক্যাপশান,বিশ্বের সব জায়ান্ট পান্ডার মালিকানা চীনের

গিনেজের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী বিড়াল ছিল ব্ল্যাকি।

ব্ল্যাকির মালিক ছিলেন একজন অ্যান্টিক পণ্যের ডিলার। তিনি মারা যাবার সময় তার পরিবারের সদস্যদের উত্তরাধিকার সূত্রে কিছু না দিয়ে ব্ল্যাকিকে দিয়ে যাওয়ায় ১৯৮৮ সালে প্রায় ৯৭ লাখ ডলার (৮০ কোটি টাকা) সম্পত্তির মালিক হয় বিড়ালটি।

তবে এই উদাহরণের সাথে আরেকটি উদাহরণ আনতে হয় – টোবি নামের একটি কুকুর একসময় এর চেয়েও অনেক বেশি সম্পদের মালিক হয়েছিল।

১৯৩১ সালে নিউইয়র্কের রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সাথে জড়িত ধনী পরিবারের শেষ উত্তরসূরি এলা ওয়েনডেল মারা যাওয়ার পর টোবি দেড় কোটি ডলারের সম্পদের মালিকানা লাভ করেছিল।

তবে আপনি যদি আয় করা সম্পদের হিসেব করেন, তাহলে সবচেয়ে মূ্ল্যবান পোষা প্রাণীর তালিকায় ‘গ্রাম্পি ক্যাট’ টারডার সস সবার চেয়ে এগিয়ে থাকবে।

কিছু অনুমান অনুযায়ী, মৃত্যুর আগে তার বাজার মূল্য ছিল আনুমানিক ১০০ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ডলার।

'ডাবল ডায়মন্ড' নিলামে প্রায় ৫ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল
ছবির ক্যাপশান,’ডাবল ডায়মন্ড’ নিলামে প্রায় ৫ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল

প্রতিযোগিতার প্রাণী

গিনেজের রেকর্ড অনুযায়ী, যেসব প্রাণী কেনার জন্য সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করা হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই এমন প্রাণী যারা প্রতিযোগিতায় রেস করতে পারে।

ওজনের হিসেবে এই বিভাগে সবচেয়ে দামী প্রাণী হবে একটি পাখি।

২০২০ সালের শেষদিকে চীনের এক ক্রেতা ‘নিউ কিম’ নামের এই কবুতরটি কিনে নেন ১৬ লাখ ইউরো দাম দিয়ে।

তবে স্বাভাবিকভাবেই রেসের ঘোড়া এই ধরণের প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দামী হিসেবে বিবেচিত হয়।

গিনেজের হিসেব অনুযায়ী, ১৯৮৫ সালে এক কোটি ৩১ লাখ ডলার দিয়ে কেনা প্রায় দুই বছর বয়সী ঘোড়া ‘সিয়াটল ড্যান্সার’ বিশ্বের সবচেয়ে দামী রেসের ঘোড়া।

এরপর এর চেয়ে বেশি দামে আরো কিছু ঘোড়া বিক্রি হয়েছে। যেমন ২০০০ সালে ফুসাইচি পেগাসাস নামের একটি ঘোড়া বিক্রি হয় ছয় কোটি ৪০ লাখ ডলার দামে।

বন্যপ্রাণীর দাম কীভাবে ঠিক হয়?

পোষা প্রাণী বা রেস করা প্রাণীর মত বন্যপ্রাণীর দামও কি একই পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা হয়? নাকি বন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে হিসেবটা অন্যরকম?

