ভারতের একদল বিজ্ঞানী করোনাভাইরাস শনাক্ত করার এমন এক পরীক্ষা উদ্ভাবন করেছেন যা খুবই সস্তা এবং যার ফল জানা যাবে খুব দ্রুত। পেপার বা কাগজভিত্তিক এই পরীক্ষা অনেকটা গর্ভধারণ বা প্রেগন্যান্সি টেস্টের মত। কীভাবে এই পরীক্ষা কাজ করে তা জানার চেষ্টা করেছেন বিবিসির সৌতিক বিশ্বাস এবং ক্রুতিকা পাথি:
ভারতীয় বিজ্ঞানীরা তাদের এই নতুন উদ্ভাবিত পরীক্ষার নাম দিয়েছেন বিখ্যাত এক গোয়েন্দা কাহিনির কাল্পনিক চরিত্র ‘ফেলুদা’র নামে। এই পরীক্ষাটি উদ্ভাবন করা হয়েছে জিন-এডিটিং প্রযুক্তি ‘ক্রিসপার’ এর ওপর ভিত্তি করে।
ভারতীয় বিজ্ঞানীরা আশা করছেন ‘ফেলুদা’ নামের এই কিট বানাতে খরচ পড়বে মাত্র পাঁচশো রুপি (সাত ডলারের কম)। আর এই পরীক্ষার ফল জানা যাবে এক ঘন্টার মধ্যে।
‘ফেলুদা’ উৎপাদন করবে ভারতের একটি শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী টাটা। এটি হতে পারে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার জন্য বাজারে আসা প্রথম কোন কাগজ-ভিত্তিক টেস্ট।
“এটি খুব সহজ, নির্ভরযোগ্য, ব্যাপক-ভিত্তিতে উৎপাদনযোগ্য এবং কম খরচের একটি টেস্ট”, বলছেন ভারত সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা অধ্যাপক কে বিজয় রাঘবন।
‘ফেলুদা কিট’ উদ্ভাবনের কাজটি করা হয়েছে দিল্লির সিএসআইআর-ইনস্টিটিউট অব জেনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টেগ্রেটিভ বায়োলজিতে। এর পাশাপাশি কাজ চলেছে কিছু বেসরকারি গবেষণাগারেও।
প্রায় দুহাজার রোগীর ওপর এই কিট দিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে ছিলেন যাদের ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়েছে।
গবেষকরা দেখেছেন এই নতুন টেস্ট কিটের সংবেদনশীলতা ৯৬ শতাংশ এবং এটির নির্দিষ্টতা ৯৮ শতাংশ। কোন টেস্ট বা পরীক্ষা কতটা নির্ভুল তা মূলত এই দুটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়।
যে টেস্ট বা পরীক্ষার সংবেদনশীলতা খুব উচ্চ, সেটি যারই এই রোগ আছে তাদের সবাইকে শনাক্ত করতে পারবে। আর যে টেস্ট বা পরীক্ষার নির্দিষ্টতা অনেক বেশি, সেটি যাদের এই রোগ নেই, তাদের বেলায় সেটা বলে দিতে পারবে।
সংবেদনশীলতা এটা নিশ্চিত করবে যে খুব বেশি ”ফলস নেগেটিভ” বা ভুল নেগেটিভ রেজাল্ট যেন না আসে। আর দ্বিতীয় যে বিষয়টি, নির্দিষ্টতা, সেটি নিশ্চিত করবে যেন খুব বেশি ”ফলস পজিটিভ” বা ভুল পজিটিভ ফল না আসে।
ফেলুদা টেস্ট কিট এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, তাই ভারতের ঔষধ বিষয়ক নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এটি বাণিজ্যিকভিত্তিতে উৎপাদনের জন্য অনুমোদন দিয়েছে।
ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ এখন ৬০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বে সংক্রমণ সংখ্যার দিক থেকে ভারত এখন দ্বিতীয় স্থানে। এ পর্যন্ত ভারতে এক লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে মারা গেছেন।
শুরুতে ভারতে কোভিড-১৯ পরীক্ষার গতি ছিল বেশ ধীর। তবে এখন দেশজুড়ে বারোশোর বেশি ল্যাবরেটরিতে প্রতিদিন দশ লাখ নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে দুধরণের পরীক্ষা ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রথমটি হচ্ছে পিসিআর (পলিমারেস চেইন রিয়েকশন) সোয়াব টেস্ট। যেটি দীর্ঘকালের পরীক্ষিত এবং মানসম্পন্ন টেস্ট বলে স্বীকৃত। গবেষণাগারে এই পরীক্ষায় রাসায়নিক ব্যবহার করে ভাইরাসের জেনেটিক উপাদান কয়েক গুণ বাড়ানো হয়।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে ‘অ্যান্টিজেন’ টেস্ট। এটি খুব দ্রুত করা যায়। কোন নমুনায় ভাইরাসের অংশ চিহ্ণিত করার মাধ্যমে রোগ শনাক্ত করা হয় অ্যান্টিজেন টেস্টে।