বন্যপ্রাণীর দাম নির্ণয় করার একটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যেটি পোষা প্রাণী বা গবাদি পশুর দাম যেভাবে নির্ণয় করা হয়, তার চেয়ে ভিন্নভাবে নির্ধারণ করা হয়।

গত কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা পরিবেশের বাস্তুসংস্থানের সব উপাদানের মূল্য নির্ধারণের চেষ্টা করছেন প্রত্যেকটি উপাদান মানবজাতিকে কী ‘সেবা’ দেয়, তার ভিত্তিতে। এই ‘সেবা’র মধ্যে খাদ্য থেকে শুরু করে কার্বন গ্রহণের মাত্রা, পরাগায়ন অথবা পর্যটনের মত বিষয়ও বিবেচনা করা হয়।

পর্যটনের হিসেবে অর্থনৈতিকভাবে হাঙরের মূল্য অনেক
ছবির ক্যাপশান,পর্যটনের হিসেবে অর্থনৈতিকভাবে হাঙরের মূল্য অনেক

তবে অনেক বিজ্ঞানীই বাস্তুসংস্থান ও পরিবেশের উপাদানকে মূল্যায়নের এই ধারণার বিপক্ষে। তারা মনে করেন, অর্থনৈতিক মূল্য দিয়ে মেপে এই ধরণের বিষয়গুলোর যাচাই করা উচিৎ নয়।

২০১৫ সালে বিবিসি আর্থ পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী এবং উপাদানের মূল্যায়নের চেষ্টা করে একটি সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেখানে পরিবেশের একেকটি উপাদান বা প্রাণীর মোট মূল্যের একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।

যেমন, পর্যটন শিল্পের জন্য হাঙ্গরের অনুমিত মূল্য ছিল প্রায় ৯৫ কোটি ডলার আর কানাডার ‘পোলার বেয়ার’ বা শ্বেত ভালুকের মূল্য ধরা হয়েছিল ৬৩০ কোটি ডলার।

এই অনুমান থেকে একটি প্রাণীর দামের আনুমানিক মূল্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব। যেমন, কানাডায় সেসময় শ্বেত ভালুকের সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার, কাজেই প্রতিটি ভালুকের দাম সেসময় ধরা হয়েছিল আনুমানিক চার লাখ ডলার।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের রালফ চামি নামের এক কর্মকর্তা তার সহকর্মীদের নিয়ে ‘একক প্রাণী’র দাম আরো সঠিকভাবে নির্ণয়ের চেষ্টা চালিয়েছেন।

তাদের লক্ষ্য ছিল আফ্রিকার জঙ্গলের হাতি এবং দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলের বড় তিমির মূল্য নির্ধারণ করা।

চামি ও তার সহকর্মীদের হিসেব অনুযায়ী একেকটি হাতির মূল্য আসে ১৮ লাখ ডলার।

আফ্রিকান হাতি
ছবির ক্যাপশান,আফ্রিকান হাতি

অন্যদিকে প্রজাতিভেদে তিমির মূল্য ছিল এক লাখ ৬৫ হাজার ডলার থেকে ৪০ লাখ ডলার পর্যন্ত।

আরেকটি প্রাণীকে, যা গিনেজের তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে মূল্যবান চিড়িয়াখানার প্রাণী এবং যেটি বন্য প্রাণীদের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে মূল্যবান হতে পারে, অত্যন্ত মূল্যবান হিসেবে বিবেচনা করা হয় – সেটি হল জায়ান্ট পান্ডা।

এর কারণ বিশ্বের সব পান্ডার মালিকানা চীনের হাতে এবং বিশ্বের অনেক চিড়িয়াখানাকে – বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের চিড়িয়াখানাগুলো – পান্ডা রাখার খরচ বাবদ চীনকে প্রতি বছর মোটা অঙ্কের অর্থ দিতে হয়; যা বছরে ১০ লাখ ডলার পর্যন্তও হয়ে থাকে।

আর পান্ডার বাচ্চা হলে চীনকে এককালীন ছয় লাখ ডলার দিতে হয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের।

সুতরাং সবচেয়ে মূল্যবান প্রাণীর তালিকায় পান্ডা, হাতি, তিমি বা ঘোড়ার মত প্রাণী যেমন রয়েছে, তেমনি বিগ ডেইভের মত হাঁসও রয়েছে; যেটি প্রাকৃতিক কারণে মূল্যবান না হলেও সবচেয়ে বেশি দামের প্রাণীর তালিকায় ঠিকই জায়গা করে নিয়েছে।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

ফসল

লাভজনক সবজি চাষ পদ্ধতি

সবজি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। কৃষি বিজ্ঞানের ভাষায় সবজিকে উদ্যানতাত্বিক ফসল (Horticultural crops) বলা হয়ে থাকে। পুষ্টিমানের দিক থেকে সবজি ফসল যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি বাণিজ্যিকভাবেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। সেজন্য সবজি চাষের আধুনিক কলাকৌশল জানা জরুরি।

আর আধুনিক কলাকৌশল বলতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষাবাদকেই বোঝানো হয়ে থাকে। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তবে সারাদেশে যেমন সব ধরনের সবজি উৎপাদিত হয়না ঠিক তেমনি সকল সবজিই আবার সারাবছর উৎপাদিত হয়না। একেক অঞ্চলে একেক ধরনের শাকসবজি উৎপাদিত হয়ে থাকে। আবার বছরের বিশেষ বিশেষ সময়ে বিশেষ বিশেষ সবজির জাত উৎপাদন করা যায়।

সারাদেশে সারাবছরই যেসকল সবজি সহজে উৎপাদিত হয়ে থাকে তাদের কিছু শাকসবজির কথা এখানে তুলে ধরছি। লালশাক, ডাটাশাক, পুইশাক, কলমিশাক, মিষ্টিআলু শাক, ঢেড়শ, গাজর, বরবটি, টমেটো, লাউ ও লাউশাক, পাটশাক, শশা, কাঁচকলা, বেগুন, পেপে, করলা, কচুশাক, কচুর লতি, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা ইত্যাদি পরিচিত শাকসবজি। তাছাড়া অপরিচিত বিশেষ কিছু সবজি বিশেষ বিশেষ এলাকার বিশেষত্ব হিসেবে উৎপাদিত হয়ে থাকে। উপরোক্ত ফসলগুলোর মধ্যে কিছু শুধু শাক আর বাকীগুলো শাক এবং সবজি উভয় হিসেবেই প্রচলিত রয়েছে।

কৃষিতাত্বিকভাবে রবি (শীতকাল) ও খরিপ (গ্রীষ্মকাল)- এ দুধরনের মৌসুম রয়েছে। খরিপের আবার দুটি ভাগ, যথা- খরিপ-১ (আগাম গ্রীষ্ম) এবং খরিপ-২ (বর্ষাকাল)। তবে শীতকালীন শাকসবজির মধ্যে বাহারি ও রকমারি বৈচিত্র একটু বেশি। শুধুমাত্র শীতকালে উৎপাদিত হয় এমন ফসলগুলোর মধ্যে রয়েছে- টমেটো, শীতলাউ, ফুলকপি, বাধাকপি, গাজর, সীম, মূলা, ব্রকলি, বাটিশাক, ওলকপি, শালগম, বেগুন, গোল আলু ইত্যাদিই প্রধান। অপরদিকে শুধুমাত্র গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে উৎপাদিত হয় এমন ফসলের মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন ধরনের কচু, ওলকচু, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, কাকরোল, পটোল, করলা, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া ইত্যাদিই প্রধান।

সবজি ফসল উৎপাদন অন্যান্য ফসলের মতো নয়। সবজি ফসল উৎপাদনের জন্য বিশেষ ধরনের যত্নের প্রয়োজন হয়। আর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আবাদ করতে গেলে অল্প পরিমাণ জায়গায় অধিক পরিমাণ ফসল ফলিয়ে লাভবান হওয়া সম্ভব। সবজি আবাদেও জন্য বাড়ির আঙ্গিনায় অথবা অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গা বেছে নিতে হবে। সেখানে ভালোভাবে চাষ-মই দিয়ে জমির মাটি জো অবস্থায় ঝুরঝুরে করে সেখানে এক মিটার প্রশস্ত এবং প্রয়োজনমত জমির আকার-আকৃতির সাথে সঙ্গতি রেখে লম্বা বেড তৈরী করে নিতে হবে। প্রতিটি বেডের মাঝখানে ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি পরিমাণ গর্ত করে নালা সৃষ্টি করতে হবে। অর্থাৎ নালার মাটি তুলেই দুইপাশে বেড প্রয়োজনমত উঁচু করতে হবে।

এভাবে বেড তৈরীর একটি বিশেষত্ব হলো শাকসবজি চাষাবাদ অন্য সাধারণ ফসল আবাদের চেয়ে একটু ভিন্ন। এর জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি সতর্কতা ও যত্নের। শাকসবজির চাষাবাদে যেমন শুষ্ক মৌসুমে সেচের চাহিদা থাকে অপরদিকে বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। সেজন্যই বেড তৈরী করে মাটি কিছুটা উঁচু করা হয় সেখানে আবার নালা তৈরী করে নিষ্কাষনের ব্যবস্থাও রাখা হয়। কিন্তু বেড এবং নালা তৈরী না করলে সেটা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আবাদ হয়না। সেঠা হয় সাধারণ শাকসবজি চাষ। এতে ফলন অনেক কমে যায়।

পেপে, কাঁচকলা- এ জাতীয় সবজি বসতবাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তা বা পুকুরের ধারে সহজেই আবাদ করা যায়। লালশাক, ডাটা শাক, পাটশাক, মূলাশাক, গাজর, শালগম ইত্যাদি সবজি তৈরীকৃত বেডে ছিটিয়ে বীজ বুনে দিলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। তাছাড়া টমেটো, বেগুন, ফুলকপি, বাধাকপি, ঢেড়শ, কচু, ওলকচু ইত্যাদি সবজি এক মিটারের বেডে দুই সারি করে নির্ধারিত দূরত্বে চারা লাগিয়ে আবাদ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। সেজন্য এসব সবজি উৎপাদনের জন্য আলাদাভাবে নার্সারিতে চারা তৈরী করে নিতে হয়। অপরদিকে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, শশা, চাল কুমড়া, পটোল, কাকরোল, করলা, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, সীম, বরবটি ইত্যাদি লতাজাতীয় সবজি চাষের জন্য উক্ত বেডে দুইটি সারি করে সেখানে জাংলা দিয়ে দিতে হয়। সাধারণত বেডের দুইপাশে খুটি দিয়ে পরে তা ইংরেজি অক্ষর ‘এক্স’ আকৃতিতে বা ‘ভি’ আকৃতিতে বাঁকিয়ে বেঁধে দিতে হয়।

বেড ছাড়াও লতাজাতীয় এসব সবজি অতি সহজেই ক্ষেতের আইলে, রাস্তার ধারে, পুকুরের পাড়ে বিশেষ ব্যবস্থায় আবাদ করে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তবে অন্যান্য যেকোন ফসলের তুলনায় এসব সবজি ফসলের একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। বিনা আবাদেই এসব সবজি চাষ করা যেতে পারে। সেজন্য বন্যা পরবর্তীতে পুনর্বাসনের সময় বিনাচাষে এসব আবাদের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ জৈবভাবেই এসব সবজি ফসল উৎপাদন সম্ভব। আবাদের পূর্বে সামান্য পরিমাণ প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার ব্যবহার করে বাকীটা মেটাতে হবে বাড়িতে উৎপাদিত জৈব সারের মাধ্যমে। তারপর আন্তপরিচর্যা এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতেও জৈব পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। তখন এসব উৎপাদিত ফসল সকলের জন্য নিরাপদ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