পিসিআর টেস্ট সাধারণত খুবই নির্ভরযোগ্য। ভারতে এই পরীক্ষায় খরচ পড়ে ২ হাজার ৪শ রুপি। এতে ”ফলস পজিটিভ” এবং ”ফলস নেগেটিভ” ফল কমই আসে।
অন্যদিকে অ্যান্টিজেন টেস্ট তুলনামূলকভাবে সস্তা। পজিটিভ সংক্রমণ ধরার ক্ষেত্রে এটি অনেক বেশি সুচারু। কিন্তু এই পরীক্ষায় অনেক বেশি ”ফলস নেগেটিভ” ফল আসে পিসিআর টেস্টের তুলনায়।
গ্লোবাল হেলথ এন্ড হেলথ পলিসির একজন গবেষক ডঃ অনন্ত ভান বলেন, ভারতে ব্যাপকহারে টেস্ট শুরু হলেও এর মানে এই নয় যে টেস্টিং কিট সহজলভ্য।
“এখনো টেস্টের জন্য অনেক দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় এবং টেস্টিং কিট পাওয়া যায় না। অনেক বেশি অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে । এর ফলে ‘ফলস নেগেটিভ’ রেজাল্ট বেশি আসছে, এটা একটা সমস্যা।”
তিনি বিশ্বাস করেন, ‘ফেলুদা টেস্ট’ এই অ্যান্টিজেন টেস্টের জায়গা নিতে পারে। কারণ এটি দামে অনেক সস্তা এবং অনেক বেশি নির্ভুল।
“এই নতুন পরীক্ষাটি পিসিআর টেস্টের মতো নির্ভরযোগ্য, এটি অনেক দ্রুত করা যায় এবং ছোট ল্যাবরেটরিতে করা যায়। এটির জন্য অত্যাধুনিক মেশিনের দরকার নেই”, বলছেন আইজিআইবির পরিচালক ডঃ অনুরাগ আগরওয়াল।
‘ফেলুদা টেস্টের’ জন্য নমুনা সংগ্রহের কাজটি করতে হবে পিসিআর টেস্টের মতো করেই। নাসারন্ধ্রে একটি সোয়াব ঢুকিয়ে সেখান থেকে করোনাভাইরাসের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ভারতে এখনো স্যালাইভা, অর্থাৎ মুখের লালা থেকে নমুনা নিয়ে কোভিড-১৯ পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হয়নি।
পিসিআর টেস্টের মতো একই নিয়মে নাকের ভেতর থেকে সংগ্রহ করা এই নমুনা অনুমোদিত ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। সেখানে এই নমুনাকে কয়েকটি ‘চক্রের’ ভেতর দিয়ে যেতে হয় যাতে করে সেখান থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ভাইরাস সংগ্রহ করা যায়।
এই নতুন ফেলুদা টেস্টে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্রিসপার প্রযুক্তি। ক্রিসপার হচ্ছে ‘ক্লাস্টার্ড রেগুলেটরি ইন্টারস্পেসড শর্ট পালিনড্রমিক রিপিটস’ কথাটির সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি জিন এডিটিং প্রযুক্তি। এখন এই প্রযুক্তি ভাইরাস শনাক্ত করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
গবেষকদের মতে, জিন এডিটিং প্রযুক্তি কাজ করে অনেকটা কম্পিউটারে ওয়ার্ড প্রসেসিং এর মতো করেই। কম্পিউটারে টাইপ করার সময় কোন ভুল হলে সেটি সংশোধন করতে যেভাবে কার্সারকে ভুল অক্ষরটির কাছে নিয়ে সেটি ডিলিট করে বা মুছে ফেলে সঠিক অক্ষরটি আমরা ঢুকিয়ে দেই, এটা একদম সেরকম। এই প্রযুক্তি এতটাই নির্ভুল যে, একটি সুনির্দিষ্ট ‘জেনোম অক্ষর’ এটি দিয়ে অপসারণ করা যায়, সেখানে বসিয়ে দেয়া যায় আরেকটি ‘জেনোম অক্ষর।’ সাধারণত সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধে এই জিন সংশোধন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
ফেলুদার কিটে যখন এই ক্রিসপার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের বৈশিষ্ট্য বহন করছে এমন জিনের ওপর গিয়ে সেঁটে যায় এই ক্রিসপার, এটিকে চিহ্ণিত করে এরপর একটি কাগজের ওপর সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে।
যদি কাগজের ওপর দুটি নীল লাইন ফুটে উঠে, তাহলে বুঝতে হবে ফল হচ্ছে পজিটিভ। আর যদি একটি মাত্র নীল লাইন দেখা যায়, তাহলে ফল ‘নেগেটিভ।’
হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের একজন গবেষক ডঃ স্টিফেন কিসলার বলছেন, “টেস্টিং এখনো খুবই সীমিত। এটি যেন আরও বেশি করে করা যায়, সেজন্যে আমাদের সর্বতো চেষ্টা নিয়োগ করা দরকার। সেদিক থেকে ‘ফেলুদা’ এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