কাজেই এভাবেই সারাবছর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বষ্পপরিসরে শাকসবজি উৎপাদন করে নিজের চাহিদা মিটিয়ে তা বাণিজ্যিকভাবেও লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমাদের শারীরিক পুষ্টি চাহিদার একটি বিরাট অংশ শাকসবজি থেকে আসা দরকার। দৈনিক একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের গড়ে কমপক্ষে আড়াইশ গ্রাম শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। আর সেটা নিবিড়ভাবে এবং নিরাপদভাবে খেতে হলে নিজের উৎপাদিত শাকসবজি খাওয়াই সবচেয়ে উত্তম। কাজেই আমাদের সারাবছর অলস সময়টাকে কাজে লাগিয়ে আসুন নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় সবজির বাগান গড়ে তুলি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

বাংলাদেশ

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

একজন টেলিভিশন তারকা, কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৫৪ সালের এদিনে জন্মগ্রহণ করেন চাঁদপুরে (সার্টিফিকেট অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ২৮শে জুন ১৯৫৬)। শাইখ সিরাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ভূগোলে। ছাত্রজীবনেই সম্পৃক্ত হন বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার ও সংবাদপত্রের সঙ্গে।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

শাইখ সিরাজ ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড, চ্যানেল আই-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বার্তা প্রধান। টানা সাড়ে চার দশক ধরে তিনি গণমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে দেশের কৃষি ও কৃষক তথা উৎপাদন-অর্থনৈতিক খাতে অপরিসীম ভূমিকা রেখে চলেছেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে সকল শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে বিপুল গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেন তিনি। পরে তার নিজস্ব পরিচালনাধীন টেলিভিশন ‘চ্যানেল আই’তে শুরু করেন কৃষি কার্যক্রম হৃদয়ে মাটি ও মানুষ। উন্নয়ন সাংবাদিকতার জন্য তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দু’টি রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৮) ও একুশে পদক (১৯৯৫) লাভ করেন।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৬৮তম জন্মদিন আজ
কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

টেলিভিশনসহ গণমাধ্যমের সঙ্গে প্রায় চার দশকের একনিষ্ঠ পথচলার মধ্য দিয়ে শাইখ সিরাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন উন্নয়ন সাংবাদিকতার এক অগ্রপথিক হিসাবে। গণমাধ্যমে তার উদ্বুদ্ধকরণ প্রচারণায় আমূল পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশের কৃষিতে। বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সূচিত হয়েছে বৈপ্লবিক সাফল্য।

গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। একইসঙ্গে শহর-নগরের মানুষকে করেছেন কৃষিমুখি। ফলে দেশের অর্থনীতিতে কৃষির বহুমুখি অবদান সূচিত হয়েছে।

‘মাটি ও মানুষ’

বাংলাদেশের কৃষিতে গত কয়েক দশকে যে বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে, শাইখ সিরাজকে বর্ণনা করা হয় সেই পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম প্রধান এক চরিত্র হিসেবে।

বাংলাদেশে যখন বিজ্ঞানীরা একের পর এক নতুন উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন করে চলেছেন, কৃষিতে নতুন ধ্যান ধারণা এবং কৌশল চালুর জন্য সরকারের নানা পর্যায় থেকে চেষ্টা চলছে, সেগুলো সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে বিরাট ভূমিকা রাখে তার কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান, ‘মাটি ও মানুষ।’

“শুরুতে এই অনুষ্ঠানটা হতো আমার দেশ নামে। তখন এটি ৫০ মিনিটের পাক্ষিক অনুষ্ঠান। পরে এটিকেই ‘মাটি ও মানুষ’ নামে সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানে রূপান্তরিত করি। আমার মনে হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের চেয়ে বেশি দরকার শিক্ষামূলক মোটিভেশনাল অনুষ্ঠান। কৃষকদের যদি নতুন বীজ, নতুন প্রযুক্তি, নতুন কৌশল, এসব ঠিকমত বোঝানো যায়, তাহলে কৃষিতে বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসা সম্ভব।”

গত চার দশক ধরে শাইখ সিরাজ হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের কৃষকদের কাছে কৃষি বিষয়ক তথ্যের প্রধান উৎস। উনিশ’শ আশির দশকে, যখনো টেলিভিশন ঘরে ঘরে পৌঁছায়নি, তখনো গ্রামের হাটেবাজারে, কমিউনিটি সেন্টারে প্রতি শনিবার সন্ধ্যায় ‘মাটি ও মানুষ’ দেখার জন্য ভিড় করতো মানুষ।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৬৮তম জন্মদিন আজ
কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

তবে কৃষকদের নতুন ধরণের কৃষিতে উৎসাহিত করার কাজটা সহজ ছিল না।

“আজকের কৃষক এবং তিরিশ বছর আগের কৃষকের মধ্যে তফাৎ আকাশ আর পাতাল। তখন কৃষকের কাছে একজন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা যে কথা বলতেন, একজন টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে আমি যেকথা বলতাম, সেটা তারা মানতে চাইতো না। তারা ভাবতো, আমরা যেধরণের কৃষির কথা বলছি, যদি সেটাতে ভালো ফসল না হয়? এ কারণে সে সহজে মোটিভেট হতে চাইতো না। সহজে নতুন প্রযুক্তি নিতে চাইতো না।”

“আমি যখন আশির দশকে উচ্চফলনশীল নতুন জাতের ধানের কথা বলছি, গমের কথা বলছি, তখন পরিস্কার তারা আমাকে বলতো এই রাবার ভাত খাবো না। তখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত নতুন জাতের ধানের মান তেমন ভালো ছিল না। ভাতটা ছিল রাবারের মতো, ভাতের দানা উপর থেকে থালার উপর ফেললে সেটি রাবারের মতো ড্রপ করতো।”

কিন্তু বিজ্ঞানীরা যখন তাদের গবেষণায় নতুন নতুন সাফল্য পাচ্ছিলেন, আর সেই সঙ্গে শাইখ সিরাজও তার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষকদের মন জয় করার জন্য নতুন কৌশল নিচ্ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অশোকা ফেলো শাইখ সিরাজ খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র বিমোচন বিষয়ে সাংবাদিকতায় অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসাবে তিনি ২০০৯ সালে অর্জন করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার এ এইচ বুর্মা এ্যাওয়ার্ড। এ ছাড়া তিনি পেয়েছেন এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার গুসি পিস প্রাইজ, বৃটেনের বিসিএ গোল্ডেন জুবিলি অনার এ্যাওয়ার্ডস। বৃটিশ হাউজ অব কমন্স তাকে প্রদান করেছে বিশেষ সম্মাননা, বৃটিশ-বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সংগঠন তাকে দিয়েছে গ্রীন এ্যাওয়ার্ড। এ ছাড়া পেয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির স্বর্ণপদক, ডা. ইব্রাহিম মেমোরিয়াল স্বর্ণপদক, রণদা প্রসাদ সাহা স্বর্ণপদকসহ অর্ধশত দেশি-বিদেশি পুরস্কার ও সম্মাননা।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ
কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

চ্যানেল আই ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখে থাকেন। তিনি এদেশে কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে নিরস বিষয় হিসাবে উপেক্ষিত কৃষিতে জাতীয় সংবাদের প্রধান খবরের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শাইখ সিরাজের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- মৎস্য ম্যানুয়েল, মাটি ও মানুষের চাষবাস, ফার্মার্স ফাইল, মাটির কাছে মানুষের কাছে, বাংলাদেশের কৃষি: প্রেক্ষাপট ২০০৮, কৃষি ও গণমাধ্যম, কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট (সম্পাদিত), আমার স্বপ্নের কৃষি, কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট (২০১১), সমকালীন কৃষি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (২০১১), কৃষি ও উন্নয়ন চিন্তা (২০১৩) ইত্যাদি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট

সারের সংকট
সারের সংকট
সারের সংকট

চলতি বোরো মৌসুমে সার কিনতে কৃষকদের সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে বেশি দিতে হয়েছে। আর সরকারকেও সার বাবদ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বাজেটে বরাদ্দের তিন গুণের বেশি—প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ এখন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার আমদানি নিয়ে বিপাকে পড়েছে।

ধান, আলু ও সবজি চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমওপি সারের ৬০ শতাংশ আনা হতো রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে। ওই দুই দেশ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ায় এখন বাংলাদেশকে এমওপি কিনতে হচ্ছে কানাডা থেকে। বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়া ও আমদানিতে অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশে সারের সংকট হতে পারে। ভর্তুকির চাপ সামলাতে বাংলাদেশকে সব ধরনের সারের খুচরা মূল্য বাড়াতে হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‘বাংলাদেশে সার সরবরাহ ও ব্যবহারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এমওপি সারের ২০ শতাংশ সরবরাহ কমানো হলে সামনের বোরো মৌসুমে ধান, গম ও রবি মৌসুমের অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমতে পারে। এতে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এ এম এম শওকত আলী, সাবেক কৃষিসচিব

তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, দেশে চলতি বোরো মৌসুমে নতুন করে আর সারের দরকার হবে না। সামনে আলুর মৌসুমে ইউরিয়া, এমওপিসহ অন্যান্য সারের চাহিদা বাড়বে। ওই সময়ের জন্য সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যের সার সরবরাহকারী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কানাডা থেকে মোট আট লাখ টন এমওপি সার আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। এ ব্যাপারে ওই দেশের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা স্মারক হয়েছে। ফলে এই সার নিয়ে সরকারের কোনো দুশ্চিন্তা নেই। তবে সার বাবদ সরকারের বিপুল পরিমাণে ভর্তুকি বাড়ছে। এই চাপ নিয়েও সরকার ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ওই ভর্তুকি দিয়ে যাবে।’

কমানো হয়েছে চাহিদা

বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে ৬৯ লাখ টন রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি—এই চার ধরনের সার ব্যবহার হয় ৫৭ লাখ টন। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ওই চার ধরনের সারের চাহিদা কমিয়ে ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টনে নামিয়ে আনা হয়েছে।

দেশে প্রয়োজনীয় সারের ৮০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে এমওপি সারের বড় অংশ আসে রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে।

প্রসঙ্গত, ওই চারটি প্রধান সার কৃষকদের কাছে বিক্রির ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরে সরকার প্রাথমিকভাবে সারে ভর্তুকি বাবদ ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে গত ছয় মাসে সারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বেশির ভাগ সারের দাম তিন থেকে চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে ভর্তুকির পরিমাণ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা করতে হয়। কিন্তু অর্থবছরের শেষের দিকে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে হিসাব করে দেখা হয়েছে, ভর্তুকির পরিমাণ এবার বেড়ে কমপক্ষে ৩০ হাজার কোটি টাকা গিয়ে দাঁড়াবে।

জিপসাম, জিংক সালফেট ও অ্যামোনিয়াম সালফেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সারে সরকার কোনো ভর্তুকি দেয় না। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কিনে ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছে তা বিক্রি করে থাকেন। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষককেও বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।

সাবেক কৃষিসচিব এ এম এম শওকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর সরকারের অন্যান্য খাতের ভর্তুকি কমিয়ে প্রয়োজনে সারে ভর্তুকি বাড়াতে হবে, যাতে সারের দাম কম থাকে। কারণ, কৃষকের হাতে এখন টাকা কম। বিশ্ববাজার থেকেও খাদ্য আমদানি করা সামনের দিনে আরও কঠিন হতে পারে। ফলে দেশের উৎপাদন ঠিক রাখতে সারের দাম ও জোগান ঠিক রাখা উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পতিত জমিতে চিনাবাদাম চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ। 

সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।

ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।  

মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ  ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।  সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।  

এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।  

নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।  
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।  

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com