হার্ভার্ড গ্লোবাল হেলথ ইনস্টিটিউটের ডঃ টমাস সাই এর মতে, ক্রিসপার প্রযুক্তি ভিত্তিক টেস্টকে এখন এক তৃতীয় প্রজন্মের টেস্টের অংশ বলে গণ্য করা হচ্ছে। কারণ পিসিআর এবং অ্যান্টিজেন টেস্টগুলো অনেক সময় সাপেক্ষ, এরকম টেস্ট করতে অনেক লোকবল লাগে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে কয়েকটি কোম্পানি এবং গবেষণাগার এখন একই ধরণের পেপার স্ট্রিপ টেস্ট তৈরির চেষ্টা করছে। এগুলো দামে সস্তা পড়বে এবং বিপুল সংখ্যায় উৎপাদন করা যাবে।
এরমধ্যে সবচেয়ে আলোচিত একটি পেপার স্ট্রিপ টেস্ট তৈরি করেছে শার্লক বায়োসায়েন্স বলে একটি কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এটিকে অনুমোদনও দিয়েছে।
দাবি করা হচ্ছে এই টেস্টের মাধ্যমে যে কোন অর্গানিজম বা প্যাথোজেনের যে কোন ডিএনএ বা আরএনএর অনন্য জেনেটিক ছাপ শনাক্ত করা যায়। যে কোন জীবের জেনেটিক বৈশিষ্ট্য মূলত ডিএনএ এবং আরএনএ মলিকিউলে সংরক্ষিত থাকে।
ডঃ সাই বলেন, “আদর্শ টেস্ট হচ্ছে আসলে সেটি যা কাগজ-ভিত্তিক এবং যেটি ঘরে বসে করা যায়। কিন্তু এই প্রযুক্তির ব্যাপারে কিছু বায়েলজিক্যাল বিধিনিষেধ আছে। লোকজন তাদের ঘরে বসে দেহ থেকে নিজেদের আরএনএ সংগ্রহ করে সেটিকে পরিবর্ধিত করবে এটা আমরা আশা করতে পারি না।”
ফেলুদা টেস্ট এখানেই একটা বিরাট পার্থক্য ঘটিয়ে দিতে পারে। জিন সংশোধন প্রযুক্তি ভিত্তিক টেস্টের ব্যাপারে এতদিনের ধারণা এটি পাল্টে দিতে পারে।
ডঃ দেবোজ্যোতি চক্রবর্তী হচ্ছেন সিএসআইআর-আইজিবিএমআর এর একজন বিজ্ঞানী। ফেলুদা কিট যারা তৈরি করেছে সেই দলের একজন অগ্রণী সদস্য। তিনি বিবিসিকে বলেন, তারা এমন একটি টেস্টের প্রোটোটাইপ নিয়ে কাজ করছেন, যার মাধ্যমে পিসিআর মেশিন ব্যবহার করে ঘরে বসেই একজন আরএনএ সংগ্রহ করে তা পরিবর্ধিত করতে পারবেন।
“আমরা চেষ্টা করছি একটা সহজ, কম খরচের এবং মানুষের দোরগোড়ায় করা যায় এমন এক টেস্ট তৈরি করার। যাতে করে লোকবল বা মেশিনের সীমাবদ্ধতার কারণে ব্যাপক হারে টেস্টের কাজটি আটকে না যায়।”
ডঃ কিসলার বলেন, “ভারতের সামনে সুযোগ আছে এই টেস্টটা কতটা কাজের তা প্রমাণ করার। কারণ ভারতের জনসংখ্যা বিপুল এবং এই টেস্টটি পাওয়া গেল এমন একসময় যখন এটার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি।”
“যদি এটির কার্যকারিতা প্রমাণ করা যায়, এটির সুফল বিশ্বের সব প্রান্তে গিয়ে পৌঁছাবে।”
এই বিশ্ব মহামারি থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে একটি টিকার খুবই প্রয়োজন। কিন্তু ডঃ কিসলারের মতে, স্বাভাবিক অবস্থার বোধ ফিরিয়ে আনার জন্য নির্ভরযোগ্য এবং সহজলভ্য একটি টেস্টেরও খুব দরকার।
তিনি বলেন, “আমি যে আদর্শ অবস্থার কথা কল্পনা করি, সেখানে একটা টেস্ট করার ব্যাপারটি দাঁত মাজা কিংবা পাউরুটি টোস্ট করার মতোই সহজ একটি কাজ হওয়া উচিৎ।”
করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে ভারতে এখনো পিসিআর এবং অ্যান্টিজেন টেস্ট ব্যবহার করা হচ্ছে
করোনাভাইরাস সংক্রমণ সংখ্যার দিক থেকে ভারত এখন বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে
নতুন এই টেস্ট উদ্ভাবনের পেছনে কাজ করেছেন ভারতের ইনস্টিটিউট অব জেনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজির একদল বিজ্ঞানী
ভারতে এখনো মুখের লালা থেকে নমুনা নিয়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হয়নি
জিন এডিটিং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে ফেলুদা টেস্টিং কিট
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন